Kih reh buaah?

Kih reh buaah? "তবে,
যা তুমি চাও,
যদি তা না পাও,
তবেই বুঝবে— এটাই ভালোবাসা।"

10/02/2025

"তবে, যাহা তুমি চাও, তাহা যদি না পাও, ইহাই হচ্ছে ভালোবাসা। যখন তুমি কোনো কিছু পাওয়ার আশা করো, কিন্তু তা পাওয়া হয় না, তখন যেন এক অদৃশ্য কান্না হৃদয়ের ভেতর জমে যায়। এই কষ্ট, এই অক্ষমতা, এসব কিছু তোমার ভালোবাসার তীব্রতা এবং তার বিশালতা উপলব্ধি করায়। 'না পাওয়া' আসলে তোমার অস্থির মনের এক চিহ্ন—যেখানে তোমার ভালোবাসা অতিরিক্ত হয়ে ওঠে, পূর্ণতা খোঁজে, আর সেই 'না পাওয়ার' মাঝে একটা অপূর্ণতার মায়া তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত এক অসীম ভালোবাসার দিকে নিয়ে যায়।"

07/01/2025

উপন্যাস :
আসছে, নয়নতারার শেষ চিঠি। 🖤⏳

01/01/2025

উপন্যাস: তাহার অপেক্ষায় (5)
coming soon 🤍

23/11/2024

উপন্যাস: তাহার অপেক্ষায় (4)

আহাদ স্কুলে যাচ্ছে না, প্রায় এক মাস হয়ে গেল। কী হয়েছে, কেন যাচ্ছে না, তা জানতে অমি সেদিন আহাদের বাড়ি গেল। দরজা খুলতেই আহাদ অবাক!
"এতদিন পর দেখা, কেমন আছিস তুই?" বলল আহাদ।
অমি হেসে বলল, "এইসব বাদ দে। আগে বল, স্কুলে যাচ্ছিস না কেন? কী সমস্যা তোর?"
আহাদ শান্তভাবে উত্তর দিল, "তেমন কিছু না। ভালো লাগে না, তাই যাই না। চল, পুকুরপাড়ে একটু ঘুরে আসি।"

কথা শেষ হতেই তারা দু'জন পুকুরপাড়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।

পুকুরপাড়ে পৌঁছে অমি আবারও বলল, "পড়াশোনা কতদূর এগিয়েছে, খেয়াল আছে তোর? আর শোন, আমাদের ক্লাসে নতুন একটা মেয়ে এসেছে। তুই চাইলে পটিয়ে দিতে পারি!"
আহাদ একটু আগ্রহ নিয়ে বলল, "নাম কী?"
"নাম জানি না। কিন্তু দেখতে পুরাই পরির মতো!"
"সত্যি?"
"হুম। তাহলে বল, পটিয়ে দিবো কি?"
আহাদ হেসে বলল, "পটানোর দরকার নেই। বন্ধু বানিয়ে দিলেই চলবে।"
অমি মজা করে বলল, "ঠিক আছে। কিন্তু কাল তুই স্কুলে আসতেই হবে।"
"আচ্ছা যাব। তুইও আসিস, আর সবাইকে বলতে ভুলিস না।"

সন্ধ্যার আড্ডা শেষে আহাদ অমিকে তার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে নিজের বাসায় ফিরে এল। বাড়ি ফিরেই বই-খাতা গুছাতে লাগল। এসব দেখে তার মা জাবিহা খাতুন বললেন,
"কি ব্যাপার আহাদ সাহেব? কাল তাহলে স্কুলে যাবেন?"
আহাদ মুচকি হেসে বলল, "জি, কাল থেকে নিয়মিত স্কুলে যাব।"
মা বললেন, "দেখা যাক।"
রাতে আহাদ খেয়ে শুয়ে পড়ল। সকালে উঠতে হবে যে!

সকালে সাতটা তিরিশে আহাদের মা তাকে ডেকে তুললেন। ঘুমঘুম চোখে উঠল আহাদ। ফ্রেশ হয়ে, খেয়ে-দেয়ে রেডি হয়ে স্কুলে বেরিয়ে পড়ল।
স্কুলে তখন সবাই পৌঁছে গেছে—মিনু, অমি, রিফাত, মিম, আলিফ। শুধু আহাদ বাকি! কিছুক্ষণ পরই সে এসে হাজির। ওকে দেখে মিনু বলে উঠল,
"মামা, আমাদের ক্লাসে নতুন একটা মেয়ে এসেছে। রুমে গিয়ে দেখে আয়!"

আহাদ অস্বস্তি নিয়ে বলল, "রুমে তো সব মেয়েরা! আমি লজ্জা পাই। তুই চল, আমি শুধু ব্যাগ রেখে চলে আসব।"
মিনু হাসতে হাসতে বলল, "চল লজ্জাবতী মশাই!"

তারা ক্লাসে ঢোকার সময় আহাদ মিনুকে বলল, "তুই আমাকে ধাক্কা দে, আমি যেন অপ্রত্যাশিতভাবে ঢুকি।"

মিনু হেসে কুটিপাটি! "ঠিক আছে," বলেই সে আহাদকে ধাক্কা দিল। আহাদ রুমে ঢুকে দেখে মেয়েদের মধ্যে একজন নতুন মেয়ে। তার মনে হলো এটাই হয়তো সেই মেয়ে যার কথা অমি আর মিনু বলছিল।

ব্যাগ রেখে আহাদ বাইরে চলে এলো। সবাই মিলে আড্ডা দিতে শুরু করল। ক্লাস শুরু হলে তারা রুমে ফিরে গেল।

টিফিন পিরিয়ড

টিফিনে ক্লাসরুমে মেয়েরা গান গাইছিল। অমি বিরক্ত হয়ে বলল, "এই চিল্লা-চিল্লি বন্ধ করো তো!"

