Complete Code of Life

Complete Code of Life “Guiding you to the true path — in this life and the next, through the Qur’an and Sunnah.”

20/05/2025

✔️ অধ্যায় ৭: পৃথিবীতে মানবজীবনের শুরু — আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-এর পুনর্মিলন

(ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে সৃষ্টির ৭ম ধাপ)

👉 বি*চ্ছেদ ও পৃথিবীতে আগমন:

আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-এর জান্নাতে ছিল শান্তিময় জীবন। কিন্তু শয়*তানের প্রতা*রণায় পড়ে তাঁরা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে সেই নি*ষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেলেন। ফলাফলস্বরূপ তাঁদের জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হয়।

আল্লাহ বলেন:

"তোমরা সবাই জান্নাত থেকে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শ*ত্রু হবে। পৃথিবীতে তোমাদের জন্য এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান ও জীবিকা রয়েছে।"
— সূরা আল-আ’রাফ: ২৪

বেশিরভাগ ইসলামি ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে, আল্লাহ আদম (আঃ)-কে ভারত উপমহাদেশের দিকে (শ্রীলঙ্কার আদম পিক পর্বত) এবং হাওয়া (আঃ)-কে আরব উপদ্বীপের দিকে (জেদ্দা, সউদি আরব) নামিয়ে দেন। (তাফসির ইবন কাসির, ইমাম কুরতুবি)

তাঁরা একে অপরের থেকে বি*চ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। অচেনা পৃথিবীতে, একা, অপ*রাধবোধে ভরা অন্তর নিয়ে তাঁরা আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

👉 দোয়া ও অ*নুতাপ:

তাঁদের অ*নুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ফিরে যাওয়ার আকুলতা তৈরি হয়। তাঁরা কাঁদতে থাকেন, একাকীত্ব, অ*পরাধবোধ এবং ক্ষ*মা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় তাঁরা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।

তাঁদের দোয়া ছিল:

"رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَـٰسِرِينَ"

“হে আমাদের প্রভু, আমরা নিজেদের প্রতি জু*লুম করেছি। আপনি যদি আমাদের ক্ষ*মা না করেন এবং দয়া না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষ*তিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২৩

আল্লাহ তাঁদের তাওবা কবুল করলেন।

"অতঃপর তাঁর প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন, তার তাওবা কবুল করলেন ও তাকে হিদায়াত দিলেন।"
— সূরা ত্বা-হা: ১২২

👉 পুনর্মিলন: আরাফার ময়দানে ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ

বহু বছর বি*চ্ছিন্ন থাকার পর, অবশেষে আল্লাহ তাঁদেরকে পুনর্মিলনের সুযোগ করে দেন। হাদীস ও তাফসির অনুসারে, তাঁরা আরাফার ময়দানে (বর্তমান মক্কার নিকটে) এসে একত্রিত হন। আর সেই কারণে এই স্থানের নাম রাখা হয় “আরাফা” — যার অর্থ “পরিচয়” বা “সাক্ষাৎ”।

ইমাম ইবন কাসির (রহ.) তাঁর তাফসিরে বলেন:

> “আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) পৃথিবীতে বিচ্ছি*ন্নভাবে নেমেছিলেন। দীর্ঘ সময় তাঁরা একে অপরকে খুঁজে বেড়িয়েছেন। শেষে তাঁরা আরাফার ময়দানে একত্রিত হন এবং আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।”

👉 তাঁদের মা*নসিক অবস্থা ও সংগ্রাম:

আদম (আঃ) ছিলেন একাকী, অ*পরিচিত এক পৃথিবীতে। জান্নাতের প্রশান্তির পরিবর্তে পেয়েছেন দায়িত্বের ভা*র।

হাওয়া (আঃ) একা ছিলেন এক বিস্ময়কর, ভিন্ন পরিবেশে। তাঁদের মধ্যে ছিল অ*পরাধবোধ, কিন্তু এর মধ্যেও ছিল ক্ষ*মা পাওয়ার আশা।

তাঁরা কান্নাকাটি করেছেন, দোয়া করেছেন, পাহাড়-পর্বত পেরিয়ে একে অপরকে খুঁজেছেন। এই দীর্ঘ বি*চ্ছেদই তাঁদের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধকে আরও দৃঢ় করেছে।

👉 শিক্ষণীয় দিক:

• পা*প করার পর পরেই আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া উচিত।
• আল্লাহ তাঁর বান্দার তাওবা কবুল করেন, যদি বান্দা আন্তরিকভাবে ফিরে আসে।
• জীবনে যত বি*পদই আসুক, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে পথ খুলে যায়।
• দাম্পত্য জীবনে বি*চ্ছেদ, ভু*ল-ত্রু*টি হতে পারে; কিন্তু আন্তরিকতা, দোয়া ও ক্ষ*মার মাধ্যমে আবারও মিলন সম্ভব।

👉 আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে:

• মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, একাকীত্ব তার জন্য মানসিকভাবে ক*ষ্টদায়ক। বিজ্ঞানও বলে, বি*চ্ছিন্ন অবস্থায় মানুষের মানসিক ভারসাম্য ন*ষ্ট হয়। আদম (আঃ)-এর অভিজ্ঞতা এ বিষয়েই ইঙ্গিত দেয়।

• বিবর্তনবাদ ভুলভাবে বলে মানুষ একটি এলাকা থেকে উদ্ভূত, কিন্তু কুরআন ও হাদীস বলছে — মানবজাতির শুরুতে ছিল একটি দাম্পত্যজোড়া যারা জান্নাত থেকে পৃথিবীতে এসেছে।

---

উপসংহার:

আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-এর বিচ্ছেদ, দোয়া, তাওবা ও পুনর্মিলন আমাদের শিক্ষা দেয়—মানুষ ভু*ল করলেও, আল্লাহর কাছে ফিরে গেলে ক্ষ*মা ও হিদায়াত অপেক্ষা করে। এই অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে মানবিক জীবন, সম্পর্ক, সং গ্রাম ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার শুরু হয়।

পরবর্তী অধ্যায়:
মানবজাতির বিস্তার — সন্তান, ভাষা ও সমাজের গোড়াপত্তন
ইনশা-আল্লাহ...

