সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ:

  • Home
  • সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ:

সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ: সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী রহ, এর নামে ম?

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তারাআউলিয়ায়ে কিরামের চেতনা ধারণ করে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে...
07/05/2025

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তারা
আউলিয়ায়ে কিরামের চেতনা ধারণ করে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু’মিনীন, ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর স্মরণে মঙ্গলবার (৬ মে) রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তারা বলেন, দুনিয়ার দিকে দিকে, বিশেষ করে এ উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসারে আউলিয়া কিরামের অবদান সবচেয়ে বেশি। যে সকল ওলীআল্লাহ এতদঞ্চলে দ্বীনের খিদমতে নিজেদের জীবন কুরবান করে গিয়েছেন তাঁদের অন্যতম হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)। তিনি উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক, নির্ভীক সিপাহসালার ও যামানার মুজাদ্দিদ। তাঁর আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল- ঈমান, ইসলাম ও ইহসান সমন্বিত পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের সর্বাত্মক প্রতিষ্ঠা। শিরক-বিদ’আত ও কুসংস্কার উচ্ছেদ, সর্বক্ষেত্রে সুন্নাতে নববী কায়িম, বিদেশী আগ্রাসী শক্তি ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের করালগ্রাস থেকে দেশ ও দেশের মযলুম জনতার মুক্তি, শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করে খিলাফত আলা মিনহাজিন নবুওয়াহ (নববী আদর্শে খিলাফত) প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর জীবন-সাধনা। এ লক্ষ্যসমূহ অর্জনের উদ্দেশ্যে তিনি ‘তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জীবনব্যাপী আন্দোলন-সংগ্রামের পরিচালনা করে ১৮৩১ সালের ৬ মে তিনি বালাকোটে, জিহাদের ময়দানে শাহাদত বরণ করেন। হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.) এর চিন্তাধারা থেকে তিনি যে মিশন শুরু করেছিলেন তা নানা আঙ্গিকে আজো অব্যাহত আছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত তরীকায়ে মুহাম্মদিয়ার দীপশিখা জ্বলজ্বল করে আলো ছড়াচ্ছে এখনও। তাঁর চেতনাসহ আউলিয়ায়ে কিরামের চেতনাকে ধারণ করে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর সিলসিলার অনুসারীগণসহ দল-মত নির্বিশেষে সকল মুসলিম জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে এদেশে ইসলাম যেমন সগৌরবে প্রতিষ্ঠিত হবে তেমনি বাতিল শক্তি পেছনের দুয়ার দিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে।
বক্তারা বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে এদেশের মানুষ যুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিল। এমনিভাবে আশা করেছিল যে, এদেশ ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই পাবে। কিন্তু আজও সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি বরং এর বিপরিত বাস্তবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মতের সামান্য ভিন্নতার কারণে ইমামকে হত্যা করা হয়েছে, নারীস্বাধীনতার নামে এদেশে বেহায়াপনাকে প্রতিষ্ঠিত করার পায়তারা চলছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সরাসরি কুরআন সুন্নাহের সাথে সাংঘর্ষিক বহু প্রস্তবনা দেওয়া হয়েছে। এটি ইসলাম ও মুসলমানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। অবিলম্বে এ বিতর্কিত কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল করতে হবে। নতুবা এর ফল শুভ হবে না। বক্তারা বিতর্কিত ওয়াকফ বিল স্থগিত না রেখে পরিপূর্ণরূপে এটি বাতিল করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানান এবং অন্তরবর্তী সরকারকে জাতিসংঘের মাধ্যমে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহবান জানান। গাযার মুসলমানদের উপর ইসরাইলী নির্যাতনে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ নির্যাতন বন্ধের আহবান জানান এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আয়োজনে পরিষদের আহবায়ক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন হযরত আল্লামা মুফতী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, ছারছীনার পীর ছাহেব হযরত মাওলানা শাহ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. শমশের আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এএমএম বাহাউদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান নিজামী, সোনাকান্দার পীর ছাহেব হযরত মাওলানা মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, চুনতীর মরহুম পীর ছাহেবের ছাহেবজাদা মাওলানা আব্দুল মালেক মুহাম্মদ ইবনে দীনার নাজাত, কদমচালের পীর ছাহেব মাওলানা মো. আবুল কাশেম, দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আ.খ.ম. আবু বকর সিদ্দীক, কুমিল্লার দারুল আমানের পীর ছাহেব মাওলানা শাহ মাহমুদ সিদ্দিকী আল কুরেশি, হবিগঞ্জের নূর মোহাম্মদপুরের পীর ছাহেব মাওলানা শাহ আবু তাহের মো: সালেহ উদ্দিন, ফেনীর সিরাজিয়া দরবারের পীর ছাহেব মাওলানা মোহাম্মদ মহিব্বুল ইসলাম চৌধুরী, গাজীপুর শামসাবাদের পীর ছাহেব মাওলানা মুফতি মাহবুবুর রহমান, হবিগঞ্জের এখতিয়ারপুরের পীর ছাহেব মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান, কুমিল্লার শিদলাইয়ের পীর ছাহেব মাওলানা রুহুল আমীন।
বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের সদস্য, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খান ও মাওলানা নোমান আহমদের যৌথ পরিচালনায় সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ’র সভাপতি ড. মাওলানা এ.কে.এম মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, মাহমুদা খাতুন মহিলা কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাওলানা বদিউল আলম সরকার, হলিয়ারপাড়ার সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মোহাম্মদপুর গাউসিয়া ফাযিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইজহারুল হক, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু ছালেহ মো: কুতবুল আলম, জমিয়তে যুব হিযবুল্লাহ এর সভাপতি মাওলানা মফিজ উদ্দিন জিহাদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মাওলানা আব্দুল্লাহ যোবায়ের, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, লতিফিয়া কারী সোসাইটি কুমিল্লার সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন ফকির, প্রমুখ।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্বীনীয়া মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ছারছীনার চেয়ারম্যান ড. মাওলানা সাইয়্যেদ শরাফত আলী, কুমিল্লার বানিয়াপাড়ার পীর ছাহেব মাওলানা মো. আবু বকর ছিদ্দীক আল কাশেমী, সুন্দাদিলের পীর ছাহেব মাওলানা কাজী আলাউদ্দিন আহমদ, আল ইসলাম জহুরিয়া হাজী আইন উদ্দিন দরবারের পীর ছাহেব আলহাজ্জ মো: আজহারুল ইসলাম, রাখালগঞ্জ ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন, গোপালদি ফাযিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা এ বি এম আব্দুস সালাম, মোহাম্মদপুর গাউসিয়া ফাযিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আ ন ম মাহবুবুর রহমান, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা মুফতি আবু নছর জিহাদী, দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার প্রধান ফকীহ মাওলানা উসমান গণি সালেহী, সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাকসুদুল হক, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুফাসসির মাওলানা মোহাম্মদ আলী, দুর্বাটি কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুর্শেদ আলম ছালেহী, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা মুফতি মনজুর হোসাইন খন্দকার প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা সাইফুল কবীর, পিএইচপি কুরআনের আলো এর মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন, ইমাম আযম আবু হানিফা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মুফতি শাহ আলম, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মনজুরুল করিম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক এস এম মনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি ইমাদ উদ্দিন তালুকদার, সিলেট মহানগরীর সভাপতি হুসাইন আহমদ, সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি জিল্লুর রহমান, সিলেট পশ্চিম জেলা সভাপতি শেখ রেদওয়ান হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি আবু হেনা ইয়াসিন, মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক নাসির খান প্রমুখ।

