Life History Threads

Life History Threads সুন্দর পরবর্তী গল্পের পাঠ জন্য আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে Follow করুন📍💖

Mr BOLTU Show চ্যানেলে আসার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ 😇

আপনার একটা ছোট্টো যোগদান, আপনার এই ছোট্টো ভাইকে জীবনে বড়ো হতে অনেক সাহায্য করবে।
🙏

 🍁আদিবা ম্যামের সামনে মুখ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে মুগ্ধতা।গম্ভীর মুখ নিয়ে চেয়ারে বসে কিছু একটা লেখালেখিতে ব্যস্ত আছেন ম...
04/07/2025


🍁
আদিবা ম্যামের সামনে মুখ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে মুগ্ধতা।গম্ভীর মুখ নিয়ে চেয়ারে বসে কিছু একটা লেখালেখিতে ব্যস্ত আছেন ম্যাম।গায়ের রং শ্যামলা রোগা পাতলা টাইপের।দেখলে ম্যাম বলে মনেই হয় না।একদম অল্প বয়সী।যেন অনার্স বা মাষ্টারর্সের স্টুডেন্ট।চোখে হাই পাওয়ারের বড় বড় ফ্রেমের চশমা।মুগ্ধতাকে দাঁড় করিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি।অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মুখে কোনোকথা নেই উনার।মুগ্ধতা কে ডাকার কারণ জানার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে।বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পর চশমার ফাঁকে চোখ বের করে গম্ভীর ভাবে মুগ্ধতা কে উদ্দেশ্য করে বললেন......
____তুমিই ফার্স্ট ইয়ারের মুগ্ধতা।
হঠাৎ ম্যামের কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলো মুগ্ধতা।মাথা নাড়িয়ে সম্মতি সূচক মনোভাব পোষণ করলো।ভ্রু জোড়া উঁচু করে ম্যাম বললেন.....
_____ তুমি নাকি মাস্টার্সের স্টুডেন্টকে অকারণে অপমান+ মারধোর করেছো....?
ম্যামের কথায় চমকে উঠলো মুগ্ধতা।মাস্টার্সের স্টুডেন্ট কে মারধোর!এতবড় মিথ্যা অপবাদ।চোখ বড় বড় করে বললাম.....
____নো ম্যাম!আমি কাউকে অপমান করিনি।আর মাস্টার্সের কাউকে চিনিনা পর্যন্ত তাহলে অপমান+মারধোর করবো কীভাবে...?
আমার কথায় সন্দেহ প্রকাশ করলেন ম্যাম।সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললেন......
সত্যি তুমি মাস্টার্সের কাউকে চিনোই না...?
সাথে সাথে বললাম আমি.....
___নো ম্যাম!
আমার কথা শুনে চিৎকার দিয়ে বললেন উনি।
_____সিনিয়র দের অসম্মান করে আমার সামনে অস্বীকার করছো।তুমি মুগ্ধ কে অপমান করো নি।তোমাকে বাঁচাতে গিয়েছিলো তখন ওকে মারো নি।ওরা তোমার নামে কমপ্ল্যান করেছে।
ম্যামের চিৎকার শুনে আতকে উঠলো মুগ্ধতা।তারমানে ম্যাম মুগ্ধর কথা বলছে!কতবার বললাম মুগ্ধ কে যা হয়েছে ভুলবশত হয়েছে তাও আমার নামে কমপ্লেন করলো ছিঃ।
____আসলে ম্যাম মুগ্ধ উনার সাথে আমার ঝামেলা হয়েছে ঠিকই কিন্তু উনি কোন ক্লাসে পড়েন সেটা জানতাম না আমি।আর ম্যাম ওটা একটা এক্সিডেন্ট ছিলো আমি ইচ্ছে করে করিনি।
মূহুর্তেই রেগে গেলেন ম্যাম।মুগ্ধতার কথা শোনে নিজের রাগটাকে কিছুটা সামলে নিলেন উনি।তার পর বললেন....
______যা হওয়ার হয়ে গেছে।এখন মুগ্ধর কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও তুমি।নইলে সিনিয়রের সাথে মিস বিহেভ করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ অনেক বড় শাস্তি দেবে তোমায়।এমনও হতে পারে যে কলেজ থেকেই বের করে দিলো।
ম্যামের সাথে তর্ক করার সাহস নেই মুগ্ধতার।তাছাড়া কিছুই শুনতে চান না উনি।উনার এক কথা মুগ্ধর কাছে ক্ষমা যেন চেয়ে নেয়।না চাইতেও লোকটার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে মুগ্ধতা কে।কারণ নইলে এই কলেজে থাকতে পারবে না।নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে যে করেই হোক এই কলেজে থাকতে হবে মুগ্ধতাকে।কারণ এখান থেকে বের করে দিলে আন্টি কোথাও আর পড়তে দেবেন না ওকে।তাই যে করেই হোক ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলতে হয়।মুখ কালো করে ম্যামের রুম থেকে বের হলো মুগ্ধতা।মুগ্ধতাকে গোমড়া মুখে দেখে এগিয়ে এলো তিথি.....
____তোর চোখ মুখ এমন শুকনো দেখাচ্ছে কেন....? ম্যাম কি বললেন....?
তিথিকে সবকিছু খুলে বললো মুগ্ধতা।মুগ্ধতার কাছ থেকে সবকিছু শুনে বিস্মিত তিথি।মুগ্ধ ভাইয়া এরকম কিছু করতে পারে ভেবেই অবাক হচ্ছে তিথি।মুগ্ধকে এতটা খারাপ বিহেভ কারো সাথে করতে দেখে নি।এবারই প্রথম মুগ্ধতার সাথে করতে দেখছে।যা অবাক করছে তিথি কে।
🍁
আধঘন্টা ধরে কাকফাঁটা রোদের মধ্যে মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে আছে আফিফ।সেদিন এখানেই নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো মিতুলকে।এই কড়া রোদ উপেক্ষা করেও অপেক্ষার প্রহর গুণতে ব্যস্ত আফিফ।যদি তার বাসা চিনতো তাহলে তাকে একনজর দেখার জন্য টুপ করে ঢুকে পড়তো বাসার ভিতর।এতে যে যাই বলুক তবুও দেখতো পেত তার সেই প্রেয়সীর মুখ।অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও তার দেখা পেলো না আফিফ।মন খারাপ করে শরীরের ঘাম মুছে গাড়ীতে উঠে বসলো।সেদিন মেয়েটাকে দেখার পর থেকে একটা রাত ও শান্তিতে ঘুমাতে পারে নি।শুধু তার মুখচ্ছবি প্রতিফলিত হচ্ছে নয়ন পানে।আহা!কি মায়াবী সেই মুখখানি।আফিফ গাড়ীতে বসে ভাবছে কেন করছে এমন পাগলামি।একটা মেয়ের জন্য এতটা টান তৈরী হলো কেন...?কেন তাঁকে ঘিরে এত বিরহ..?কেন তাকে দেখার এত আকুলতা।জানে না!কিচ্ছু জানে না আফিফ।শুধু জানে মেয়েটাকে সে দেখতে চায়!একটা নজর নিজ চোখে দেখে চক্ষু শীতল করতে চায়।টাই টা টেনে একটু ঢিলা করে ঢকঢক করে হাফ বোতল পানি শেষ করে গাড়ীতে স্টার্ট দিলো আফিফ।কিছুদূর যেতেই চোখ আটকে গেলো।ঠোঁটের কোণে অজান্তেই হাসি ফুটে উঠলো।এতক্ষণে যেন দেহে প্রাণ ফিরে এলো।তাড়াতাড়ি গাড়ী থামালো আফিফ। চুলগুলো হাত দিয়ে ঠিক করে নিলো।শার্টের টাইটা সুন্দর করে পড়ে নিলো। মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়ালো আফিফ.....