, ,

19/05/2025

তুমি মহাবিশ্বের সৌন্দর্য, সুশৃঙ্খলতা আর শ*ক্তিতে মুগ্ধ হও—কিন্তু যিনি এটিকে শুধুমাত্র একটি আদেশেই সৃষ্টি করেছেন, সেই সৃষ্টিকর্তাকে অ*স্বীকার করো?

তিনি বললেন: ‘হও’, আর তা হয়ে গেল।” – সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮২
“كن فيكون”

তুমি নক্ষত্রপুঞ্জ, গ্যালাক্সি আর পদার্থবিদ্যার জটিল নিয়ম দেখো—তারপরও বলো, ‘প্রমাণ দাও’?
সম্পূর্ণ মহাবিশ্বই তো একটি নিদর্শন।--(সূরা ফুসসিলাত ৪১:৫৩)

একফোঁটা তরল থেকে অনুভবশীল ও চিন্তাশীল মানুষ সৃষ্টি হলো—(সূরা আল-ইনসান ৭৬:২)
তবুও তুমি বিশ্বাস করো এটি কিছুর মাধ্যমে নয় বরং এমনি এমনি সৃষ্টি হয়েছে?

পৃথিবী ঘোরে, আকাশ স্থিরভাবে টিকে আছে, সূর্য বিরামহীনভাবে জ্বলছে—আর এর কোনোটিই তোমার নিয়ন্ত্রণে নয়।
তাহলে কে এগুলো চালিয়ে নিচ্ছেন? - (সূরা আল-মুলক ৬৭:৩–৪)

তুমি এমন মহাকর্ষে বিশ্বাস করো যেটা চোখে দেখা যায় না, এমন শক্তিতে বিশ্বাস করো যেটা ছোঁয়া যায় না—

কিন্তু যিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, সেই মহান স্রষ্টার অ*স্তিত্বেই তোমার স*ন্দেহ!!

, ,

✓"হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি যখন আমাদের হি*দায়াত দিয়েছেন, তখন আমাদের অন্তরগুলোকে বি*ভ্রান্ত করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে ...
17/05/2025

✓"হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি যখন আমাদের হি*দায়াত দিয়েছেন, তখন আমাদের অন্তরগুলোকে বি*ভ্রান্ত করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে দান করুন রহমত। নিশ্চয়ই আপনি পরম দানশীল।"
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৮)

---

শানে নুযুল (নাজিলের পটভূমি):

রূপক (মুতাশাবিহ) আয়াত নিয়ে ই*হুদী ও মুনা*ফিকদের বি*ভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন ও মনগড়া ব্যাখ্যার পর, মুমিন সাহাবিগণ চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তারা ভাবেন—“যদি আমরাও এমন আয়াত বুঝতে ভুল করি? যদি আমাদের হৃদয় গো*মরাহ হয়ে যায়?”

এই ভ*য় থেকে তারা মহান আল্লাহর কাছে দ্বীনের উপর স্থিরতা ও সঠিক পথের উপর টিকে থাকার জন্য দোয়া করতে শুরু করেন।
এই আয়াত তাঁদের হৃদয়ের সেই দোয়ার অনুরূপ ভাষায় নাজিল হয়—যা একটি নিঃস্বার্থ, ঈ*মানদীপ্ত আ*ত্মার আ*কুতি।

---

তাফসির ও ব্যাখ্যা:

এই আয়াত আমাদের শিখায়, হিদা*য়াত পাওয়াই চূড়ান্ত সাফল্য নয়, বরং তাতে অটল থাকা ও মৃ*ত্যুর আগ পর্যন্ত টিকে থাকা—সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

"আমাদের অন্তর বি*ভ্রান্ত করবেন না"—এই অংশটি ইঙ্গিত দেয়, হৃদয় গো*মরাহ হয়ে যাওয়ার ভ*য় মুমিনদের মধ্যেই থাকে। আর এ ভ*য় থেকেই তারা আল্লাহর রহমত কামনা করে।

আল্লাহর রহমত ছাড়া কেউই স ঠিক পথে টিকে থাকতে পারে না। জ্ঞান, যুক্তি, অভিজ্ঞতা—এসব কিছুর চেয়েও আল্লাহর রহমতই হি*দায়াতের মূল উৎস।

الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ

(পরম করুণাময়, দয়ালু)—এই নামগুলোর বাস্তব প্রকাশ এই দোয়ার মাধ্যমে ফুটে ওঠে।

---

✓"হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আপনি একদিন সমস্ত মানুষকে একত্র করবেন, যাতে কোনো স*ন্দেহ নেই। আল্লাহ কখনোই তার প্রতিশ্রুতি ভ*ঙ্গ করেন না।"
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৯)

---

শানে নুযুল (নাজিলের পটভূমি):

এই আয়াতও পূর্ববর্তী দোয়ার ধারাবাহিকতা।
যখন সাহাবিগণ ভ*য় পেয়ে আল্লাহর নিকট তাঁদের অ*ন্তর অটল রাখার জন্য প্রার্থনা করছিলেন, তখনই তাঁরা কি*য়ামতের কথা স্মরণ করেন—যে দিন সমস্ত মানুষকে একত্রিত করা হবে এবং যার ভ*য় থেকেই একজন মু'মিন সব সময় সঠিক পথে থাকতে চায়।

