02/04/2025
ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ৩০টি খাতে পণ্য রফতানি করে, যার মধ্যে ছয়টি কৃষি ও ২৪টি শিল্পখাত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে ট্যারিফ’ বা মুক্তি দিবস শুল্ক পরিকল্পনা নিয়ে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছেন যে, পাল্টাপাল্টি শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্কের তালিকা উল্লেখ করে মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘অন্যায্য বাণিজ্য রীতিনীতি’ বন্ধ হওয়া দরকার।
তিনি জানান, ভারত মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। তার ইঙ্গিত থেকে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপের ক্ষেত্রে ভারতকে কোনো ছাড় দেবে না। অর্থাৎ, ভারতীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও এখন যুক্তরাষ্ট্র ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবে এবং এই বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প খুবই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মুখপাত্রের ইঙ্গিত সত্যি হলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক আগামীকাল ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে ভারতের বিভিন্ন শিল্প।
ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ৩০টি খাতে পণ্য রফতানি করে, যার মধ্যে ছয়টি কৃষি ও ২৪টি শিল্পখাত। দেশটির মোট বাণিজ্যের ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ, মোট রফতানির ১৮ শতাংশ এবং মোট আমদানির ৬ দশমিক ২২ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভারতের চিংড়ি রফতানি কঠিন হয়ে পড়বে, ব্যয় বাড়বে ওষুধে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে জুতার বাজার
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতের সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ-
অ্যালকোহল, ওয়াইন ও স্পিরিট: এগুলোর ওপর ১২২ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পাবে। যদিও এই খাতে ভারতের রফতানি মাত্র ১ দশমিক ৯২ কোটি ডলারের।
দুগ্ধজাত পণ্য: ১৮১ দশমিক ৪৯ কোটি ডলারের রফতানি ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এতে ভারতের ঘি, মাখন ও গুঁড়া দুধের দাম বেড়ে প্রতিযোগিতামূলক বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হবে।
মাছ, মাংস ও প্রক্রিয়াজাত সামুদ্রিক খাদ্য: ২৫৮ কোটি ডলারের রফতানিতে ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বড় ক্ষতি হবে, বিশেষ করে ভারতের চিংড়ি রফতানি কঠিন হয়ে পড়বে।
জীবিত প্রাণী ও প্রাণিজ পণ্য: ১ দশমিক ০৩ কোটি ডলারের রফতানিতে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, চিনি ও কোকোয়া: ১০৩ কোটি ডলারের রফতানিতে ২৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পেলে ভারতীয় স্ন্যাকস ও মিষ্টিজাতীয় পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।
জুতা: ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় জুতার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হীরা, সোনা ও রূপা: ১ হাজার ১৮৮ কোটি ডলারের রফতানিতে ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির পেতে পারে। এর ফলে ভারতের গয়নার দাম বাড়বে এবং তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
শিল্পপণ্য: ওষুধ খাতে ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির মুখে পড়বে, যা ভারতীয় জেনেরিক ও বিশেষায়িত ওষুধের ব্যয় বাড়িয়ে তুলবে।
ভোজ্যতেল: ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের নারকেল ও সরিষার তেলের দাম বাড়বে।
আকরিক, খনিজ, পেট্রোলিয়াম ও পোশাক খাত: এসব খাতে নতুন কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না।
ক্রেডিড: বনিক বার্তা।