05/07/2025
আগামিকাল ১০ ই মুহররম। পবিত্র আশুরার দিন। কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যে চারটা মাসকে সম্মানিত মাস ( আরবাআতুন হুরুম) হিশেবে আখ্যায়িত করেছেন, মুহররম তার মধ্যে একটা।
মুহররম মাসের সবচেয়ে পবিত্র দিনটা হলো এই মাসের দশম তারিখ তথা আশুরার দিন। সহিহ বুখারির হাদিস থেকে জানা যায়—মুহররম মাসের এই দিনটাতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা নবি মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর উম্মতকে ফিরআউন বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন সমুদ্রে তাদের জন্য পথ তৈরি করার মাধ্যমে। একইভাবে তিনি সেদিন যালিম ফিরআউনকেও ডুবিয়ে মেরেছিলেন সমুদ্রের পানিতে।
মুহররম মাস যেহেতু অত্যন্ত পবিত্র একটা মাস, ফলে এই মাসজুড়ে ব্যাপক আমল ইবাদাত করার আলাদা মর্যাদা রয়েছে।
তবে, এই আশুরার দিন ইসলামের ইতিহাসে ঘটেছে হৃদয়বিদারক কারবালার ঘটনাও। এই দিন যালিমেরা শহিদ করেছিল নবিজির প্রাণাধিক প্রিয় দৌহিত্র হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তাঁর পরিবারের অনেক সদস্যকে।
আশুরা দুটো কারণে আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয়:
১. মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর উম্মতের যালিমের হাত হতে মুক্তি এবং ফিরআউনের পতন।
২. হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর শহিদ হওয়ার ঘটনা।
১০ ই মুহররম আল্লাহর রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম রেখেছেন। কারণ, মদিনায় এসে তিনি দেখেন যে, এই দিনটায় মদিনার ইহুদিরা সিয়াম রাখত৷ তিনি জিগ্যেস করলেন, ‘তোমরা এই দিন সিয়াম রাখো কেন?’
তারা বলেছিল, ‘এই দিন আমরা সিয়াম রাখি, কারণ এই দিনেই আল্লাহ তাআলা নবি মুসা এবং তাঁর কওমকে উদ্ধার করেছিলেন’।
আল্লাহর রাসুল বললেন, ‘এই দিনে আমরাও সিয়াম রাখব। কারণ নবি মুসা তোমাদের চাইতে আমাদের বেশি আপন’।
তিনি সাহাবিদের আদেশ দিলেন মুহররমের দশ তারিখ সিয়াম রাখতে। তবে, ইহুদিদের সাথে যেন সাদৃশ্য হয়ে না যায়, তাই তিনি দশ তারিখের আগের দিন বা পরেরদিন, একদিন মিলিয়ে বাড়তি আরও একটা সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন।
আগামিকাল যেহেতু আশুরার দিন, এই দিন আমাদের সকলের উচিত সিয়াম রাখা। এটা আল্লাহর রাসুলের পালনীয় এবং নির্দেশিত সুন্নাহ।
আমাদের উচিত এই মাসে অধিকবেশি আল্লাহর যিকির, আযকার, দুয়া, দরুদ, তিলাওয়াতে সময় কাটানো৷ নবি মুসা আলাইহিস সালামের জীবনকে কুরআন থেকে জানা এবং বোঝা।
কারবালার ঘটনাও আমাদের উচিত স্ট্যাডি করা। অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং সকরুণ এই ঘটনাকে না জানলে, আমরা ইতিহাসের বড় একটা অংশ থেকেই দূরে থেকে যাব।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে মুহররম মাসের মর্যাদাকে বোঝার, আমল করার তাউফিক দিন।