এই আয়াত সেই ভ*য় ও দৃঢ় বিশ্বাসের প্রকাশ—যেখানে তারা স্পষ্টভাবে বলে দেন, “আমরা জানি আপনি আমাদের একত্র করবেন, এবং আপনি আপনার ওয়াদা কখনোই ভ*ঙ্গ করেন না।”

---

তাফসির ও ব্যাখ্যা:

এই আয়াত কিয়ামতের প্রতি এক গভীর বিশ্বাসের ঘো*ষণাপত্র।
যারা জানে, একদিন প্রতিটি কাজের হি*সাব নেওয়া হবে, তারা গা*ফিল হয়ে যেতে পারে না।

“আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভ*ঙ্গ করেন না”—এই অংশে মু'মিনদের দৃঢ় আস্থা প্রকাশ পায়। এটা একটি বড় প্রশান্তি:
যিনি হি*দায়াত দিয়েছেন, তিনিই কিয়ামতে ন্যা*য়বিচার করবেন।

এই আয়াত আমাদের শেখায়:

আল্লাহর প্রতিশ্রুতি চিরন্তন সত্য—তিনি যা বলেছেন, তাতে কোনো সং*শয় নেই।

মুমিনদের দোয়া শুধু দুনিয়ার জন্য নয়, বরং আখিরাতের ভ*য় ও প্রস্তুতির প্রতিফলন।

---

সারমর্ম:

হি*দায়াত পাওয়ার পরও বি*ভ্রান্তির ভ*য় থাকা ঈ*মানের পরিচয়।

আল্লাহর রহমত ছাড়া কেউই স্থির থাকতে পারে না।

কি*য়ামতের দিবসের প্রতি বিশ্বাস—একজন মু'মিনের জীবনে সবচেয়ে বড় সচেতনতার উৎস।

, ,

15/05/2025

✔️ অধ্যায় ৬: শয়তা*নের প্রতা*রণা, আদম (আঃ)-এর পরীক্ষা ও পৃথিবীতে প্রেরণ

(ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে সৃষ্টির ৬ষ্ঠ ধাপ)

---

👉 শয়তা*নের অ*হংকার ও আদেশ অমান্য

আল্লাহ বলেন:

> "وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَـٰٓئِكَةِ ٱسْجُدُوا۟ لِءَادَمَ فَسَجَدُوٓا۟ إِلَّآ إِبْلِيسَ ۖ أَبَىٰ وَٱسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ ٱلْكَـٰفِرِينَ"

“যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, ‘আদমকে সেজদা করো’, তখন সবাই সেজদা করলো, ইব্ লীস ব্যতীত; সে অমান্য করল, অ*হংকার করল এবং সে ছিল কা*ফিরদের অন্তর্ভুক্ত।”
— সূরা বাকারা: ৩৪

মূল বিষয়:
ইব্ লীস ছিল জি*ন জাতির একজন এবং সে ফেরেশতাদের সাথে থেকে ইবাদত করত। কিন্তু অ*হংকারের কারণে আদম (আঃ)-কে সেজদা করতে অ*স্বীকার করে, সে আল্লাহর আদেশ অ*মান্য করে।

---

👉 শয়তা*নের যুক্তি ও অবাধ্যতা

আল্লাহ বলেন:

> "قَالَ أَنَا۠ خَيْرٌۭ مِّنْهُ ۖ خَلَقْتَنِى مِن نَّارٍۢ وَخَلَقْتَهُۥ مِن طِينٍ"

“সে বলল, ‘আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ; আপনি আমাকে আ*গুন থেকে সৃষ্টি করেছেন আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে।’”
— সূরা আরাফ: ১২

বোঝা যায়:
শয়তা*ন মাটিকে নিচু এবং আ*গুনকে উচ্চতর মনে করেছিল, যা তার অ*হংকারের বহিঃপ্রকাশ। সে সৃষ্টি উপকরণের ভিত্তিতে মর্যাদা নির্ধারণ করতে চেয়েছিল।

---

👉 জান্নাতে আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-কে স্থান দেওয়া

আল্লাহ আদম ও হাওয়াকে জান্নাতে বসবাস করতে দেন:

“ও হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং সেখানে যা চাও নির্দ্বিধায় খাও, কিন্তু এই গাছটির নিকটে যেও না, অন্যথায় তোমরা জা*লেমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ১৯

এটি ছিল একটি পরীক্ষা — আদম (আঃ) যেন আল্লাহর আদেশ মানেন।

---

👉 শয়তা*নের প্র*তারণা

“তখন শয়তা*ন তাদের কুম*ন্ত্রণা দিলো যাতে সে তাদেরকে যা গোপন ছিল (ল*জ্জাস্থান), তা তাদের সামনে প্রকাশ করে এবং বললো: তোমাদের রব তোমাদের এই গাছটি নি*ষিদ্ধ করেননি, কিন্তু এজন্য যে, তোমরা যেন ফেরেশতা না হয়ে যাও অথবা চিরকাল না থেকে যাও।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২০

শয়তা*ন মি*থ্যা কসম খেয়ে আদম ও হাওয়াকে গাছ থেকে ফল খাওয়াল:

“সে তাদেরকে কসম করে বলল: আমি তোমাদের জন্য অবশ্যই একজন শুভাকাঙ্ক্ষী।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২১

