04/06/2025
জিলহজ্জ মাসের নয় তারিখকে ‘য়াউমে আরাফা’-আরাফা দিবস বলে। এক আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিবস আরাফা দিবস। আল্লাহ তাআলা, আরাফা দিবসে, তাঁর বান্দাদেরকে সবচেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বলেছেন, ‘এমন কোনো দিবস নেই যেখানে আল্লাহ তাআলা আরাফা দিবস থেকে বেশি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এবং আল্লাহ নিশ্চয়ই নিকটবর্তী হন, ও তাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন, বলেন—ওরা কী চায়?[1] অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ তাআলা আরাফায় অবস্থানরতদেরকে নিয়ে আকাশবাসীদের সাথে গর্ব করেন। তিনি বলেন, আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখো, তারা আমার কাছে এসেছে এলোথেলো ও ধুলায় আবৃত অবস্থায়।[2]
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)আরাফার ময়দানে সূর্যাস্তের পূর্বে বেলালকে (রাঃ) নির্দেশ দিলেন মানুষদেরকে চুপ করাতে। বেলাল বললেন: আপনারা রাসূলুল্লাহ (রাঃ) এর জন্য নীরবতা অবলম্বন করুন। জনতা নীরব হল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বললেন, ‘হে লোকসকল! একটু পূর্বে জিবরাইল আমার কাছে এসেছেন। তিনি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আহলে আরাফা ও আহলে মুযদালেফার জন্য আমার কাছে সালাম পৌঁছিয়েছেন, ও তাদের অন্যায়ের জিম্মাদারি নিয়েছেন। ওমর দাঁড়িয়ে বললেন, য়্যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! এটা কি শুধুই আমাদের জন্য? তিনি বললেন, এটা তোমাদের জন্য ও তোমাদের পর কেয়ামত পর্যন্ত যারা আসবে তাদের জন্য। ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর অনুকম্পা অঢেল ও উত্তম।[3]
আরাফা দিবস মুসলমানদের ওপর আল্লাহর দ্বীন ও নেয়ামত পরিপূর্ণতা প্রাপ্তির দিবস। তারিক ইবনে শিহাব থেকে বুখারির এক বর্ণনায় এসেছে, ইহুদিরা ওমর (ﷺ)কে বলল: আপনারা একটি আয়াত পড়েন, যদি তা আমাদের ওপর নাযিল হতো তাহলে এ দিবসে আমরা উৎসব পালন করতাম। ওমর (রাঃ) বললেন, আমি অবশ্যই জানি কী উদ্দেশ্যে ও কোথায় তা নাযিল হয়েছে, এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কোথায় ছিলেন যখন তা নাযিল হল। (তা ছিল) আরাফা দিবস। আর আমরা-আল্লাহর কসম- আরাফার ময়দানে। সুফয়ান বলেন, দিনটি জুমাবার ছিল কি-না, আমার সন্দেহ আছে। (আয়াতটি ছিল : الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ - আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দিনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম)[4] ([5])
আরাফা দিবসের রোজা, পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।[6] তবে এ রোজা হাজিদের জন্য নয়, বরং যারা হজ্জ করতে আসেনি তাদের জন্য। হাজিদের জন্য আরাফার দিবসে রোজা রাখা মাকরুহ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বিদায় হজ্জের সময় আরাফা দিবসে রোজা রাখেননি। বরং সবার সম্মুখে তিনি দুধ পান করেছেন।[7] ইকরামা থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বাড়িতে প্রবেশ করে আরাফা দিবসে আরাফার ময়দানে থাকা অবস্থায় রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)আরাফার ময়দানে আরাফা দিবসের রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।[8]