25/08/2025
#করনার সেই সময়টা যেন আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক অধ্যায়। একুশের শুরুতে, যখন চারপাশ অনিশ্চয়তায় ভরা, তখন মা বুকের কষ্ট লুকিয়ে তার সবচেয়ে প্রিয় ছাগলটা বিক্রি করলেন। সেই সাত হাজার টাকা তুলে দিলেন আমার হাতে—সন্তানের স্বপ্নের জন্য মায়ের চোখের জল মিশ্রিত মূলধন। সেই টাকাতেই আমি ঘর ছেড়েছিলাম, পাড়ি দিয়েছিলাম লেখাপড়ার পথে।
#তারপর থেকে আমি আর আগের মতো বাড়ি ফিরে যেতে পারিনি। বাড়ি যেন ধীরে ধীরে শুধু স্মৃতির ঠিকানা হয়ে গেল—যেখানে মায়ের স্নেহ, বাবার নীরব ভালোবাসা, ভাইদের হাসি-খেলায় ভরা দিনগুলো আর আমার শৈশব বন্দি হয়ে আছে।
#দিনের ভিড়ে নিজেকে সামলে রাখা সহজ, কিন্তু রাত নামলেই বুকের ভেতর অদ্ভুত এক হাহাকার জেগে ওঠে। মায়ের কথা মনে পড়ে—তার অশ্রুভেজা চোখ, অবিরাম দোয়া, আর মমতার আচ্ছাদন। বাবার কথাও ভীষণ মনে পড়ে—তার নীরবতা, অল্প কথার ভেতর লুকানো অগাধ দায়িত্ববোধ আর নিঃশব্দ আশীর্বাদ। ভাইদের কথাও মনে পড়ে—তাদের সরল সঙ্গ, খুনসুটি, আর নির্ভরতার দিনগুলো। মনে হয়, আমার প্রতিটি পদক্ষেপের পেছনে মায়ের ত্যাগ, বাবার নিশ্চুপ দোয়া আর ভাইদের ভালোবাসাই আসল শক্তি হয়ে আছে।
কত রাত যে নিঃশব্দে কেঁদেছি, সেই হিসাব আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।
#প্রায়ই শুনতাম—মেয়ে মানুষের নিজের কোনো ঘর থাকে না; তারা থাকে হয় বাবার ঘরে, নয়তো স্বামীর ঘরে। #কিন্তু ছেলেরা? তাদের ঘর থাকলেও, একদিন স্বপ্ন আর দায়িত্বের টানে তাদেরও ঘর ছাড়তে হয়। চারপাশে সবকিছু থাকলেও তাদের ভেতরে রয়ে যায় এক অদৃশ্য শূন্যতা।
#মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হয় মা-বাবা আর ভাইদের জড়িয়ে ধরে বলি “আমি তোমাদের ভীষণ ভালোবাসি।” কিন্তু বয়স, দায়িত্ব আর জীবনের চাপে অনেক সময় সেই অনুভূতি মুখে আনা যায় না।
#মনে হয়, ছেলে মানুষের জীবন বোধহয় এমনই—ভালোবাসা, কষ্ট, আর কান্না সব ভেতরে জমে থাকে; বাইরে শুধু দায়িত্ব আর শক্তির মুখোশ।