---

👉 আদম (আঃ)-এর ভু*ল ও অনুতাপ

“অতঃপর তারা যখন গাছের ফল আস্বাদন করলো, তখন তাদের ল*জ্জাস্থান প্রকাশিত হয়ে পড়ল এবং তারা জান্নাতের পাতা দিয়ে নিজেদের ঢাকতে লাগলো।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২২

তারা অ*নুতপ্ত হন এবং দোয়া করেন:

"رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَـٰسِرِينَ"

“হে আমাদের প্রভু, আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। আপনি যদি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষ*তিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২৩

আল্লাহ তাঁদের তাওবা কবুল করেন:

“অতঃপর তাঁর প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন, তার তাওবা কবুল করলেন ও তাকে হিদায়াত দিলেন।”
— সূরা ত্বা-হা: ১২২

---

👉 পৃথিবীতে প্রেরণ

আল্লাহ বলেন:

“তোমরা সবাই জান্নাত থেকে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শ*ত্রু হবে। পৃথিবীতে তোমাদের জন্য এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান ও জীবিকা রয়েছে।”
— সূরা আল-আ’রাফ: ২৪

---

✓এই ঘটনার মধ্য দিয়ে:

• মানবজাতির পরীক্ষার সূচনা হয়
• পৃথিবীতে জীবনের অধ্যায় শুরু হয়

---

👉 আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মানব পরীক্ষা

• মানবজাতির বিবেক, সচেতনতা ও নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আধুনিক বিজ্ঞানে স্পষ্টভাবে স্বীকৃত।
• মানুষের মধ্যে ভালো-ম*ন্দ বেছে নেয়ার ক্ষমতা — একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা অন্য প্রাণীতে নেই।

এটি কুরআনের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে।

• তবে রূহ ও আত্মিক পরীক্ষা বিজ্ঞান বোঝে না।

---

উপসংহার:

আদম (আঃ)-এর সৃষ্টি এবং তার পরবর্তীতে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে প্রেরণ মানবজাতির পরীক্ষামূলক জীবনের সূচনা।

শয়তা*নের অহং*কার ছিল তার ধ্বং*সের কারণ, আর আদম (আঃ)-এর তওবা ছিল তাঁর মুক্তির চাবিকাঠি।

---

পরবর্তী অধ্যায়:

অধ্যায় ৭: পৃথিবীতে আগমন, বিচ্ছেদ এবং পুনর্মিলন
ইনশা-আল্লাহ...

, ,

👉সুস্পষ্ট ও রূপক আয়াতের পার্থক্য ও মু'মিনের দৃষ্টিভঙ্গি✔️সত্যিকার ঈ*মানদার কে?“তিনি সেই সত্তা, যিনি আপনার প্রতি কিতাব অব...
13/05/2025

👉সুস্পষ্ট ও রূপক আয়াতের পার্থক্য ও মু'মিনের দৃষ্টিভঙ্গি

✔️সত্যিকার ঈ*মানদার কে?

“তিনি সেই সত্তা, যিনি আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যার কিছু আয়াত সুস্পষ্ট—তা কিতাবের মূল অংশ; আর অন্যগুলো রূপক (মুতাশাবিহ)।
সুতরাং, যাদের অন্তরে গোম*রাহী আছে, তারা এর রূপক আয়াতগুলোর অনুসরণ করে, তাদের উদ্দেশ্য হলো ফি*তনা সৃষ্টি করা এবং এর ব্যাখ্যা খুঁজে বের করা। অথচ এর প্রকৃত ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
আর যারা জ্ঞানে দৃঢ়, তারা বলে, ‘আমরা এতে বিশ্বাস করি; এটা সবই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে।’ আর উপদেশ গ্রহণ করে শুধুই বুদ্ধিমানরা।”
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৭)

শানে নুযুল:

ই*হুদী ও খ্রি*ষ্টানদের কিছু লোক রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এসে কুরআনের কিছু রূপক আয়াত নিয়ে জিজ্ঞেস করত, বিশেষ করে যেগুলো কি*য়ামতের বর্ণনা, আল্লাহর হাত বা আরশে ইসতিওয়ার মতো বিষয় নিয়ে। তারা এসব ব্যবহার করত বি*ভ্রান্তি ও স*ন্দেহ ছড়ানোর জন্য। এই আয়াত নাজিল হয় তাদের সেই ফি*তনা ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করার জন্য।

---

তাফসির ও ব্যাখ্যা:

আল্লাহ কুরআনে আমাদের দুই ধরনের আয়াত দিয়েছেন:
১. মুহকাম (সুস্পষ্ট) – যেমন: নামাজ কায়েম করো, রোযা রাখো, সু দ হা*রাম, ইত্যাদি।
২. মুতাশাবিহ (রূপক) – যেমন:

-“আল্লাহর হাত”
-“আল্লাহ আরশে সমাসীন”
-জান্নাতের ফল, দুধ, শ*রাব ইত্যাদির বর্ণনা
-আ*ত্মা ও ফেরেশতাদের প্রকৃতি
-কি*য়ামতের দৃশ্য

এই রূপক আয়াতগুলো মানুষের সীমিত জ্ঞান দিয়ে বোঝা সম্ভব নয়। যারা সত্যিকার জ্ঞানী, তারা বলেন—"আমরা সবকিছুতেই ই*মান এনেছি"—এমনকি যদি আমরা তা পুরোপুরি বুঝতে না পারি, তবুও বিশ্বাস করি কারণ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।

---

কিন্তু যারা বি*ভ্রান্তি ছড়াতে চায়?

