28/05/2025
বিডি মাসেল শো – সমালোচনা না স্বীকারোক্তি?
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ফেসবুক যেন ভরে গেছে বিডি মাসেল শো-এর বিচারকার্য, আয়োজকদের ভূমিকা, আর প্রতিযোগীদের অভিযোগ-গালাগালিতে। কেউ বলছে এটা নাকি “বাংলাদেশের বডিবিল্ডিং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্ক্যাম”।
বিষয়টা বুঝতে গিয়ে খেয়াল করলাম—যারা দ্বিতীয় হয়েছে, তারাই বিচারকদের গালি দিচ্ছে। আবার যারা টপ সিক্সেও আসতে পারেনি, তারাও বলছে জাজিং ঠিক হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবাইকে কি ফার্স্ট করা সম্ভব? সবাইকে কি টপ সিক্সে রাখা সম্ভব? না, কখনোই না। এটা যদি হতো, তাহলে প্রতিযোগিতা থাকতো না।
আরেকটা অভিযোগ আসছে—পুরস্কার বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। যদি সত্যি কেউ তার প্রাপ্য পুরস্কার না পেয়ে থাকে, তবে সেটা অবশ্যই দুঃখজনক এবং আয়োজকদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
শো শুরু হওয়ার আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, IFBB সার্টিফাইড বিদেশি জাজ থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায়নি। এটা শুধু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ নয়, বরং অংশগ্রহণকারীদের প্রতি অবিচার এবং কমিউনিটির সঙ্গে প্রতারণা।
আর একটা জিনিস আমি বারবার দেখে আসছি—প্রতিটা ক্যাটাগরিতে যিনি দ্বিতীয় হন, তিনিই ফল ঘোষণার পরপরই লাইভে এসে বিচারকদের ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে গালাগালি শুরু করেন। এটা একটা ট্র্যাডিশনে পরিণত হয়েছে। এই প্রবণতা যদি না থামে, তাহলে আমাদের দেশের বডিবিল্ডিং কখনোই পজিটিভ দিকে যাবে না।
যদি আপনি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাহলে ফলাফল যাই হোক—সেটা গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। ফলাফল মেনে নিতে না পারলে আপনার প্রতিযোগিতায় আসাই উচিত নয়। হার মানে শেষ নয়—এটা শিখে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
সবশেষে বলবো, হ্যাঁ—ভুলত্রুটি থাকবেই। কিন্তু তাই বলে এত সুন্দর একটা শোকে একেবারে “স্ক্যাম” বলে দাগিয়ে দেওয়া কতটা যৌক্তিক? সমালোচনা করুন, অবশ্যই করুন, কিন্তু সেটা হোক গঠনমূলক ও সম্মানের সাথে।
বাংলাদেশে এতো বড় মাপের আয়োজন হয়—এটাই আমাদের জন্য একটি বড় পাওয়া। এই অর্জনকে আমরা সম্মান করি, সমালোচনার মাধ্যমে নয়, উন্নয়নের মানসিকতা দিয়ে।
বাংলাদেশে বডিবিল্ডিং জাজমেন্ট করতে হলে সত্যি বলছি, গণ্ডারের চামড়া লাগবে! প্রতিটি সিদ্ধান্তের পরে যে পরিমাণ গালি আর মানসিক চাপ নিতে হয়, সেখানে শক্ত মানসিকতা ছাড়া বিচারক হওয়া সম্ভবই না।