16/06/2025
তদন্তে এসে পুলিশের কাণ্ড!
গাজীপুরের শ্রীপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশেদুল ইসলাম (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হাতের রগ কেটে দিয়েছে এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বৈরাগীরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় রাশেদুলকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়।
আহত রাশেদুল স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। তিনি বৈরাগীরচালা এলাকার বাসিন্দা মো. জালাল উদ্দিনের ছেলে।ঘটনার পর অভিযুক্ত জহিরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি একই এলাকার মৃত দেলু মিয়ার ছেলে।
শ্রীপুর থানায় দায়ের করা মামলায় জহিরুল ইসলাম (৪৮), তাঁর স্ত্রী মোছা. কাজল আক্তার (৪০), লিচুবাগান এলাকার মো. জুবায়েদ (২৬) ও জহিরুলের বড় বোন আসমা আক্তারকে (৫০) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জালাল উদ্দিন ও জহিরুল ইসলামের মধ্যে পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় এলাকায় বৃষ্টির জমে থাকা পানি নিষ্কাশন নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জহিরুল ইসলাম ধারালো ছুরি দিয়ে রাশেদুলের হাতে আঘাত করেন। এতে তাঁর হাতের রগ কেটে যায়। পরে এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
আহতের মা আসমা খাতুন জানান, ‘ঘটনার পর পুলিশ প্রধান আসামিকে ধরেছে। কিন্তু এরপর থেকেই আসামিপক্ষ আমাদের মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। একটি অপরিচিত নম্বর থেকে আমার স্বামীর মোবাইলে ফোন করে বলা হয়, মামলা না তুললে আমাদের নামে নানা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে, বাড়িতে থাকতে দেওয়া হবে না। এমনকি কোনো অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ আমাদের বাড়িতে গিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীপুর থানার এসআই সুজন কুমার পণ্ডিত আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। বলেছেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে হাত-পা ভেঙে জেলে পাঠাবেন। এখন আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই সুজন কুমার পণ্ডিত বলেন, ‘ট্রিপল নাইনের (৯৯৯) ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।’ এরপর তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বারিক বলেন, ‘মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। কোনো পুলিশ কর্মকর্তা কেউ খারাপ আচরণ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
আহত রাশেদুল বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবার দ্রুত বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।