তারা রূপক আয়াতকে টেনে নিজেদের মতবাদ দাঁড় করাতে চায়।
যেমন: কেউ বলে—"আল্লাহর হাত মানেই আকার আছে", আবার কেউ বলে—"আল্লাহর আরশে বসা, তাই তিনি স্থানবিশিষ্ট"—এভাবে রূপক আয়াত দিয়ে ভু*ল ব্যাখ্যা দাঁড় করায়।
সে ভাবে, এসব কি মানুষের মতো বুঝাতে চাচ্ছে?”
আরও খারাপ কেউ এসে বলে—“তুমি কোরআনের এই কথার মানে জানো না, তাই তুমি বুঝো না!”

আসলে তারা ভু*ল করছে।

আল্লাহ আমাদের শিখাচ্ছেন:

কিছু আয়াত সরল—নামাজ, রোজা, halal-haram, ন্যায়-অন্যায়—এগুলো সুস্পষ্ট (مُحْكَمَاتٌ)।

আবার কিছু আয়াত এমন, যেগুলো আমাদের সীমিত জ্ঞানে পুরোপুরি ধরা যায় না—আল্লাহর সিফাত, কিয়ামতের ঘটনা, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা ইত্যাদি—এসব রূপক (مُتَشَابِهَاتٌ)।

এখানেই ঈমানদারের পরিচয়—

যে বলে:
"আমি বুঝি বা না বুঝি—এটা আল্লাহর কথা।
তিনি জানেন, আমি বিশ্বাস করি।
আমি বিত*র্কে যাব না, ফি*তনায় জড়াব না।"

আর গো*মরাহ মানুষ?
তারা শুধু মুতাশাবিহ আয়াত খুঁজে খুঁজে বের করে—
“দেখো, কোরআন তো ক*নফিউসিং”,
“এ আয়াতে তো বোঝা যাচ্ছে আল্লাহর হাত আছে, মানে তিনিও শরীরধারী?”

আল্লাহ তাদের নিয়েই সতর্ক করছেন।

---

✓সব আয়াত বুঝার জন্য নয়—কিছু আয়াত মানার জন্য।
সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত—
“আল্লাহ কি আমাকে ব্যাখ্যা করতে বলেছেন, নাকি বিশ্বাস করতে?”

তাই যদি কোনো আয়াত তোমার বুঝে না আসে—
মেনে নাও। চুপ থাকো। মু*মিনের মতো আচরণ করো।
কারণ, ইলমও এক প্রকার ইবাদত—
আর নিঃ*শর্ত ঈ*মান, তা-ই আসল সফলতা।

✔️এই শিক্ষাকে কুরআনের অন্য আয়াত কীভাবে সমর্থন করে?

১. সূরা ইসরা ১৭:৮৫

“তারা রূ*হ (আ*ত্মা) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলুন, আ*ত্মা আমার রবের আদেশ। তোমরা অল্পই জ্ঞান পেয়েছ।”
সমর্থন: মানুষ সবকিছু জানার যোগ্য না। কিছু বিষয় শুধু আল্লাহর জ্ঞানে সীমাবদ্ধ। ব্যাখ্যার চেষ্টা নয়, বিশ্বাসই যথেষ্ট।

২. সূরা ত্বা-হা ২০:১১০

“আল্লাহ জানেন যা তাদের সামনে ও পেছনে, কিন্তু তারা আল্লাহর জ্ঞানকে আয়ত্ত করতে পারবে না।”
সমর্থন: মুতাশাবিহ আয়াতের অন্তর্নিহিত অর্থ আমাদের সীমার বাইরে। তাই বিত*র্ক না করে ই*মান আনাই জ্ঞানের পরিচয়।

৩. সূরা বাকারা ২:২

“এটি এমন কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটা মুত্তাকিদের জন্য পথনির্দেশ।”
সমর্থন: যারা মুত্তাকি, তারা কুরআনকে প্রশ্নবি*দ্ধ করে না। সুস্পষ্ট হোক বা রূপক—সবকিছুতেই তারা ঈ*মান আনে।

৪. সূরা আনআম ৬:৫০

“বলুন, অ*ন্ধ ও দৃষ্টিসম্পন্ন কি এক হয়? তবে কি তোমরা চিন্তা করবে না?”
সমর্থন: যারা চিন্তা করে ও প্রকৃত বুঝ রাখে, তারা রূপক আয়াতে বি*ভ্রান্ত হয় না বরং সুস্পষ্ট আয়াত ধরে চলে।

---

শেষ কথা (উপসংহার)

এই আয়াত আমাদের শিখায়—সব আয়াতের ব্যাখ্যা জানা মানুষের দায়িত্ব নয়। বরং রূপক আয়াতের ক্ষেত্রে প্রকৃত ই*মান হলো:
“আমরা এতে বিশ্বাস করি—সবই আমাদের রবের পক্ষ থেকে।”

আল্লাহ জানেন কোন আয়াতের গভীর অর্থ তিনি প্রকাশ করবেন আর কোনটি শুধু বিশ্বাসের জন্য রেখে দেবেন। সত্যিকারের মু'মিনরা প্রশ্ন বা তর্ক করে না—তারা মাথা নিচু করে বিশ্বাস করে।

, ,

✔️ওহির শুরু: হেরা গুহার সেই রাতমক্কার পাহাড় ঘেরা পরিবেশে, যখন চারদিকে অন্ধকার নেমে আসে, তখন এক নিঃসঙ্গ মানুষ একটি গুহায় ...
13/05/2025

✔️ওহির শুরু: হেরা গুহার সেই রাত

মক্কার পাহাড় ঘেরা পরিবেশে, যখন চারদিকে অন্ধকার নেমে আসে, তখন এক নিঃসঙ্গ মানুষ একটি গুহায় আশ্রয় নেন। তিনি কোন সাধারণ মানুষ নন—তিনি হলেন মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ ﷺ। তাঁর অন্তরে এক গভীর তৃ*ষ্ণা—সত্যের খোঁজে, আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছার আকাঙ্ক্ষায়।