সম্মেলনে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। প্রস্তাবনাসমূহ হলো-
* হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর উত্তরসূরি হিসেবে আমরা গর্বিত। এটি আমরা আগেও ঘোষণা করেছি, এখনও ঘোষনা করছি। সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ছিলেন রুহবানুল লাইল ওয়া ফুরসানুন নাহার- রাতে ইবাদতগুজার ও দিনে ঘোড়সওয়ার-মুজাহিদ। তাঁর সিলসিলা হক। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও আদর্শ প্রচার এবং দ্বীনকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সিলসিলার অনুসারী আলিম-উলামা, পীর-মাশায়েখ সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
* জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে নারী সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সম্প্রতি এ কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আমরা অত্যন্ত দু:খের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন অনেক প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে যা সরাসরি কুরআন-সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের প্রস্তাবনা ইসলামের সাথে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। অবিলম্বে বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল করতে হবে। যদি এগুলো বাতিল করা না হয় তাহলে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
* নারী-শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে গাযার মুসলিম জনতার উপর ইসরাইলের বর্বর হামলা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বের সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
* ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ বিল বাতিলের জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি এবং এ দাবি বাস্তবায়নে জাতিসংঘের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আমরা উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। পাশাপাশি ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও আমরা সরকারের পতি আহবান জানাচ্ছি।
* আমরা মিয়ানমার কর্তৃক অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মানজনক, স্বেচ্ছামূলক ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পক্ষে, যা আন্তর্জাতিক তত্তাবধানে টেকসইভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে এ সংক্রান্ত্র যেকোনো উদ্যোগ, যেমন মানবিক করিডর স্থাপন, অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন সাপেক্ষে এবং রাজনৈতিক দলসহ সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতেই হতে হবে।