মুগ্ধর সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে মুগ্ধতা।মুগ্ধতার পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে তিথি।চোখে মুখে তার চরম অস্বস্তি।রাগে দুঃখে মুগ্ধ কে কিছু বলেনি তিথি। মুখভার করে বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।এখন মুগ্ধ একা নয় সাথে আছে ওর সকল বন্ধু বান্ধব।রাতুল,হৃদয়,রিফাত,নেহা।মুগ্ধর বেস্ট ফ্রেন্ড রাতুল।মুগ্ধতাকে কান ধরতে দেখে সবাই মুখ চেপে হাসছে।কিন্তু রাতুল এটা কিছুতেই মানতে পারছে না।এভাবে একটা মেয়েকে অপমান করার কোনো মানেই হয় না।মুগ্ধ একটু বেশিই করছে।যার জন্য পরে পস্তাতে হবে ওকে।
কিছুক্ষণ আগে......
মুগ্ধতা পুরো কলেজ তন্নতন্ন করে খুঁজে বার করে মুগ্ধকে।মুগ্ধ কে বার করার একটাই উদ্দেশ্য তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া।আদিবা ম্যামের ভাষ্যমতে,মুগ্ধ যদি তাকে ক্ষমা করে দেয় তাহলে কোনো স্টেপ নেওয়া হবে না মুগ্ধতার এগেন্সটে।তাই অনিচ্ছা থাকা স্বত্বেও অনেকটা বাধ্য হয়ে মুগ্ধর কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি হয়।যদিও তিথি এই ব্যাপারটার বিপক্ষে।মুগ্ধ কে বের করে মুগ্ধর উদ্দেশ্যে বললো মুগ্ধতা......
_____দেখুন মুগ্ধ ভাইয়া সেদিন অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এক্সিডেন্টলি আপনাকে আমি আঘাত করেছিলাম কিন্তু তারজন্য আপনি আমার নামে কমপ্লেন করবেন কখনও ভাবিনি আমি।সে যাইহোক আচ্ছা আমার ভুলের জন্য আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী আমি।সরি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।
মুগ্ধতার কথা শোনে চমকে উঠলো মুগ্ধ।সে কখনও কার কাছে মুগ্ধতার নামে কমপ্লেন করলো।মুগ্ধ কিছু বলে উঠার আগেই স্নেহা বললো.....
____এভানে ক্ষমা চাইলে মুগ্ধ জীবনেও তোমাকে ক্ষমা করবে না মুগ্ধতা।যদি কলেজে টিকতে চাও তাহলে কান ধরে ক্ষমা চাও।
স্নেহার কথায় চরম বিস্মিত মুগ্ধ।স্নেহার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাতেই ফিসফিস করে বলে উঠলো স্নেহা.....
_____দোস্ত রিফাত আমাকে সবটা বলেছে।এই সবটা আমিই সাজিয়েছি ওকে টাইট দেওয়ার জন্য।প্লিজ তুই ব্যাঘরা দিস না।মুগ্ধ কিছু বলতে যাবে তার আগেই হৃদয় বললো....
প্লিজ দোস্ত!অনেকদিন পর একটু মজা করার স্কোপ পেয়েছি।আল্লাহর দোহাই লাগে তুই সেটা নষ্ট করে দিস না প্লিজ।।এতগুলো বন্ধুর কথা ফেলতে পারছে না মুগ্ধ।অন্যদিকে মুগ্ধতা কে এভাবে দেখতেও পারবে না।কিন্তু আজ নিরুপায় মুগ্ধ।এর আগেও এভাবে অনেক কে বোকা বানিয়েছে ওরা।আর আজ ওদের স্বীকার মুগ্ধতা।বন্ধুদের ইচ্ছা কে প্রাধান্য দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে মুগ্ধ।
স্নেহার কথায় মাথা তুলে তাকালো মুগ্ধতা।সবার সামনে কান ধরতে হবে তাও একটা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ভেবেই চোখের কোণে পানি চলে আসলো ।সেই পানিগুলো চোখ এড়ালো না মুগ্ধর।মুগ্ধতার চোখে পানি দেখে ভিতরে অজানা এক ঝড় বয়ে গেলো মুগ্ধর ।কিন্তু নিরুপায় মুগ্ধ...!!মুগ্ধ কে চুপ থাকতে দেখে তিথি বললো.....
_____ভাইয়া মানছি মুগ্ধতা ভুল করেছে কিন্তু তাই বলে এতবড় শাস্তি মানতে পারছি না।
তিথি কে এক ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো স্নেহা।তিথিও চুপসে গেলো।এরপর মুগ্ধতা কে উদ্দেশ্য করে বললো.....
______কি হলো এভাবে খাম্বার মতো দাড়িয়ে আছো কেন....? যা করার তাড়াতাড়ি করো আমাদের ক্লাস আছে।
আর কোনো উপায় না দেখে কান ধরতে বাধ্য হলো মুগ্ধতা।কলেজে থাকতে হলে কান তাঁকে ধরতেই হবে।যেভাবেই হোক মুগ্ধর কাছ থেকে ক্ষমা তাঁকে পেতেই হবে.....
_____আই'এম সরি!মুগ্ধ ভাইয়া....!!সত্যি আমি খুব দুঃখিত..!!
কান ধরে মাথানিচু করে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে মুগ্ধতা।যা কিছুতেই ভালো লাগছে না মুগ্ধর।কেন জানি মেয়েটার নীরবতা সহ্য হচ্ছে না ওর।মুগ্ধতা মানেই কথার ফুলঝুরি।এভাবে মাথানিচু করে চুপচাপ কান্নাকাটিতে মানায় না ওকে।বড্ড মায়া হচ্ছে ওর জন্য।মুহূর্তেই স্নেহার উপর রেগে গেলো কিন্তু সেটা মুগ্ধতার সামনে প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক মুগ্ধ।তাই নিজের রাগটাকে দমিয়ে কয়েক সেকেন্ড অতিবাহিত হওয়ার পর মুগ্ধ বললো.......
____মুগ্ধতা তুমি যেতে পারো।তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি।
মুগ্ধর গলা পেয়ে চোখ ছোট ছোট করে তাকালো মুগ্ধতা।চোখের পানি মুছে এক মুহূর্তও সেখানে না দাঁড়িয়ে তিথিকে নিয়ে প্রস্থান করলো।মুগ্ধতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ।হয়তো মেয়েটার সাথে একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।স্নেহাকে উদ্দেশ্যে করে বললো.....
_____তুই কার পারমিশন নিয়ে এতবড় একটা কাজ করেছিস...?আমি তোকে বলেছি মুগ্ধতা আমার সাথে মিস বিহেভ করেছে।এখন যদি মুগ্ধতা কে সবটা বলে দিতাম তাহলে তোর মান সম্মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো বুঝতে পারছিস....?
আমতা-আমতা করে বললো স্নেহা.....
____এতটা রাগ করছিস কেন...?এরকম তো আমরা আরো কতজনকে মুরগী বানিয়েছি।আমি ভেবেছিলাম তুই খুশী হবি কিন্তু এখন দেখছি।
____হ্যাঁ!আজ পর্যন্ত অনেকেই মুরগী বানিয়েছিস কিন্তু কখনও কি এগুলোর পক্ষে ছিলাম আমি!ছিলাম না তো তাহলে।আচ্ছা রিদি কোথায়...?
পাশ থেকে হৃদয় বলে উঠলো.....
______রিদি তো আদিবা ম্যাম সেজে ওই ভাঙ্গা দুতলার রুমে বসে আছে বলেই হেসে উঠলো সবাই।এবার মুগ্ধ বুঝতে পারলো তাঁকে দিয়ে আদিবা ম্যামের খবর পাঠানো টা ছিলো ভুয়া।সব ক'টাকে এখন আস্ত চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে মুগ্ধর।মেয়েটাকে বোকা সোকা পেয়ে যা তা করলো।কিন্তু ওই মেয়েটার জন্য মুগ্ধর এতটা খারাপ লাগছে কেন...?কেন এতটা ভাবছে ওর কথা।কই আগে তো কারোর জন্য এতটা খারাপ লাগেনি তাহলে মেয়েটার জন্য কেন এতটা ব্যাথিত হচ্ছে মুগ্ধ.....? তার কারণটা নিজেরই অজানা.....!!
নিয়মিত গল্প দিতে না পারার জন্য সরি।আজ থেকে নিয়মিত পাবেন ইনশাআল্লাহ।
#চলবে......