দিনের পর দিন তিনি হেরা গুহায় অবস্থান করতেন। খাবার শেষ হলে আবার বাড়ি ফিরে যেতেন, প্রিয় স্ত্রী খাদিজা (রাযি.)-এর কাছে। কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে নতুন করে আবার সেই নির্জন গুহায় ফিরে যেতেন ধ্যান করার জন্য। রাতের নিস্তব্ধতা আর পাহাড়ের নির্জনতা যেন তাঁকে ডেকে নিত।

এই সময়েই শুরু হয় এক বি*স্ময়কর ঘটনা।

এক রাতে হঠাৎ করেই সেই গুহায় এক অদ্ভুত আলো জ্বলজ্বল করে উঠল। একজন ফেরেশতা তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালেন। বললেন,
— “পড়ো।”
তিনি বিস্ময়ে কাঁ*পতে কাঁ*পতে বললেন,
— “আমি তো পড়তে পারি না।”

ফেরেশতা তাঁকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন, আবার বললেন,
— “পড়ো।”
তিনি আবারও বললেন,
— “আমি তো পড়তে পারি না।”

তৃতীয়বার, ফেরেশতা তাঁকে শক্তভাবে চেপে ধরলেন এবং বললেন:

> "পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে এক জমাট রক্ত থেকে সৃষ্টি করেছেন। পড়ো, আর তোমার প্রভু সর্বাধিক মর্যাদাবান, যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানতো না।"
-- সূরা আলাক (আয়াত ১-৫)

ঘা*মভেজা শরীর, কাঁ*পতে থাকা অ*ন্তর নিয়ে তিনি দৌ*ড়ে ঘরে ফিরে এলেন।
বললেন,
— “আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও!” ” আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও!”

খাদিজা (রাযি.) তাঁকে চাদর জড়িয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর, তিনি ঘটনাটি খুলে বললেন এবং কাঁ*পা কণ্ঠে বললেন,
— “আমি আমার জীবন নিয়ে ভ*য় পাচ্ছি।”

তখন খাদিজা (রাযি.) শ*ক্তভাবে বললেন:
“না! আল্লাহর কসম, আপনি কখনো অ*পমানিত হবেন না। আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, সত্য বলেন, নিঃ*স্বকে সাহায্য করেন, দুর্ব*লকে সহায়তা করেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করেন এবং বি*পদে মানুষের পাশে থাকেন।”

এই রাতই ছিল নবুয়তের সূচনা, ওহির প্রথম আগমন। মানবজাতির জন্য নতুন এক যুগের সূচনা হয়েছিল সেই হেরা গুহার রাতেই।

(সহীহ বুখারী ৪৯৫৩, মুসলিম ১৬০ সহীহ মুসলিম ২৫৭)

#আখিরাত #হিদায়াত

12/05/2025

✔️অধ্যায় ৫: হযরত আদম (আঃ)-এর সৃ*ষ্টি এবং মানবজাতির সূচনা

(ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে সৃ*ষ্টির পঞ্চম ধাপ)

১. আদম (আঃ)-এর প্রথম সৃ*ষ্টি

আল্লাহ বলেন:

> "إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَ ۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ"

“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত, আদমের দৃষ্টান্তের মতো; তিনি তাঁকে মৃত্তিকা থেকে সৃ*ষ্টি করেছেন, তারপর বলেছেন, ‘হও’, আর সে হয়ে গেছে।”
— সূরা আলে ইমরান: ৫৯

মূল বিষয়:
আদম (আঃ) মাটি বা মৃত্তিকা থেকে সৃ*ষ্টি হয়েছিলেন—এটি কুরআনের বহু স্থানে উল্লেখ রয়েছে। এটি মানব সৃ*ষ্টির সূচনা বিন্দু।

---

২. কাদামাটির বিভিন্ন স্তর

আল্লাহ বলেন:

> "وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن سُلَٰلَةٍۢ مِّن طِينٍ"

“আমি মানুষকে সৃ*ষ্টি করেছি কাদামাটির নির্যাস থেকে।”
— সূরা মু’মিনূন: ১২

রাসূল ﷺ বলেন:

> "إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ مِن قَبْضَةٍ قَبَضَهَا مِنْ جَمِيعِ الْأَرْضِ..."

“আল্লাহ আদমকে সৃ*ষ্টি করেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ থেকে নেয়া এক মুঠো মাটি থেকে।”
— আবু দাউদ: ৪৬৭৩, সহীহ হাদীস

বুঝা যায়:
আদম (আঃ)-এর দেহ গঠনে মাটি, কাদা, ও নির্যাস—all layered elements—ব্যবহৃত হয়েছিল, যা মানবদেহের উপাদানগত বৈচিত্র্য ব্যাখ্যা করে।

---

৩. রূ*হ ফুঁ*কে দেওয়া

আল্লাহ বলেন:

> "فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُوا۟ لَهُۥ سَـٰجِدِينَ"

“যখন আমি তাকে পূর্ণাঙ্গ করব এবং তাতে আমার পক্ষ থেকে রূ*হ ফুঁ*কে দেব, তখন তোমরা তার প্রতি সেজদায় লুটিয়ে পড়বে।”
— সূরা হিজর: ২৯

এখানে দুইটি ধাপ স্পষ্ট:

১. শারীরিক গঠন মাটি থেকে
২. রূহ বা আত্মা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফুঁকে দেওয়া — যা মানব জীবনের সূচনা।

---

৪. বিবি হাওয়ার সৃষ্টি

রাসূল ﷺ বলেন:

> "استوصوا بالنساء خيرا، فإن المرأة خلقت من ضلع..."

