02/08/2025
❝ অজানাকে জানুন: নারী কবর জিয়ারত করতে পারবে কি? ❞
🔹 শুরুতে একটি বাস্তবতা:
ইসলামের প্রাথমিক যুগে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর জিয়ারত নিষিদ্ধ করেছিলেন, কারণ তৎকালীন আরব সমাজে কবর জিয়ারতের নামে শিরক, বিলাপ এবং জাহিলিয়াতি আচরণ চালু ছিল। পরে ইসলাম মানুষকে তাওহিদের শিক্ষা দিলে এবং কবর জিয়ারতের লক্ষ্য ও আদব শেখানো হলে রাসুল (সা.) নিজেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং কবর জিয়ারতের অনুমতি প্রদান করেন — নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য।
⸻
🔹 হাদীসের দলিল:
হজরত আয়েশা (রা.)-এর কবর জিয়ারত:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি মুলাইকা বলেন:
“একদিন হজরত আয়েশা (রা.) কবরস্থান থেকে ফিরে এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি কোথা থেকে আসলেন?’
তিনি বললেন, ‘আমি আমার ভাই আবদুর রহমান ইবনে আবু বকরের কবর থেকে এসেছি।’
আমি বললাম, ‘নবী (সা.) কি কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেননি?’
তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তিনি নিষেধ করেছিলেন; কিন্তু পরে আদেশ করেছেন।’”
📚 [মুস্তাদরাকে হাকিম: হাদীস ১৩৯২; সুনানে বায়হাকি: ৬৯৯৯]
⸻
🔹 গুরুত্বপূর্ণ শর্তসমূহ:
নারীরা কবর জিয়ারত করতে পারবেন — তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ও আদব মেনে:
1. ✅ পর্দা ও শালীনতা বজায় রাখতে হবে
2. ✅ পুরুষদের সংমিশ্রণ থেকে দূরে থাকতে হবে
3. ✅ বিলাপ, উচ্চস্বরে কান্না বা কবর ছুঁয়ে ধরা, মাটি ঘষা— এসব নিষিদ্ধ
4. ✅ কবর জিয়ারতের প্রকৃত উদ্দেশ্য রাখতে হবে: মৃত্যু স্মরণ, ইবরত গ্রহণ ও মৃতের জন্য দোআ করা
⸻
🕌 ইসলাম কী চায়?
ইসলাম মৃত্যুকে স্মরণ করায়, কবরের কথা স্মরণ করায়, এবং আমাদের আত্মশুদ্ধির দিকে আহ্বান জানায়।
পুরুষদের মতো নারীরাও যদি সঠিক নিয়ত ও শরয়ি আদব বজায় রেখে কবর জিয়ারত করে — তাহলে ইসলাম তাকে স্বাগত জানায়, নিরুৎসাহিত করে না।
⸻
✍️ উপসংহার:
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় অনেক বিধান সময় ও পরিস্থিতির বিবেচনায় পরিবর্তিত হয়েছে — এটি ছিল একটি দৃষ্টান্ত।
কবর জিয়ারতের বিষয়েও সেই ধরনের একটি পরিবর্তন দেখা গেছে। তাই আজ আমাদের কর্তব্য হলো প্রতিটি আমলকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে বোঝা, আবেগ বা সামাজিক চাপে নয়।