এই শুনে নতুন মেয়েটি তিরিক্ষি স্বরে বলল, "আমাদের দিকে তাকাতে কে বলেছে? লজ্জা হয় না?"
আহাদের রাগ চড়ে গেল। "তোমার এমন কী চেহারা, যে তোমার দিকে তাকাবে"

এই কথায় মেয়েটি রাগান্বিত দৃষ্টিতে আহাদের দিকে তাকিয়ে রইল। পাশে বসে মিনু পুরো দৃশ্য উপভোগ করছিল। এভাবেই দিনটা শেষ হলো
আহাদের বন্ধু বলতে অমি, মিনু, মিম, আলিফ, আর রিফাত। এদের পরিচয় দিতে গেলে গল্প ফুরোবে না!
অমি:
অমি হলো সেই বন্ধু, যে সবসময় একটা গান নিয়ে হাজির হয়। ক্লাসে পড়ার সময় গুনগুন করে গান গাইতে গিয়ে স্যারের বকুনি খাওয়া ওর নিত্যদিনের ব্যাপার। বন্ধুরা ওকে নিয়ে মজা করলেও, অমি গানের প্রতিভা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। স্কুলের কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অমি মানেই সবার আগে গান শোনার জন্য হুড়োহুড়ি!
মিনু:
মিনু পুরো ক্লাসের বিনোদনের মূল উৎস। কথায় কথায় এমন কিছু বলে, যা সবাইকে হাসিয়ে দেয়। টিফিনের সময় মিনুর সাথে থাকলে কেউ কখনো খারাপ মুডে থাকতে পারে না। তবে মজার মানুষ হলেও, ক্লাসের পড়ালেখায় বেশ সিরিয়াস।
আলিফ:
আলিফ হলো পুরো ক্লাসের 'হ্যান্ডসাম বয়।' স্কুলের যেকোনো নাচের প্রতিযোগিতায় আলিফ মানেই সেরা পারফরম্যান্স। ওর স্টাইল আর আত্মবিশ্বাস দেখে সবাই মুগ্ধ। বন্ধুরা মজা করে বলে, "আলিফের মতো নাচতে পারলে সেলিব্রিটি হয়ে যেতাম!"
মিম:
মিম একটু চুপচাপ স্বভাবের, কিন্তু বন্ধুত্বের দিক দিয়ে সবার কাছে খুব প্রিয়। ও কথা কম বলে, কিন্তু ওর চোখের ভাষা যেন সব বলে দেয়। যখন বন্ধুরা বেশি দুষ্টুমি করে, মিমের এক চাহনিতেই সবাই শান্ত হয়ে যায়।
রিফাত:
রিফাত ক্লাসের সবচেয়ে পরিশ্রমী ছেলেদের একজন। পড়াশোনা, খেলাধুলা, বা স্কুলের যেকোনো কাজে রিফাত সবসময় তার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করে। বন্ধুরা ওকে নিয়ে গর্ব করে কারণ ওর মতো উদার মন আর কারও নেই। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে রিফাতই সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।

এরপরের দিন আহাদ জানতে পারে সেই মেয়েটির নাম সামিয়া। সামিয়া তাদের পরিবারের দ্বিতীয় মেয়ে। তারা তিন ভাই-বোন, এবং সে এবার অন্য স্কুল থেকে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে।
এদিকে আহাদ মনে মনে ভাবলো, "সামিয়া যেমন মেয়ে, তার সাথে প্রথম পরিচয় ঝগড়ার মধ্যে দিয়ে হলো। আবার নাকি বন্ধু হবে!" এইসব ভাবতে ভাবতে সে একটু হেসে উঠলো। মিনু বলল, "হাসতেসিস কেন?" আহাদ বললো, "এমনি।"
এভাবেই দিনগুলো কাটতে লাগলো আহাদের। এখন তেমন সাইবার কথা তার মনে পড়ে না, সে শুধু তার পড়াশোনা এবং বন্ধুবান্ধব নিয়েই ব্যস্ত থাকে।

একদিন আহাদ লক্ষ্য করলো, কিছুদিন ধরে বাবুর সাথে তেমন কথা হয় না। তাই সে ভাবলো আজকে তার সাথে দেখা করবে। বিকেলে তারা আবার তাদের প্রিয় মাঠে বসে গল্প করতে থাকে। একসময় বাবু বলল, "তোমার স্কুল জীবন কেমন যাচ্ছে?"
আহাদ: "হুম, ভালই যাচ্ছে।"
বাবু: "মেয়ে ফ্রেন্ড নেই, কেউ?"
আহাদ: "না, এখনো হয়নি। দেখি কি হয় সামনে।"
বাবু: "সাইবার কথা মনে পড়ে না?"
এই কথা শুনে আহাদ খানিকক্ষণ চুপ করে থাকলো। তারপর বললো, "মনে পড়লেও কি করবো বলো? তার সামনে গিয়ে তো আর বলতে পারব না যে, 'তোমাকে ভালো লাগে, তুমি কি আমার বন্ধু হবে?' জানোই তো আমি কেমন। তবে আমার মনে হয়, সে আমাকে চিনেই না এখনো, আমার সম্পর্কে কিছু জানে না, আমার অনুভূতিগুলো তার জানা নেই। সেদিনের পর তাকে আর সামনে থেকে দেখিনি, জানি না এখন দেখতে কেমন হয়েছে।"
বাবু: "তাকে ভালোবাসে ফেলেছো তাই না?"
আহাদ: "ভালোবাসি কি না জানি না, তবে এটা বলব, তার নাম শুনলেই অন্যরকম ভালো লাগে, তার কথা ভাবলেই মুখে অজান্তেই হাসি চলে আসে।"
বাবু: "বুঝছি আমি।"
সেদিনের মতো আড্ডা দিয়ে তারা বাড়ি ফিরে যায়।