চেহারা ফুরাবে, সৌন্দর্য মুছে যাবে—তবু ভালোবাসা চিরকাল থাকবে।💖
03/07/2025

চেহারা ফুরাবে, সৌন্দর্য মুছে যাবে—তবু ভালোবাসা চিরকাল থাকবে।💖

Part-5🍁পার্কে বসে আছি আমি।যঝনই মন ঝারাপ হয় তখনই ছোটে এখানে চলে আসি আমি।এখামে আসলেই সব মন খারাপ গুলে অদ্ভুদভাবে হারিয়ে যা...
03/07/2025

Part-5
🍁
পার্কে বসে আছি আমি।যঝনই মন ঝারাপ হয় তখনই ছোটে এখানে চলে আসি আমি।এখামে আসলেই সব মন খারাপ গুলে অদ্ভুদভাবে হারিয়ে যায়।মনে অজানা এক প্রশান্তি পাই আমি।আমার মব খারাপের পর এখানে আসি এটাবআদনান ভালো ভাবেই জানতো।যখনই ওর সাথে ঝগড়া হতো তখনই এখানে এসপ বসে থাকতাম আর আদনান কতশত উপায়ে রাগ ভাঙ্গাতো আমার।আর আজ মাএ একটা অজুহাত দেখুয়ে আমার থেকপ হাজার মাইল দূরে চকে গেছে আদনান যতই ভুলে যপতে চাই না কেন পারছি না কোথাও না কোথাও ওর জন্য মন খারাপ থেকে যাচ্ছে আমার।হয়তে এভাবেই সারাজীবন ওকে মাথায় নিয়পই বেঁচে থাকতে হবে আমায়।কথাগুলো ভাবতেই চোখ দুটো অশ্রুতে ভরে উঠলো।টুপটাপ পড়তে লাগলো ঝরণা ধারা।চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলানোর চেষ্টায় আছি তখনই কারে কথা কানে এলো আমার।কথাগুলো শুনে চোখ খুলে সামনে তাকালাম আমি.!চোখ খুলে হতভম্ব হয়ে আছি আমি। মুগ্ধ.......
এই যে মুগ্ধতা!এখানে বসে কাঁদছো কেন...?নিশ্চয়ই বয়ফ্রেন্ড আসবে বলে আসে নি আর সেই দুঃখে মুক্তদানা গুলো ঝরাচ্ছ তাই না।
আচমকা উনার গলা পেয়ে চমকে উঠলাম আমি। লোকটা যেন পিছুই ছাড়তে চাইছে না আমার।কই আগে তো কখনও দেখিনি তাহলে আজ এতবার উনার সাথে দেখা হচ্ছে কেন আমার।উনার কথার পিঠে কোনোকথা না বলে বসে আছি আমি।আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললেন উনি....
_____কি দিনকাল এলো মাইরি!মেয়েরা কলেজ ফাঁকি দিয়ে বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে আসে আবার বয়ফ্রেন্ড না আসলে বাচ্চাদের মতো কাঁদতেও থাকে আশ্চর্য।
লোকটার কথায় চরম বিরক্ত আমি।বুঝতে পারছি আমাকে নিয়ে মজা করছেন উনি।কিন্তু এরকম মজায় নেই আমি।আমার অবস্থা যদি জানতে পারতেন তাহলে কেঁপে উঠতেন উনি।
_____বাবা গো বাবা!!বয়ফ্রেন্ড আসে নি বলে এত রাগ যে আমার কথার উওরই দিচ্ছে না।দেখেছো চেনা মানুষ কত সহজেই না চেনার ভান ধরে আছে।
মুগ্ধ!!এই লোকটা এতটা বিরক্তিকর হবে এটা কখনও ভাবতেও পারিনি আমি।কর্কশ কন্ঠে বললাম....
____আপনি এখানে কেন..?আমি যেখানেই যাই সেখানেই আপনাকে কেন যেতে হয় বলেন তো আমায়।এখানে আমি প্রেম করি আর যাই করি তাতে আপনার কি।
নাথিং!!তুমি প্রেম করে দেবদাস থুক্কু দেবদাসী হলেও আমার কিচ্ছু না।
তাহলে আমার পিছু পিছু এখানে এসেছেন কেন...?আমাকে পাহাড়া দিতে...?
মুগ্ধতার কথা শোনে চোখ বড়বড় করে তাকালাম আমি!মেয়েটা বলে কি আমি ওকে পাহাড়া দিতে এখানে এসেছি আজব!
____তোমার মাথায় খুব বড় রকমের সমস্যা আছে তাই না মুগ্ধতা....?
উনার কথায় রাগে শরীর রিরি করছে আমার।কি মনে করেন নিজেকে উনি।তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে....
_____এই পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আমাকে পাগল বলে ফেলেছেন আপনি।পাগল আমি নই পাগল আপনি।তাই আজেবাজে বকছেন।
স্টপ!!নিজে পাগল হয়েও স্বীকার করবে না।তোমার আচার-আচরণই প্রমাণ করে তুমি পাগল।নইলে কেউ রাস্তায় এভাবে কাউকে আঘাত করে মা গো এখনও ব্যাথা করছে।
লোকটার কথায় বেশ লজ্জা পেলাম আমি সত্যি এই কাজটা করা উচিৎ হয়নি আমার।মুখ কাচুমাচু করে বললাম.....
____দেখুন এই একটা কাজের জন্য বারবার আমাকে পাগল বলতে পারেন না আপনি।তখন পরিস্থিতি অন্যরকম ছিলো তাই এটা করতে বাধ্য হয়েছিলাম আমি।
আমাকে পরিস্থিতি দেখাতে এসো না।আধ পাগল মেয়ে একটা।কিচ্ছু জানো আর নাই জানো পাগলামিটা খুব ভালোই জানো দেখছি।
মুগ্ধর সাথে বর্তমানে কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আমার।মাথা ব্যাথায় মাথা ফেঁটে যাচ্ছে।তার উপর উনার ফালতু বকর বকর।সব মিলিয়ে অতিষ্ট আমি।এখানে থাকলে উনার সাথে ঝগড়াই করতে হবে আমায়।তাই কথা না বাড়িয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম আমি।কাঁধে ব্যাগ নিয়ে সামনে এগুতে লাগলাম।পেছনে মুগ্ধ আমাকে ডেকে হাজারটা কথা বলছে তার কিছুই যেন শুনতে পাচ্ছি না আমি।কারণ কথাগুলো শোনার ইচ্ছে নেই আমার।
_____মুগ্ধতা শোন!চলে যাচ্ছ কেন...?তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করবে না...?যাহ্ বাবা চলে গেলো!মেয়েটা কেমন আজব প্রকৃতির।হঠাৎ হঠাৎ চুপ করে যায়।আর এমন কান্ড করে যেন অবুঝ বাচ্চা।গাড়ে হাত বুলিয়ে বাবা দজ্জাল মেয়ে কি মারটাই না মেরেছে।উফ!কিন্তু মেয়েটা হঠাৎ চলে গেলো কেন...?ধুর কিছুই বুঝলাম না আমি।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরে টুকটাক কিছু কাজ সেরে নিলাম আমি।দুপুরে হালকা কিছু খারাপ খেয়ে নিজের রুমে চলে এলাম।রুমে এসে বসতেই শুরু হলো অন্যন্যা আপুর ডাক। তার ডাক কানে আসতেই দৌড়ে তার রুমে চলে গেলাম।কারণ একমিনিট লেইট হলে ৩৫-৪৫ টা কথা শুনতে হবে আমায়।রুমে যেতেই এক গাধা কাপড় হাতে ধরিয়ে দিলো আমায়।সেগুলো এখন ধুয়ে দিতে হবে। এগুলো নতুন নয় আপুর যাবতীয় কাজ একমাএ আমাকেই করতে হয়।যদি কাজ না থাকে তাহলে ভালো জমা কাপড় গুলোকেও আমাকে দিয়ে ধুয়াবে।কেন আমকে এতটা অপছন্দ করে জানিনা আমি।কোনোকথা না বলে কাপড়গুলো ধুতে চলে গেলাম আমি।কাপড় ধুয়ে ছাঁদে শুকাতে দিয়ে নিচে যেতেই আন্টি বললো.....
____মুগ্ধতা আমার কোমড়ে খুব ব্যাথা করছে একটু ম্যাসাজ করে দে তো!!
আন্টির কথায় না করতে পারলাম না আমি।আন্টির সাথে চুপচাপ তাঁর রুমে চলে গেলাম।কোমড় হাত পা টিপে আন্টিকে ঘুম পাড়িয়ে রুমে ফিরে এলাম আমি।রুমে এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।মাথা ব্যাথা এখনও কমে নি।তবে আগের থেকে বেটার লাগছে এখন।
