12/06/2025
ছবিটার দিকে ভালো করে তাকান। ছোট এই নৌকাটিতে পনেরোটা এসি বসানো। বড় নৌকাগুলোতে এসির সংখ্যা আরও বেশি। মাত্র বিশ থেকে ত্রিশজন মানুষের জন্য পনেরোটা এসি। আদর করে এই নৌকাগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে হাউজবোট। প্রতিনিয়ত বোটের সংখ্যা বাড়ছে। বিলাসিতায় কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে সেই তীব্র প্রতিযোগিতা তাদের মাঝে।
হাওরের বিশাল জলরাশিতে নৌকাগুলোর চলাচল। যেখানে শীতল বাতাসের অভাব নাই। কিন্ত এরপরও ফ্যানের ব্যবহার না করে গড়ে দুই জনের জন্য একটি এসির ব্যবহারের যুক্তি কতটুকু?
এসির ভেতরে ব্যবহৃত কুলিং এজেন্ট বা শীতলীকরণ তরল বাতাসে কার্বন ছড়ায়। ফলে উষ্ণায়ন বাড়ে। প্রতি বর্ষায় প্রায় ২০০ হাউসবোট হাওরে অবস্থান করে। সবগুলো এসির ব্যবহার শুরু করলে হাওরে এর কী প্রভাব পড়বে?
তথ্য বলছে, বায়ুমণ্ডলে বছরে কার্বন ছড়ায় প্রায় ৪ হাজার কোটি টন। এসিতে হাইড্রোফ্লুওরোকার্বন নামের একধরনের যে রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হয়, সেটা বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে এক হাজার গুণের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
দ্য ইকোনমিস্ট ২০১৮ সালের ২৫ আগস্ট এক লেখায় অন্য ধরনের দূষণের সঙ্গে তুলনা করে দেখিয়েছে এসির দূষণ কত ভয়াবহ। যেমন, বিশ্বের অর্ধেক মানুষ যদি মাংস খাওয়া বাদ দেয় তাহলে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টন কার্বন বায়ুমণ্ডলে কম ছড়াবে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের উজাড় করা বনভূমির দুই-তৃতীয়াংশ পুনরুদ্ধার করতে পারলে ৬ হাজার ১০০ কোটি টন কার্বন নিঃসরণ কমবে। বিশ্বব্যাপী সাইকেলে চলাচল এক-তৃতীয়াংশ বাড়াতে পারলে ২৩০ কোটি টন কার্বন কমবে। আর সে তুলনায় শুধু এসিতেই কমানো যেতে পারে ১৮ হাজার কোটি টন কার্বন নিঃসরণ!
©Saleh Fuad