কিছু দিন পর আহাদ স্কুলে যায়। সেদিন তেমন কেউ আসে না, শুধু মিনু ছাড়া। তাই আহাদ আর মিনু হোটেলে গিয়ে কিছু খাওয়াদাওয়া করে। তারা খাওয়া শেষ করে আহাদ বিল দেয় এবং তারা হোটেল থেকে বের হয়ে আসে। ক্লাসরুমে বসে গল্প করতে থাকে।
ঠিক তখন মিনু বলে উঠে, "মামা, তুই কি বিল দিয়েছিস?"
আহাদ বলে, "হ্যাঁ, আমি তো দিলাম বিল। কেন, কি হয়েছে?"
মিনু বলে, "আরেহ মামা, কি করেছিস! আমি তো বিল দিয়েছি। চল, চল টাকা ফেরত নিয়ে আসি।"

আহাদ ও তার সাথে সহমত পোষণ করে। তারা হোটেলের দিকে যেতে থাকে। ঠিক মাঝপথে মিনু খিল খিল করে হেসে বলে, "আমি তো মজা করছি, তো সাথে একটু মজা করলাম, আমি তো বিল দেইনি।" এটা শুনে আহাদের মাথা গরম হয়ে যায়। মিনুকে ধরার জন্য সে তার পেছনে দৌড়াতে থাকে। "মিনু, তুই থাম, আজকে তোর খবর আছে!" মিনু তো আর থামে না, সে দৌড়াতেই থাকে।
মিনু মেয়েেরা যেখানে খেলা করে, সেখানে গিয়ে বসে থাকে। আহাদ আর কিছু বলে না, সে ক্লাসরুমে চলে আসে।
একটু পর মিনুও আসে এবং আহাদকে বলে, "মামা, সরি, ভুল হয়ে গেছে, এবারের মতো মাফ করে দে।" আহাদও বেশি কিছু বলল না।
মিনু আহাদকে বলে, "তুই কি জানিস, অমি আমাদের ক্লাসের একজনকে ভালোবাসে?"
এটা শুনে আহাদ অবাক হয়ে বলে, "কে? কাকে ভালোবাসে অমি?"
মিনু বলে, "আমিও জানি না, শুধু শুনলাম কালকে তার কাছ থেকে শুনতে হবে।"
আহাদও বলে, "হুম, কালকে আসুক স্কুলে, তারপর শোনা যাবে। সে কাকে ভালবাসে?"

চলবে.....

08/10/2024

উপন্যাস: তাহার অপেক্ষায় (4)
coming soon 🤍

19/08/2024

উপন্যাস - তাহার অপেক্ষায়
পার্ট -3
আজ কিছু দিন হচ্ছে আবহাওয়া খুব একটা ভালো না
খুব গরম পরেছে। তাই আহাদ, রাফি,নীর তারা ঠিক করলো তারা তাদের স্কুলের পাশের মাদ্রাসার পুকুরে গোসল করবে কালকে। তাই আহাদ সবাইকে বলে দেয় যেন কালকে সবাই এক্সট্রা পেন্ট নিয়ে আসে। যা ভাবা তাই কাজ ।
আজকে সবাই গোসল করবে বলে এক্সট্রা পেন্ট নিয়ে এসেছে। তারা ঠিক করে টিফিন টাইমে গোসল করতে যাবে। ঠিক এই সময়
সজল বলে তোরা সবাই পুকুরে গোসল করতে জাবি আমাকে ছাড়া.?
আহাদ বললো কালকে স্কুলে কেনো আসিস নি? কালকেই তো -সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে যেন এক্সট্রা পেন্ট নিজে আসে।
- সজল বললো কালকে নাহয় আসিনি তাই বলে আমি গোসল করবোনা?
- তোকে কেও মানা করেছে? তুই নাহয় স্কুল ড্রেস পরেই পুকুরে গোসল করবি।
এই বলে সবাই পুকুরের দিকে রওনা দিলো।
পুকুরের কাছে আসতেই সবাই পেন্ট চেঞ্জ করে নিলো তারপর একে একে আহাদ, আসিফ, নীর রাফি এর সবাই পুকুরে নেমে পড়লো। কিন্তু সজল এখনো পুকুর পারে দাঁড়িয়ে আছে, সে কি করবে বুঝতে পারছে না। তখনি আহাদ বললো সজল নেমে পর এত কি ভাবছিস? কিন্তু সজল তখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।
তাই আহাদ ও আর মাথা ঘামালো না। তারা এভাবে পুকুরে ডুবে মজা করতে থাকে একটু পরে সজল কিভাবে গোসল করবে সেটার উপায় বের করতে থাকে, কারণ স্কুল ড্রেস ভেজানো যাবে না। একটু পরে তার চোখ পড়ে পুকুর পারের সাইডের দেয়ালের উপরে। ওখানে একটা পুরনো জাঙ্গিয়া ঝুলিয়ে রাখা।
খানিক ক্ষণ পর রাফি আহাদ কে বলে মামা দেখ সজল ।
- সবাই দেখে সজল কার যেনো একটা চেরা ফুটো ওয়ালা জাঙ্গিয়া পরে আছে। এটা দেখে সবাই হাসতে শুরু করে।
- তার জাঙ্গিয়া পুকুরে নামার আগেই খুলে পরে যাচ্ছিল তখন সে ভালো করে বেঁধে নেয়। পরে যে পুকুরে নামে। এটা দেখে আর মজা নিতে থাকে সবাই। এভাবেই কিছুক্ষন যায়। একটু পরে পুকুর পার থেকে কিছু মেয়ে আমাদের ইঙ্গিত দিয়ে বলে মাদ্রাসার হুজুর আসতেসে লাঠি নিয়ে তাড়াতাড়ি পালাও এইটা শুনে আহাদ, রাফি, আসিফ যারা ছিল সবাই পুকুর থেকে উঠে দৌড়ায় পালিয়ে যায়। কিন্তু সজল তখনো পুকুরে কারণ, সে যদি পুকুর থেকে উঠে তাহলে তার জাঙ্গিয়া খুলে যেতে পারে কারণ ঐটা অনেক বড় ছিল সাইজ অনুয়ায়ী। কিন্তু হুজুর যখন চলেই আসতেছিল, ঠিক তখনি সজল পুকুর পাড় থেকে উঠে লাগে ঠিক তখনি জাঙ্গিয়া পানির ভারে খুলে যেতে লাগে। ঠিক সেসময় সে হাত দিয়ে ধরে দৌড়ানি দেয় পাশের বাগানে। এইটা দেখে পুকুর পাড়ের যত ছেলে মেয়ে ছিল সবাই হাসতে শুরু করে দেয়। এই কাহিনী শুনলে আজও হাসি পায়। ভাগ্যক্রমে সেদিন সজল বেঁচে গিয়েছিল।

