তূর্ণপত্র • The Express Letter

  • Home
  • তূর্ণপত্র • The Express Letter

তূর্ণপত্র • The Express Letter ইসলামি জ্ঞান ও সভ্যতার পুনর্জাগরণে চেতনার শিশু-কিশোরদের প্রতি এক জরুরি চিঠি

02/02/2025

ইসলামী অনুষ্ঠানে কিংবা প্রতিষ্ঠানে নারী সাংবাদিক (বেপর্দা) প্রবেশের বিষয়টা আসলে কী? এটা কি বাংলাদেশের মতো দেশে ওই সাংবাদিক একেবারেই বুঝেন না, নাকি তার প্রতিষ্ঠানের পর্দা বিষয়ে কোনো ধারণাই নেই? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই একটা শয়তানি ইস্যু খাঁড়া করানোর জন্য বেপর্দা নারী সাংবাদিক পাঠানো হয়?

দেখুন, ২০১৩-তে হেফাজতের মিটিং মিছিলের সময়েও এরকম কয়েকটি ইস্যু গরম করে তোলা হয়েছিল। এরা জেনে বুঝেই এগুলো করেন। আজকে যদি ঢাকার বড় কোনো কওমি মাদ্রাসায় কিংবা বেফাক অফিসে কিংবা আজহারীর মাহফিলে স্টেজের কাছে গিয়ে কোনো বেপর্দা নারী সাংবাদিক হাজির হতে চায় নিউজ কভার করার জন্য, তখন কী করা হবে? তাকে সুযোগ দেওয়া হবে? ...বিভিন্ন মহল বলয় অঙ্গনের কিছু রীতি ও সংরক্ষণ এবং বিধান গুরুত্বপূর্ণ থাকে; চর্চার মধ্য দিয়ে এগুলো বেশ প্রসিদ্ধও। অমুসলিম প্রধান দেশেও এসব বিষয়ে কোনো ঝামেলা হয় না। তাহলে এখানে কেন হয়? আর এমন ইস্যু খাঁড়া করলেই আমরা নিজেদের কেন গুটিয়ে নেই? মূল কথাটা নগদে এবং ভবিষ্যতের জন্য স্পষ্ট করে কেন বলে দেই না?

গত ১০-১২ বছরে ফ্যাসিবাদী মন্ত্রী-মিনিস্টার, এমপি, নেতা কর্মীদের দ্বারা বহু নারী সাংবাদিক নাজেহাল হয়েছে, আহত হয়েছে, অপমানিত হয়েছে। সাধারণ নিউজ (দুর্ঘটনার মতো) হয়েছে, কিন্তু 'নারী সাংবাদিকের প্রতি নিপীড়ন ও নাজেহাল' ইস্যু দাঁড় করানো হয়নি।; অন্য নারী সাংবাদিক, নারীবাদী সমাজ, চেতনাবাদী বুদ্ধিজীবীরাও প্রতিক্রিয়া দেখান নাই। ইসলামী অনুষ্ঠান ও মহলে জাস্ট ঢুকতে দেয় নাই এইজন্যই মাতম শুরু করার পেছনে মতলবটা কি পরিষ্কার না? এই মতলব এখন থেকেই থামানো দরকার। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবার স্পষ্টভাষা ব্যবহার করা দরকার। সুন্দর ভাষায় দৃঢ়তার সঙ্গে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার। এগুলো বারবার হতে দিলে বারবার শয়তানি ইস্যু তৈরি করার সুযোগ হবে। সেটা ভালো না।

উস্তায শরিফ মুহাম্মদ হাফিযাহুল্লাহ

10/10/2024

ঘরে বসে অনলাইনে আগামী ১৬ই অক্টোবর, বুধবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দেশসেরা ‘লাইভ স্পোকেন ইংলিশ কোর্স’।
■ ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ও ২টি ক্লাস করতে করতে ক্লিক করুন: https://forms.gle/ELmyEkBUTr1UM8SJ8 (অথবা ইনবক্স করুন)

আমাদের কোর্সটির অনন্যতা:
• সম্পূর্ণ প্র্যাক্টিস নির্ভর লাইভ ক্লাস
• ৩ ধাপে সাজানো। প্রতিটি ধাপ শেষে পরীক্ষা
• ২৫ টি লাইভ স্পোকেন ক্লাস+ পিডিএফ শিট
• ২৫ টি লাইভ ভোকাবুলারি ক্লাস + পিডিএফ শিট
• ২৫ টি লাইভ প্র্যাক্টিস ক্লাস + পিডিএফ শিট
• ৪ টি লাইভ স্পিচ প্রোগ্রাম+ পিডিএফ শিট
• ৪ টি লাইভ রাইটিং ক্লাস+ পিডিএফ শিট
• প্রতিটি লাইভ ক্লাসের রেকর্ডেড ভিডিয়ো
• প্রতি শুক্রবার ক্লাস টেস্ট
• সার্বাক্ষণিক লাইভ সাপোর্ট
• স্পোকেন প্র্যাক্টিসের জন্য পার্টনার
• কোর্স শেষে একাডেমিক সার্টিফিকেট

কোর্সের বিবরণ:
• ওরিয়েন্টেশন ক্লাস: ১৬ ই অক্টোবর; মঙ্গলবার
• সাপ্তাহে ৩টি ক্লাস; শনি, সোম ও বুধবার
• ক্লাস সময়: রাত ৯.৩০—১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত।
• ক্লাস মাধ্যম: গুগল মিট (গুগল মিট-এর ব্যবহার একদম সহজ। নির্দিষ্ট সময়ে প্রাইভেট ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমরা একটি লিঙ্ক পাঠাব, সেখানে ক্লিক করেই জয়েন হতে পারবেন। এরপরো আমরা একটি ভিডিয়ো দিয়ে দিব, কীভাবে ক্লাসে যুক্ত হতে হয়, তা শিখে নিতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ)

কোর্সটি যাদের জন্য:
• যারা ইংরেজি একদমই জানে না।
• যারা ইংরেজি জানে, কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না।
• যারা ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলতে পারে, কিন্তু অনর্গল ইংরেজি মুখ দিয়ে আসে না।

