06/02/2025
RobinRafan বর্তমান বিশ্বে আয়ের অন্যতম একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশীদের মাঝেও প্রায়ই শোনা যায় ৫ লাখ ১০ লাখ টাকা প্রতি মাসে আয় করছে কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে। যেখানে ১২ থেকে ১৫ বছর পড়াশোনা করেও ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয়ের চাকরির পিছনে মানুষকে ছুটতে হচ্ছে। সেখানে আপনি জানলে অবাক হবেন যে, কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াও প্রতিমাসেই লাখ লাখ টাকা আয় করে যাচ্ছে কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর! ব্যাপারটা এরকম না যে আপনাকে অনেক বেশি শিক্ষিত কিংবা প্রশিক্ষিত হতে হবে কনটেন্ট ক্রিয়েশনে লাখ টাকা আয় করার জন্য।
আপনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সে বিষয়টা নিয়ে আপনি কিন্তু কন্টেন্ট বানাতে পারেন এবং মানুষের কাছে আপনি নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন।
আপনি যদি বিশেষজ্ঞ হন গান নিয়ে সে ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু গানের বিভিন্ন ধরনের টিউটোরিয়াল দিতে পারেন আপনার কনটেন্টের মাধ্যমে, আর সেটা হতে পারে ফেসবুকে কিংবা ইউটিউবে কিংবা ইনস্টাগ্রাম অথবা টিকটকে।
ধরুন, কিভাবে গলার স্বরকে দিন দিন উন্নতি করতে হয় সেটা আপনি জানাতে চাচ্ছেন কনটেন্ট-এর মাধ্যমে। তবে আপনার কনটেন্টের উপস্থাপনা হতে হবে আকর্ষণীয়।
আপনি এমন কিছু কাজ করবে না যাতে মানুষ অল্পতেই বিরক্ত হয়ে যায়। আর সেজন্যই ফেসবুক থেকেও দেখা যাচ্ছে দিনদিন শুধুই শর্ট ভিডিওর প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। শর্ট ভিডিও গুলা কি রিলস বলা হয় এবং সেই রিলস গুলা হয় ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত।
আবার ধরুন আপনার রান্নাটি অনেক অভিজ্ঞতা আছে।
আপনি সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের রান্নার গোপন কৌশল গুলো কিন্তু কন্টেন্টের মাধ্যমে কোন ধরনের অতিরিক্ত কোন এডিট ছাড়াই পুরোপুরি র ভিডিওকে আপনি মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। আপনার এই সহজ ভঙ্গিমায় বাস্তব ভিডিও গুলোই কিন্তু মানুষকে বেশি আকর্ষণ করবে। আপনি একটু ফেসবুক ঘাটলেই দেখতে পারবেন, গ্রামের বেশ কিছু রান্নার ভিডিও হচ্ছে যেগুলো কিনা মিলিয়ন মিলন ভিউ পেয়ে যাচ্ছে। আর মাসিক আই শুনলে আপনি আকাশ থেকে পড়বেন। আমি বেশ কিছু রান্না বিষয়ক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সাথে কথা বলেছি তাদের বর্তমানে মাসিক আয় তিন থেকে সাত লক্ষ টাকা।
যা কিনা একজন গ্র্যাজুয়েট ব্যক্তির জন্য স্বপ্নের মতো ইনকাম।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন কোন প্লাটফর্ম থেকে বাংলাদেশে বেশি আয় করা যেতে পারে, সেজন্যে আমার গত ৬ বছরের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, আমি ফেসবুককেই সবার আগে প্রাধান্য দিব। ফেসবুকে আপনি যেমন, বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট একটা পেজের মাধ্যমেই ভাইরাল করার চেষ্টা করতে পারেন, এমন সুবিধা অন্য প্লাটফর্মে তেমন পাওয়া যায় না। আর সবচেয়ে বেশি আয় এখন কিন্তু ফেসবুক থেকেই হচ্ছে। ফেসবুকের আরো বেশ কিছু আয়ের পথ খুলে যাচ্ছে সামনে যেগুলো কিনা আপনার ফেসবুকের স্ট্যাটাস কিংবা আপনার ফেসবুকের ছবি থেকেও আপনি আয় করতে পারবেন। ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েশন এ ইনকামের পথ অনেক বেশি খুলে যাবে। আর শুধুমাত্র একটু আলাদা আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করা কন্টেনগুলোই দেখা যাবে বেশি বেশি ভিউ নিবে। আর এতে করে আপনার যেমন নিজস্ব আর্থিক স্বাধীনতা পাবেন তেমনি আপনি কিন্তু দেশের জন্য কিন্তু রেমিটেন্স এনে দেশের আর্থিক উন্নয়নে কিন্তু আপনি সাহায্য করতে পারছেন। তবে ব্যাপারটা এরকম না যে আপনি যা ইচ্ছা হল তাই আপনি কন্টেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন এবং তার কোন ধরনের কোনো বিষয়বস্তু স্পষ্ট থাকলো না তাহলে কিন্তু আপনার অডিয়েন্সটা আপনার প্রতি বিরক্ত হয়ে যাবে। আপনাকে সব সময় ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন বিষয়বস্তুর উপর কন্টেন্ট বানিয়ে যেতে হবে। ধরুন আপনি খাবার নিয়ে কন্টেন্ট বানাতে চাচ্ছেন সেই ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার বর্তমানে মানুষ কি ধরনের খাবার বেশি পছন্দ করছে সেই ট্রেনের উপর ভিত্তি করে আপনাকে কন্টেন বানিয়ে যেতে হবে।
কনটেন্টের গুণগত মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দর্শকরা শুধুমাত্র বিনোদনমূলক নয়, বরং শিক্ষামূলক, তথ্যপূর্ণ বা প্রয়োজনীয় কনটেন্টও প্রত্যাশা করে। তাই কনটেন্টে মূল্যবান তথ্য ও শিক্ষামূলক উপাদান থাকা উচিত। কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উচিত স্টোরিটেলিংয়ে দক্ষতা অর্জন করা, কারণ ভাল গল্প বলা কনটেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। একটি শক্তিশালী এবং হৃদয়স্পর্শী গল্প দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক।শুধু তথ্য নয়, কনটেন্টে বিনোদনও থাকতে হবে। দর্শকরা একে উপভোগ করতে চায়, তাই কনটেন্টে হিউমর, মজাদার উপাদান ও সৃজনশীলতা আনতে হবে। তবে এটি কখনোই প্রাসঙ্গিকতার বাইরে চলে যাবে না।কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উচিত নিয়মিত কনটেন্ট আপডেট করা, যাতে তারা তাদের দর্শকদের কাছে সদা প্রাসঙ্গিক থাকে। নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড তাদের উপস্থিতি বজায় রাখতে সহায়ক।
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উচিত তাদের কনটেন্টে সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করা। এক্ষেত্রে, মিথ্যা তথ্য বা ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে বিরত থাকা এবং একটি ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখলে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।