__________________________________________

প্রকৃতির সৌন্দর্য তার নিজ সজ্জায় সাজিয়ে নেয়।
যেমন ফুল তার সৌন্দর্যে আমাদের মায়ায় জড়িয়ে ফেলে।
চারদিকে কোলাহল মনোরম পরিবেশে। কিন্তু একি থম থমে হয়ে আছে আহাদের রুম কারণ টা হলো
আজ আহাদের পিএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে।
আহাদের আজকে খুব চিন্তা হচ্ছে, নাজানি কি রেজাল্ট আসছে তার। একটু পরে তার বড় ভাই জিসান তাকে ডাক দেয়, সে ভয়ে ভয়ে দিয়ে ভাইয়ের সামনে দাঁড়ায়।
জিসান বললো আরেকটু হলেই তো ফাইল করতি।
কোনরকম টেনেটুনে পাশ করেছিস 3.50 পেয়ে।
আহাদ পাশ করেছে শুনেই খুশি হয়ে যায়। সে ভেবেছিল সে ফাইল করবে। বাসার সবাই মোটামুটি খুশি কারণ আহাদ কে কেও কখনো চাপ দেয়নি তার ইচ্ছা তাকে প্রাধান্য দিয়েছে।
______________________________________

নতুন জীবন শুরু হলো আহাদের। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবার উচ্চ বিদ্যালয়ে উঠেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব বন্ধুবান্ধব অন্য অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। আহাদ অন্য বিদ্যালয়ে। তো স্কুল শুরু হওয়ার আর কিছু দিন আছে, তাই আহাদ ভাবলো এই কয়েকটা দিন বাবুকে সাথে নিয়ে সাইবাদের এলাকায় যাবে। যা ভাবা তাই কাজ প্রতিদিন তার এলাকার যায় কিন্তু কখনো দেখা পাইনি। এতে আহাদের নীহাত দুঃখ কম না। বাবু তাকে আশ্বাস দেয় এক না এক দিন দেখা হবেই। এভাবে স্কুল খোলার দিন ঘনিয়ে আসে।
______________________________________

সকাল 8 : 30 আহাদ রেডি হচ্ছে আজকে তার প্রথম দিন স্কুলে। তাই একটু তাড়াতাড়ি যাচ্ছে সে। নতুন স্কুল নতুন বন্ধু, সব কিছু নতুন তার কাছে । প্রথম দিন টা তার ভালই যায় । স্কুলে কয়টা বন্ধু বানিয়েছে তাদের মধ্যে মিলন যাকে মিনু বলে ডাকে আহাদ, মিম হাসান, ওমি, আলিফ এরাই তার নতুন পথ চলার সঙ্গী। আহাদের নতুন জীবন ভালো ভাবেই যেতে থাকে, স্কুলের পড়াশোনা নতুন বন্ধুবান্ধব খেলাধুলা আরো কত কি। এসবের মাঝে সাইবাকে প্রায় ভুলেই দিয়েছে আহাদ। তার কথা হঠাৎ হঠাৎ মনে পড়ে।
যখন মনে পড়ে তখন সে বুক ফুলিয়ে নিশ্বাস নিয়ে বলে এক না এক দিন তো দেখা হবেই কোথাও হবে, আমি নাহয় সেদিনের অপেক্ষায় থাকলাম।

এদিকে সাইবা এবার পিএসসি পরীক্ষার দিয়েছে রেজাল্ট জিপিএ-5 সে অনেক ভালো স্টুডেন্ট ক্লাস টোপার।
সে তার মতো পড়াশুনা করতে থাকে। এদিকে মাঝে মধ্যে সাইবার দেখা পেতো আহাদ আর বাবু যখন তারা ক্রিকেট খেলতো কিন্তু এখনো আহাদের খুব করে ইচ্ছা করে তার সাথে গিয়ে কথা বলতে বন্ধু হতে কিন্তু সে লজ্জায়, সরমে ভয়ে তার সামনে যেতে পারেনা, জানিনা আদৌ পারবে কিনা।

সময়টা 2018 হঠাৎ পারিবারিক সমস্যার জন্য আহাদের বাসা টা ছেড়ে দিতে হয়। তারা তাদের এলাকার ছেড়ে অনেক দূরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করে। এতে আহাদের মন সব সময় খারাপ থেকে। তার জন্ম থেকে বেড়ে উঠা যেই খানে সেখান থেকে সে চিরতরে চলে এসেছে অজানা অচেনা জায়গায়। তার বাবুর কথা বড্ড মনে পড়ছে। সে থাকলে সব সময় অ্যাড দেয়া ক্রিকেট খেলা আর কত কি করত তারা। তার কোনো হিসাব নেই।

