14/10/2023
যখন ক্লাস 3/4 এ পড়ি, আমার এক বান্ধবীকে দেখতাম প্রতিদিন টিফিনে আলু ভাজি আর ভাত আনতো!
বেশকিছু দিন লক্ষ্য করার পর আমার কাছে ব্যাপারটা অন্যরকম লাগলো!
চেষ্টা চালালাম ওর সাথে ভালো একটা সম্পর্কের। আর ভালো সম্পর্ক হয়েও গেলো!
পরিবারের কথা জানতে চাইলাম, সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাবার পক্ষে ভালো খাবার আনা সম্ভব ছিলো না!
আমি নিজেই ওকে একদিন বললাম,বান্ধবী,, আমার মা মুরগীর মাংস আর ভাত দেয় আমার না,,,,
খেতে ভালো লাগে না, আর আলু ভাজি আমার মায়েরটা ভালো হয় না!
তুমি আমার টিফিন খাও, তোমারটা আমাকে দাও।
কৌশলে ওকে আমি আমার টিফিন গুলো খাওয়াইতাম।
আমার মা এখনও জানে না, আমি কোনদিও টিফিন খাই নি!
কলেজ জীবনে এসেও,,
আমার একজন রুমমেটের অনেক খারাপ অবস্থা! ঠিকমত মিলের টাকাও দিতে পারতো না!
মাসের মধ্যে ২০/২৫ দিনেই আমি ওনার টাকা দিয়ে দিতাম।
পরনের জামা বলতে, ৩/৪ টার উপর ছিলো না!
পায়ের জুতাটাও সেলাই করা!
একদিন আমাকে এসে বলে,,, ছোট বিধায় মনি বলেই ডাকতো! মনি,,,, একটা প্রাইভেট পড়াতে পারলে ভালো হতো!মাসে ৫০০৳ হলেই আমার হাতখরচ টা হয়ে যেত!
বললাম ভাল আইডিয়া আপু,, দেখি খুঁজে পাই কি না!
আমি মানুষের সাথে সহজেই মিশতে পারায় পরিচিতি একটু বেশিই ছিলো!
বিকালে একদিন খুঁজতে থাকলাম,, পেয়ে গেলাম 5/6 ক্লাস এর একটা মেয়ে। কিন্তু তার মা ২০০ টাকার উপরে পড়াতে পারবে না, কারন তারও অভাব!
তারপরও ওনাকে বললাম,,, আপু ৫০০৳ চাইলে রাজি হয়ে যাবেন, বাকি গুলো আমি দিবো।
আমার কথা জানাবেন না ভুলেও।সেও রাজি হয়ে গেলো!
মাস শেষে ৫০০ টাকা আপুর হাতে আমি নিজেই দেই।
টাকাটা হাতে পেয়েই, কি যে খুশি,,,!
সাথে সাথে বলে উঠলো,, মনি চলো মার্কেটে যাই একটা জামা কিনে আনি! আমিও খুশি চলেন,,, ৩০০ টাকা দিয়ে সস্তা মার্কেটে একটা জামা কিনলাম দুজন মিলে।
আস্তে আস্তে গল্প করতে লাগলাম,,, আব্বা ঢাকা থেকে আমার জন্য ৩ জোড়া জুতা আনছে , এক জোড়া আপনাকে গিফট করছে!
না নিলে আব্বা কিন্তু খুব রাগ করবে!কৌশলে জুতা, কসমেটিকস আমি সব কিছুই দিয়ে দেই!
বিনিময়ে আমি তার খুশি গুলো ভোগ করি হৃদয় নিয়ে!
এত বেশি আনন্দ লাগে আমি লিখে প্রকাশ করতে পারবো না!
✍️কারো জন্য কিছু করতে পারার মধ্যে যা আনন্দ তা আমি ছোট্ট বেলা থেকেই ভোগ করে আসছি। আলহামদুলিল্লাহ।
ছবিতে আব্বা, মা,ছোট ভাই, আর আমি ❤️
My family 🥰
pray for us 🙏