বালাকোট চেতনা উম্মাহর সংকট উত্তরণ  শীর্ষক সেমিনার ইউনাইটেড মুসলিম কাউন্সিল ইউকে ২০২৫ সম্পন্ন।
06/05/2025

বালাকোট চেতনা উম্মাহর সংকট উত্তরণ শীর্ষক সেমিনার ইউনাইটেড মুসলিম কাউন্সিল ইউকে ২০২৫ সম্পন্ন।

বালাকোটের চেতনা মানে শাহাদতের তামান্না ৬ মে বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে  সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী স্মরণে...
06/05/2025

বালাকোটের চেতনা মানে শাহাদতের তামান্না
৬ মে বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী স্মরণে সম্মেলন ২৫ এ বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন। প্রবীণ আলেম কবি মওলানা রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ছরছিনার বর্তমান পীর ছাহেবসহ বিভিন্ন দরবারের পীর মাশায়েখ বিশেষত ফুলতলী দরবারের অনুসারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আয়োজিত ব্যতিক্রমী বিশাল সম্মেলনে ড. শাহেদী বলেন,
বালাকোট এর চেতনা মানে আল্লাহর রাহে শাহাদাতের তামান্না। সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী (র) বাস্তব উদাহরণ দিয়ে দেখিয়ে গেছেন, ইসলাম মানে পীরের খানকায় বসে নির্জন সাধনা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনা ও লড়াইয়ের ময়দানের জন্য সদা প্রস্তুত থাকার প্রেরণা লালন করতে হবে। সাহাবায়ে কেরামের জমানায় মুসলমানদের পরিচয় ছিল, তারা ছিলেন রাতের বেলা সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসী, দিনের বেলা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ঘোড়সওয়ার। সৈয়দ আহমদ বেরলভী (র) সেই পরিচয়কে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে উজ্জীবিত করেন।
তিনি সুফি তরিকায় বিশ্বাসী ছিলেন, চর্চাও করতেন। কিন্তু সুফিবাদের নামে ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী যে কোনো শিরকি ও বেদাতী কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি তরিকায়ে মুহাম্মদিয়া নামে আধ্যাত্মিক সাধনার স্বতন্ত্র পথ রচনা করেন এবং ভিন্ন ভিন্ন তরিকতের অনুসারীদের শরীয়তপন্থী ও একমুখী করার উদ্যোগ নেন।
সৈয়দ আহমদ বেরলভী (র) এর জিহাদ ছিল সাম্রাজ্যবাদী দখলদার ইংরেজদের বিরুদ্ধে, শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের এ দেশীয় দালাল শিখদের বিরুদ্ধে বালাকোট ময়দানে জিহাদ করে তিনি নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। তার এই জিহাদ যদিও দৃশ্যত ব্যর্থ ছিল, কিন্তু কারবালায় ইমাম হুসাইনের শাহাদত বরণের মত উপমহাদেশে ইসলামের পূনরুজ্জীন ঘটিয়েছে। তার শিষ্যরাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও জিহাদী প্রেরণার বিস্তার ঘটিয়ে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি রচনা করেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মীর সরাইয়ের সুফি নূর মোহাম্মদ নিজামপুরি এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের চুনতির মওলানা আবদুল হাকিম (র)। চুনতি হাকিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা তারই নামে প্রতিষ্ঠিত।
ড. শাহেদী বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে বালাকোটের চেতনা সদা জাগরুক রাখতে হবে। কারণ, সাম্রাজ্যবাদীরা নানা রঙে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়াও ভ্রান্ত আকিদা ও ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির ব্যাপারে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এটিই বালাকোটের মূল শিক্ষা।