কোর্স ফি:
• রেজিস্ট্রেশন ও প্রথম ২টি ক্লাস একদম ফ্রি।
• মন মতো হলে পরবর্তী ক্লাস ও পুরো কোর্স ফি: মাত্র ৯৯৯ (নয় শ নিরানব্বই) টাকা (২,০০০ টাকার এই কোর্সটি পাচ্ছেন, ৫০℅ ছাড়ে)।
• মাসিক ফি: মাসিক ফি বা অন্যান্য কোনো ফি নেই। (২ মাস)

ক্লাস নিবেন যারা:
⦿ হাবিবুল্লাহ উসমানী
• ডিপ্লোমা ইন ইংলিশ, আহমাদ’স এডুকেশন
• তালিবুল ইলম, মাদানী নেসাব
• আলিম, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা

⦿ মুস্তাফিজ বিন হাবিব
• শিক্ষার্থী, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি কুষ্টিয়া
• তালিবুল ইলম, মাদানী নেসাব
বিস্তারিত আরও জানতে কল করুন বা ওয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন:
01779603331, 01824705375
===============================

বার বার উঠে আসা কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:

⦿ মেয়েরাও কি এই কোর্সটি করতে পারবে?
অবশ্যই! মেয়েরাও এই কোর্সটি করতে পারবে। উল্লেখ্য সম্পূর্ণ প্রাইভেসি রক্ষা করা হয়।
⦿ রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ কবে?
১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪; মঙ্গলবার।

⦿ ক্লাস শুরু কবে থেকে?
• ওরিয়েন্টেশন ক্লাস: ১৬ই অক্টোবর; বুধবার

⦿ ক্লাস কীভাবে হবে?
নির্দিষ্ট সময়ে 'গুগল মিট'—এর মাধ্যমে নেয়া হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে প্রাইভেট ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ক্লাসের লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া হবে, সেখানে ক্লিক করে ক্লাসে যুক্ত হওয়া যাবে। এছাড়া প্রতিদিনের ক্লাসের রেকর্ডেড ভিডিয়ো ও পিডিএফ শিট দেওয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।

⦿ পড়া কীভাবে আদায় করা হয়?
সরাসরি লাইভ ক্লাসে প্র্যাক্টিস। এছাড়াও নাম ধরে ধরে শিক্ষার্থীদের থেকে পড়া আদায়। প্রতি শুক্রবার ক্লাস টেস্ট এবং প্রতিটি ধাপ শেষে মূল্যায়ণ।

⦿ রেজিস্ট্রেশন কীভাবে করব?
• Step 01: কোর্সের লিঙ্কে ক্লিক করুন
• Step 02: তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করুন এবং " Submit Now" বাটনে ক্লিক করুন।
• Step 03: রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন আলহামদুলিল্লাহ। আমরা সেই গ্রুপে সকল তথ্য আদান-প্রদান করব ইনশাআল্লাহ।

⦿ এখনই ভর্তি কনফার্ম করতে চাইলে পেমেন্ট কীভাবে করব?
+8801824705375 এই নাম্বারে ৯৯৯ (নয় শ নিরানব্বই টাকা) নগদ/বিকাশে পেমেন্ট করার পর, ট্রানজেকশন আইডিটি কপি করে অথবা স্ক্রিনশট দিয়ে ওয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠিয়ে।

■ ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ও ২টি ক্লাস করতে করতে ক্লিক করুন: https://forms.gle/ELmyEkBUTr1UM8SJ8 (অথবা ইনবক্স করুন)

বিস্তারিত আরও জানতে কল করুন বা ওয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন:
01779603331, 01824705375

14/01/2024

⚪শ্রেণিকক্ষে প্রজেক্টর⚪
মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হল তার চিন্তা ও কল্পনা করার ক্ষমতা। শিশুকে তার নিজের মতো চিন্তা ও কল্পনা করতে দেওয়া উচিত। তাকে প্রশ্ন করতে ও সমস্যা সমাধান করতে দেওয়া উচিত।

ডিজিটাল ডিভাইস, যেমন প্রজেক্টর, এক্ষেত্রে সহায়ক না প্রতিবন্ধক?

ধরা যাক, আপনি প্রথম শ্রেণিতে পড়াচ্ছেন। শিশুদেরকে গল্প বলছেন—"এক পাহাড়ের গুহায় বাস করত এক সিংহ।" বাক্যটা বিদ্যুৎগতিতে শিশুর চিন্তা ও কল্পনাকে উসকে দেবে। সে তার মনের দেয়ালে একটি পাহাড়, একটি গুহা ও একটি সিংহের রঙিন ছবি আঁকবে। এরই নাম সৃজনশীলতা। আপনি শিশুর মনকে জাগিয়ে দিলেন। তার মন কাজ করল।

কিন্তু গল্প না বলে যদি একটি প্রজেক্টরে আপনি শিশুটিকে গল্পের কার্টুন দেখান, যেখানে পাহাড়ের গুহা থেকে একটি সিংহ বেরিয়ে আসছে—তাহলে শিশুটির মন কার্টুন থেকে পাহাড়, গুহা ও সিংহের ছবি 'গ্রহণ' করবে, কিছুই 'নির্মাণ' করবে না। মানে, সে সৃষ্টি করল না। তার মনকে কাজ করতে দেওয়া হল না। এভাবে ডিভাইস শুধু যে সৃজনশীলতার ক্ষতি করে তা-ই নয়, বৈচিত্র্যও ধ্বংস করে। দশটি শিশু আপনার মুখের গল্প শুনে দশ রকম ছবি আঁকবে, কিন্তু কার্টুন দেখলে তারা সবাই তা থেকে একই রকম ছবি গ্রহণ করবে।

এভাবে শিশুকে যত বেশি এ-জাতীয় যন্ত্র দেবেন, শিশু তত বেশি যান্ত্রিক হবে। সৃজনশীল হওয়ার বদলে ক্রমশ সে প্রতিবন্ধী হয়ে উঠবে।