কিছু মাস এভাবে যায়। সাইবার আহাদের বাসার সামনে দিয়ে যায় স্কুলে। কিন্তু অনেক দিন হলো সে আহাদ কে দেখেনা, নাহলে বাবু আর আহাদকে সব সময় মাঠে খেলতে দেখতো। কি হয়েছে আহাদের কোথায় সে, কেমন আসে ? হয়তো এইসবই ভাবছো সাঈবা, হয়তো হ্যাঁ হয়তো বা না। বাবুরা তাদের বাসার সামনে দোকান দিয়েছে বেশ কিছু মাস হলো। তো একদিন সাইবার বাবুদের দোকানে যায়। আর ভাগ্যক্রমে বাবু সেদিন দোকানে ছিলো।
সাইবার চকলেট নিতে এসেছিল বাবু তাকে চকলেট দিলো। তখন হঠাৎ সাইবার বলে; আচ্ছা ভাইয়া ওই বাসায় একটা ভাইয়া থাকতো সে এখন কোথায় ? অনেক দিন দেখিনা নাহলে তোমার ক্রিকেট খেলতে। কোথায় সে কেমন আছে? বাবু বললো।
- তারা তো এখান থেকে চলে গেছে তারা এখন অনেক দূরে থাকে । কেনো কিছু দরকার? সাইবার বললো না অনেক দিন দেখিনা তাই বললাম আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাই। এই বলে সাইবা চলে গেলো। বাবু ভাবলো এই খবর আহাদ কে দিতেই হবে। এত দিনে সে আহাদের কথা বলেছে তার মানে অবশ্যই তারও আহাদকে ভালো লাগতো।
__________________________________________

আহাদ সামনের মাসেই ক্লাস 7 এ উঠবে। আরেকটা ভালো কথা হচ্ছে তারা আগের বাসার কাছাকাছি বাড়ি করেছে, যা আগের বাসা থেকে 5-7 মিনিট দূরে। আহাদ বাবুর সাথে দেখা করে। তখন বাবু সব কিছু খুলে বলে যে সাইবা তার কথা বলেছিল। এইসব কিছু শুনে আহাদ এত খুশি হয় যা বলার বাহিরে, সেদিন কত বার যে বাবুকে বলছে যে এইটা আদৌ সত্যি কি না, তা বলার বাইরে। কিন্তু অনেক বছর হচ্ছে সে সাইবাকে দেখেনি, জানেনা সে এখন কেমন আছে কোথায় আছে আদৌ কি সে তার কথা মনে রেখেছ? আরো কত কি ভাবছে আহাদ। এভাবে একদিন আহাদ বাসা থেকে বের হয় রাস্তায়। তো হঠাৎ দূরে চোখ করে একটা মেয়ে যাচ্ছে, তার কেনো যেন মনে হয় সেটা সাইবা হবে । সে তাড়াতাড়ি যেতে থাকে একটু কাছে যেতেই দেখতে পায় সেটা আসলেই সাইবা । এত দিন এত মাস এত বছর পর তাকে দেখে আহাদ দাঁড়িয়ে পড়ে। সে কি বলবে কি করবে কিছু বুঝতে পারে না। এদিকে সাইবা চলে গেলো তার গন্তব্যে, সে হয়তো খেয়াল করেনি আহাদ কে কারণ সে অন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল।
সেদিনের পর আর দেখা পায়নি আহাদ।
চলবে...
® আরিফ ইসলাম

26/01/2024

উপন্যাস: তাহার অপেক্ষায়
------------------------------
পার্ট -2
পড়ন্ত বিকেল, মাঠে একা বসে আছে আহাদ। সে কিছু একটা নিয়ে ভাবছে, কিন্তু বোঝার উপায় নেই কি নিয়ে ভাবছে। এমন সময় সেখানে নাহিদ আসলো। নাহিদ আর আহাদ একই এলাকায় থাকে, নাহিদ খুব দুষ্টু প্রকৃতির ছেলে সারাক্ষণ শুধু দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় খেলে। পড়াশোনা করে না বললেই চলে সব সময় এইদিক ঐদিকে ছুটে চলে।
- নাহিদ বললো, আহাদ এখানে বসে কি ভাবছিস? মন খারাপ নাকি ?
- না মন খারাপ না আসলে আজকে পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে। আমি 3 বিষয়ে ফেল করছি।
- চিন্তা করিস না এইগুলা কিছু হবে না শুধু তোর আব্বুর কাছে একটু কেলানি খাবি এটুকুই তো বেপার না।
- নাহিদের এমন কথা শুনে আহাদের খুব রাগ উঠছে। মনে হচ্ছে যেনো নাহিদকে বেট দিয়ে পেটাতে।
- আচ্ছা তুই থাক আর ভাব কি করবি। আমি বড়ই বাগানে গেলাম বড়ই গুলো নাকি খুব বড় হইছে, যাই চুরি করে আসি। এই বলে নাহিদ সেখান থেকে চলে গেলো।
এদিকে আহাদের মনের অবস্থা ভালো না। তার বাবা খুব রাগী প্রকৃতির মানুষ, সন্তানদের খুব শাসনে রাখেন। এই ভয়ে আহাদ বাসায় যেতে পারছে না, যদি বাবা পেটায়।
________________________________