🍁
বাসায় এসেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে আফিফ।মুগ্ধতা কে বলে এসেছে কফি দেওয়ার জন্য।মুগ্ধতা ছাড়া কারোর হাতের কফি ভালো লাগে না আফিফের।বিয়ের জন্য আজ তিনদিন মুগ্ধতার হাতের কফি খায় নি আফিফ।তাই আজ বাধ্য হয়েই অনেকটা স্বার্থপরের মতোই ওকে কাজটা করতে বলে এসেছে।ল্যাপটপে অফিসের কিছু কাজ করতে ব্যস্ত সে।হঠাৎ মনে পড়লো সেই মায়াবীনীর কথা।চোখে ভেসে উঠলো সেই মুখের প্রতিচ্ছবি।যাকে আজ সারাদিনে প্রায় দুইশতবার মনে পড়েছে তার।যতই মনে না করার চেষ্টা করে ততই আরো বেশি মনে পড়ে তার।এই বিষয়টা নিয়ে খুবই চিন্তায় পড়ে গেছে আফিফ।এই পর্যন্ত কত মেয়ের সাথে উঠাবসা হয়েছে কিন্তু কখনও এভাবে মনে জেঁকে বসতে পারে নি কেউ।আর আজ কিনা কয়েকঘন্টার পরিচয়ে একটা মেয়েকে এতবার মনে পড়ছে স্ট্রেঞ্জ।সোশ্যাল সাউডের কথা মনে পড়তেই "মিতুল" লিখে সার্চ দিলো কিন্তু অনেক খুঁজেও কোথাও সেই কাঙ্ক্ষিত মিতুলকে খুঁজে পেলো না।হতাশ হয়ে মুখ কালো করে বিছানায় বসে রইলো আফিফ।
মুগ্ধতা আফিফের কফি নিয়ে রুমে এসে মুখভার দেখে বললো....
_____ভাইয়া কি হয়েছে তোমার মন খারাপ কেন...?
মুগ্ধতার গলা পেয়ে চমকে উঠলো আফিফ।মুখে হাসির রেখা টেনে....
____তেমন কিছু না।জানি তোর মন ভালো নেই তবুও তোকে বললাম কাজটা ঠিক হয়নি আমার।।তোকে কষ্ট দিলাম তাই না রে।আসলে তুই তো জানিস তোর হাতের কফি ছাড়া কারোর হাতের কফি ভালো লাগে না তাই বাধ্য হয়ে বললাম কিছু মনে করিস না প্লিজ।
ভাইয়া এমন একটা মানুষ যে কখনও কাউকে কষ্ট দিতে চায় না।অধরা অন্যন্যা আপুকে যতটা ভালোবাসে আমাকেও ঠিক ততটাই ভালোবাসে।কখনও বুঝতে দেয় না আমি তার বোন নই।এরকম একজন মানুষ পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার।ভাইয়া কে উদ্দেশ্য করে বললাম.....
____এভাবে কেন বলছো ভাইয়া!এক কাপ কফিই তো চেয়েছো তুমি।আর তো কিছু নয়।এসব কথা বললে কিন্তু গাল ফুলিয়ে বসে থাকবো আমি।
আমার কথায় হাসলো ভাইয়া।কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বললো.....
____যা হয়েছে সব ভুলে যা মুগ্ধতা।এরকম লো ম্যান্টালিটির মানুষের জন্য কখনও কষ্ট পাস না প্লিজ।জীবনটাকে নতুন করে সাজা।কোনো সেলফিশের স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচার চেষ্টা করিস না।নিজেকে শক্ত কর।
ভাইয়ার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলাম কিছু না বলে রুম থেকে চলে আসলাম।ভাইয়ার কথাগুলো ঠিকই যথাসম্ভব মেনে চলার চেষ্টা করবো আমি।কিন্তু চাইলেই কি সব হয়।মনের উপর কি জোর চলে...!!
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজকর্ম করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম আমি।আজ কোনো ঝামেলা ছাড়াই কলেজ ঢুকে গেছি।মুগ্ধ নামের লোকটাকে কোথাও দেখিনি।সারাটাদিন ভালোই কেটেছে আমার।যাক এইবার শান্তি।আর কখনও যেন লোকটার সামনে না পড়ি আমি।কথাটা বলেই সামনে পা বাড়াতেই অবাক হলাম আমি।মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে লোকটা সামনেই দাঁড়িয়ে আছে আমার।মুগ্ধ কে দেখেও না দেখার ভান ধরে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি এমন সময় তিথিকে বলে উঠলো মুগ্ধ.....
____তিথি তোর শাঁকচুন্নি বান্ধবী কে বলে দে....আমাদের কলেজের নিউ টিচার আদিবা ম্যাম ওকে ডেকে পাঠিয়েছেন।১০ মিনিটে যেন উনার সাথে দেখা করে।
লোকটার কথায় চরম অবাক হলাম আমি।আদিবা ম্যাম পরশু জয়েন করেছেন সেটা শুনেছি যদিও এখনও তাকে দেখিনি আমি।কিন্তু উনি হঠাৎ আমায় ডাকবেন কেন...?তিথির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিে আছি আমি.....তিথি বললো____
____আদিবা ম্যাম মুগ্ধতা কে ডাকছেন কেন ভাইয়া...?আর তাছাড়া সেটা ওকে না বলে
তোমাকে বললেন কেন...?
সেটা তোকে জানতে হবে না।সিম্পল একটা বিষয় আমি ওদিকে আসছিলাম তাই আমাকে বলেছে যদি চিনে থাকি তাহলে যেন বলি তাই বললাম আর কিছু নয়।
____শুনেছি আদিবা ম্যাম খুব রাগী খিটেখিটে মেজাজের একজন মানুষ।উনি কলেজ ঢুকতে না ঢুকতে আমায় ডাকলেন কেন কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না আমার।আমি আর তিথি ঝিম মেরে আছি।দুজনেই বুঝতে পারছি না কেন আমাকে ডাকলেন উনি....!!আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবারও বললেন উনি.....
____ম্যাম সময় সম্পর্কে খুব সচেতন।যদি ১০ মিনিট পরে যাও তাহলে খবর আছে তোমার।তাই এক্সট্রা শাস্তি পাওয়ার আগে তাড়াতাড়ি যাও হারি আপ!!
হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ম্যামের রুমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম আমি....!!
লোডশেডিংশের জন্য গতকাল গল্প দিতে পারিনি।জানি ভালো হয়নি অগোছালো হয়েছে।অনেক তাড়াহুড়োয় লিখেছি ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন...!!
#চলবে......
゚viralシfypシ゚

