28/06/2025
আল আমিন নুরানি মাদ্রাসার
৫০ জন শিক্ষার্থী পেল নতুন ব্যাগ
নিজস্ব প্রতিনিধি >>>
সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নাজিরপুর গ্রামের আল আমিন নুরানি মাদ্রাসার গরীব ও মেধাবী ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়েছে। বাংলা ভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার কেফায়েত শাকিল-এর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং হাফেজ্জি চ্যারিট্যাবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় শনিবার (২৮জুন) সকালে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাগ বিতরণ ও অভিভাবকদের মাঝে বই বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অভিভাবক সমাবেশ ও ব্যাগ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার সহ-সভাপতি নুরুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেফায়েত শাকিল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য দেলোয়ার হোসেন, নাছির উদ্দিন চৌধুরী, মামুনুর রশিদ চৌধুরী, আবু নাঈম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ক্বারী হাসান খান, শিক্ষক হাফেজ মাওলানা খায়রুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন, শহিদুল ইসলাম ও শাকিল খান।
ব্যাগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মুসাম্মৎ ফৌজিয়া আক্তার বলে, “নতুন ব্যাগ পেয়ে আমি খুব খুশি। আগে একটা পুরনো ব্যাগে বই রাখতাম। এখন নতুন ব্যাগে সব গুছিয়ে নিতে পারবো।" দ্বিতীয় শ্রেণির রেদোয়ান ইসলাম জানায়, “আমার আগে ভালো ব্যাগ ছিল না। নতুন ব্যাগ পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
শুধু শিক্ষার্থী নয়, অভিভাবকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম এর মা বলেন, “আমাদের পক্ষে ভালো ব্যাগ কেনা কঠিন ছিল। এখন ছেলে ব্যাগ পেয়েছে দেখে খুব ভালো লাগছে। আল্লাহ যেন এই উদ্যোগে অংশ নেওয়া সবাইকে উত্তম প্রতিদান দেন।” এ সম্পর্কে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা খায়রুল ইসলাম বলেন, “আমাদের মাদ্রাসায় অনেক শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে পিছিয়ে। তারা ভালো ব্যাগ বা শিক্ষা উপকরণ নিয়ে আসতে পারে না। এই ব্যাগগুলো পেয়ে তাদের মুখে যে হাসি দেখেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মনোবল বাড়াবে এবং তারা আরও মনোযোগী হয়ে পড়াশোনায় এগিয়ে যাবে।”
বাংলাভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার কেফায়েত শাকিল বলেন, গেল বন্যায় পুরো ফেনীর মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবাই নিজের ঘরবাড়ি সামলাতেই পারছে না তার মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী কিনে দেওয়ার আশা করাও দুষ্কর। যা শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ও মনোবিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। তাই দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাগসহ শিক্ষাসামগ্রী দেওয়ার। হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় আজ সেটি সম্ভব হলো।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মুহসিন বিন মুঈন বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সর্ব ক্ষেত্রে মানবিক বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। গত আগস্টের বন্যায় ফেনীর মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পর থেকে আমরা এখানকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আসছি। বন্যা দুর্গত অঞ্চলের শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য আমরা শিক্ষা উপকরণও দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটি সেইসব পদক্ষেপেরই একটি অংশ।
এ ধরনের উদ্যোগ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মনোবল বৃদ্ধি ও শিক্ষা উৎসাহে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অতিথিরা।