21/02/2025
কপি পোস্ট
জুম্মা মুবারক
সূরা আরাফ শুরু করলাম।
আরাফে একটা ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট পেলাম।
ছোট বেলা থেকে শুনে এসেছি যে,
আখিরাতের পরিণাম হলো বাইনারি
হয় জান্নাত নয় জাহান্নাম।
অথচ এই সুরার মাধ্যমে আমাদের জানানো হলো যে,
না!
জান্নাত আর জাহান্নামের মাঝামাঝিও আরেকটা লোকেশন আছে।
লোকেশনটার নাম আরাফ!
এই জায়গার নাম অনুসারেই এই সূরার নামকরণ
"আরাফ" হবে তাদের জন্য
যারা এতটাও ভালো কাজ করেনি যেঁ জান্নাতের টিকেট পেয়ে যাবে
আবার এতটাও খারাপ কাজ করেনি যেঁ জাহান্নামে যেতে হবে
এ যেন মিডেল ক্লাসদের চরণ ভূমি!
এই আরাফবাশি সবসময়ই আশায় থাকবে যে
তাদেরকে যেন কোন না কোন সময় জান্নাতে আপগ্রেড করা হয়. [১]
এই আরাফ ছাড়াও হাশর আরেকটা ইম্পর্টেন্ট ফেক্ট আমাদের অনেকেরই অজানা
আর সেটা হলো কান্তারা!
আমরা মনে করি
"কোনো রকমে পুলসিরাত পার হইতে পারলেই বাঁচি!"
ভুল!
পুলসিরাত পার হতে পারলেই জান্নাত নয়
পার হতে পারলে অপেক্ষা করবে মুমিনদের জন্য ফাইনাল পরীক্ষা।
হাশরের দিনে বিশাসীদের বিচার হবে দু বার
এক বার হবে সিরাত পার হওয়ার পূর্বে
আরেক বার হবে সিরাত পার হওয়ার পরে
জি ঠিকই শুনেছেন
পূর্বের বিচার হবে
"স্রষ্টার হক নষ্ট করার বিচার"
আর পরের বিচার হবে
"বান্দার হক নষ্ট করার বিচার"
আর যে জায়গাটায় বিচারটি হবে
সেই জায়গাটির নামই হলো "কান্তারা"
আল-কান্তারাহ হলো সিরাতের পর আরেকটি ছোট সিরাত
বিস্বাসীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে
তারা এই কান্তারার উপর দিয়েই প্রবেশ করবে
এবং স্রষ্টা এই কান্তারার উপরেই মুমিনদের মধ্যকার আন সেটেলড ইস্যুস গুলো রিসোলভ করবেন [২]
কল্পনা করুন,
একজন ব্যক্তি আল-কান্তারাহ-তে জান্নাতের দরজার অলমোস্ট দ্বারপ্রান্তে
অথচ সে সেথায় ঢুকতে পারছে না
কারণ তার সব সৎকর্মগুলো যা নিয়ে নিয়ে সে বড়াই করতো সব শেষ
উলটো তাকে জাহান্নামে টেনে নিয়ে হচ্ছে
সেই হতোভাগাকে আপনি তখন কী বলবেন?
আমার রাসুল স: অবশ্য সেই হতভাগা কে ডিফাইন করেছেন "মুফলিস" হিসেবে
"মুফলিস" অর্থ হলো দেউলিয়া বা ব্যাংকরপ্টড
রাসূল স: বলেছেন
“তোমরা কি জানো , কে আসল দেউলিয়া?”
সাহাবারা উত্তর দেন
“যার কাছে অর্থ বা সম্পদ কিছুই নেই সে ইয়া রাসূলুল্লাহ?”
রাসূল স: বললেন
“না! আমার উম্মতের মধ্যে প্রকৃত দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি
যেই ব্যক্তি কিয়ামতের দিনে অনেক নামাজ, অনেক রোজা ও অনেক সদকা নিয়ে উপস্থিত হবে
অথচ সে দেখতে পাবে যে
সে ঐ দিনে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে কারণ জীবদ্দশায়
সে অন্যদের গালি দিয়ে বেড়াতো
অন্যদের অপবাদ দিয়ে বেড়াতো
অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করে বেড়াতো
অন্যের রক্তপাত ঘটিয়ে বেড়াতো এবং
অন্যকে প্রহার করে বেড়াতো
আজ তার সব সৎকর্মগুলো ভুক্তভোগীদেরকে ট্র্যান্সফার করে দিতে হচ্ছে
শুধু তাই না
যদি তার ভালো কাজগুলো ক্ষতিপূরণ গুলোকে কভার করতে না পারে
তাহলে তাদের পাপ গুলোও তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে
এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” [৩]
তাই বলছি
আপনার যারা নামাজ রোজা সাদাকার পাশাপাশি
আপনার মুখের স্পিচ দিয়ে অন্যদের কষ্ট দিয়ে বেড়াচ্ছেন
কিংবা আমল দিয়ে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করে বেড়াচ্ছেন
তাদের জন্য একটাই কথা
দেখা হবে বন্ধু
দেখা হবে কান্তারায়!
লেখা: সামিউল হক