16/02/2025
ছাত্রদের মেধা কি বাড়ানো যায়?পিছন ইয়াদ কি ধরে রাখা যায়?
হ্যা মেধা অবশ্যই বাড়ে,এবং পিছন ইয়াদ ধরে রাখা যায় প্রমাণিত, নিচের উল্লেখিত ছাত্ররাই তার বর্তমান প্রমাণ।
তবে হ্যা এটাকে মেধা বাড়ানো না বলে প্রতিভাকে বিকশিত করানো বলাটাই হয়ত বেশী যুৎসই হবে।
আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবনে এমন অসংখ্য ছাত্র পেয়েছি হিফজে পড়ে ১/২/৩ এমনকি ৪ বছর চলে,অথচ তারা সবক শুনায় আধা পৃষ্টা বা ১০ লাইন তাও অনেক কষ্টে আর চেষ্টা মেহনতের ফলে, দেখা গেল, বিগত বছরগুলোতে গড়ে সে বছরে সর্বোচ্চ ৪-৫ পারা মুখস্ত করেছে, তাও বিন্দুমাত্র ইয়াদ নেই, প্রায় শিক্ষকরা ঘোষণা দিয়ে ফেলছেন সে হিফজের অযোগ্য, আলহামদুলিল্লাহ এরকম অনেক ছাত্রই পরবর্তীতে শুরুতে এক পৃষ্টা সবক, এবং বাড়তে বাড়তে শেষ পর্যায়ে ৫ পৃষ্টা পর্যন্ত সবক দেওয়ার অসংখ্য নজির রয়েছে।দেখা গেছে অতীতে বছরে সর্বোচ্চ ৪-৫ পারা শোনাত, কিন্ত আমার কাছে আলহামদুলিল্লাহ বছরে নিম্নে ১২-১৫ পারা পর্যন্ত পড়েছে, তাও আবার সবগুলো পারাই ইয়াদ আছে।
এমনকি এরকম অনেক ছাত্রদেরকে ৩০ পারা সবক কমপ্লিট করিয়েছি মোটামুটি ভাল ইয়াদ সহ (শোকরিয়া মহান রবের)
এবার আসি এদের বিষয়ে:-
এখানে ৩ জন সবকী ছাত্রের কথা বলব।
(নামগুলো ছন্দনাম হিসেবে)
সালমান= ৩ বছর হিফজে পড়ছে অন্য প্রতিষ্ঠানে, সে পড়েছে মোট ৫ পারা, কিন্ত ইয়াদ একেবারেই নেই,যেন সে এগুলো নাজারাও করে নাই কোনদিন।
মাহের= ২ বছর হিফজে পড়ছে অন্য প্রতিষ্ঠানে, ইয়াদের অবস্থা সালমানের মত সেইম, দুনোজন একই মাদ্রাসায় ছিল।
সোহান= নতুন যে আমার কাছে নাজারা ৭৫% ঠিক করেছে,অত:পর বিশেষ কারণ বশত: তাকে হিফজে দিয়ে দিয়েছি।।
আশা করি হিফজ উস্তাদগণ ভালভাবেই বুঝতে পারতেছেন সালমান আর মাহেরের মেধা কতটা অভাবনীয় দুর্বল, এবং তারা ঠিক কতটা অমনোযোগী ও অনাগ্রহী।
হ্যা তারা আধা পৃষ্টা সবক দিত ৩/৪ দিনে।।
মেধার দুর্বলতা ছাড়াও অবশ্য অন্য কিছু দুর্বলতাও ছিল।
আমি তাদের ৩ জনকেই একসাথে সবক শুরু করি ২১ নং পারা থেকে বিগত ৬ মাস আগে।
প্রথম দিকে তাদের ১পৃষ্টা সবক নিয়মিত নেওয়া প্রায়ই অসম্ভব ছিল, ফলে বার বার তাদের জন্য নতুন নতুন সিষ্টেম দিতাম এবং বিভিন্ন কৌশলে পড়াতাম, আলহামদুলিল্লাহ ধীরে ধীরে তারা মোটামুটি এক পৃ ভালভাবে শুনাতে সক্ষম হল, পাশাপাশি বিভিন্ন টেকনিক অনুসরণ করে তাদের পিছনটাও সাথে রাখতাম, গত কয়েকদিন থেকে সবক শিখার জন্য আরও ভিন্ন কিছু টেকনিক অবলম্বন করেছি,এবং আমি নিজে সাথে থেকে প্র্যাক্টিকালই তাদেরকে পদ্ধতি ধরিয়ে দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ এখন তারা অনায়াসে দেড় পৃ. সবক দিতে পারতেছে, পিছন ইয়াদ থাকায় পরীক্ষার জন্য সবকও বন্ধ করতে হচ্ছে না।
এজাবত আল্লাহর শোকরিয়া প্রতি মাসে নিয়মিত ১ পারা সবক শুনিয়ে আসছে পিছন ইয়াদ সহ, কিছুদিন পর ৭ মাস পুর্ণ হবে, আলহামদুলিল্লাহ এর ভিতরেই ৭ পারা মুখস্ত করে ফেলছে এবং পিছনও ইয়াদ আছে।
তাদের পড়া আগানো কিংবা পিছন ধরে রাখার জন্য আমাকে প্রচুর ব্যাগ পেতে হয়েছিল, কেননা তারা মেধার দিক থেকে, আবার মনযোগ ও আগ্রহের দিক থেকে প্রচন্ড দুর্বল ছিল, তবে একটা দিক ভাল ছিল, গার্ডিয়ানরা তেমন ডিস্টার্ব করে নাই, ২ জনের গার্ডিয়ানের গুরুত্ব কম ফলে তারা ডিস্টার্ব করে নাই, আমি তাদেরকে আমার মত করে পড়াতে পেরেছি। ফলে এত দুর্বল ছাত্র থেকেও ভাল একটা ফলাফল অর্জন করতে পেরেছি।
ইনশাআল্লাহ এই রমজানে তাদের মুখস্ত করা মোট ৮ পারা দিয়ে মহিলা তারাবীহ জামাতে ইমামতি করবে।
এবং রমজান পর থেকে প্রথমে দেড় পৃ করে মাসিক দেড় পারা,অত:পর ২ পৃষ্টা করে মাসিক ২ পারা সবক নিব ইনশাআল্লাহ।
আশা করতেছি ইনশাআল্লাহ আগামী বছরে তাদের অন্ততপক্ষে ২২ থেকে ২৫ পারা সবক কমপ্লিট হয়ে যাবে।
এবং এটা দিয়ে পরের বছর মহিলা কিংবা পুরুষ তারাবীহর জামাত পড়াবে ইনশাআল্লাহ।