17/06/2025
◾ছেলেরা সাধারণত এখন ১৫-১৭ বছর বয়সের মধ্যে শারীরিকভাবে পূর্ণতা পায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ১২-১৪ মধ্যেই শারীরিকভাবে পূর্তা ঘটে। কিন্তু আমরা কি তখনই তাঁদের স্বাভাবিক জীবন, সম্পর্ক বা বিয়ের স্বাধীনতা দেই? আমি মমিনুল ইসলাম, তো চলো আজ একটু ভিন্ন টপিকে কথা বলি।
আমাদের সমাজে পাপ থেকে বাঁচতে বিবাহ করতে চাইলে পরিবার বলেন—
“এখন মন দিয়ে পড়াশোনা করো, তারপর ভালো জব করো, তারপর বিয়ে করো।”
আর এই স্বপ্ন পূরণ করতে চাকরি পাইতে প্রতিষ্ঠিত হতে একজন ছেলের বয়স হয়ে যায় ৩২–৩৫।
তখন এই সময়গুলো ১৫টি বছর পর্যন্ত সে কি করবে?
★-সে কি নিজেকে পাথর বানিয়ে রাখবে?
★"নাকি নিজের ভেতরের আগুন দাঁতে কামড়ে নেভাবে?
★-সে তো একজন মানুষ রোবট তো হয়, তাঁর ও চাহিদা আছে।
★-এটা কি বাস্তবতা অনুযায়ী সম্ভব?
★ সমাজ যা বলছে, আর বাস্তবতা যা ঘটছে—দুটো এক নয়
◾আমরা বলি, মদ হারাম—কিন্তু খুপরি ঘর ওয়ালা রেস্টুরেন্টে প্রাইভেট জোন ভরপুর।
আমরা বলি, প্রেম-ভালোবাসা ঠিক না, অথচ সারাদেশের রেস্টুরেন্টগুলোর ছোট ছোট রুম, পার্কের ভেতর সব দর্শনীয় স্থান গুলো আমাদের অন্য কথা মনে করিয়ে দেয়—“সমাজ জানে কী হচ্ছে, তবুও চুপচাপ মেনে নেয়।”
কারণ সমাজ জানে—“মানুষ পাথর না, তাদের শরীরেরও ক্ষুধা আছে।”
★ তাহলে প্রশ্ন হলো—বিয়ে দেরিতে কেন?
ইসলাম বলে—“সাবালক হলেই বিয়ে করো।”
কিন্তু আমাদের সমাজ বলে—
“পাত্র যদি ভালো চাকরি না করে, তাহলে বিয়ে দিতে পারব না।”
এই দ্বিচারিতা কোথা থেকে আসে?
একদিকে ইসলাম মানি, হালাল খাবার খাই, রোজা রাখি…
কিন্তু যখন বিয়ের কথা আসে, তখন বলি—
“বউকে খাওয়াবি কী?” বা মেয়েকে গরিব বা চাকরি ওয়ালা ছেলে ছাড়া বিয়ে দিব না?
★ভাই, বউ তো হাতি না—যে ১০ কেজি চালের ভাত খাবে প্রতিদিন।
তাঁর লাগে মানসিক সাপোর্ট, ভালোবাসা, সম্মান—যা টাকায় হয় না, হয় বিশ্বাস আর দায়িত্ববোধে।
★আর খাওয়ানোর মালিক তো একমাত্র আল্লাহ্।
★আপনি ভাবছেন আপনার ছেলে বেকার,কাজকাম করে না।
★আরে যখন তাঁকে বিয়ে দেওয়া হবে তখন তাঁর উপর দায়িত্ব এসে যাবে, তখন দেখবেন সে নিজে থেকেই কাজে লেগে যাবে।
★ বিয়ের বয়স ও ক্যারিয়ারের বাস্তব ফাঁদ
একজন ছেলে যদি ১৫ বছর বয়সে যৌনভাবে পূর্ণতা পায়, আর ৩২ বছর বয়সে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করে, তাহলে মাঝের ১৫ বছর সে কোথায় যাবে? কি করবে।
★তখন দেখা যায় সে প্রেম করবে,
★কু নজর খারাপ চিন্তা ভাবনা করবে।
★মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করবে,
★শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে নানা ধরনের খারাপ কাজেও লিপ্ত হয়ে যাবে।
★রেস্টুরেন্টের প্রাইভেট রুম খুঁজবে,
★পার্কে গিয়ে প্রেমিকার শরীরে হাত রাখবে,
★কিংবা চুপচাপ ঘরে বসে মনোবেদনায় জ্বলবে…
তার মানে কি সে নীতিহীন?
না!
সে স্বাভাবিক মানুষ, যার মধ্যে চাহিদা আছে।
সমস্যা সেই চাহিদায় নয়—সমস্যা সমাজের ভণ্ড মানসিকতায়।
★মেয়ে পক্ষের 'প্রতিষ্ঠা' মানেই ছেলের বিসিএস!