03/07/2025

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে আব্বু আম্মু কে এক সাথে হাসতে দেখা।❤️

 আমি আর তিথি মুগ্ধর যাওয়ার পানে চেয়ে আছি।ঝামেলা যেন পিছুই ছাড়তে চায় না আমার।একটা শেষ হতে না হতেই আরেকটার উৎপওি।আদনানকে ন...
03/07/2025


আমি আর তিথি মুগ্ধর যাওয়ার পানে চেয়ে আছি।ঝামেলা যেন পিছুই ছাড়তে চায় না আমার।একটা শেষ হতে না হতেই আরেকটার উৎপওি।আদনানকে নিয়ে যথেষ্ট আপসেট আমি আর এখন এই মুগ্ধ।উফ কোথাও এক ফোঁটা শান্তি নেই আমার।আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললো তিথি.....
_____ওই রাস্তায় কি হয়েছে রে....?ভাইয়া তোকে কিসব বললো....?
তিথির কথায় একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো আমার।তারপর সবকিছু খুলে বললাম ওকে।সবটা শুনে হা হয়ে আছে তিথি।তারপর বললো....
_____মুগ্ধতা রে তোর কপালটাই খারাপ! তুই পরেছিস ভাইয়ার খপ্পরে।ভাইয়া এমনিতে কারো পিছনে লাগে না।আর যদি কেউ লাগে তাকে সহজে ছাড়ে না।এখন তোর কি হয় কে জানে...!!
তিথির কথায় চমকে উঠলাম আমি।আল্লাহ একটা বিপদ শেষ হতে না হতেই আরেকটা।এখন এই মুগ্ধ আমাকে কি করবে।পুরো জীবনটাই শেষ। জীবনে কি পেলাম শুধু হতাশা আর গ্লানি ধুর ভাল্লাগেনা...!!
🍁
জানালার বাইরে মুখ করে বসে আছে মেয়েটি।মুখে কোনো কথা নেই।একবারের জন্য আফিফের দিকে তাকাচ্ছে না পর্যন্ত।এটা কিছুতেই মানতে পারছে না আফিফ।মেয়েটির দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য হালকা কাশলো আফিফ।কিন্তু তাতেও তার কোনো হেলদোল নেই যেভাবে ছিলো সেভাবেই রইলো।এতে বেশ খারাপ লাগলো তাঁর।হঠাৎ গাড়ি থামায় চমকে আফিফের দিকে তাকালো মেয়েটি।ভ্রু কুঁচকে বললো......
_____কি হলো আপনি গাড়ী থামালেন কেন....?আমি তো এখনপ বাসার সামনে আসিনি...?
আমার কথায় মৃদু হাসলো আফিফ।নরম কন্ঠে বললো....
_____জানি আপনার বাসায় এখনও পোঁছাইনি।আসলে কেউ যদি আমার উপর রেগে থাকে তাহলে শান্ত হয়ে ড্রাইভ করতে পারি না আমি।
লোকটার কথায় হতবাক আমি।বেশ অবাক হয়ে কি বলছেন কে রেগে আছে আপনার উপর...?
নিজের চুলগুলো ঠিক করতে করতে বলে উঠলেন উনি.....
____ওই যে সামনে থাকা মেয়েটি।যদিও এখনও নাম জানিনা আমি তাই "মেয়েটি" বলে সম্বোধন করছি এরজন্য আবার রাগ করা যেন না হয়।যদি নামটা বলতেন তাহলে উপকৃত হতাম।তা আপনার রাগের কারণটা বলবেন কি আমায়...?
আমার কথায় হাসলো মেয়েটি!!মেয়েটির হাসি মুখ দেখে অজানায় হারিয়ে যাচ্ছি আমি।
_____প্রথমত আমি কারোর উপর রাগ করিনি।কেউ আমার কথা না শোনলে খারাপ লাগে আমার।আপনি আমার কথা শোনেন নি তাই একটু আপসেট আর কিচ্ছু নয়।আমার নাম মিতুল।সবাই মিতু বলেই ডাকে।
মেয়েটির কথায় হেসে উঠলাম আমি।ওকে রাগানোর জন্যই বললাম.....
"তেঁতুল"!!ওহ্হ মাই গড সিরিয়াসলি তেঁতুল কারো নাম হতে পারে নাকি...?
ছোলেটির কথায় ক্ষেপে গেলাম আমি।অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললাম.....
_____তেঁতুল নয়!!দাঁতে দাঁত চেপে আমার নাম মিতুল।কানে প্রবলেম থাকলে ডক্টর দেখান তবুও ভুল ভাল বকবেন না ওকে।
ওহ্হ সরি!রাগ করবেন না।ফান করলাম।খুব সুন্দর নাম মিতুল অর মিতু।আমি আফিফ যদিও আমার নাম জানার ইচ্ছে নেই আপনার তবুও বললাম আর কি।
আমার কথায় খিল খিল করে হেসে উঠলো মিতু।তারপর বললো.....
আচ্ছা এবার যাওয়া যাক।আমার দেরি হচ্ছে।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে ড্রাইভ করতে শরু করলো আফিফ।একটা মোড়ের মাথায় গাড়ী দাঁড় করালো।মিতুর বাসাটা মোড়ের শেষে সে চায় না কেউ জানুক কোনো ছেলে তাকে নামিয়ে দিয়েছে।তাই এখানে থামাতে বললো আফিফকে।।মিতু গাড়ী থেকে নেমে ধন্যবাদ জানালো আফিফ কে।আফিফ তার শরীরে যত্ন যাতে ঠিক ভাবে নে সেই ব্যাপারে অনেক উপদেশ দিলো।তারপর আফিফকে বিদায় জানিয়ে হাঁটতে লাগলো মিতু।আফিফ এখনও দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে মিতুর যাওয়ার পানে।বেশ কিছুক্ষন পর মিতুকে আর দেখা যাচ্ছে না তখন মনের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো আফিফের।একরাশ বিরক্তি নিয়ে মন খারাপ করে গাড়ী স্টার্ট দিলো আফিফ।
🍁
কলেজে চারটা ক্লাস করে হাঁপিয়ে উঠেছে মুগ্ধতা।এদিকে মাথা ব্যাথায় মাথা ফেঁটে যাচ্ছে।কিছুতেই ক্লাসে মন বসাতে পারছে না।শুধু কালকের ঘটনাগুলো পর্যায়ক্রমে চোখে ভাসছে তাঁর।আর পারছে না ক্লাসে বসে থাকতে।তিথিরও ইচ্ছে নেই ক্লাস করার কিন্তু মুগ্ধের ভয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ক্লাস করছে সে।আজকে ফার্স্ট ক্লাস মিস সেটাও দেখে নিয়েছে মুগ্ধ।তার পর যদি আবার দেখে তাহলে রক্ষে নেই।বাসায় সত্যি সত্যি বলে দেবে। বাড়িতে তিথির মা এ নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটাবে।।তাই বাধ্য হয়ে ব্যাগ কাঁধে একা একা বেড়িয়ে আসলো মুগ্ধতা।মাথাটা ঝিম মেরে আছে।ব্যাগ কাঁধে আস্তে আস্তে এগিয়ে চলেছে মুগ্ধতা।হঠাৎ কারো সাথে সজোরে ধাক্কা খায়।ধাক্কায় তাল সামলাতে না পেরে সামনে থাকা লোকটিকে জড়িয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।চুলগুলো এসে উপছে পড়ে মুগ্ধতার মুখে।ঘন কালো চুল তার ফাঁকে ফাঁকে হালকা মুখ দেখা যাচ্ছে তার।ছেলেটা তার মুখের চুলগুলো সরিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মুগ্ধতার দিকে।মুগ্ধতা চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। চুলগুলো সরিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে চলেছে তাকে।ধবধবে ফর্সা মুখ, জোড়া ঘন কালো ভ্রু জোগলের নিচে ডাগর ডাগর চোখ।ঠোঁটের নিচে কালো ছোট্ট একটা তিল যা মেয়েটার সৌন্দর্য কে আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করে ছেলেটি।
