09/07/2025
"খাঁচার গাড়িতে চার সন্তান, পথে পথে এক মায়ের কান্না…"
একটি লোহার তৈরি খাঁচার মতো গাড়ি। ভেতরে বসে আছে তিনটি ১৩ মাস বয়সী শিশু। ঠেলে নিয়ে চলছে তাদের ছোট্ট বোন, সাড়ে তিন বছরের মরিয়ম। পাশে মা মোছা: জান্নাত আক্তার। হৃদয় কাঁপানো এমন দৃশ্য দেখা যায় ঠাকুরগাঁও শহরের রাস্তায়।
জান্নাত আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় মোহাম্মদ হাবিলের সঙ্গে। স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী তিনি। এখন ঠাকুরগাঁওয়ের পরিষদপাড়ায় ছোট একটি ভাড়া বাসায় থাকেন চার সন্তান নিয়ে। স্বামী খোঁজ রাখেন না, সংসারে আয়-রোজগারের কেউ নেই। কোনোদিন খাবার জোটে, কোনোদিন খালি পেটে ঘুম।
জান্নাত বলেন,
“খুব অসহায় লাগছে। কখনো ভাবি সব শেষ করে দিই, কিন্তু এই চারটা মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকে আটকাই। খাঁচার মতো এই গাড়িটা নিজেই বানিয়েছি, যাতে বাচ্চাগুলারে নিয়ে বের হতে পারি। কেউ কিছু দেয়, কেউ দেয় না। তবু চেষ্টা করি যেন ওদের না খেয়ে থাকতে না হয়।”
অভাবের তাড়নায় এক সময় আ-ত্ম-হ-ত্যার চিন্তাও করেছিলেন তিনি। কি/ড/নি বিক্রির কথাও ভাবেন। কিন্তু নিজের অসুস্থতা আর ছোট সন্তানদের জন্য সব চিন্তা বাদ দিতে হয়।
জান্নাতের আকুতি,
“একটা ঘর চাই। একটু সহযোগিতা চাই। যাতে সন্তানদের মুখে একমুঠো ভাত তুলে দিতে পারি।”
পরিষদপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন দেখি ওকে রাস্তায় ঘুরতে। খুব কষ্ট হয়। সমাজের সবাই যদি পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে এরাই তো নিঃশেষ হয়ে যাবে।”
স্থানীয় দোকানদার মো. আলম বলেন, “সাধ্যমতো সাহায্য করি, কিন্তু এটা তো বড় পরিসরের দায়িত্ব। সরকার বা কোনো মানবিক সংগঠন পাশে দাঁড়ালে পরিবারটা একটা নতুন জীবন পাবে।”
এখনো প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বের হন জান্নাত — শুধুমাত্র সন্তানদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে।
আপনার একটু সহানুভূতি বদলে দিতে পারে একটি পরিবারের ভাগ্য। পাশে দাঁড়াই, মানুষ হই।