——————————————————
⚪আবদুল হক হাফিযাহুল্লাহ

লেখা শেখা নিয়ে অনেক প্রশ্ন; কীভাবে শুরু করব, কী দিয়ে শুরু করব ইত্যাদি ইত্যাদি। এ জাতীয় সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজ রাত ৯....
04/11/2023

লেখা শেখা নিয়ে অনেক প্রশ্ন; কীভাবে শুরু করব, কী দিয়ে শুরু করব ইত্যাদি ইত্যাদি। এ জাতীয় সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজ রাত ৯.০০টায় জমে উঠবে এই লাইভ আড্ডা, ইনশাআল্লাহ। চোখ রাখুন তূর্ণপত্র • The Express Letter —এই অফিসিয়াল পেইজে

17/09/2023

আমাদের যারা মাদরাসার ছাত্র/ছাত্রী হিসাবে কবুল হয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর রহমতে আমরা কুরআনের ভাষা শেখার অন্যতম সুযোগ পেয়েছি। তবে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, মাদারাসার অনেক তালিব/তালিবাও কুরআনের ভাষা শেখার নেয়ামত থেকে বঞ্চিত। দাওরা হাদিস শেষ হয়ে যায়, কিন্তু অমনোযোগিতা ও গাফলতির কারণে কুরআনের ভাষা শেখা হয় না৷ সে গাফলতি হয় কখনো কখনো প্রাতিষ্ঠানিক আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তি কেন্দ্রীক। ফলে তেলাওয়াতের সময়ও কুরআনের ভাব ও মর্ম বুঝে আসে না, নামাজে দাঁড়িয়েও কুরআনের স্বাদ ও লাযযাত পাওয়া যায় না।

কুরআনের ভাষা আরবি শেখার জন্য উলামায়ে কেরাম উপকারী উপকারী অনেক পথ ও পদ্ধতিই উদ্ভাবন করেছেন। তন্মধ্যে খুবই কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি হচ্ছে, আদীব হুজুর (১) (আল্লামা আবু তাহের মিসবাহ হাফিযাহুল্লাহ)—এর الطَّرِيْقُ الٰى العَرَبِيَّة (এসো আরবী শিখি) । অধিকাংশ মাদরাসায়ই এটা পাঠদান করা হয়। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসে না, কেনো? কারণ লেখকের উদ্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাঠ দেয়া হয় না। এসো আরবী শিখি মূলত ব্যকরণিক ধাঁধা পরিহার করে শুধু ভাষার উপর তামরিন/অনুশীলনের একটি কিতাব। যত বেশি অনুশীলন করা হবে, তত বেশি ফল পাওয়া যাবে৷ এসো আরবী শিখি'র পর্যাপ্ত অনুশীলনের জন্য লেখক التَمْرِيْنُ الكِتَابِيُّ عَلٰى الطَّرِيْقِ الٰى العَرَبِيَّةِ নামেও একটি কিতাব রচনা করেছেন। এ কিতাবটি সামনে রেখে মৌখিক ও লৈখিক পর্যাপ্ত অনুশীলনের মাধ্যমে যদি পাঠদান করা হয়। তাহলে স্বল্প সময়ে খুব সহজেই একজন তালিবুলইলম কুরআনের ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারবে, ইনশাআল্লাহ।

এসো আরবী শিখি'র পাঠ গ্রহণের পরই একজন তালিবুলইলম হাতে আদীব হুজুর তুলে দিয়েছেন, الطَّرِيْقُ الٰى الْقُرْاٰنِ (এসো কুরআন শিখি) নামে একটি চমৎকার কিতাব। যা ধারাবাহিকভাবে চার খণ্ডে লিখিত। নির্ধারিত এ কোর্সটি শেষ করলে, ইনশাআল্লাহ একজন শিক্ষার্থী কুরআনের স্বাদ ও লাযযাত আস্বাদন করতে সক্ষম হবে।

তরজমা শেখার এ পর্ব শেষে তাফসিরের পথ ধরার জন্য একাডেমিক রূপরেখা দিয়ে তালিবুলইলমদের জন্য الطَّرِيْقُ الٰى تَفْسِيْرِ الْقُرْاٰنِ (এসো তাফসীর শিখি) নামে তিন খণ্ডের একটি তাফসির গ্রন্থও তিনি রচনা করেছেন।

—————
(১) তালিবুলইলমের যামানা থেকেই আল্লামা আবু তাহের মিসবাহ (হাফিযাহুল্লাহ)র ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি আলাদা এক ঝোঁক ও যযবা। অল্প সময়েই তিনি বাংলা এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্যে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তার উস্তায ও তালিমি মুরুব্বি আল্লামা আব্দুল হাই (পাহাড়পুরী হুজুর রহ.) তাকে 'আদীব হুজুর তথা সাহিত্যিক হুজুর উপাধিতে ভূষিত করেন। সেই থেকে তার নাম হয়, "আদীব হুজুর"।

আদীব হুজুরের স্বপ্ন ছিল বাংলা ভাষাভাষী শিক্ষার্থীদের মাঝে কুরআনের ভাষা আরবি'র একটা বিপ্লব ঘটাবেন। আলহামদুলিল্লাহ, তিনি সফল৷ তার শ্রমের বদৌলতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী খুব সহজেই আরবি শিখছে, কুরআন বুঝছে। মাদানী মক্তবের শিশু বাচ্চাদের জন্য 'আরবিতে মিসমিল্লাহ' থেকে শুরু করে সুবিজ্ঞ আলেমের জন্য 'আত্বতারিকু ইলাত তাফসিরিল কুরআন' রচনা পর্যন্ত তার এ একনিষ্ঠ খেদমত তার উপাধিকে পরিবর্তন করে ফেলে। আসলে তিনি আদীব হুজুর নন, বরং শায়খুল কুরআন। আল্লাহ তার সহায় হোন। তার হায়াত আরও দীর্ঘ করুন। উম্মাহর প্রতি তার বরকতের দ্বার উন্মোচিত রখুন।