হঠাৎ কপালে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলো মুগ্ধতা।চোখ পিটপিট করে তাকিয়েই অবাকের চরম পৌঁছালাম আমি।"যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যে হয়"!এটা যেন মুগ্ধতার সাথেই মানায়।সামনে মুগ্ধতার সাথে লেপ্টে আছে মুগ্ধর শরীর।একধ্যানে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ।হঠাৎ মুগ্ধতার আওয়াজ শুনে হুশ ফিরলো তার.....
___এই যে এভাবে ৩৬ হাজার টন ওজন নিয়ে আমার উপর পড়ে আছেন কেন...?এত ওজন আমার শরীর নিতে পারছে না।প্লিজ তাড়াতাড়ি উঠুন।
মুগ্ধতার কথায় হুশ ফিরলো আমার।সীট!!কি হচ্ছিলো আমার।এতক্ষণ ধরে একটা মেয়েকে এভাবে দেখে গেলাম ছিঃ।দ্রুত মুগ্ধতা কে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম আমি।আশপাশ তাকিশে না তেমন কেই নেই।এখন ক্লাস টাইম যে যার ক্লাসে তাই দু চারজন ছাড়া কেউ দেখেনি।উঠে দাঁড়িয়ে নিজের হাত ঝারতে লাগলাম আমি।মুগ্ধতা ও এরমধ্যে উঠে দাঁড়িয়েছে।ওকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলাম.....
____এই মেয়ে তুমি চোখে দেখ না।আন্ধা নাকি...?প্রথমে ভাবলাম পাগল তারপর দেখলাম বয়রা এখন দেখি আন্ধাও।ভাবা যায় একসাথে এতগুলো সমস্যা নিয়ে আছো।
উনার কথাগুলো শুনে রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে আমার।রাগী কন্ঠে দাঁত কটমট করে বললাম....
আন্ধা আমি নই আন্ধা আপনি।আমি ঠিকই ছিলাম।আমি দেখে চলতে পারেন নি নাকি মেয়ে দেখলেই ধাক্কা মারতে ইচ্ছে করে কোনটা...?
মুগ্ধতার কথায় বেশ রাগ হলো আমার।আর সবকিছু মানা যায় কিন্তু কেউ আমার চরিএ নিয়ে কথা বলবে।সেটা টলারেট করার মতো শক্তি বিধাতা আমায় দেন নি।হ্যাঁ মানছি দোষটা আমারই কিন্তু তাই বলে আমার চরিএ নিয়ে টানাটানি করবে এটা মানবো না আমি।মুগ্ধতার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললাম.....
হেই লিসেন আমাকে আর যাই ভাবো না কেন চরিএহীন ভেবো না।মেয়েদের যথেষ্ট রেসপেক্ট দিয়ে চলি আমি।আর তুমি নিজেকে কি মনে করো যে তোমাকে দেখে ইচ্ছে করে ধাক্কা মারবো।যদি সুন্দরী রূপসী মায়াবী কোনো এক মানবী হতে তাহলে ভেবে দেখতাম কিন্তু তাও নও।খুবই সাদামাদা ডাইনি বুড়ির মতো দেখতে তাহলে কেন শুধু শুধু তোমার পেছনে টাইম নষ্ট করবো আমি।
মুগ্ধর কথায় বেশ খারাপ লাগলো আমার।হয়তো এই সাদামাটা হওয়ার জন্যই আদনান আমার পরিচয়ের অজুহাত দেখিয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।নইলে এভাবে আমাকে ভুলে যেতো পারতো না।মন খারাপগুলো উড়ে এসে ভীর জমালো মনের উঠানে।মাথা ব্যাথায় এমনি মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে তার উপর এতসব আর নিতে পারছি না।আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললো মুগ্ধ......
___এমন হাতি মার্কা হওয়া স্বত্বেও আমাকে তুমি কি বললে ৩৬ হাজার কেজি ওজন আমার।হ্যাঁ আমার ওজন ৩৬ কেজি হতে পারে তবে তোমার মতো ৩৬ হাজার কেজি হবে না।
নাহ!উনার মতো লোককে ছেড়ে দেওয়া যায় না।যত ভাবছি কথা বাড়াবো না তত কথা বলেই যাচ্ছেন উনি।বেশ ঝাঁঝালো কন্ঠে বললাম.....
_____আপনার ওজন ৩৬ হাহা।আপনাকে হয় ভূতে নয় পাগলে ধরছে।অবশ্য মোটা হাতি কখনও নিজেকে মোটা মনে করে না।তার থেকে ছোট কাউকেও তার থেকে বড় মনে করে এ আর এমন কি....অন্যভাবে যদি বলি....চোর চুরি করে কখনও বলে না "আমি চুরি করেছি"।তাই আপনি যতই মোটা হাতি মার্কা হন না কে কখনই বলবেন না আপনি মোটা হাতি।
তোমার সাহস তো কম নয়।তুমি আমাকে মোটা হাতি বললে...?
____জ্বী তাই বললাম!!আর আমার সাহস বরাবরই একটু বেশি।যেহেতু একই কলেজে আছি সেহেতু আপনার জেনে রাখা ভালো।
তুমি কিন্তু বড্ড বেশি কথা বলছো!!সিনিয়রদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় সেটুকুও শিখ নি দেখছি।
____সম্মান,অসম্মান সবকিছুই নিজের উপর নির্ভর করে।নিজ গুণে মানুষ সম্মানিত হয় আবার অপমানিত ও হয়।যাগগে এত কথা বলে লাভ নাই।আপনার হয়তো ফালতু ক্যাচাঁল ভালো লাগে কিন্তু আমার ভালো লাগছে না।যদি নিতান্তই ঝগড়া করতে ইচ্ছে তাহলে এখানে দেখেন অনেক মেয়ে আছে যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করেন।
কথাগুলো একনাগাড়ে বলে মলিন মুখে চলে গেলো মুগ্ধতা।আমি চেঁচিয়ে ডাকা স্বত্বেও পেছন ফিরে তাকায়নি।মেয়েটার ইলেম আছে বলতে হবে।আমার ডাক উপেক্ষা করে চলে গেলো।এই মুগ্ধর ডাক উপেক্ষা করলো।খুব বার বেড়েছে তোমার তাই না মুগ্ধতা।ঠিক আছে বাকা হেসেবএবার দেখো কি হয়...!!
#চলবে.....
পরবর্তী পাঠ আমাদের এই পেইজে গিয়ে দেখুন

  ❤️🍁হসপিটালের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে আফিফ।মেয়েটাকে ডক্টর কেবিনে নিয়ে গেছে।এখনও সেন্স ফিরেনি।ইনজুরি তেমন বেশি নয়।মেয়েটার ফো...
02/07/2025