সাইয়্যিদ আহমাদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর যোগ্য উত্তরসূরীরা।
06/05/2025

সাইয়্যিদ আহমাদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর যোগ্য উত্তরসূরীরা।

'হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী রহ. স্মরণে সম্মেলন-২০২৫' সফল হোক
03/05/2025

'হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী রহ. স্মরণে সম্মেলন-২০২৫' সফল হোক

বালাকোট আমাদের চেতনা--বালাকোট আমাদের প্রেরণা 💚
24/04/2025

বালাকোট আমাদের চেতনা--
বালাকোট আমাদের প্রেরণা 💚

আলহামদুলিল্লাহ, হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে ঢাকায় সম্মেলন সফলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্য রা...
20/04/2025

আলহামদুলিল্লাহ,
হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে ঢাকায় সম্মেলন সফলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখছেন হযরত আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদের সম্মানিত সদস্য সচিব হযরত মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী।

১৯ এপ্রিল ২০২৫ ঈসায়ী
সিলেট।

ঢাকায় সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে সম্মেলন ৬ মে_আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমী...
20/04/2025

ঢাকায় সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে সম্মেলন ৬ মে_

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মুমিনীন ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে সম্মেলন আগামী ০৬ মে ২০২৫, মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত সম্মেলন সফলের লক্ষ্যে ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, শনিবার, বাদ যুহর, সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটস্থ হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসা কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।দারুল ফিকর ওয়াল ইফতা আল ইসলামী বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী‘র সভাপতিত্বে ও বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সম্মেলনের পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও করণীয় নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মো: কুতবুল আলম, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে’র প্রেস এন্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি, শাহজালাল মসজিদ ম্যানচেস্টার এর ইমাম ও খতীব মাওলানা খায়রুল হুদা খান প্রমুখ।

এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা শামসুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মনজুরুল করিম মহসিন, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম মনোয়ার হোসেন, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা ছালেহ আহমদ বেতকোণী, আনজুমানে আল ইসলাহ মিডল্যান্ডস, ইউকে’র সেক্রেটারি মাওলানা হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল লতিফ, উলুআইল আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির উদ্দীন, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ আহমদ, কবির আহমদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইমাদ উদ্দিন তালুকদার, সাবেক কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক কাওছার হামিদ সাজু, কেন্দ্রীয় সহ অফিস সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন কাওছার, সহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক উবায়দুর রহমান শাহান, মো. ছাদেকুর রহমান, আনজুমানে আল ইসলাহ মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক, সুনামগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোস্তাক আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাবেদ হোসাইন, দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের দায়িত্বশীল মাওলানা ইকবাল হোসাইন, সিলেট মহানগর লতিফিয়া কারী সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কাজী জয়নুল ইসলাম মুনিম, ইয়াকুবিয়া হিফজুল কোরআন বোর্ড এর অফিস সম্পাদক মাওলানা সাইদুর রহমান।

অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য রেজাউল ইসলাম, এম শামছ উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি আলী রাব্বি রতন, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি আবু হেনা ইয়াছিন, সিলেট মহানগরীর সভাপতি হুসাইন আহমদ, সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান, সিলেট পশ্চিম জেলা সভাপতি শেখ রেদওয়ান হোসেন, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি আমিমুল ইহসান তাহসিন, তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট মহানগরী সহ সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান, সিলেট পূর্ব জেলা সহ সভাপতি লাবিবুর রহমান লাভলু, সিলেট মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন সামাদ, সিলেট পূর্ব জেলা সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমদ, সিলেট পশ্চিম জেলা সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ সুফি, মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু'মিনীন, ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আ...
05/05/2024

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু'মিনীন, ইমামুত তরীকত,
শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.)ও তাঁর আন্দোলন

✍️মোহাম্মদ নজমুল হুদা খান সাহেব

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) উপমহাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একাধারে ‘রুহবানুল লাইল ওয়া ফুরসানুন নাহার’-রাতের তাপস আর দিনের ঘোড় সওয়ার (মুজাহিদ)। তিনি জীবনের মূল্যবান সময়কে দীন ইসলামের জন্য কুরবান করে গেছেন। উপমহাদেশে ইলমে নববী তথা ইলমে দীনের সার্থক উত্তরাধিকার ও যথাযথ প্রচারক শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর সুযোগ্য ছাহেবজাদা ও খলীফা হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর স্নেহধন্য শাগরিদ ও খলীফা হিসেবে তিনি যে সংস্কার ও বিপ্লব সাধন করে গেছেন এর কোনো তুলনা হয় না। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর জীবনেতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। তিনি বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের ফলে তৎকালীন বৃটিশ শাসক গোষ্ঠীর রোষানলে পতিত হন। শাসকগোষ্ঠীর মদদপুষ্ট লেখক ও ঐতিহাসিকরা তাঁর প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে। ফলে তিনি বিকৃত ও ভুল ইতিহাসের শিকার হন। সে বিকৃত ইতিহাসের সূত্র ধরে আজো অপপ্রচার চলছে। অবশ্য, সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে অনেক লেখক ও গবেষক ইতোমধ্যে কলম ধরেছেন। সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর আন্দোলন সামগ্রিক বিবেচনায় যে একটি সংস্কার আন্দোলন ছিল তাও তাঁরা প্রমাণ করেছেন। সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)-এর তরীকতের অধস্তন সিলসিলার কার্যধারা থেকেও তাঁর আন্দোলনের সত্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব সুপ্রমাণিত। ভারত উপমহাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশে জৌনপুর, ফুরফুরা, ফুলতলী, ছারছীনা, নারিন্দা, মৌকরাসহ যত হক সিলসিলা রযে়ছে সকলেরই পূর্বসূরী হলেন হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)।

হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ছিলেন এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি ছিলেন একটি তরীকার প্রতিষ্ঠাতা, একজন মুরশিদে কামিল। তাঁর ব্যক্তিত্ব, স্বভাব-চরিত্র, দাওয়াত ও তাবলীগ সমকালে যেমন অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করেছিল তেমনি এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব আজো বিদ্যমান। তাঁর চারিত্রিকি বৈশিষ্ট্য ও দ্বীনী দাওয়াতের প্রভাব কেমন ছিল এর সম্যক ধারণা লাভ করা যায় আবুল হাসান আলী নদভী’র ‘তারীখে দাওয়াত ও আযীমত’ (সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস) গ্রন্থ থেকে। তিনি লিখেছেন : “শাহ সাহেব (শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী র.) এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা এমন কতিপয় উচ্চ যোগ্যতা, সাহসিকতা ও বিস্ময়কর ইচ্ছাশক্তির অধিকারী আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের পৃষ্ঠপোষকতার কাজ নিযে়ছেন যারা হাজার হাজার মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৃষ্টি করে দিযে়ছেন এবং এক পূর্ণ শতক সামলে রেখেছেন। … এই দাবীর সত্যতার জন্য কেবল তার একান্ত খলীফা সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র) (১২০১-১২৪৬ হি.)-এর নাম নেওয়াই যথেষ্ট। যিনি এই উপমহাদেশে এই মহান ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার স্বয়ংসম্পূর্ণতা, প্রভাব শক্তি এবং ইসলামের সুমহান দাওয়াত, নববী আদর্শের নৈকট্য ও সাদৃশ্যতা না কেবল এই তের হিজরী শতকে দৃষ্টিগোচর হয় বরং বিগত কযে়ক শতকেও এ ধরনের ঈমানী চেতনা সৃষ্টিকারী আন্দোলন এবং নেককার বুযুর্গদের এমন সুবিন্যস্ত ও সুশৃঙ্খল জামাতের কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। তিনি আকাইদ ও আমলের সংশোধন, মানুষের তরবিয়ত, ওয়াজ-নসীহত, তাবলীগে দীন, জিহাদ ও নির্ভীকতার বিশাল বি¯তৃত রণাঙ্গণে যেভাবে কর্মতৎপর ছিলেন, এর প্রভাব কেবল তার কর্মময় স্থান ও তার সমসামযি়ক বংশধর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং তা ভবিষ্যত প্রজন্ম, তৎপরবর্তীকালে আগত আহলে হক, দীনের দাঈ, ঝা-াবাহী ও খাদেমদের উপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে। ক্রমবর্ধমান ইংরেজ শক্তির মোকাবেলায় ভারতবর্ষ ও তার প্রতিবেশি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর হেফাজত, খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা-সংগ্রামের সূচনাও তিনিই করেছেন। … এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া শিক্ষা-সাহিত্য, ইসলামী চিন্তাধারা, ভাষা ও বাচনভঙ্গি বর্ণনায়ও পডে়ছিল। এ আন্দোলন সমাজ সংস্কার, জাহেলী রীতিনীতির ভ্রান্ততা প্রমাণ, হিন্দু ধর্মের প্রভাব দূরীভূত করা এবং সঠিক ইসলামী জীবনের প্রতি প্রত্যাবর্তনের মহান কাজ আঞ্জাম দিযে়ছে। (শাহ আবদুল হালীম হুসাইনী অনূদিত, সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২৫৭-২৫৮)

আবুল হাসান আলী নদভী তার পূর্বোক্ত গ্রন্থে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র) এর দাওয়াত ও তরবিয়তের প্রভাবের ব্যাপকতা, শক্তি, গভীরতা ও কার্যকারিতা প্রসঙ্গে বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদের রচনাবলি থেকে কিছু উদ্ধৃতিও পেশ করেন। তিনি লিখেন- “ভারতবর্ষের বিখ্যাত লেখক ও ঐতিহাসিক নবাব সিদ্দীক হাসান খান, গভর্নর, ভূপাল (মৃত্যু ১৩০৭ হি.), যিনি সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র)-এর শিক্ষা-দীক্ষার প্রভাব স্বয়ং প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তাকে প্রত্যক্ষকারীদের এক বিরাট দলের যুগ পেযে়ছিলেন, তিনি ‘তিকসারু যুয়ূদিল আহরার’ গ্রন্থে লিখেন, ‘সৃষ্টিজীবের পথ প্রদর্শন এবং আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনা ও প্রত্যার্পণে তিনি ছিলেন আল্লাহর একটি নিদর্শন। এক বিরাট মানবগোষ্ঠী ও এক পৃথিবী তার আত্মিক ও শারীরিক তাওয়াজ্জুহে বেলায়েতের মর্যাদায় পৌঁছে গেছে। তার খলীফাগণ ওয়াজ-নসীহতের মাধ্যমে ভারতের মাটিকে শিরক-বিদ’আত ও কুসংস্কারের খড়কুটো থেকে পবিত্র করে দিয়েছে, কুরআন-সুন্নাহর বিশ্বরোডে এনে দাঁড় করিযে়ছে। আজও তাদের ওয়াজ-নসীহতের বরকত যথারীতি চালু আছে।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘মোটকথা এ যুগে পৃথিবীর কোনও রাষ্ট্রে এমন সুযোগ্য ব্যক্তিত্বের কথা শোনা যায়নি। যে ফয়েয-বরকত এই হকপন্থী দলের মাধ্যমে সৃষ্টিজীবের হযে়ছে, তার দশ ভাগের একভাগও এ যুগের উলামা মাশাযি়খের দ্বারা হয়নি।” (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৫৮)

হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (র)-এর শাগরিদ মাওলানা হায়দার আলী রামপুরী টোঙ্কী (মৃত্যু ১২৭৩ হি.) ‘সিয়ানাতুন নাস’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘তার হেদায়াতের নূর সূর্যের মত পূর্ণ ক্ষিপ্রতার সাথে বিভিন্ন শহর-নগর ও মানুষের অন্তরে উদ্ভাসিত হয়। চতুর্দিক থেকে ভাগ্যবান লোকজন পরকালের প্রতি মনোযোগী হযে় শিরক-বিদ’আত ইত্যাদির নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে (রীতিমত যুগ যাতে অভ্যস্ত ছিল) তাওবা করে তাওহীদ ও সুন্নাতের শাশ্বত পথ অবলম্বন করতে থাকে। আর প্রায়ই হযরতের পুণ্যাত্মা খলীফাগণ নানা স্থান সফর করে করে লাখ লাখ মানুষকে দীনে মুহাম্মদীর সরল সঠিক পথ বাতলে দেন। যাদের জ্ঞান-বুদ্ধি ছিল এবং আল্লাহর অনুগ্রহ যাদের সাহায্য করেছে তারা এই পুণ্যের পথে চলেন।’ (প্রাগুক্ত)

বিখ্যাত আলেমে দীন মাওলানা আবদুল আহাদ সাহেব, যিনি এই মুবারক জামাতের অনেক সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন, যার সময়কাল সাইযি়দ (র)-এর হাতে নিকটতর ছিল, তিনি লিখেন, ‘হযরত সাইয়্যিদ সাহেব (র۔)-এর হাতে চল্লিশ হাজারের অধিক হিন্দু প্রমুখ কাফির মুসলমান হযে়ছে। ত্রিশ লাখ মুসলমান তার হাতে বায়আত গ্রহণ করেছেন। আর বায়’আতের যে ক্রমধারা তার খলীফাগণের খলীফাদের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে চালু রয়েছে, এই সিলসিলায় তো কোটি কোটি মানুষ তার বায়আতে অন্তুর্ভূক্ত হয়েছে।’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৫৯)

উপরোক্ত উদ্ধতিসমূহ থেকে পাঠকবৃন্দ চিন্তা করে দেখুন, হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর দাওয়াত ও আন্দোলনের প্রভাব কতটুকু।

হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) যে আন্দোলনের বদৌলতে ভারত উপমহাদেশ ছাড়াও বহির্বিশ্বে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রেখেছিলেন তাঁর সে আন্দোলন পর্যালোচনা করলে আমরা একে তিনটি ভাগে বিভক্ত করতে পারি। যেমন :

১. দ্বীনী সংস্কার আন্দোলন।

২. আধ্যাত্মিক আন্দোলন (তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া)।

৩. জিহাদ (সশস্ত্র সংগ্রাম)।

আলোচনার সুবিধার্থে সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর আন্দোলনকে তিনভাগে বিভক্ত করলেও মূলত এ তিনটির উদ্দেশ্য ছিল এক ও অভিন্ন অর্থাৎ ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা, মানুষকে আল্লাহর পথে নিবিষ্ট করা এবং মুসলিম সমাজে অনুপ্রবিষ্ট কুসংস্কার ও বিদআতের মূলোৎপাটন।