——————

আমাদের উপর কুরআনের হক সম্পর্কিত আলোচনার 'কুরআনের ভাষা শিক্ষা' অংশের ছুটি যাওয়া একটি অংশ এ পোস্টটি।

নিয়মিত আলোচনা হবে, ইনশাআল্লাহ।

16/09/2023

|| ৪. কোরআনের ভাষা:
কোরআন ও সুন্নাহর ভাষা তথা আরবি ভাষা শেখা হচ্ছে প্রতিটি মুমিন হৃদয়ের অন্যতম একটি কামনা। সাধারণত দুনিয়ার জীবনেই যখন কোনো আশেক-মাশুক প্রেম-ভালোবাসায় জড়িয়ে যায়, তখন ভলোবাসার মানুষটির কথা, লিখিত চিঠির ভাষা বুঝার জন্য কী ব্যাকূলপারা হয়ে যায়। অথচ আমার আল্লাহ তো আমাকে সীমাহীন ভালোবাসেন। পৃথিবীর সব কিছুর বর্ণনা হতে পারে, কিন্তু আমার প্রতি আমার রবের ভালোবাসার কোনো বর্ণনা হতে পারে না! সেই রব আমাকে 'কোরআন' নামে এক বিশাল চিঠি লিখলেন, ভালোবাসার কথাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বলে দিলেন, আমি কি তা বুঝার জন্য স্বচেষ্ট হব না?

কে এমন আছে, যে তার মাশুকের চিঠি যুগ যুগ ধরে শুধু অন্যকে দিয়ে পড়িয়ে শুনে নিবে? নিজে সে চিঠি পড়ার জন্য সে ভাষা শিখবে না? এমন গাধা ও বোকা তো কেবল আমিই! আমি আমার রবের লেখা চিঠির ভাষা শিখছি না। কোরআনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করছি না।

(খ) যারা কোরআনের ভাষা বুঝে, তারাই কেবল জানে, কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে কী স্বাদ ও লাযযাত লেগে আছে! তারাই কেবল বুঝে নামাজে দাঁড়িয়ে রবের কালাম পাঠের মধ্যে কী শান্তি ও প্রশান্তি লুকিয়ে আছে!

(গ) একজন গবেষক যত জ্ঞানী ও চিন্তাশীলই হোক, যদি কোরআনের ভাষা না জানে, ভালো আরবি না বুঝে, তাহলে ফকিহ বা মুজতাহিদ তো দূরের কথা, সে কখনো আলেম/আলেমা পরিচয়ও বহন করতে পারে না৷ কারণ বাংলায় বা ইংরেজিতে কিংবা ভিন্ন কোনও ভাষায় কোরআনের অনুবাদ পাঠের দ্বারা কখনোই আল্লাহর কালামের পূর্ণ ভাব ও মর্ম বুঝে আসবে না।

তবে হ্যাঁ, যাদের আরবি ভাষা শেখার কোনও সুযোগ বা সম্ভবনা নেই, তাদের কর্তব্য হচ্ছে, কোরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআনের অনুবাদও পাঠ্যতালিকায় রাখা। প্রতিদিন কিছু না কিছু অংশের অনুবাদ পড়ে পড়ে বুঝার চেষ্টা করা যে, আল্লাহ তায়ালা কী বলেছেন!!
তবে এ কাজটি হতে হবে কোনো বিজ্ঞ আলেমের তত্ত্বাবধানে। অন্যথায় যেকোনো ব্যক্তির অনূদিত কোরআনের অনুবাদ বা তাফসির পড়লে, গোমরাহ ও ভ্রান্তির সম্ভাবনা রয়ে যায়।

———
অধ্যায়: কিতাবুল্লাহ
পাঠ: আমাদের উপর কোরআনের হক (এর ৪র্থ অংশ)

কোরআন সম্পর্কে নিয়মিত আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।

15/09/2023

|| ৩. কোরআনের তেলাওয়াত:
কোরআনে বর্ণিত বিধিনিষেধ মানা তো প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাছাড়া কোরআনের শুধু তেলাওয়াত করাও বড়ো একটি ইবাদাত। অনেকেই কোরআনের সহিহ ও শুদ্ধ তোলাওয়াত জানে না৷ কেউ কেউ আবার মনে করে, আমি তো ইসলামের বিধানগুলো মানছিই। কোরআন পড়তে শেখার কী এত প্রয়োজনীয়তা আছে! অথচ কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে স্বতন্ত্র একটি ইবাদাত। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে নির্দেশনাও এসেছে।

(খ) মাদরাসা-মসজিদ, দরস-তাদরিস বা দ্বীনি কোনো খেদমতে লেগে থাকা কোনো কোনো ব্যক্তির মুখেও শোনা যায় যে, বিভিন্ন ব্যস্ততার দরুন প্রত্যহ কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে না৷ আসলে এটাও একটা বড়ো ব্যধি ও গাফলতি। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমার সব জরুরত পূরণেরই যদি সময় হয়, তাহলে কোরআনের তেলাওয়াত কেনো আমার জরুরত হবে না? অথচ এটা তো আমার রবের কালাম! সুতরাং কোনো অজুহাতেই যেনো কোনোদিন কোরআনেরব তেলাওয়াত বাদ না পড়ে। শত ব্যস্ততায়ও যেন নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ পর্যন্ত তেলাওয়াত হয়ে যায়।

(গ) কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সা. বলেন, (ফরজ ইবাদতের পর) কোরআনের তেলাওয়াতই সর্বোত্তম ইবাদত। (কানযুল উম্মাল)

অপর এক হাদিসে এরশাদ করেন, তোমরা নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করতে থাক, কেননা যারা নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করে, কেয়ামতের দিন কোরআন তাদের জন্য সুপারিশ করবে৷ (মুসলিম শরিফ)

আরেক হাদিসে এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরআন শরিফের একটি হরফ পড়ে, সে একটি নেকি পায়। আর একটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে 'الـــم' একটি হরফ। বরং ا একটি হরফ, ل একটি হরফ এবং م আরেকটি হরফ। এ হিসাবে, الـــم শব্দটি পাঠ করলে, মোট ত্রিশটি নেকি পাওয়া যাবে৷