❤️
🍁
হসপিটালের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে আফিফ।মেয়েটাকে ডক্টর কেবিনে নিয়ে গেছে।এখনও সেন্স ফিরেনি।ইনজুরি তেমন বেশি নয়।মেয়েটার ফোন আফিফের কাছে আছে কিন্তু পাসওয়ার্ড লাগানো বিধায় খুলতে পারছে না।আফিফের কাছে এই একটা জিনিস বড্ড বিরক্তিকর।এই যুগের ছেলে মেয়েরা পাসওয়ার্ড ছাড়া চলতেই পারে না।সেখানে আফিফ কখনই ফোনে পাসওয়ার্ড লাগায় না।সবসময় নরমাল লকই থাকে।ফোন আছে বলেই পাসওয়ার্ড লাগাতে হবে এটা কেমন কথা।এই জিনিসটা একদম পছন্দ করে না আফিফ।ফোন সাথে থাকার অর্থ হলো যদি কোনো বিপদে পড়ে তাহলে যাতে পরিবারের মানুষ জানতে পারে কিন্তু এভাবে থাকলে তো কাউকে কিচ্ছু জানানোই সম্ভব নয়।এখন মেয়েটার এই অবস্থা কিন্তু আফিফ কাউকে কিচ্ছুটি জানাতে পারছে না।এদিকে এক্সিডেন্টের চক্করে পড়ে আজ অফিসে ইম্পরট্যান্ট একটা মিটিং মিস হয়ে গেলো।হঠাৎ কেবিন থেকে বেড়িয়ে এলো ডক্টর।ডক্টর কে দেখে এগিয়ে গেলো আফিফ।ডক্টর কে উদ্দেশ্য করে বললো.....
____ডক্টর পেসেন্টের অবস্থা কেমন এখন...?উনার সেন্স ফিরেছে...?আঘাত কি খুব বেশি...?
হুম!!সেন্স ফিরেছে।তেমন কিছু হয়নি।কপাল ফেঁটেছে,হাত পা ছিঁলে গেছে আর তেমন কোনো সমস্যা নেই উনার।আপনি একটু পরই উনাকে নিয়ে যেতে পারেন।
ডক্টরকে থ্যাংকস জানিয়ে মেয়েটার কেবিনের দিকে পা বাড়ালো আফিফ।বেডে চোখ যেতেই চোখ আটকে গেলো তার।এতক্ষণ মেয়েটিকে খেয়াল করেনি সে।এখন ভালোভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।বেডে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মেয়েটি। চুলগুলো অগোছালো ।মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ পেঁচানো।গায়ের রং ধবধবে ফর্সা।ফর্সা গায়ে মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ এতে যেন মেয়েটার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট দুটো।উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে ধরে আছে এতে মেয়েটিকে আরো মোহনীয় লাগছে আফিফের কাছে।এক দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে আফিফ।ধীর পায়ে মেয়েটির সামনে দাঁড়িয়ে অপলকভাবে দেখে চলেছে।সামনে কারো উপস্থিতি টের পয়ে চোখ পিটপিট করে তাকালো মেয়েটি।সামনে অপরিচিত কাউকে দেখে অস্বস্তিবোধ করলো।আফিফ মেয়েটির অস্বস্তি বুঝতে পেরে চোখ সরিয়ে স্বাভাবিক হয়ে বললো.....
____একচুয়েলি আমিই সেই হতভাগা যে আপনার এই দশা করেছে।বেখেয়ালে অন্য মনস্ক হয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছিলাম তাই এমনটা হয়েছে।আই এম সরি।তা এখন আপনি ভালো আছেন তো...?
আমার কথায় আলতো হাসলো মেয়েটি।অতি ভদ্রতার সহিত জবাব দিলো.....
____এভাবে নিজেকে দোষী ভাববেন না।আমারও যথেষ্ট দোষ ছিলো।ওভাবে আশপাশ না দেখে রাস্তা ক্রস করে উচিৎ হয় নি আমার।
মেয়েটার চেহারা যতটা মিষ্টি তার চেয়েও বেশি মিষ্টি তার কন্ঠ।আহা!কি মধুর কন্ঠ তাঁর।ধ্যানমগ্ন হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ তুড়ির আওয়াজে হুশ ফিরলো আমার।......
____কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলেন আপনি...?এবার আমাকে যেতে হবে।সেই কখন বাসা থেকে বেড়িয়েছি।বাসায় নিশ্চয় সবাই টেনশন করছে।
-----হুম!!চলুন আপনাকে আমি ড্রপ করে দিচ্ছি।আর হ্যাঁ মেডিসিনের প্যাকেট দেখিয়ে এখানে মেডিসিন আছে এগুলো ঠিকমতো খাবেন আর রেস্ট নিবেন দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন আপনি।আবারও আমি সরি।সত্যি আমার করা কাজের জন্য খুব দুঃখিত আমি।
আমার কথায় আবারো হাসলো মেয়েটি।এই হাসিটা যেন আরো পাগল করে দিচ্ছে আমায়।হাসলে গালে টোল পরে।ইচ্ছে করে ওই টোল পরা গালে ডুবে যাই আমি।বেড থেকে নামতে নামতে বললো মেয়েটি......
____এতবার সরি বলতে হবে না।আপনি আমি দুজনেই সমান দোষী।আমি দেখে চললে এটা হতো না।তাই এরজন্য আক্ষেপ করবেন না।এটা হওয়ার ছিলো তাই হয়েছে।আচ্ছা আপনাকে যেতে হবে না আমি একাই যেতে পারবো আসছি আসসালামু আলাইকুম....!!
আমাকে ক্রস করে চলে যেতে লাগলো।কেমন অজানা অনুভূতি কাজ করছে আমার মাঝে।তাঁর চলে যাওয়ার কথা শোনে মন খারাপ হলো আমার।মেয়েটা আমার সামনে থেকে চলে যাক কিছুতেই চাইছিনা আমি।মেয়েটার রাস্তা আটকে বললাম......
____প্লিজ প্লিজ একা একা যাবেন না।আমার একটা দায়িত্ব আছে।এই অবস্থায় আপনাকে একা ছাড়তে পারি না আমি।তাই আপনাকে আমার সাথেই যেতে হবে।
আমার কথায় কিছু বললো না মেয়েটি।মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে আমার কথার সাথে সম্মতি আছে তাঁর।হসপিটালের বিল পে করে বেড়িয়ে গেলাম।আমি বিল পে করায় বেশ বিরক্ত মেয়েটি।সে বিল পে করতে চেয়েছিলো করতে দেই নি বলে গাল ফুলিয়ে আছে।গাড়িতে উঠেছে থেকে কোনোকথা নেই জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে।মেয়েটার মুখটা দেখে হাসছি আমি।রাগলে আরো মিষ্টি দেখায় ওকে।ওকে আড়চোখে দেখে হালকা হেসে গাড়ি স্টার্ট দিলাম আমি।
🍁
কলেজে ঢুকেই তিথি কে খুঁজে চলেছি আমি।তিথি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।আনলিমিটেড কথা বলাই ওর কাজ ।কথা বলতে বলতে মাথার মগজ ফেনা করে ফেলে।একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে তিথি।আমাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো সে।উঠবেই তো যার মাএ গতকাল বিয়ে হলো সে আজ কলেজে।আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে তিথি।বিস্মিত কন্ঠে বললো.....
_____মুগ্ধতা তুই...!!বিয়ে বাড়ির এত সব রিচুয়ালস রেখে তুই আজ কলেজে...?
তিথির কথা শোনে আপনাআপনি একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো ভিতর থেকে।নিজেকে সামলে মুখে হালকা হাসির রেখা টেনে.....