রাত 8 টা আজ খুব তারাতারি আহাদ শুয়ে পড়েছে।
মাইর খাওয়া ভয়ে। সারা রাত ভাবতে ভাবতে চলে যায়। কিন্তু আহাদের চোখে ঘুম আসে না। এভাবে রাত 3 তার পরে তার চোখ লেগে যায়।
সকাল সকাল স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেয় আহাদ। স্কুলে যাওয়ার পর আজ রাফি, সজল, নীর সবাই এসেছে।
তারা গল্প করতে থাকে। কথায় কথায় আহাদ বলে তার একটা মেয়েকে ভালো লাগে। এটা শুনে সবার চোখ চড়কগাছ। কারণ যে খেলে মেয়েদের দিকে দেখতেই লজ্জা পায়, সে ছেলে নাকি একটা মেয়েকে ভালো লাগে।
রাফি বলে নাম কি মেয়েটার ?
- নাম সাইবা।
- বাবাহ অনেক সুন্দর নাম তো। এই বলেই সবাই আগ্রহের সাথে বলে বাসা কথায় ?
- বাসা রূপপুর।
- কি বলিস রূপপুর ! রূপপুর তো তাসিফ এর বাসা। বললো সজল।
সাথে রাফি, নীর ও বললো হ্যাঁ রূপপুর তো তাসিফ এর বাসা।
তাসিফ তাদের বন্ধু একই শ্রেণীতে পড়ে।
- ঐযে দেখ তাসিফ,,ওই তাসিফ এইদিকে আয়। বললো রাফি।
- হ্যাঁ বল।
- তোর তো বাসা রূপপুরে তুই কি সাইবা নামে কোনো মেয়েকে চিনিস ?
- আর চোখে তাকিয়ে বললো তাসিফ কেন বলতো?
- সবাই একসাথে বললো আগে বল চিনিস কি না!
- হ্যাঁ সাইবা নামে তো একটা মেয়ে আছে আমাদের এলাকায়।
এটা শুনে আহাদ মুচকি হাসলো আর বললো আজ বিকালে তোদের এলাকায় যাবো ।
- আচ্ছা আসিস কিন্তু এখন তো বল কেন সাইবার কথা বললি?
- সবাই বললো আমাদের আহাদ ওই মেয়েটাকে ভালো লাগে তাই ।
ও আচ্ছা এই বেপার । কিন্তু সে তো এমন মেয়ে না।
- এমন মেয়ে না মানে ? সবাই জিজ্ঞাসা ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইল তাসিফ এর দিকে। তাসিফ বললো, ওই মেয়ে কারো সাথে কথা বলে না। আর এলাকাতেও কোনো মেয়ের সাথেই চলে না। সে সবাইকে এড়িয়ে চলে। মনে হয়না কাজে দিবে তোর ভালোবাসা।
- এটা বলতে সবাই আসিফ কে পেটাতে থাকে। আর বলে তুই তো আগেই কুফা ধরিয়ে দিলি, এখন যদি সাইবা না কথা বলে তাহলে তোর খবর আছে।
------------------------------------
কয়দিন হলো আহাদ সাইবার দেখা পায় না। তাই তার একটু মন খারাপ । জাবিহা খাতুন বলেছেন আজ বিকেলে নানু বাসায় বেড়াতে যাবে। এটা শুনে আহাদের মন ভালো হয়ে যায়। তার নানু বাসায় অনেক ছোট বেলার বন্ধু আছে। সাথে চোখ জুড়ানো সবুজ গ্রাম মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
নানু বাড়িতে গিয়েই তার বন্ধুদের সাথে চলে যায় বিলে। সেখানে জেলেদের মাছ ধরা দেখে। আর প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর্য উপভোগ করে। নানান রঙের ফুল অযত্নে বেড়ে উঠেছে বিলের পানিতে। সবুজে আচ্ছন্ন পুরো বিল। সাথে অতিথি পাখিদের কোলাহল মন জুড়িয়ে দেয় আহাদের। এরপরে তারা চলে যায় আখ ফার্ম এ সবাই ইচ্ছে মত আখ খাচ্ছে। খাওয়া শেষে ফিরে আসে নানু বাসায়। সুফিয়া খাতুন আহাদের নানু। তিনি তার ছোট ঘরে একাই থাকেন। সুফিয়া খাতুন আহাদকে দেখে বলে কোথায় ছিলে এতক্ষণ ?
- এইতো নানু ঘুরতে গিয়েছিলাম আজকে অনেক জায়গায় ঘুরেছি বিয়ে গিয়েছি প্রকৃতির সুন্দর্য উপভোগ করেছি।
- সুফিয়া খাতুন হাসলেন আর বললেন শুধু ঘুরলেই হবে ? খেতে হবে না বুঝি ? যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো তোমার জন্যে অপেক্ষা করে আছে তোমার আম্মু।
- জি নানু যাচ্ছি বলে আহাদ ফ্রেশ হতে চলে যায়।
বিকেলে আহাদ তার বন্ধুদের সাথে চা বাগানে আসে। তখন মিলন বলে আহাদ তুই কয়দিন থাকবি?
- আজকের দিন টা আছি কাল চলে করতে হবে।
তখন জুয়েল বললো এর তাড়াতাড়ি চলে যাবি ! কিছু দিন থেকে যা।
- না মা থাকতে দিবে না। ডিসেম্বরের ছুটিতে আসবো তখন অনেক মজা করবো।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
-----------------------------------
16 দিন পর..
আহাদ নিয়মিত সাইবাকে লক্ষ করে। লুকিয়ে লুকিয়ে যখন সে রাস্তা দিয়ে যায়। আর পিচ্চিদের দিয়ে বলে তোরা ওকে দেখতে পেলেই শুধু ভাত শাক বলবি।
- পিচ্ছি রাও তাই করে কিন্তু কখনো সাইবা এইসব পাত্তা দেয়নি। সে তার মত যেত। এভাবে চলে যায় দুই বছর।
চলবে....
® আরিফ ইসলাম