আরেক হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি প্রত্যহ ফজরের নামাজের পর কোরআনের একশত আয়াত পরিমাণ তেলাওয়াত করবে, তার আমলনামায় সমগ্র দুনিয়া পরিমাণ সাওয়াব লিখে দেয়া হবে।

অন্য আরেক হাদিসে রাসুল্লাহ সা. বলেন, লোহায় পানি লাগলে যেমন মরিচা ধরে৷ তেমনি গুনাহের কাজ করলেও অন্তরে মরিচা ধরে। সাহাবায়ে কেরাম জিগ্যেস করলেন তা পরিষ্কার করার উপায় কী? উত্তরে রাসুল সা. বলেন, মৃত্যকে বেশি বেশি স্মরণ করা আর কোরআনের তেলাওয়াত করা।

(ঘ) ভ্রান্ত এক দলের বক্তব্য হচ্ছে, কোরআনের অর্থ না বুঝে, শুধু কোরআনের তেলাওয়াত করলে মধ্যে কোনও ফায়দা নেই। অথচ কোরআনের তেলাওয়াতটাও স্বতন্ত্র একটি ইবাদাত। তাছাড়া কোরআন তো কোনো মাখলুকের বাণী নয়, এটি মহান রবের কালাম! এতে যেমন শরিয়তের বিধিনিষেধ এবং হেদায়াতের দিকনির্দেশনা আছে, তেমনি এর শব্দগুলোর মাঝেও আছে আলাদা এক নুর ও হেদায়াত। এটি এমন এক অহি, যার শব্দ ও অর্থ দু’টোই উদ্দেশ্য।

হ্যাঁ, এটাও সত্য যে, তেলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ একটি আদব হচ্ছে, কোরআন বুঝে বুঝে, গভীর অনুধ্যানের সাথে পাঠ করা এবং এর থেকে উপদেশ গ্রহণ করা। অর্থ বুঝে পাঠ করাও যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, এটা কে অস্বীকার করতে পারে? কিন্তু অর্থ না বুঝে তেলাওয়াত করলে, সম্পূর্টাই নিষ্ফল, এ কথারও কোনো ভিত্তি নেই।

—————
অধ্যায়: কিতাবুল্লাহ
পাঠ: আমাদের উপর কোরআনের হক (এর ৩য় অংশ, কোরআনের তেলাওয়াত)


কোরআন সম্পর্কে নিয়মিত আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।

১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসায়ী; শুক্রবার

15/09/2023

|| ২. কোরআনুল কারিমের আদব ও সম্মান:
(ক) কোরআন মাজিদ স্পর্শ করা, তেলাওয়াত করা, লেখা, দেখা, রেখে দেওয়া, কোরআন সম্পর্কে আলোচনা করা—এসকল ক্ষেত্রে কোরআনের প্রতি আলাদা এক ভক্তি ও শ্রদ্ধা রেখে কোরআনকে যথাযথ সম্মান করা। কোনোভাবেই যেন কোরআনের শানে কোনো প্রকারের বেয়াদবি না হয়। জায়নামাজ: ইবাদতের কাজে ব্যবহৃত একটি কাপড়-টুকরা, যেখানে পা'ও রাখা হয়। অনেকে কোরআনকে জায়নামাজের উপর রাখে, এটা আদবের খেলাফ। কোরআনকে ধূলা-বালি ও ময়লা থেকে হেফাজতের জন্য গিলাফ ব্যবহার করা৷ তেলাওয়াত শেষে কোরআনকে উঁচু ও সম্মানিত জায়গায় আদবের সহিত রেখে দেওয়া।

(খ) হদসগ্রস্ত অবস্থা তথা অজু না থাকলে, গোসল ফরজ হলে বা হায়েজ-নেফাসে থাকাকালে নামাজ ও রোজার মতো কোরআন তেলাওয়াত করা ও স্পর্শ করাও যাবে না। কোরআনের শুরু বা শেষে যে সাদা পৃষ্ঠাগুলো থাকে, সেগুলোও স্পর্শ করা যাবে না৷ তবে হ্যাঁ, যিকির-আযকার, তাসবিহ-তাহলিল ও দোয়া-দরুদ পড়া যাবে।
তেমনিভাবে ধর্মীয় সকল কিতাবাদিও পড়া যাবে। তাফসির বা হাদিসের দরসেও বসা যাবে। তবে শর্ত হলো, কোরআনে আয়াতের তুলনায় তাফসির বা আনুষাঙ্গিক ব্যাখ্যার পরিমাণটা বেশি হতে হবে। কোরআনের আয়াত স্পর্শ ও তেলাওয়াত না করে হাদিস বা তাফসিরের ইবারতও পড়া যাবে।

হায়েয ও নেফাযগ্রস্ত থাকা অবস্থায় নুরানি কায়দা পড়ানো যাবে। তবে যে পৃষ্ঠায় কোরআনের আয়াত থাকবে, সে পৃষ্ঠা স্পর্শ করা যাবে না। তেমনিভাবে কোরআনও শিক্ষা দেওয়া যাবে; তবে পুরো আয়াত টেনে তেলাওয়াত করা যাবে না, বরং এক এক বাক্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে শিক্ষা দিতে হবে।

ফোন, ট্যাব বা ল্যাপ্টপ-কম্পিউটারের স্ক্রিনেও কোরআনে আয়াত অজু ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। তবে হ্যাঁ, মোবাইলে কোরআনের এপ ক্লোসড থাকা অবস্থায় সে মোবাইল স্পর্শ করাতে কোনো সমস্যা নেই। অনুরূপভাবে কোনো ব্যাগের ভিতরে যদি কোরআন থাকে, সে ব্যাগও অজু ছাড়া স্পর্শ করা যাবে।