“নারীদের প্রতি সদয় হও, কারণ নারীকে সৃ*ষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে।”
— সহীহ বুখারী: ৩৩৩১, সহীহ মুসলিম: ১৪৬৮

ইসলামী ব্যাখ্যা অনুযায়ী:
হাওয়াকে আদম (আঃ)-এর একটি পাশের পাঁজর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে — মূলত তার থেকে তার সঙ্গী।

---

৫. আধুনিক বিজ্ঞান কী বলে?

মানবদেহে যে উপাদান (carbons, oxygen, nitrogen, calcium, iron) রয়েছে — তার সবই পৃথিবীর মাটিতেও আছে।

মানবজাতির জিনগত বৈচিত্র্য এবং মস্তিষ্কের আত্ম-চেতনা প্রমাণ করে যে মানব সৃ*ষ্টি একটি গভীর পরিকল্পিত প্রক্রিয়া।

অর্থাৎ:
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মাটি থেকে জীবন অ*সম্ভব নয় — বরং plausible (যথার্থ সম্ভাবনাময়)। তবে ‘রূ*হ’ বিষয়টি বিজ্ঞান ধরতে অ*ক্ষম।

---

উপসংহার:

মানবজাতির সৃ*ষ্টি ছিল আল্লাহর পরিকল্পিত কাজ।
আদম (আঃ) ছিলেন প্রথম মানুষ, যাকে আল্লাহ মাটি থেকে সৃ*ষ্টি করে রূ*হ দান করেছেন। সেখান থেকেই মানবজাতির সূচনা।

> “তিনি সবকিছু সুন্দরভাবে সৃ*ষ্টি করেছেন এবং মানুষের সৃ*ষ্টির সূচনা করেছেন কাদামাটি থেকে।”
— সূরা সাজদাহ: ৭

---

পরবর্তী অধ্যায়: শ*য়তান ও আদম (আঃ)-এর পরীক্ষার ঘটনা ও জান্নাত থেকে প্রেরণ – ইনশা-আল্লাহ..

, ,

12/05/2025

👉 সতর্কতার সময় এখন — সামনের দিনগুলো সহজ নাও হতে পারে 👈

বিশ্বব্যাপী নানা অস্থি রতা আমাদের একটি কঠিন সময়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সামনে যু দ্ধ, দুর্ভি ক্ষ, মহা মা রী এবং বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনই সময় কিছু বাস্তব ও আত্মিক প্রস্তুতি নেওয়ার।

---

জীবনের টিকে থাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি:

✓ জমি ফেলে না রেখে চাষের উপযোগী করুন। শাকসবজি, ধান, ডাল ও প্রয়োজনীয় ফসল রোপণ শুরু করুন।

✓ খাবার ও বীজ সংরক্ষণ করুন। শুকনো খাবার, চাল, ডাল, পেঁয়াজ এবং বিভিন্ন সবজির বীজ মজুত রাখুন।

✓ প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান অর্জন করুন। প্রয়োজনীয় ওষুধ সংরক্ষণের পাশাপাশি গাছ-গাছড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন।

✓ বাড়ির আশেপাশের পতিত জমিতে চারা লাগান। পেঁপে, আলু, লাউ, মরিচসহ বিভিন্ন উপকারী গাছ লাগাতে পারেন।

✓ সামর্থ্য অনুযায়ী পশুপালন করুন। বিশেষ করে ছাগল পালন ভবিষ্যতের জন্য অধিক কার্যকর হতে পারে।

✓ পানির জন্য বিকল্প উৎস তৈরি করুন। কুয়ো, টিউবওয়েল কিংবা পুকুর খনন করে পানির স্বনির্ভরতা অর্জন করুন।

✓ বিদ্যুৎ ছাড়াও বাঁচার প্রস্তুতি নিন। সৌরবিদ্যুৎ কিংবা হারিকেন, মোমবাতি, কেরোসিন—এসবের ব্যবস্থা করে রাখুন।

✓ নগদ অর্থকে নিরাপদ সম্পদে রূপান্তর করুন। ঘরে বা ব্যাংকে নগদ টাকা জমিয়ে না রেখে সোনা বা রূপা কেনা অধিক নিরাপদ।

✓ ডলার ব্যবস্থার পরিবর্তন আসতে পারে। আগেভাগে প্রস্তুত থাকলে বড় বিপর্যয়েও নিরাপদ থাকা সম্ভব।

---

সর্বোচ্চ ঝুঁকি — ঈ মা ন হারানোর ভয়

স*ঙ্কটকালে শুধু খাদ্যের নয়, সবচেয়ে বড় বিপদ ঈ মা ন হারানোর। সেই সময় অনেকে দুনিয়ার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ঈ মা ন বিসর্জন দেবে। তাই:

✓ ইলম অর্জন করুন।

✓ ইবা দতে মনোযোগ দিন।

✓ নিয়মিত কুরআন ও হাদীস পড়ুন।

✓ পরিবারের ঈ মা ন রক্ষার দায়িত্ব নিন।

✓ জিকির, তওবা, এবং দুআর মাধ্যমে আত্মা জাগ্রত রাখুন।

---

যে সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি:

বৈশ্বিক সং ঘা ত

মহা মা রী ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়

খাদ্য সং কট ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা

আর শেষ যুগের যু ধ, যার মধ্যে রয়েছে “গা য ওয়া তু ল হি ন্দ”—যেখানে মুসলিমদের একটি বিশাল সংগ্রাম সংঘটিত হবে।

➡️ এই যু দ্ধ ও অস্থি রতা ইমাম মাহদীর আগমনের পূর্বাভাস হতে পারে।
➡️ ঈ মা ন ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আত্মিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া জরুরি।