26/01/2024

উপন্যাস -1
তাহার অপেক্ষায়
----------------------
পার্ট 1
শীতের সকাল কনকনে শীতে ভেসে আসে মৃদু হিমেল হাওয়া। পাখির মন মাতানো কিচিরমিচির শব্দ, সাথে ফুলের মন কারা সুভাস। সকাল 8 টা বেজে 30 মিনিট।
এখনো ঘুমে বেগোর আহাদ। তার ঘুম বড্ডো প্রিয়। তাকে যদি বলা হয় প্রিয় খাবার নাকি ঘুম ? আহাদ নিঃসন্দেহে ঘুম টাই বেছে নেবে, এতোটাই ভালোবাসে ঘুমাতে। জাবিহা খাতুন এর ছোট ছেলে আহাদ । পরিবারের ছোট সন্তান। জাবিহা খাতুন এর 3 সন্তান বড় ছেলে জিসান মেজো ছেলে মুহিব আর ছোট ছেলে আহাদ। বাবা আবদুল শহীদ। এই 5 জনের বড় পরিবার। জাবিহা খাতুন সেই বেলা থেকে আহাদ কে ডাকতে থাকেন, এখনো তার ওঠার নাম মাত্র নেই। আহাদ, এই আহাদ বেলা কয়টা বাজে খেয়াল আছে ? বললেন জাবিহা খাতুন।
- কয়টা বাজে মা ?
- অনেক বেলা হয়েছে উঠ তারাতারি খালি ঘুম আর ঘুম পড়াশুনা নাই একদম, কি রে উঠলি !
- চট করে আহাদ উঠে পড়ল। ঘড়ির দিকে তাকাতেই চোখ চরক গাছ, এইরে 8 টা 45 বাজে ! 9 টায় তো স্কুল" তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নেয় আহাদ ।
- টেবিলে নাস্তা আছে খেয়ে স্কুলে জাবি বলে দিলাম। বললেন জাবিহা খাতুন।
- না মা দেরি হয়ে গেছে এসে খাবো।
- এই ছেলেটা কখনো মানুষ হবে না" কপাল চাপড়িয়ে বললেন জাবিহা খাতুন।
এদিকে আহাদ স্কুলে যাচ্ছে গান গেয়ে,গেয়ে। আহাদ এবার তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। পড়াশুনায় একদম ফাঁকিবাজ। শুধু ক্রিকেট খেলতে আর ঘুমোতে ভালোবাসে। ক্লাসে এসেই আহাদ তার বন্ধুদের সাথে কলাকৌশল শেরে নেয়। আহাদের বন্ধু খুব কম ছিল কারণ সে খুব লাজুক প্রকৃতির ছেলে। যে তার সাথে কথা বলতে আসবে শুধু তার সাথেই কথা বলবে কখনো আগ বাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলে না। তার বন্ধু হাতে গণা কয়েকজন তাদের মধ্যে নীর সজল,রাফি খুব ভালো বন্ধু। আজ নীর, সজল এরা কেও আসেনি। শুধু রাফি এসেছে। রাফি বলল, আচ্ছা আহাদ শুনেছি তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলে নাকি খুব বড় হয়ে যায় ! মারামারি করা যায়! আর ভালোবাসা ও !
ভালোবাসার কথা শুনে আহাদ বললো ।
- কি যে বলিস রাফি, ভালোবাসা বোঝার বয়েস হয়েছে আমাদের ? কি সব বলিস।
- আরে না শুনেছি তাই বললাম। নীর তো ভালোবাসে একটা মেয়েকে তুই জানিস না?
- হ্যাঁ জানি ব্রেঞ্চে নাম এর পাশে প্লাস দেয়াটাই তো ভালোবাসা। এমন ভালোবাসা তো সবাই করে। তুইও তো করিস। সেদিন দেখছিলাম কার নাম যেনো ব্রেঞ্চ এর মধ্যে লিখছিলি।
- আরে ধুর ঐটা এমনি আর কি ।
- ও আচ্ছা !
- হুম, আচ্ছা আহাদ তুই এমন করে কারো নাম ব্রেঞ্চ এর মধ্যে লিখিস নি ?
- না বাদ দে এইসব । আজকে এমনিতেই নীর আর সজল আসেনি মন ভালো নেই।
------------------
স্কুল ছুটি হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেনো মনে হয় ঈদ এর আনন্দ। শুধু বাসা যেতে পারলেই হয়। বাসায় এসে গোসল করে, খাওয়া দাওয়ার পর অপেক্ষা করা কখন বিকেল হবে আর মা খেলতে যেতে দিবে। আহাদ আর বাবু দুজন বন্ধুর মত যদিও আহাদ বয়সে তিন বছরের বড়। তারা দুজনেই ক্রিকেট খেলে তাদের ছোট্ট একটি মাঠে। তাদের মাঠ এর নাম রাখা হয়েছে চান্দু স্টেডিয়াম মাই খটখটা। প্রতি দিনের মত আজও তারা ক্রিকেট খেলতে থাকে। তাদের দুজনেরই ক্রিকেট খুব পছন্দের খেলা যা ছাড়া তাদের দিন পার হয় না। এভাবেই চলতে থাকে আহাদের জীবন। সামনে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা সেটার কোনো খেয়াল নেই আহাদের। তার তো শুধু খাওয়া দাওয়ার আর খেলা।
আজ আহাদ স্কুলে যাবে না তার নাকি মাথা খুব ব্যাথা ।
তাই জাবিহা খাতুন ও জর করলেন না।
- মা আমি বাহিরে যাচ্ছি পরে আসবো বলে চলে গেলো আহাদ।
- জাবিহা খাতুন মনে মনে বললেন ওমনি মাথা ব্যাথা ভালো হয়ে গেলো ওর ?
------------------
বাবু অপেক্ষা করে আছে আহাদের জন্যে কখন আসবে আর কখন ক্রিকেট খেলা শুরু করবে ।
আহাদ চলে আসছে। দুজন খেলতে থাকে। আহাদ ব্যাটিং এর বাবু বোলিং ঠিক এমন সময় রাস্তা দিয়ে একটা মেয়ে হেঁটে যায়। আহাদ লাজুক হাওয়া সত্বেও সে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে। এদিকে বাবু আহাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আহাদের কিছুক্ষনের জন্য মনে হলো এটা কেমন ভালোলাগা ? আগে তো কখনো এমন হয়নি।
- এদিকে বাবু বললো কি হলো তোমার ?
- আরে বাবু কি যে হলো আমার আল্লাহ ভালো জানেন। আচ্ছা বাবু মেয়েটাকে তুমি চিনো? কখনো দেখছো এর আগে !
- হ্যাঁ প্রায় দেখি এই রাস্তা দিয়ে যেতে। কেনো বলো তো ?
- আরে না আগে কখনো দেখিনি তো তাই বললাম।