ইস্তেহাযা/লিকুরিয়া রোগে আক্রান্ত মহিলা অর্থাৎ যাদের অসুস্থতা বা দূর্বলতার কারণে সাদাস্রাব বের হয়, তা নাপাক। কাপড় বা শরীরে লাগলে কাপড় ও শরীরও নাপাক হয়ে যাবে, অজুও নষ্ট হয়ে যাবে। যে নারীর মাঝে মধ্যে এ সাদাস্রাব বের হয়, সে অজু করে করে নামাজ আদায় ও কোরআন তেলাওয়াত করবে। আর যে নারী নিয়মিত এ রোগে আক্রান্ত; নামাজের কোনো এক ওয়াক্তের কিছু সময়ের জন্য পবিত্র হতে পারে না, সে মাজুর! অপারগতার কারণে তার জন্য এ সাদাস্রাব নাপাক নয়। পুরো এক ওয়াক্ত নামাজের সময়ের সকল ইবাদতের জন্য একবার অজুই যথেষ্ট। হ্যাঁ, নামাজের পরের ওয়াক্তে আবার নতুন করে অজু করে নিবে।

(গ) তাজবিদের সাথে মাখরাজ ও সিফাতের প্রতি লক্ষ্য রেখে সহিহ ও শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করা কোরআনের অন্যতম একটি আদব। যারা ভুল উচ্চারণে কোরআন পড়ে, কিংবা গানের স্বরে বা হেলায়-খেলায় কোরআনের তেলাওয়াত করে, তারাও মূলত কোরআনের শানে বেয়াদবি করে।

(ঘ) কোরআনের সবচে বড়ো আদব হচ্ছে, কোনো গুনাহ বা নাফরমানিতে লিপ্ত হওয়ার সময় কোরআনের আয়াত স্মরণ করে উক্ত গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। সুদ খাওয়ার সময়, ( وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَيْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبوٰا)" আল্লাহ ব্যবসা হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন" আয়াতটি স্মরণ করে সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকা। বে-পর্দা অবস্থায় বাহিরে বের হওয়া কিংবা বোরকা পরেও নিকাবের আড়াল থেকে পরপুরুষের দিকে তাকিয়ে থাকার সময়, ( يَغْضُضْنَ مِن اَبْصَارِهِنَّ وَ يَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ)"তোমরা তোমাদের সতর ঢেকে রাখ এবং চোখের হেফাজত কর" আয়াতটি স্মরণ করে পর্দা করা এবং দৃষ্টিকে অবনত রাখা। তেমনিভাবে যেনা বা যেনা সংশ্লিষ্ট কাজ, যেমন: পরপুরুষের সাথে সম্পর্ক, ফোনে প্রেমালাপ, ইমু-হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক-মেসেঞ্জারে গায়রে মাহরামের সাথে মেসেজ লেখার সময়, ( وَلاَ تَقْرَبُوْا الزِّنٰي) " সাবধান! তোমরা যেনা'র নিকটবর্তীও হয়ো না" আয়াতটি স্মরণ করে নিজেকে সংযত রাখা।

——————
অধ্যায়: কিতাবুল্লাহ
পাঠ: আমাদের উপর কোরআনের হক

★ এ সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসায়ি; শুক্রবার

14/09/2023

আমাদের উপর কোরআনুল কারিমের অনেকগুলো হক রয়েছে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হক হচ্ছে,

||১. পূর্ণ উপলব্ধির সাথে কোরআনের প্রতি ঈমান রাখা:
(ক) অন্তরের ভেতর এটি বদ্ধমূল করে রাখা যে, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বর্ণনা করে মানুষকে হেদায়াত ও কল্যাণের পথ দেখানোর জন্যই আল্লাহ এ কোরআন নাযিল করেছেন। যা রমজানের মাসের লাইলাতুলকদরে লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে, এরপর বিভিন্ন প্রয়োজন ও প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে আল্লাহর রাসুলের উপর নাযিল হয়। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, নাযিলের পর থেকে অদ্যবধি এ কোরআন যথাযথ সংরক্ষিত আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে৷ আর আমরা এ ব্যাপারেও সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে, বর্তমানে গ্রন্থাকারে যে কোরআন আমাদের হাতে আছে, যা সুরা ফাতিহা থেকে শুরু করে সুরা নাস পর্যন্ত, এটা আল্লাহ তায়ালার সেই কিতাব, যা তিনি নবি মুহাম্মাদ সা.এর উপর নাযিল করেছেন।

(খ) এ কোরআন হচ্ছে পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাব ও শরিয়তকে সত্যায়নকারী। তাছাড়া এ কোরআন পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাবের সার ও নির্যাস। আল্লাহ তায়ালা এ কোরআন অবতীর্ণ করার সাথে সাথে পূর্ববর্তী সকল আসামনি কিতাবের হুকুম ও শরিয়ত বাতিল হয়ে করে দিয়েছেন। সুতরাং কেউ যদি এখন পূর্ববর্তী কোনও আসমানি কিতাবের অনুসরণ করে, তাহলে তা আর গ্রহণযোগ্য হবে না। তাছাড়া বাইবেল, কিতাবুল মুকাদ্দাস, মঙ্গলবার্তা অথবা ইঞ্জিল শরিফ নামে ইহুদি ও খ্রিস্টানরা যে গ্রন্থগুলো প্রকাশ করে, সেগুলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নাযিল কৃত তাওরাত, যাবুর বা ইঞ্জিল নয়। বরং এগুলো পরবর্তী কারো রচনা৷ কিন্তু এ রচনাগুলোর মূল কপিও বর্তমান কারো কাছে সংরক্ষিত নেই। এ গ্রন্থগুলো যাদের রচনা বলে দাবি করা হয়, তাদের পর্যন্ত কোনো মুত্তাসিল সনদ বা অবিচ্ছিন্ন সূত্রও বিদ্যমান নেই। এ বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার জন্য বাইবেল ও বর্তমান খ্রিস্টবাদ সম্পর্কে লিখিত গ্রন্থসমূহ পাঠ করা যেতে পারে। যেমন আল্লামা তাকি উসমানি (হাফিযাহুল্লাহ) কর্তৃক রচিত 'ইসাইয়্যাত কিয়া হ্যায়'। (বাংলায় এর চমৎকার অনুবাদ হচ্ছে, 'খ্রিস্টধর্মের স্বরূপ' নামক বইটি) এবং মাওলানা আব্দুল মতিন সাহেব হাফি. কর্তৃক রচিত, 'বাইবেল বিকৃতি: তথ্য ও প্রমাণ' ও 'খ্রিস্টবাদ বিকৃতি: তথ্য ও প্রমাণ'।

