09/09/2025
'ইঞ্জিনিয়ারিং স্টেট চীন' - এর ভিতর বাহির
আজকের বিশ্বে চীনকে বলা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টেট। কেননা চীন আজকের বিশ্বে যেভাবে অগ্রগতি সাধন করছে, টেকনলজি, বাণিজ্য, স্থাপনা সহ অন্যন্য সকল ক্ষেত্রে, এসব যায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছে চীনের ইঞ্জিনিয়াররা।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হচ্ছে ল'ইয়ার স্টেট। চীন কোন বিষয়কে কপি করে খুব দ্রুতই সেটা নকল করে ফেলে। প্রযুক্তি আয়ত্ব করে সেটাকে আরো উন্নত করে ফেলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে যেটা হয়, ল'ইয়াররা, বিভিন্ন এডভোকেসি গ্রুপ অন্তহীন ডিবেট করতে থাকে এটা নিয়ে যে, কোন টেকনোলজি আদৌ বানাবে কি বানাবেনা!
যুক্তরাষ্ট্র সেমিকন্ডাকটর, স্বাস্থ্যখাত সহ অন্যন্য অনেক ক্ষেত্রে এখনও চীন থেকে এগিয়ে। কিন্তু চীনের এই ইঞ্জিনিয়ারিং মাইন্ডসেট তাকে অনেক বেশি মাত্রায় এগিয়ে দিচ্ছে।
কিছু পরিসংখ্যান -
- চীনে ২০২২ সালে ১৮০০ টি যুদ্ধজাহাজ বানানোর কাজ চলছিল, যুক্তরাষ্ট্রে চলছিল মাত্র ৫ টি!
- একমাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র যে গোলাবারুদ উৎপাদন করে, ইউক্রেন প্রতি দুইদিনে গড়ে সেই পরিমান গোলাবারুদ ব্যবহার করেছে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে।
- ১৯৮০ সাল থেকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিগুণ হাইওয়ে তৈরী করেছে। জাপানের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি হাই স্পিড রেলওয়ে নির্মাণ করেছে।
এই সবগুলো বিষয় সম্ভব হয়েছে চীনের একচেটিয়া কর্তৃত্ববাদী একদলীয় শাসনব্যবস্থার কারণে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা দিয়েছেন - "সত্যিকার অর্থনীতিই হচ্ছে সকল কিছুর মূল...তাই আমরা কখনোই আমাদের শিল্পায়নের গতি রুদ্ধ হতে দেবনা।"
এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই ইঞ্জিনিয়ারিং স্টেট কি সত্যিই ইঞ্জিনিয়ারি কায়দায় চলে? নাকি পার্টি যা চায়, সেভাবে ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যবহার করা হয়? কোন অর্থে আসলে চীন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টেট?
দুটো উদাহরণ থেকে এটা পরিষ্কার হওয়া যায়।
- চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির একজন প্রভাবশালি সদস্য, পরমাণু বিজ্ঞানি সং জিয়ান চীনে ওয়ান চাইল্ড পলিসি দিয়েছিল। যদিও এই ক্ষেত্রে তার কোন ব্যাকগ্রাউন্ড নাই।
অথচ তার প্রস্তাবিত নীতি গ্রহণের ফলে চীনে ১০ কোটি ৮০ লক্ষ নারীর গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে ৩২ কোটি ১০ লক্ষ বার!
- পৃথিবীতে একমাত্র দেশ হিসেবে করোনার সময় চীনে নাপার মত অষুধ বিক্রি করা নিষিদ্ধ ছিল, শুধু এইজন্য যে, কেউ যাতে ওসব খেয়ে নিজের উচ্চ তাপমাত্রাকে আড়াল না করতে পারে৷ কারন তাপমাত্রা বাড়লেই কোভিড পজিটিভ, কোয়ারেন্টাইন থেকে সোজা আজরাইলের দুয়ারে।
এর পেছনে যুক্তি কি? চীন নিয়েছিল 'জিরো-কভিড' পলিসি৷ আর সেটা বাস্তবায়ন করেছে অনেকটা মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে দেয়ার মত করে।
উপসংহার কি?
চীন ও আমেরিকার প্রতিযোগিতা দেখলে চীনের ইঞ্জিনিয়ারিং দেখতে খুব মজা লাগবে আপনার। কিন্তু ভিতরের নির্মম ইঞ্জিনিয়ারিং যদি দেখেন, তাহলে বাংলাদেশের মত তালছাড়া দেশে থেকে শুকরিয়া করবেন অন্তত, যে এই দেশে চাইলে আপনি যেটা খুশি সেটা করতে পারবেন। খালি খারাপটা বাদ দিয়া ভালোটা করলেই দেশটা সুন্দর হয়ে যাবে।