
28/05/2025
যিলহজের প্রথম দশকের বিশেষ কিছু আমল 💐🌿
কুরআন ও হাদীসের আলোকে এই দশকের বেশ কিছু আমল ও করণীয় আছে :
১. অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করা। মহান আল্লাহ বলেন, যেন তারা তাদের জন্য স্থাপিত কল্যাণসমূহ প্রত্যক্ষ করে এবং নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। [ সূরা হজ : ২৮]
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, উক্ত আয়াতে নির্দিষ্ট দিন বলে যিলহজের প্রথম দশককে বোঝানো হয়েছে। [ তাফসিরে ইবনে কাসির, ৫/৪১৫]
২. নেক আমল ও ভালো কাজের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া। কেননা, মহান আল্লাহর নিকট অন্যান্য সময়ের আমলের চেয়ে যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল অধিক প্রিয়। [ সহিহ বুখারি, ৯৬৯; সুনানু আবি দাউদ, ২৪৩৮]
৩. অন্য সময়ের তুলনায় এই দিনগুলোতে পাপকাজ পরিহারে অধিক সচেষ্ট থাকা। [ সূরা হজ : ২৮;সহিহ বুখারি, ৯৬৯]
৪. সামর্থ্যবান হলে হজ করা। কেননা, হজ ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের একটি স্তম্ভ। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের ওপর হজ ফরয। আবার কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু্ নয় মর্মে নবীজী (সা.)-এর সুসংবাদ রয়েছে। [ আলে ইমরান, ৯৭; সুনানুত তিরমিযি, ৮১০]
৫. সামর্থ্য থাকলে কুরবানী করা। মহান আল্লাহ বলেন, তুমি নিজ প্রতিপালকের জন্য সালাত আদায় করো ও কুরবানী করো।
[সুরা কাউসার, ২]
৬. কুরবানী করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির কুরবানী করার আগ পর্যন্ত নখ, চুল, ও অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকা। [ সহিহ মুসলিম, ৫০১৫]
এ হাদীসে যদিও কুরবানীদাতাকে চুল, নখ ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে, তবে বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বোঝা যায় যে, যাদের কুরবানী করার সামর্থ্য নেই, তারাও ফযিলতপূর্ণ এ আমলটি করতে পারেন। এমনকি শিশুদেরকেও চুল-নখ কাটা থেকে বিরত রাখা উত্তম। [সুনানু আবি দাউদ, ২৭৮৯; আল-মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন, ৭৫২০]
৭. অধিক পরিমাণে সাধারণভাবে তাকবীর, তাহমীদ ও তাহলীল পাঠ করা। অর্থাৎ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ পড়া। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহর নিকট যিলহজের দশদিনের আমলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও প্রিয় আমল নেই। অতএব, এ দিনগুলোতে তোমরা অধিক পরিমাণে তাকবীর, তাহমীদ ও তাহলীল পাঠ করো। [ আল-মুজামুল কাবির, ১১১১৬]
৮. তাশরীকের দিনগুলোতে প্রত্যেক সালাতের শেষ বিশেষভাবে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা। অর্থাৎ ৯ যিলহজ ফজর থেকে ১৩ যিলহজ আসর পর্যন্ত প্রতি নামাজের পর একবার ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ পাঠ করা। [মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৫৬৩১]
৯. প্রথম নয়দিন সিয়াম পালন করা। কোনো কোনো বর্ণনায় যিলহজের প্রথম নয় দিনই সিয়াম পালনের নির্দেশনা পাওয়া যায়। তাছাড়া এই দিনগুলোর নেক কাজ আল্লাহর প্রিয় হওয়ায় এর সব দিনেই নফল সিয়াম রাখা যায়। অনেক ইমামগণও যিলহজের প্রথম নয় দিন সিয়াম পালন করাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
১০. আরাফার দিন বিশেষভাবে রোযা রাখা। কেননা, আরাফার দিনের রোযা রাখলে আশা করা যায় মহান আল্লাহ তার পেছনের এবং সামনের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। [ সহিহ মুসলিম, ১১৬২]
১১. ঈদের দিনের সুন্নাহসমূহ পালন করা।