30/03/2025
ঈদের দিন পালনীয় সুন্নাত সমূহ।
১.গোসল করা,
২.উত্তম পোশাক পরিধান করা,
৩.তাকবীর বলা,
৪.ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া,
৫.নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিন যা খাইতেন,তা খাওয়ার চেষ্টা করা।
৬.ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করা,
৭.ঈদের মাঠ থাকলে মাঠে যাওয়া।
৮.পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাব এবং পায়ে হেঁটে ফিরব,
৯.যে পথে ঈদগাহে যাবেন আসার সময় অন্য পথে আসবেন,
১০.অভিবাদন জানানো,
১১.আল্লাহ মাফ করেছেন কিনা এই চিন্তা করা।
বিস্তারিত।
এক,
গোসল করা,
فقد كان ابن عمر رضي الله عنه يغتسل قبل صلاة العيد
ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ঈদের নামাজের আগে গোসল করতেন,
ا لموطأ لمالك 1/ 177
মুয়াত্তা মালেক-১/১৭৭
দুই,
উত্তম পোশাক পরিধান করা,
كان الصحابة رضي الله عنهم يخصون العيد بمزيد من التجمل، فقد صح عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه كان
يلبس أحسن ثيابه في العيدين
সাহাবাগন পরিপাটি হতেন, ইবনে উমর দুই ঈদে উত্তম পোশাক পরিধান করতেন।
فتح الباري
2/ 439
ফাতহুল বারী-২/৪৩৯
তিন,
তাকবীর বলা,
كان ابن عمر رضي الله عنهما إذا غدا يوم الفطر ويوم الأضحى يجهر بالتكبير حتى يأتي المصلى ثم يكبر حتى يأتي الإمام.
(إرواء الغليل:650)
ইবনে উমর ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন,
চার,
ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া,
كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَطْعَمَ وَلاَ يَطْعَمُ يَوْمَ الأَضْحَى حَتَّى يُصَلِّيَ
আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি (বুরাইদা) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খাওয়া পর্যন্ত নামাযে বের হতেন না এবং ‘ঈদুল আযহার দিন নামায না আদায় করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৫৪২
أَبْوَابُ الْعِيدَيْنِ بَابٌ : فِي الْأَكْلِ يَوْمَ الْفِطْرِ قَبْلَ الْخُرُوجِ
পাচ,
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিন যা খাইতেন।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَغْدُو يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ تَمَرَاتٍ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্রের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক বর্ণনায় আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তা বিজোড় সংখ্যায় খেতেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯৫৩
كِتَابُ الْعِيدَيْنِ بَابُ الْأَكْلِ يَوْمَ الْفِطْرِ قَبْلَ الْخُرُوجِ
ছয়,
ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করা,
عن عبدالله بن عمر
كانَ يأمرُ بإخراجِ الزكاةِ قبلَ الغُدُوِّ للصلاةِ يومَ الفطرِ
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করতে আদেশ করতেন।
السيوطي (ت ٩١١) الجامع الصغير ٦٩٣١ حسن
আল জামিউস সাগীর-৬৯৩১
সাত,
ঈদের মাঠ থাকলে মাঠে যাওয়া।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَالأَضْحَى إِلَى الْمُصَلَّى، فَأَوَّلُ شَىْءٍ يَبْدَأُ بِهِ الصَّلاَةُ ثُمَّ يَنْصَرِفُ، فَيَقُومُ مُقَابِلَ النَّاسِ، وَالنَّاسُ جُلُوسٌ عَلَى صُفُوفِهِمْ، فَيَعِظُهُمْ وَيُوصِيهِمْ وَيَأْمُرُهُمْ، فَإِنْ كَانَ يُرِيدُ أَنْ يَقْطَعَ بَعْثًا قَطَعَهُ، أَوْ يَأْمُرَ بِشَىْءٍ أَمَرَ بِهِ، ثُمَّ يَنْصَرِف
আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্র ও ‘ঈদুল আযহার দিন ‘ঈদমাঠে যেতেন এবং সেখানে তিনি প্রথম যে কাজ শুরু করতেন তা হল সালাত। আর সালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা তাঁদের কাতারে বসে থাকতেন। তিনি তাঁদের নসীহত করতেন, উপদেশ দিতেন এবং নির্দেশ দান করতেন। যদি তিনি কোন সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছা করতেন, তবে তাদের আলাদা করে নিতেন। অথবা যদি কোন বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছা করতেন তবে তা জারি করতেন। অতঃপর তিনি ফিরে যেতেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯৫৬
كِتَابُ الْعِيدَيْنِ بَابُ الْخُرُوجِ إِلَى الْمُصَلَّى بِغَيْرِ مِنْبَرٍ
আট,
পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাব এবং পায়ে হেঁটে ফিরব,
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ عَمَّارِ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ يَخْرُجُ إِلَى الْعِيدِ مَاشِيًا وَيَرْجِعُ مَاشِيًا
সা‘দ বিন আয়িয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পদব্রজে ঈদগাহে যেতেন এবং পদব্রজে ঈদগাহ থেকে ফিরে আসতেন।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১২৯৪
كِتَابٌ : إِقَامَةُ الصَّلَاةِ وَالسُّنَّةُ فِيهَا
بَابٌ : مَا جَاءَ فِي الْخُرُوجِ إِلَى الْعِيدِ مَاشِيًا
নয়,
যে পথে ঈদগাহে যাবেন আসার সময় অন্য পথে আসবেন,
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ يَوْمُ عِيدٍ خَالَفَ الطَّرِيقَ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের দিন (বাড়ি ফেরার পথে) ভিন্ন পথে আসতেন। ইউনুস ইব্নু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় আবূ তুমাইলা ইয়াহইয়া (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯৮৬
كِتَابُ الْعِيدَيْنِ بَابُ مَنْ خَالَفَ الطَّرِيقَ إِذَا رَجَعَ يَوْمَ الْعِيدِ
দশ,
অভিবাদন জানানো,
عن جبير بن نفير
كان أصحابُ رسولِ اللهِ صلّى اللهُ عليْهِ وسلَّمَ إذا التقوْا
يومَ العيدِ يقولُ بعضُهم لبعضٍ: تقبل اللهُ منّا ومنكَ
সাহাবাগন একজন আরেকজন কে এভাবে অভিবাদন জানাতেন
""তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা""
ابن حجر العسقلاني (ت ٨٥٢) فتح الباري لابن حجر
এগারো,
আল্লাহ মাফ করেছেন কিনা এই চিন্তা করা,
আবু মানছুর শীরাজী রাহ. বলেন-
ليس العيد لمن غرف له إنما العيد لمن غفر له
যাকে অঞ্জলি ভরে দান করা হল, ঈদ তো তার জন্য নয়। ঈদ তো হল ঐ ব্যক্তির জন্য, যার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হল। -মুজামুস সাফার, আবু তাহের সিলাফী, পৃ. ৩০২ (১০০৮)
ওয়াকী ইবনুল জার্রাহ রাহ. বলেন, ঈদের দিন সুফিয়ান সাউরী রাহ.-এর সাথে বের হলাম। তিনি বললেন-
إن أول ما نبدأ به في يومنا غض أبصارنا
আজকের দিন যে কাজের মাধ্যমে আমরা ঈদের সূচনা করব তা হল দৃষ্টির হেফাযত। -আলওয়ারা‘, ইবনে আবিদ দুনিয়া, পৃ. ৬৩ (৬৬)
গুনাহ মুক্ত প্রতিটি দিনই মুমিনের ঈদ।
হাসান বসরী রহিমাহুল্লাহ।
নাফরমানী ছাড়া আনন্দ উদযাপনের ইচ্ছা পোষণকারী প্রতিটি মুমিন কে জানাই ঈ*দে*র শুভেচ্ছা।
كل عام وانتم بخير