কিন্তু আহাদের মনের মধ্যে কেমন যেনো অনুভূতি কাজ করে । না চাইতেও মুখে মুচকি হাঁসি চলে আসে।
---------------------
আজও আহাদ বাহানা দিয়ে স্কুলে যায়নি আজ খুব তারাতারি সে তাদের মাঠে উপস্থিত হয়। এখনো বাবু আসেনি। কিন্তু আজ সে খেলার জন্য আসেনি, আজকে সেই মেয়েটিকে দেখার জন্য এসেছে আর স্কুল ফাঁকি দেয়ার কারণ ও এটাই। 10,15 মিনিট হয়ে যায় বাবুর আসার নাম গন্ধও নেই। এদিকে আহাদ একা অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে যায়। হঠাৎ পেছন থেকে সেই মেয়েটি হেঁটে আসতে থাকে আহাদ কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। এক তো সে একা, দুই সে লাজুক। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। অতঃপর মেয়েটি আহাদকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় । মেয়েটির পরনে নীল স্কুল ড্রেস সাথে লাল বেগ, কি মায়াবী দেখতে । আহাদের যেনো এ অন্যরকম ভালোলাগা। বাবু মাত্র এলো। কি বাবু এতক্ষণ লাগে তোমার আসতে ?? কলিজায় তো আমার পানি নাই একদম।
- কেনো কি হয়েছে ?
- কালকে যে মেয়েটাকে দেখলাম আমরা ওই মেয়েটা একটু আগে আমার পাশ দিয়েই গেলো । তুমি তো নাই আমি একা ছিলাম কি একটা পরিস্থিতে পড়ছিলাম বুঝতেছো?
- হুম বুঝছি তোমার ঐ মেয়েটাকে ভালো লাগছে এই তো ?
- আহাদ তো লজ্জা পায় গেছে।
- না মানে ভালো লাগছে। আচ্ছা ওর নাম কি আর বাসা কথায় এইগুলোর খোঁজ নিয়ে দিতে পারবা তুমি ?
- হ্যাঁ সেটা চেষ্টা করে দেখতে পারি। পিচ্ছিদের কে দিয়ে জিজ্ঞাসা করতে হবে ।
- আচ্ছা তাহলে কালকে পিচ্ছি গুলাকে দিয়ে জিজ্ঞাসা করবো।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
---------------------------
সকাল 8 টা বেজে 38 মিনিট। এখনো কুয়াশা আছে। সাথে হার কাপানো ঠান্ডা। এর মধ্যে আহাদ, বাবু আরো পিচ্ছি দুজন আছে। পিচ্ছি গুলাকে বলে দেয়া হয়েছে ওই মেয়েটা যখন আসবে তখন যেনো তার নাম জিজ্ঞাসা করে।
- বাবু তোমার কি মনে হয় আসবে আজকে ? বললো আহাদ।
- আসবে আসবে সরকারি গার্লস স্কুলে পড়ে অবশ্যই যাবে।
- তুমি কিভাবে বুঝলা সরকারি গার্লস স্কুলে পড়ে?
- আরে ওর ড্রেস দেখনি সেটা ত গার্লস স্কুলের।
- ওও আচ্ছা বুঝলাম ।
রাস্তা ফাঁকা কুয়াশায় ভালো মত কিছু দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ কেও যেনো আসছে এইদিকেই। বাবু বললো আসতেছে ওই মেয়েটাই।
আহাদের মনের মধ্যে যেনো টুং টাং বেল বাজা শুরু হয়েছে। সামনে আসতেই বাবু পিচ্চিদের পাঠিয়ে দেয় ওই মেয়েটার উদ্দেশে। পিচ্ছিগুলা মেয়েটির পথ থেমে দাড়ালো, মেয়েটিও থামলো। কি যেনো কথা হচ্ছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না এত দুর থেকে। একটু পরে মেয়েটা চলে যায় আর পিচ্ছি গুলো এদিকে চলে আসে।
- কি বলছিস তোরা মেয়েটাকে ? বললো বাবু।
- পিচ্চিগুলো বললো যা কইতে কইসো সেটাই কইছি ।
কইছি তোমার নাম কি ? বাড়ি কই?
- তারপর কি বলছে ?
- কইলো তার নাম নাকি ভাতশাক আর বাড়ি নাকি ঐদিকে।
- ভাত শাক এর নাম শুনে বাবু হাসতে শুরু করে দেয়। সাথে আহাদ ও তাল মিলায়। এটা কি কারো নাম হয় নাকি ?
যাক বলছে তো নাম ভাত শাক । এটাই অনেক ।
----------------------------
আজ অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। সেই সকালে উঠেছে আহাদ। উঠেই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে পড়ার টেবিলে বসলো। তার মাথায় সেই মেয়েটির কথা ঘুরছে। কি মায়াবী চেহারা । তার বিষয়ে কিছু জানা নেই আহাদের। শুধু জানে তার নাম ভাত শাক। একটু পড়েই বের হয়ে যায় স্কুলের জন্য ।
পরীক্ষা শেষে আহাদ বাসায় চলে আসে। আজ কাল তার দিন গুলো বড্ডো ভালো কাটছে। কেনো এমন হচ্ছে তার জানা নেই। বিকেল বেলা বাবু আসলো আহাদের সাথে দেখা করতে।
- আহাদ,,,আহাদ,,,,
- হ্যাঁ বাবু আসো ভিতরে।
- একটা সুখবর নিয়ে আসছি তোমার জন্য ।
আহাদ এই কথা শুনে বলে কি খবর বলো শুনি।
- মিম এর কাছ থেকে জানলাম ওই মেয়েটার নাম সাইবা। বাসা রূপপুর।
- আহাদ মনের অজান্তেই বলে উঠে মাশাআল্লাহ এত সুন্দর নাম । খুশি যেনো তাকে ঘিরে রেখেছে। আহাদ বাবুকে জিজ্ঞাসা করে বাবু তোমাকে তো এই সুখবর দেয়ার জন্য ট্রিট দিতেই হবে।
তখনি রুমে জাবিহা খাতুন প্রবেশ করে বলে, কি নিয়ে এত কথা হচ্ছে শুনি ?
- না আন্টি তেমন কিছু না আজকে বিকেলে ঘুরতে বের হবো সেটা নিয়েই কথা হচ্ছে ।
- ও আচ্ছা ! তোমাদের তো শুধু খেলা আর ঘুরা ছাড়া কি আছে ।
আহাদ মুচকি হাসলো ।

চলবে....
® আরিফ ইসলাম

Address

Thakurgaon

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Kih reh buaah? posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share