(গ) কোরআনই একমাত্র হেদায়াত ও মুক্তির পথ। এ ছাড়া মানুষের জন্য কল্যাণকর ২য় কোনও পথ নেই৷ সমাজ-বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী বা দার্শনিকের যত দর্শন আছে, যদি কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে অবশ্যই তা মানুষের জন্য অকল্যাণকর। কারণ মানুষের গবেষণা ও সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে, কিন্তু সৃষ্টি সম্পর্কে সৃষ্টিকর্তার কোনো সিদ্ধান্ত ভুল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই৷

(ঘ) সম্পূর্ণ কোরআনের উপর ঈমান আনা৷ কোরআনের ছোট্টতম কোনো আয়াতকে অবিশ্বাস করার নামও কোরআনকে অস্বীকার করা। পুরো কোরআনকে অস্বীকার করা যেমন কুফুরি, তেমনি কোরআনের ক্ষুদ্রতম কোনো আয়াত বা বিধানকে অস্বীকার করাও কুফুরি। কোথাও কোরআন এবং বিজ্ঞানের থিউরি সাংঘর্ষিক হলে, কোরআনকেই সত্য ও সঠিক বলে বিশ্বাস করা। কারণ বিজ্ঞানের গবেষণায় হয়ত কোনো ভুল হচ্ছে। অপর দিকে কোরআন সৃষ্টিকর্তার বাণী, এতে ভুল থাকার বিন্দুমাত্রও সম্ভাবনা নেই। বিজ্ঞানের এমন অনেক থিউরি, যা যুগ বা শতাব্দীর পরিবর্তনে পাল্টে গেছে। কিন্তু কোরআন চিরন্তন সত্য৷ কখনো পরিবর্তন হবার নয়।

(ঙ) কোরআনের প্রতি ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার আরেকটি শর্ত হচ্ছে, রাসুল সা.এর শিক্ষা মোতাবেক হওয়া। তথা রাসুল সা. যেভাবে সাহাবায়ে কেরামকে কোরআন শিখিয়েছেন। এরপর তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী, আইম্মায়ে কেরাম ও উলামায়ে উম্মতের মাধ্যমে প্রজন্ম পরম্পরায় আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে৷ এখন যদি কেউ ইলমে কোরআনের এ ধারার বিপরীতে গিয়ে নিজস্ব বিবেক ও বুদ্ধি দ্বারা কোরআনকে ব্যাখ্যা করতে যায়, তাহলে অবশ্যই তা হবে স্পষ্ট গোমরাহি ও চরমভ্রষ্টতা।

(চ) কোরআনের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি আকিদা হচ্ছে, এটি সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এরপর আর কোনও কিতাব ও শরিয়ত আসবে না। সর্বশেষ নবি মুহাম্মাদ সা. এর উপর অবতীর্ণ হওয়া সর্বশেষ কিতাব এ কোরআন এবং এর মধ্যে থাকা ইসলামি শরিয়ত কেয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে। নতুন কোনও নবিও যেমন আর আসবে না, তেমনি নতুন কোনও আসমানি কিতাব বা শরিয়তও আর আসবে না। হ্যাঁ, কেয়ামতের আগে দাজ্জালকে ধ্বংস করার জন্য ঈসা আ. পৃথিবীতে আগমন করবেন, তবে নবি হয়ে নয়, বরং আমাদের নবির উম্মত হয়ে।

———————
অধ্যায়: কিতাবুল্লাহ
পাঠ: আমাদের উপর কোরআনের হক।

(কোরআন সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনা আসবে, ইনশাআল্লাহ)

12/09/2023

কোরআনুল কারিম হচ্ছে মহা এক বিস্ময়। বান্দার প্রতি মহান রবের বিরাট এক রহমত। যা ভাষা-অলংকার, শব্দের গাঁথুনি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, ভাবের মাধুর্যতা ও বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্যতায় অতুলনীয়, অবর্ণনীয় ও অকল্পনীয়। কোরআন এমন এক মৌলিক গ্রন্থ, যাতে জ্ঞানের সকল শাখা-প্রশাখা সন্নিবেশিত৷

এ কোরআন কোনো গঁদ বাধা গদ্যের বা পদ্যের বই নয়; তবে এমন গদ্যাকারে সুবিন্যস্ত, যাতে কবিতার অন্তমিল, ছন্দ ও স্বাদও বিদ্যমান। এ কোরআন কোনো ইতিহাস বা বিজ্ঞান বিষয়কও গ্রন্থ নয়; তবে সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মৌলিক সকল ইতিহাস ও বিজ্ঞানের হাজারো তত্ত্ব ও তথ্যের ভাণ্ডার এখানে রয়েছে। মৌলিকভাবে এ কোরআন কোনো সাহিত্য-রচনাও নয়; তবে আজ পর্যন্তও কোনো সাহিত্যিক এর দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে পারেনি৷

তৎকালীন কাফির-মুশরিকরা কোরআনকে যখন নবি মুহাম্মাদের রচনা বা সাহিত্যকর্ম বলে প্রচার করতে লাগল, আল্লাহ পাক তখন এর দৃষ্টান্ত পেশ করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। বড়ো বড়ো জ্ঞানী, পণ্ডিত, দার্শনিক ও সাহিত্যিকেরা একত্রে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবার পরও নূন্যতম দৃষ্টান্ত পেশ করতে পারেনি৷ বরং ঘোষণা করেছে,
لَيْسَ هٰذَا كَلَامُ الْبَشَرِ
(এ কোনো মানব রচিত গ্রন্থ নয়)


