13/02/2025
অর্ণবের ঘুম ভাঙলো মৃদু পাখির ডাকে। জানালার পর্দা সরাতেই সোনালী রোদ্দুর এসে মুখে পড়লো। লন্ডনে তার প্রথম সকাল। চারপাশে নতুন শহরের গন্ধ, নতুন সম্ভাবনার হাতছানি।
বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই দেখতে পেলো পার্কের সবুজ ঘাসের উপর সাদা কুয়াশার চাদর। রোদের আলোয় সেই কুয়াশা ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে। পাশের রাস্তায় এক বৃদ্ধা কুকুরকে নিয়ে হাঁটছেন, আরেক পাশে সাইকেলে করে এক তরুণ অফিসের দিকে ছুটছে।
চায়ের কাপে এক চুমুক দিয়ে অর্ণব হালকা শীতল হাওয়ার স্পর্শ অনুভব করল। মনে হলো, লন্ডনের সকাল তার জন্য নতুন কোনো অধ্যায় শুরু করতে এসেছে।
হঠাৎ পাশের চার্চের ঘণ্টা বাজলো—"ডং... ডং... ডং..."। সেই সুরে মিশে গেলো দূর থেকে ভেসে আসা ট্রাফিকের মৃদু শব্দ। সবকিছু যেন এক ছন্দে বাঁধা, নতুন দিনের স্বপ্নে মোড়া।
অর্ণব ঠিক করল, আজ সে শহরটা ঘুরে দেখবে। লন্ডন আই, টেমস নদী, হাইড পার্ক—সব জায়গা তার জন্য অপেক্ষা করছে। হালকা জ্যাকেট গায়ে চাপিয়ে বেরিয়ে পড়ল সে।
রাস্তার মোড়ে এসে এক বেকারি থেকে হট ক্রস বান আর কফি নিলো। কফির গন্ধে মনটা আরও চনমনে হয়ে গেলো। চারপাশের মানুষগুলোর ব্যস্ততা, তাদের হাঁটার তাড়া, কথা বলার ভঙ্গি—সব কিছুতেই নতুনত্ব।
হেঁটে হেঁটে সে পৌঁছালো হাইড পার্কে। পার্কের ভেতরে সোনালি রোদ্দুরে ভিজে আছে সবুজ ঘাস। কিছু মানুষ জগিং করছে, কেউ বেঞ্চে বসে বই পড়ছে, আর কিছু শিশু খেলে বেড়াচ্ছে।
একটা বেঞ্চে বসে অর্ণব গভীর শ্বাস নিলো। লন্ডনের সকালে যেন এক অদ্ভুত জাদু আছে। সেই জাদু তার মনের সব ক্লান্তি ধুয়ে দিলো। মনে হলো, আজকের দিনটা শুধু তার জন্যই এসেছে।
সেই মুহূর্তে অর্ণব বুঝতে পারল, লন্ডনের এই সকাল সে কখনো ভুলতে পারবে না। এই সকালে লুকিয়ে আছে তার নতুন জীবনের গল্প।