◾তুমি যদি আজকের কোনো সফল ব্যবসায়ীর জীবনী পড়ো—দেখবে, তারা জীবনের অর্থ খুঁজে পেয়েছেন ৪০/৪৫/৫০ বছর বয়সে।
তাহলে কি ততদিন কেউ অপেক্ষা করবে?
★-তখন মেয়েটি বয়ফ্রেন্ড সাথে ঘুরবে,
★ছেলেদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করবে,
★বা ফোনের মাধ্যমে খারাপ কাজে লিপ্ত হবে।
★যাবতীয় অশ্লীলতায় লিপ্ত হবে।
◾তখন বলে সেই মেয়েটি ও ছেলেটি খুব খারাপ তাই না।
আসলে তাঁরা কি করবে, আসলে যদি কোনো ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে পাঁচ সাতদিন খাবার না দিয়ে অভুক্ত রাখা হয়, তখন নিশ্চয়ই সে তাঁর ক্ষুধা মেটানোর জন্য, চুরি বা ছিনতাই অথবা হারাম উপার্জন করে হলেও তাঁর ক্ষুদা মেটাবে।
◾ঠিক তেমনি যদি যুবক যুবতীদের তাঁদের ১৪-১৫ বছর বয়সের ক্ষুধার সময় যদি তাঁকে ৩০-৩২ বয়সে বিবাহ দেওয়া হয়, তাহলে এতোটি বছর তো সে অবশ্যই হারাম পাপ কাজটাই করবে এটাই স্বাভাবিক।
◾আসলে বাস্তবতা হলো—জীবনের অনেক দরজাই বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ আমরা “ঠিক সময়ে বিয়ে” কথাটা বুঝতে না শিখি।
★ ইসলাম যা বলেছে, তা কি আমরা মানি?
ইসলাম বলে:
“যদি কেউ গরিব হয়, আল্লাহ তাকে তার বিয়ের মাধ্যমে রিজিক দান করবেন।”
কিন্তু সমাজ বলে:
“প্রথমে টাকা কামাও, পরে বিয়ে করো।”
প্রত্যেক মা-বাবার এই জ্ঞান থাকা উচিত যে, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েদের বিয়ের বয়স হয়ে গেলে, যতদিন না তাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ততদিনের তাদের দ্বারা অর্জিত পাপ সমূহ পিতা-মাতার ঘাড়ে বর্তাবে...
◾এই সমাজ একদিকে মসজিদে গিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করে,
অন্যদিকে ছেলের বিয়েতে ‘পদবি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যাংক ব্যালেন্স’ চায়।
★ ফাইনাল:
বিয়ের সময় সঠিক হলে, জীবন অনেক ভুল থেকে বাঁচে
ভাই, তোমার শরীর, তোমার মন, তোমার অনুভব—সবই জীবন্ত জিনিস।
তোমার চাওয়া-পাওয়া স্বাভাবিক।
সমাজ যদি এসবের দমন চায়, তবে সেটা গুনাহের পথে ঠেলে দিচ্ছে—যা আল্লাহর রাস্তা নয়।
★তাই সঠিক সময়ে সঠিক বয়সে, সঠিক নিয়তে, সঠিক মানুষকে বিয়ে করুন।
অল্প বয়সে বিয়ে করুন হারাম পথ ত্যাগ করুন।
এবং অল্প বয়সে নিজেদের সন্তানদের বিবাহ্ দিন।
কারণ এটা ফেৎনার যুগ উলঙ্গ ও নগ্নতার যুগ এই যুগে ঈমান ধরে রাখা খুবই কঠিন।
◾নবীজী সা বলেছেন, শেষ জামানায় ঈমান ধরে রাখা ততটাই কঠিন হয়ে যাবে। যতটা কঠিন হাতের উপর জলন্ত কয়লা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাটা।
আরেকটি বর্ণনায় এসেছে।
◾নবীজী সা বলেছেন, শেষ জামানায় মানুষ সকালে ঈমানদার থাকবে বিকালেই কাফির হয়ে যাবে। আবার বিকালে ঈমানদার থাকলে সকালে কাফির হয়ে যাবে।
★তাই আপনার সন্তান আপনার ভাই বোনদের হারাম পথ গুনাহ্ থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আপনার।
◾নবীজী সা বলেছেন,
হে যুবকের দল, তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান, যাদের স্ত্রীকে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য আছে তাঁরা যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে করে।
যাদের সামর্থ্য নেই কিছুই নেই তাঁরা রোজা রাখবে।
★বিবাহ দিন হালাল সম্পর্কের মধ্যে দিয়েই প্রতিষ্ঠা আসবেই—যদি নিয়ত থাকে সুন্দর জীবন গড়ার।