25/05/2025
"আপনি অলস না — আপনি প্রোগ্রামড!"
আপনার মাথায় অলসতার ভাইরাস ঢুকেছে, আর আপনি জানেনও না সেটা কীভাবে কাজ করছে!
আপনি কি জানেন❓
অলসতা কিভাবে সৃষ্টি হয়? অলসতা আমাদেরকে কাজ থেকে কিভাবে সরিয়ে রাখে? এবং কখন,কী কারণে অলসতা সৃষ্টি হয়?🤔
প্রথমে আপনার কাছে আমার একটা প্রশ্ন।আপনিও কি অন্যদের মত রিলস ভিডিওতে সময় নষ্ট করে আনন্দ অনুভব করেন⁉
চলুন আজকে জেনে নিই এইসব বিষয়ে,শেষে থাকছে অলসতা থেকে মুক্তির কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস✅
----------------------------------------------------
আমাদের মস্তিষ্ক "তাত্ক্ষণিক আনন্দ" পছন্দ করে। যখন আমরা ফোন স্ক্রল করি, ইউটিউব দেখি,বা সোশ্যাল মিডিয়ায় #রিলস ভিডিও দেখি — তখন ব্রেইন ডোপামিন রিলিজ করে🧠,এর ফলে আমরা আনন্দ অনুভব করি🌱। ডোপামিন রিলিজ করা বিষয়টি খারাপ না কিন্তু এটা এমন সময় রিলিজ হয় যখন আমাদের ব্রেইন আনন্দ পায়।এটা একধরনের “Feel Good Hormone”।আমরা #রিলস ভিডিও দেখা থেকে কেন বের হতে পারিনা জানেন? আমাদের ব্রেইন সবসময় আনন্দের আশা করে যেটা আমরা রিলস #ভিডিও থেকে পেয়ে যায়।🎬
কাজ করার সময় সেই আনন্দ নেই — বরং চাপ, অনিশ্চয়তা থাকে। তাই ব্রেইন চায় সহজ রাস্তা — কাজ বাদ দিয়ে আরামদায়ক কিছু করতে।
যেমন:পরীক্ষা আছে সামনে,পড়তে বসলে হঠাৎ মনে পড়ে যে,আমার অমুখ কাজটা তো এখনো বাকি,বা হঠাৎ ঘুম পায়। ফোনে নোটিফিকেশন আসে এবং আমরা আবার সোশ্যাল মিডিয়া বা বন্ধুদের সাথে চ্যাটে ব্যস্ত হয়ে যায়।
এগুলো মস্তিষ্কের-"avoidance technique”।
অলসতা একটা অভ্যাস — আর অভ্যাস তৈরি হয় নিউরনাল পাথওয়ে দিয়ে। যখনই তুমি বারবার কোনো কাজ এড়িয়ে যাও (যেমন: পড়া, জিম, কাজ) — তখন ব্রেইন সেই এড়িয়ে যাওয়ার পথটাকেই #সহজ রাস্তা হিসেবে শিখে ফেলে।🧠
এই অবস্থাকে বলে "Cognitive Inertia" — মানে মস্তিষ্ক একবার যেই মুডে ঢোকে, সেখান থেকে বের হতে চায় না।
যেমন: ৫ মিনিট ফেসবুক দেখব বলে শুরু করলে,মাশাল্লাহ 🙂 ৫ঘণ্টাতেও ৫মিনিট শেষ হয় না — কারণ ব্রেইন সেই আনন্দময় মোডে আটকে পড়ে।
কখন অলসতা সৃষ্টি হয় জানেন?
🔶যখন লক্ষ্য ( ) অস্পষ্ট হয়।
🔶যখন কাজটা ভয়ংকর বা বড় মনে হয়।
🔶যখন আগে থেকে ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থাকে।
🔶যখন শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। (ঘুম কম গেলে,নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া না করলে)
একজন ছাত্র প্রতিদিন ভাবছে “আগামীকাল থেকে জিম শুরু করব” — কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তাই শুরুই করা হয় না।
মুক্তি পাওয়ার কিছু কার্যকরী টিপস✅
১. ছোট পরিসরে শুরু করা — "2-Minute Rule" (James Clear, Atomic Habits)
যেকোনো কাজ ২ মিনিটের মধ্যে শুরু করার মতো করে নিন। যেমন: “পুরো বই পড়বো না বলে, বলেন,শুধু প্রথম প্যারাটা পড়বো”।
২. কাজকে ভেঙে ফেলা — "Chunking Technique" (David Allen, Getting Things Done)
বড় কাজ ভেঙে ছোট টাস্কে পরিণত করেন। এতে মস্তিষ্ক কম ভয় পায়।
৩. পরিবেশ বদলান — "Activation Energy Theory" (Shawn Achor, The Happiness Advantage)
যে কাজ করতে চান, সেটার জন্য পরিবেশ তৈরি করেন। যেমন, মোবাইল দূরে রাখা, দরজা বন্ধ করা, ডেস্ক পরিষ্কার করা।
৪. নিজেকে পুরস্কার দিন — "Reward Loop" ( , Power of Habit)
একটি কাজ শেষ করলে নিজেকে ছোট পুরস্কার দিন — যেমন: নিজেকে নিজের প্রিয় জিনিস পুরষ্কার দিন,৫ মিনিট রেস্ট নিন, প্রিয় গান শোনেন ইত্যাদি।
৫. নিজেকে Accountability বানান — "Public Commitment" (Stephen Covey, 7 Habits of Highly Effective People)
বন্ধুকে জানান বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে দিন “আজ আমি অমুখ কাজটা শেষ করবো" — এতে দায়িত্ববোধ বাড়ায়।
⚠আরেকটা ভুল কখনোই করবেন না।
আজকে সব কাজ করে ফেলবো,সব শিখে ফেলবো,সব ফাঁটায় ফেলবো,আমাকে আর কেউ থামাতে পারবে না,আজকে বিশ্ব জয় করে ফেলবো"🐸
এই মোটিভেশনাল বাক্যগুলো বলে কখনোই কোনো কাজ শুরু করবেন না।কারণ,এই বাক্যগুলো বেশিক্ষণ কার্যকর হয়না,একটু পর ঠুস💥,আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন।সত্যি বলতে একদিনে কোনো কিছুই সম্ভব হয় না🙂 আপনি চাইলেও একদিনে অলসতা ছাড়তে পারবেন না।এর জন্য আপনাকে উপরোক্ত অল্প টিপসগুলো দিয়ে শুরো করতে হবে।
এই অল্পকিছু টিপস কে কে অনুসরণ করতে পারবেন?🙂
কমেন্টে লিখে যান
"Break The Laziness"