দ্বীনী সংস্কার

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) নানাবিধ দ্বীনী সংস্কার সাধন করেছেন। ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসলামী জীবনাচারের বিভিন্ন দিক বিলুপ্ত হযে় গিয়েছিল। সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এগুলো পুনরুজ্জীবিত করেন। তাঁর সংস্কারের মধ্যে রযে়ছে সালামের পুন:প্রচলন, ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদ পুনপ্রবর্তন, কবরপূজাসহ নানা ধরনের শিরক-বিদআত উচ্ছেদ করা, হজ্জের ফরযিয়ত সম্পর্কে প্রচলিত অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে অবস্থান এবং সদলবলে হজ্জ পালন, বিবাহ প্রথা সংশোধন এবং বিধবা বিবাহ পুন:প্রচলন, হিন্দুয়ানী বেশ-ভূষা ও রীতি-নীতি থেকে মুসলিম সমাজকে রক্ষা, তা’যিয়ার বিলোপ সাধন ইত্যাদি।

আধ্যাত্মিক আন্দোলন (তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া)

সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) মুসলমানদের আত্মিক পরিশুদ্ধির জন্য ‘তরীকাযে় মুহাম্মদিয়া’ নামে একটি সমন্বিত তরীকা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি হলো চিশতিয়া, কাদরিয়া, নকশবন্দিয়া ও মুজাদ্দিদিয়া তরীকার সার নির্যাস। অধ্যাপক এইচ. রহমান সম্পাদিত ‘ভারত-উপমহাদেশের ইতিহাস’ গ্রন্থে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর প্রতিষ্ঠিত তরীকায়ে মুহাম্মদিয়াকে ‘সংস্কার আন্দোলন’ হিসেবেই আখ্যাযি়ত করা হযে়ছে। উক্ত গ্রন্থে আছে : “ভারতের মুসলমানদের জাগরণ ও স্বাধীনতার জন্য যাঁহারা রক্ত দিয়াছেন তাহাদের মধ্যে শাহ্ সৈয়দ আহমদ বেরেলভীর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। মুসলমানদের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন যখন তমসাচ্ছন্ন, তখন সৈয়দ আহমদের জন্ম হয়। মুসলমানদের বিশাল সাম্রাজ্য মারাঠা, ইংরেজ ও শিখেরা ছিনাইয়া লইয়াছিল। ফলে ঐ যুগে তাহাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হইয়া উঠিয়াছিল। শাহ্ সৈয়দ আহমদ ১৭৮৬ খৃষ্টাব্দে যুক্ত প্রদেশের রায়বেযে়লী নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দিল্লীর বিখ্যাত আলেম শাহ্ আব্দুল আজিজের নিকট অধ্যয়ন করেন। তিনি প্রথমে সংস্কার আন্দোলনে শুরু করেন। — শাহ্ সৈয়দ আহমদ শহীদের প্রচলিত সংস্কার আন্দোলন ‘মুহাম্মদী আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ভারতের মুসলমানদের কুসংস্কার ও অনৈসলামিক রীতিনীতি দূর করিয়া ইসলামের নির্দেশিত সমাজ ও রাষ্ট্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করাই এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল।” (অধ্যাপক এইচ. রহমান সম্পাদিত, ভারত-উপমহাদেশের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৩৩৯-৩৪০)

জিহাদ (সশস্ত্র সংগ্রাম)

ভারতবর্ষে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষে সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর নির্দেশনায় ও তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন অঞলে মুসলিম বাহিনী সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম জিহাদ সংগঠিত হয় শিখদের বিরুদ্ধে, যা আকুড়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৮২২ খৃস্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর, ১২৪২ হিজরীর ২০ জমাদিউল আউয়াল তারিখে এ জিহাদ সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে আরো অনেক জিহাদ সংঘটিত হযে়ছে। সর্বশেষ ১৮৩১ সালের ৬ মে ঐতিহাসিক বালাকোট প্রান্তরে শিখ ও ইংরেজ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে জিহাদ করে সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) শাহাদত বরণ করেন।

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) সারাজীবন দ্বীনের খিদমতে, দ্বীনী আন্দোলনে অতিবাহিত করেছেন। তাঁর জীবন ও সংগ্রাম আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস।

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু'মিনীন, ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আ...
05/05/2024

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, ঈমানী চেতনার প্রাণপুরুষ, আমীরুল মু'মিনীন, ইমামুত তরীকত, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে সেমিনার সফল হোক।

21/04/2024

Address


Telephone

+447944326664

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ: posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share