29/05/2025
ক্লায়েন্ট ধরার ৫টা ভুল যেগুলা আমি করছিলাম (আর সেগুলো আপনি করবেন না!)
আমি যখন ডিজাইন ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে, তখন ভাবতাম, ভালো কাজ শিখলেই হবে, ক্লায়েন্ট একদিন হেলিকপ্টারে চড়ে আমার ইনবক্সে আসবে। অথচ অটোরিকশা দিয়েও কেউ আসতো না।
ভুল ১: ইনবক্সে “Hi” দিয়ে বসে থাকা
একদিন এক ক্লায়েন্টকে ইনবক্স করলাম: “Hi” সে রিপ্লাই দিল না। আমি দুই দিন পর দিলাম “How are you?” আরো দুই দিন পর বললাম “I love your products” আজ পর্যন্ত কোন রিপ্লাই ই আসে নাই সিন করে স্কিপ করেছে।
মনোবিজ্ঞান বলছে: মানুষ “অস্পষ্টতা” সহ্য করতে পারে না। তুমি যদি কাজের কথা না বলে ধোঁয়াটে ভঙ্গিতে ঢুকো, সে ধরেই নেবে তুমি সিরিয়াস না।
শেখার বিষয়: শুরুতেই পরিচয় + উদ্দেশ্য + সম্মান + ভ্যালু = জয়। যেমন: “Hi, I’m a logo designer. I checked your business and found some areas where strong branding can help you stand out. May I share a few ideas?”
এইভাবে নক দিলে যে কেউই কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করবে।
ভুল ২: নিজের প্রোফাইল সাজাই নাই, অথচ ডিজাইন দুনিয়ার রাজা সাজি
তখন Behance প্রোফাইলে অল্প কিছু লোগো ছিল। তাও একেবারে নর্মাল তেমন ভালো কোন কনসেপ্ট নাই, প্রেজেন্টেশন এর কথা তো বাদই দিলাম। ক্লায়েন্ট কে পোর্টফলিও লিংক দিলে, ক্লায়েন্ট ঢুকে দেখে বলতো, “এ কি! তুমি কি সত্যি প্রোফেশনাল? তোমার আরও শেখা উচিত।"
ভুল ৩: নিজের দাম বলতে গিয়েই হাঁটি হাঁটি পা পা করতাম
একজন বলল, “Logo বানালে কত নিবা?” আমি বললাম, “আপনি কত দিতে চান?” তিনি সস্তা দাম বললেন। এমনিতেই ক্লায়েন্ট এর মেসেজ পাওয়া মানে সোনার হরিণ পাওয়া যা দেয় এটাই লাভ মনে করে প্রজেক্ট নিয়ে নিতাম।
মনোবিজ্ঞান বলছে: যে নিজের ভ্যালু জানে না, মানুষ তাকে সিরিয়াস নেয় না। দাম নিয়ে বেশি দরদাম করলে ক্লায়েন্ট ধরে নেয়—“এই ছেলে কনফিডেন্ট না।”
শেখার বিষয়: আগে কাজের দাম নিজেই বিশ্বাস করো।
ভুল ৪: "সব করি ভাই"
একটা সময় বলতাম: “Logo, flyer, banner, poster, T-shirt, cover photo, Facebook boost, প্রেমের চিঠি—সব করি ভাই!” ক্লায়েন্ট ভাবত: “এই লোক আসলে ভ্যারাইটিজ পাবলিক কোন কিছুই ভালো পারে না।”
মনোবিজ্ঞান বলছে: ন্যারো পজিশনিং মানে স্পষ্ট ব্র্যান্ড ভ্যালু। যদি আপনি নিজেকে ১০টা কাজের ‘জ্যাক’ বানান, কেউ আপনার ভেতরে ‘মাস্টার’ খুঁজে পাবে না। মানুষ সব বিষয়ে এক্সপার্ট হয় না।
শেখার বিষয়: একটায় ফোকাস দেন।
ভুল ৫: ক্লায়েন্টের রিভিউ চাইতে গড়িমসি করতাম।
কাজ শেষ হইল। ক্লায়েন্ট খুশি। আমিও চুপচাপ থাকতাম। ভেবেছি—"কি দরকার কষ্ট করে রিভিউ চাইবার?" এই কারনে আমি অনেক রিভিউ হারিয়েছি। অথচ রিভিউ, কাজের প্রুফ, প্রিভিয়াস ক্লায়েন্ট কেস স্টাডি ইত্যাদি এইগুলা যে পরবর্তী ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেটাই বুঝতাম না তখন।
মনোবিজ্ঞান বলছে: মানুষ খুশি হলে সেটা প্রকাশ করতে চায়—শুধু তারে জিজ্ঞেস করতে হয়। আর একবার সে রিভিউ দিলে, পরের ক্লায়েন্টের চোখে তোমার সোশ্যাল প্রুফ তৈরি হয়।
শেখার বিষয়: কাজ শেষে জেন্টলি বলেন: “Hey! I’m glad you liked the work. If you don’t mind, a short feedback would mean a lot. It helps me grow and serve better.”
এইভাবে নম্র ভাবে বললে যে কেউই আপনাকে সুন্দর পজিটিভ রিভিউ দিবে ইনশাআল্লাহ।
হাসতে হাসতে মজার সাথে ক্লায়েন্ট পেতে চাইলে আমার "ক্লায়েন্ট ধরার বিচ্ছু বুদ্ধি " ই-বুক টা পড়তে পারেন।
hashtag
hashtag
hashtag