পবিত্র কোরআনের নীতি-আদর্শ ও শিক্ষা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহর একদিন অভ্যুত্থান হয়েছিল। ইতিহাস বলে, রাসুলে আরাবি সা. হাজারো নির্যাতন-নিপীড়ন ও কষ্ট-যাতনা সহ্য করে মক্কায় দীর্ঘ ১৩ বছর ইসলাম প্রচারের পর মাত্র স্বল্প সংখ্যক লোক ইসলাম গ্রহণ করে। কাফেরদের নির্যাতনে মক্কা থেকে তিনি মদিনায় হিজরত করেন মাত্র একজন সঙ্গী আবু বকর রা.কে নিয়ে। এরপর অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হোন ১০ হাজার সাহাবা নিয়ে। দু'বছর পর বিদায় হজ্বের ভাষণকালে উপস্থিত থাকে লক্ষাধিক সাহাবা।

বিদায় হজ্বের ৮০ দিন পর রাসুলুল্লাহ বিদায় নিলেন। ইন্তেকালের ১৩ তম বছর খলিফাতুল মুসলিমিন হযরত উমর রা. ছিলেন অর্ধ জাহানের শাসনকর্তা। সে সময়ে বিশ্বের সবচে ক্ষমতাধর ও প্রতাপশালী রোম ও পারস্য সাম্রাজ্যও সাহাবায়ে কেরামের ঈমানি শক্তিতে ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। সেখানেও তারা ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেন এবং কোরআনের শিক্ষা বাস্তবায়ন করেন। পরবর্তীকালে এভাবে উমাইয়া ও উসমানি খলিফাগণ হাজার বছর ধরে বিশ্ব শাসন করেন।


বড়ো আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হলো, যখন থেকে মুসলিম জাতি পবিত্র কোরআনের নীতি-আদর্শ ও সুমহান শিক্ষা ভুলে গিয়েছে, তখন থেকেই অধ্বঃপতন শুরু হয়েছে। হাজার বছর বিশ্ব শাসন করা সে পরাশক্তি ও বিজয়ী দল মুসলিম উম্মাহ আজ পদে পদে হোঁচট খাচ্ছে। হারাচ্ছে নিজেদের দেশ ও মানচিত্র। ইরাক-ইরান, লিবিয়া-চেচিনিয়া ও ফিলিস্তিন এর জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ।


আমরা মুসলিম জাতি যদি আমাদের গৌরবমাখা হারানো সে ইতিহাস ফিরে পেতে চাই, তাহলে অবশ্যই পবিত্র কোরআনের নীতি-আদর্শ ও সুমহান শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে।

—————————————
|| প্রথম অধ্যায়: কিতাবুল্লাহ||

(কোরআন সম্পর্কে নিয়মিত আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।)

11/09/2023

পাহাড়ঘেরা আশ্চর্য এক দেশ আফগানিস্তান—এশিয়া-ইউরোপের সদর দরোজা। আরও আশ্চর্য সেই দেশের মানুষ—উদার, অকুতোভয়, আলখাল্লা-পাগড়ি-শ্মশ্রু-শোভিত এবং অতিমাত্রায় স্বাধীনচেতা। ইতিহাসের যে-অপ্রতিরোধ্য সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন দুনিয়ার ১ কোটি ৩০ লাখ বর্গমাইল এলাকা দখল করে ঘোষণা করেছিল 'ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কখনো সূর্য অস্ত যায় না'—সেই ব্রিটেন তিন দফা (১৮৩৯, ১৮৭৮, ১৯১৯) আফগানিস্তানে হামলা করে প্রতিবারই গো-হারা হেরে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়। পরাক্রান্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান দখল করতে যুদ্ধাভিযান চালিয়ে যায় টানা দশ বছর (১৯৭৯-১৯৮৯) ধরে, কিন্তু কিছুতেই-মাথা-নত-না করা পশতুন-পাঠানদের কঠিন প্রতিরোধের মুখে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে অবশেষে পিছু হটে। সবশেষে তালিবানকে বশ করতে মাঠে নামে দাম্ভিক পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতিহাসের দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে (২০০১-২০২১) তারা আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে, হাজার হাজার সৈন্য হারায় এবং নাকে খত দিয়ে ঘরে ফেরে। এখন তালিবান হিন্দুকুশ পর্বতের চূড়ার মতোই উঁচু করে পাগড়ি পেঁচিয়ে মাথা উঁচু করে দেশ চালায়, আফগানিস্তান রয়ে যায় অজেয়।

————————————————
⚪আবদুল হক ॥ মুখবন্ধ: "সিসাঢালা প্রাচীর" ॥ ১১-০৯-'২৩।

10/09/2023

অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হয় সর্বমহলে, সর্বোতভাবে। 'কেউ বলছে না বলে আমিও কিছু বলছি না'—এটি আসলে এক প্রকারের জুলুমেরই নামান্তর। আমরা যদি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবী ও পৃথিবীর হালচালকে অনুকূল অবস্থায় রেখে যেতে না পারি, তাহলে আগামীকাল আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম অবশ্যই আমাদের বকবে। লা'নত করবেন। বদদোয়া দিবে।

হে ঘুমন্ত সিংহশাবক!
জেল-জুলুম আর অবিচারের ভয়ে তুমি যদি জালিমকে স্বাধীন করে দাও, আর এটা ভাবো যে, 'অন্তত আমি তো নির্যাতিত হচ্ছি না।' তাহলে স্পষ্ট মনে রেখ, একদিন তোমাকেও সীমাহীন যাতনার শিকার হতে হবে। আজ নির্বোধ ও অনুভূতিহীন বলে তুমি পরোক্ষ জুলুমের বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছো না, তবে কাল প্রত্যক্ষতার শিকার হলে তো ঠিকই বুঝবে?

কিন্তু তখন আর ক্ষতিপূরণের সুযোগ থাকবে না।

Address


Telephone

+8801779603331

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when তূর্ণপত্র • The Express Letter posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to তূর্ণপত্র • The Express Letter:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share