____ওসব কথা বাদ দে তো!এখনও ক্লাসে যাস নি কেন...?ক্লাস থেকে প্রায় শেষের দিকে।
আরেহ!রাখ তো তোর ক্লাস।আগে বল তুই আজ কলেজে কেন...?আজ তো তেমন ইমপর্ট্যান্ট কোনো ক্লাস নেই তাহলে....?আর আমি কাল যেতে পারিনি তার জন্য সরি।
মেয়েটাকে না বলে রেহাই নেই।তাই সবটা খুলে বললাম ওকে।সবটা শোনে স্তব্ধ হয়ে গেছে তিথি।আর বকে চলেছে আদনানকে। এরকম একটা শয়তান জল্লাদ কে বিয়ে না করে ভালোই করেছি বলে শান্তনা জানাচ্ছে আমায়।আমাদের কথার মধ্যেই ছেলের কন্ঠ শোনে থেমে গেলো তিথি।পেছন ফিরে তাঁকে দেখে কিছুটা বিস্মিত হলো।ছেলেটা ওকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো.....
____এই তিথি ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এখানে কি করছিস...?কলেজে কি ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার জন্য আসিস নাকি...?দাঁড়া আজকেই খালা মণি কে ব্যাপারটা বলছি আমি।
ছেলেটার কথা শোনে ভয়ে চুপসে গেলো তিথি।হালকা কয়েক ঢুক নিয়ে বললো....
______না ভাইয়া আমি ইচ্ছে করে ক্লাস ফাঁকি দেই নি।আসলে আজকে আসতে লেইট হয়ে গেছে আমার তাই ফার্স্ট ক্লাস মিস হয়ে গেছে।
তাই!!
হুম ভাইয়া সত্যি!!
ছেলেটার কন্ঠ টা কেমন পরিচিত লাগছে আমার।কোথাও একটা শুনেছি হয়তো।যাগগে হয়তো নাও শুনতে পারি আবার শুনতেও পারি।এত ভেবে কাজ নেই।হঠাৎ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো ছেলেটি......
_____এই তিথি তোর সাথের ওই খাম্বাটা কে রে...?এতক্ষণ ধরে পেছন ফিরে চোরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।নড়াচড়া নেই, মুখেও কোনো কথা নেই কেন...?
তিথিঃভাইয়া ও হচ্ছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড মুগ্ধতা!!আর মুগ্ধতা ইনি হলেন আমার কাজিন মুগ্ধ ভাইয়া।
লোকটার কথায় হতবাক আমি।কি বলে আমি খাম্বা,আমি চোর।ছেলেটার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে পেছন ফিরে তাকালাম আমি।আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই ছেলেটা বলে উঠলো.....
____তিথি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড এমন চোর মার্কা কেউ ভাবতেই কষ্টে ভেতর টা ফেঁটে যাচ্ছে আমার।দেখিস আবার এই চোর থুক্কু চুন্নির কাছ থেকে চুরি বিদ্যাটা আবার শিখিস না যেন...!!
মুগ্ধ না টুগ্ধের কথা শোনে আর চুপ থাকতে পারলাম না আমি।ছেলেটার কথা শোনে চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম আমার।আমার সমন্ধে কি বলে এই ছেলে।এভাবে মন্তব্য করছে কতটুকু জানে আমার সম্পর্কে সে রুক্ষ কন্ঠে বলে উঠলাম আমি.....
____দেখুন মিস্টার মুগ্ধ!আপনি তিথির কাজিন সেই হিসাবে আমার শ্রদ্ধাভাজন।কিন্তু আপনি আমার সম্পর্কে যেই কথাগুলো বলছেন তারপর কি আর আপনাকে শ্রদ্ধা সম্মান দিতে পারবো....না পারবো না আমি!!তাই এমন কিছু বলবেন না যার জন্য সম্মানিত নয় অপমানিত হতে হয়...!!আর কারোর সম্পর্কে কিছু না জেনে এভাবে আচমকা মন্তব্য করা ঠিক নয় সেটা নিশ্চয় জানেন আপনি।
আমার কথায় চরম বিরক্ত ছেলেটি!!কিন্তু কেন সেটাই বুঝলাম না আমি।নিজের চুলগুলো ঠিক করে কানে আঙ্গুল ঢুকাতে ঢুকাতে.....
_____উফ!!কানের পোকা নাড়িয়ে দিলো।এত লেকচার দিও না তো।এইসব লেকচার আর যাই হোক তোমার মুখে মানায় না।এতগুলো কথা বললে....আচ্ছা তুমি কি মানুষ সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে সব কিছু জেনে তবেই মন্তব্য করো....করো না তো!!তাহলে যা নিজে করো না তা অন্যের কাছ থেকে এক্সপেক্ট করো কেন...?
তিথিঃভাইয়া তুমি ওর সাথে এভাবে কথা বলছো কেন...?ও চোর টোর কিছু না।আচ্ছা এখানেই থামো তোমরা।মুগ্ধতা ভাইয়া তোর সাথে হয়তো মজা করেছে কিছু মনে করিস না।
_____আরেহ তিথি! এসব বলিস না।আমি মজা নয় ওকে সিরিয়াসলি কথাগুলো বলেছি।আর আমি জানি আমি যা বলেছি ঠিক বলেছি।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ও যদি কাউকে যাচাই না করে আচমকা লোককে উল্টাপাল্টা বলতে পারে তাহলে আমি কেন পারি না।হুয়াই নট!!
ছেলেটার কথায় বিস্মিত আমি!পাগল নাকি আমি কখন কাউকে এমনি এমনি কথা শোনালাম।লোকটাকে আজকেই ফার্স্ট দেখলাম তাহলে। আমার সম্পর্কে যেভাবে কথা বলছে যেন আমি কতকালের পরিচিত উনার।নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে বললাম....
______কি বলতে চাইছেন আপনি...?একটু খোলসা করে বলবেন প্লিজ!আর আমি কাকে কখন কারণ ছাড়া এভাবে অপমান করেছি সেটা বলবেন কি....?
আমার কথায় হাসলো ছেলেটি।হেসে বললো....
____আরে মিস কেয়ারলেস!!তুমি এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে যাও নাকি।আজকে সকালে আমাকে কি কি বলেছিলে মনে নেই তোমার।তখন তুমি কতটুকু জানতে আমার সম্পর্কে যে আমাকে ছিনতাইকারী আরো কি যেন মনে বলেছিলে পড়ছে না।
ছেলেটার কথায় ভাবনায় ডুব দিলাম আমি।ভালোভাবে একবার ছেলেটাকে পরখ করে নিলাম।আরে হ্যাঁ এটা তো রাস্তার সেই ছেলেটা যাকে আঘাত করে ছিলাম আমি।ছিনতাইকারী,পাচারকারীর উপাধি দিয়েছি।হেলমেট থাকায় মুখটা দেখিনি শুধু গেটআপই মনে আছে।এজন্যই কন্ঠ পরিচিত লাগছিলো আমার।উফ ছেলেটাকে এই কলেজেই থাকতে হলো ধুর....!!আমতা আমতা করে বললাম.....
_____দদেখুন তখনকার সাথে এখনকার অনেক তফাৎ।তখন ঘটনাটা সন্দেহ করার মতো ছিলো তাই বলেছি কিন্তু এখন আপনি ইচ্ছে করে আমাকে বলছেন যা একদমই অনুচিত।
উচিৎ-অনুচিত,ঠিকবেঠিক কিছুই বুঝি না আমি।আমি শুধু জানি তুমি অকারণে আমায় আঘাত করেছো +উল্টা পাল্টা বলেছো এখন আমিও বলেছি শোধবোধ।আরেকটা কথা এখন আমাদের কলেজেই রোজ আসতে হবে।বাকি টা পরে দেখে নেবো।তখন রাস্তা থেকে পালিয়ে এসেছিলে ভ্রু নাচিয়ে)এবার যাবে কোথায় হুম....?বলেই সানগ্লাস চোখে লাগিয়ে হনহন করে চলে গেলো মুগ্ধ।
#চলবে....
History Threads

Address

Mirpur
London

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Life History Threads posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Life History Threads:

Share