03/12/2024
ভারতীয় মিডিয়ায় বস্তুনিষ্ঠতার কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাদের করনীয়
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে মরিয়া ভারতের উগ্রবাদী বিজেপি সরকার ও তার পান্ডারা । এ লক্ষ্যে তারা অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে তথ্য সন্ত্রাসকে। আর কাজটি বিরামহীনভাবে করে যাচ্ছে সাংবাদিকতার নীতি বিসর্জন দিয়ে উগ্রবাদী বিজেপি’র কাছে দাসখত দেওয়া ভারতীয় গোদি মিডিয়া । হিন্দুত্ববাদের উপর ভর করে গড়ে ওঠা উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠন ইস্কনকে সহযোগী হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে চট্রগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে জবাই করে হত্যার মাধ্যমে ইসকন তাদের সেই জঙ্গিবাদী চেহারা জনসম্মুখে উন্মোচন করেছে।
দেশের অভ্যন্তরে ট্রেজান হর্সের ভূমিকায় অবতীর্ণ ইসকন। তারা একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনের মাধ্যমে গোদি মিডিয়ার প্রপাগান্ডার উৎস হিসেবে কাজ করছে। আর সেসব প্রচার করে তারা ভারতীয় জনগণ ও বিশ্ববাসীর সামনে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’কে একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে ভিলেনাইজড করার এ অপচেষ্টা ভারতীয় মিডিয়ার ‘বস্তুনিষ্ঠতার কোষ্ঠকাঠিন্য’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সম্প্রতি রিপাবলিক বাংলা নামের একটি বানরের খাঁচায় এক দুষ্টু বানর প্রতিনিয়ত কুরূচিপূর্ণ নাচন-কোদন করে যাচ্ছে। মূলত সে হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে সাংবাদিক জগতের কলঙ্ক রূপে আবির্ভূত হয়েছে। সম্প্রতি সে একজন ভারতীয় নাগরিককে মাথায় ব্যান্ডেজ পরিয়ে ক্যামেরার সামনে হাজির করে বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। প্রচার করা হয় ব্যান্ডেজ পরিহিত ব্যক্তিটি হিন্দু হওয়ার কারণে বাংলাদেশে আক্রমণের শিকার হয়েছে। পরে প্রমাণিত হলো, ব্যক্তিটি আসলে ভারতীয়, বাংলাদেশী নয়। আবার চট্রগ্রামকে দখল করে নেওয়ার মতো উস্কানিমূলক প্রচারনাও সে চালিয়েছে।
এমন হাজারো অপতথ্য প্রচার করে যাচ্ছে রিপাবলিক বাংলা, এনডিটিভির মতো ভারতীয় মিডিয়া। তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশে দাঙ্গা বাধিয়ে দেওয়া। লক্ষ্য, সামরিক হস্তক্ষেপের পথ তৈরি করা অথবা বাংলাদেশকে আবারো দাসখত দিতে বাধ্য করা। তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে যে সংকটে ফেলেছে তা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
আপনি তথ্য সন্ত্রাসকে তথ্য ছাড়া অন্য কোনকিছু দিয়ে মোকাবেলা করতে পারবেন না। তথ্য দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে। প্রতিপক্ষ যদি একটা মিথ্যা কথা দশটা মুখ দিয়ে প্রচার করে। আপনাকে একশোটা মুখ দিয়ে সত্য তথ্য প্রচার করতে হবে। সেটা না পারলেও অন্তত তাদের চেয়ে একটি বেশি মুখ দিয়ে প্রচার করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিতাপের বিষয় হলো দেশী মিডিয়া অনেকটা দায়সারা ভূমিকা পালন করছে। কেউ কেউ তো কানে তুলা গুঁজে রেখেছে বলে মনে হয়। আমার মতে ভারতীয় তথ্য সন্ত্রাসের এ আগ্রাসনকে মোকাবেলা করতে হলে কয়েকটি পদক্ষেপ ত্বড়িৎ গতিতে নিতে হবে।
•দেশীয় মিডিয়াকে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সক্রিয় করে তুলতে হবে।
•আলজাজিরা, সিএনএন, অনাদোলু এজেন্সি, ডন, ফক্স নিউজের মতো গ্রহনযোগ্য ও বহুল প্রচারিত আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে দেশে এনে সঠিক তথ্যের প্রচার নিশ্চিত করতে হবে।
•ভারতীয় প্রতিটি অপপ্রচারকে একটা একটা করে ধরে বিশ্লেষণ করে সরকারিভাবে বিবৃতি প্রদান করতে হবে। সেটার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচার নিশ্চিত করতে হবে।
•জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল দেশপ্রেমিককে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো সক্রিয় করে তুলতে হবে। যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্বব্যাপি বহুল প্রচারিত ও গ্রহণযোগ্য সেসবে দেশপ্রেমিক ভাই-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে X (টুইটার) প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ভারতীয়দের অবাধ তথ্য সন্ত্রাস চলছে। সেখানে আমাদেরকে সক্রিয় হতে হবে, সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাসকে রূখে দিতে হবে ।
•ইস্যু ভিত্তিক প্রচারের জন্য ইতোমধ্যে গড়ে ওঠা টেলিগ্রাম ভিত্তিক চ্যানেলগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।