---

শেষ কথা:

গা য ওয়া তু ল হি ন্দ ও মা ল হা মা এসে যাবে খুব দ্রুতই। আপনার ঈ মা ন, প্রস্তুতি ও ইলমই তখন আপনাকে রক্ষা করবে। আর সম্ভবত এই সময়ই শা হা দা তের সবচেয়ে বড় সুযোগও এনে দেবে।

এটা ঘুমিয়ে থাকার সময় নয়। জেগে উঠুন। নিজেকে গড়ে তুলুন। দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিন—এই সময়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

, ,

10/05/2025

✔️অধ্যায় ৪: পৃথিবী, আসমান ও মহাবিশ্বের সৃ*ষ্টি

(ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে সৃ*ষ্টির চতুর্থ ধাপ)

---

১. ছয় দিনে সৃ*ষ্টির প্রক্রিয়া

আল্লাহ বলেন:

> "إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ"

>“নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃ*ষ্টি করেছেন।” — সূরা আ'রাফ: ৫৪

এ ছয় দিন সম্পর্কে ইসলামী ব্যাখ্যায় বলা হয়: এই দিনগুলো মানুষের দিনের মতো নয়, বরং আল্লাহর সময়ানুযায়ী — যা বহুগুণ বিস্তৃত (সূরা হাজ্জ: ৪৭)।

---

২. সৃ*ষ্টির শুরুতে পানি ও আরশ ছিল

রাসূল ﷺ বলেন:

> "كَانَ اللَّهُ وَلَمْ يَكُنْ شَيْءٌ غَيْرُهُ، وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ"

>“আল্লাহ ছিলেন, আর কিছুই ছিল না। আর তাঁর ‘আরশ’ ছিল পানির ওপর।” — সহীহ বুখারী: ৩১৯১

এ থেকে বোঝা যায়, পৃথিবী ও মহাবিশ্বের আগে প্রথম উপাদান ছিল পানি এবং আল্লাহর আরশ।

---

৩. ধোঁ*য়া থেকে আসমান সৃ*ষ্টি

আল্লাহ বলেন:

> "ثُمَّ اسْتَوَىٰ إِلَى السَّمَاءِ وَهِيَ دُخَانٌ"

>“অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন, তখন তা ছিল ধোঁ*য়া।”
— সূরা ফুসসিলাত: ১১

ইসলামী ব্যাখ্যায় এই ধোঁ*য়া বলতে বোঝানো হয় গ্যা*সীয় পদার্থ, যেখান থেকে মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্তর গঠিত হয়। এটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের cosmic nebula বা primordial gas cloud এর ধারণার সাথে মিলে যায়।

---

৪. বিস্তৃত মহাবিশ্ব

আল্লাহ বলেন:

> "وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْيدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ"

> “আমি শ*ক্তি দ্বারা আকাশ নির্মাণ করেছি এবং নি*শ্চয়ই আমি একে প্রসারিত করে চলেছি।”
— সূরা য়ারিয়াত: ৪৭

এটি আধুনিক Big Bang ও Expanding Universe তত্ত্বের সাথে মিলে যায়, যেখানে বলা হয় মহাবিশ্ব ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে।

---

৫. পৃথিবী ও আসমান একসঙ্গে ছিল, তারপর আলাদা করা হয়

আল্লাহ বলেন:

> "أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا"

>“অবি*শ্বাসীরা কি দেখে না যে, আসমানসমূহ ও পৃথিবী একসঙ্গে সংযুক্ত ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে পৃ*থক করে দিলাম?” — সূরা আম্বিয়া: ৩০

ইসলামী তাফসীরে এটি বোঝানো হয়—আদি সৃষ্টিতে সবকিছু একটি ইউনিট ছিল, পরে তা পৃ*থক পৃ*থক রূপ নেয়।

বিজ্ঞানের ভাষায়, এটি singularity থেকে বি*স্ফোরণ — Big Bang — এবং মহাবিশ্বের গঠনের সূচনা।

---

৬. দিন-রাত্রি, সূর্য-চন্দ্রের সৃ*ষ্টি

আল্লাহ বলেন:

> "وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيْنِ..."

>“আমি রাত ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি…” — সূরা ইসরা: ১২

> "وَجَعَلْنَا السَّمَاءَ سَقْفًا مَّحْفُوظًا"

>“আমি আকাশকে করেছি একটি র*ক্ষাকবচ।” — সূরা আম্বিয়া: ৩২

সূর্য, চন্দ্র, ও পৃথিবীর গতি থেকে দিন-রাত্রির সৃ*ষ্টি — এটা আজকের জ্যোতির্বিজ্ঞানে পরিপূর্ণভাবে প্রমাণিত।

আকাশের রক্ষাকবচ বলতে ওজোন স্তর, মহাকাশীয় রে*ডিয়েশন থেকে রক্ষা — এই ধারণাও মেলে।

---

উপসংহার:

কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী পৃথিবী ও মহাবিশ্ব একটি নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সৃ*ষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো আজকে অনেকটা সে নির্দেশনার সত্যতা প্রতিষ্ঠা করছে — যেমন মহাবিশ্বের বিস্তার, গ্যা*সীয় ধোঁ*য়া, দিন-রাত্রি, মহাকাশের সুরক্ষা স্তর ইত্যাদি।

তবে সব কিছুই আল্লাহর আদেশ ও ইলম অনুযায়ী হয়েছে — বিজ্ঞান কেবল আংশিকভাবে এসব বুঝতে পারছে।

---

পরবর্তী অধ্যায়: হযরত আদম (আঃ)-এর সৃষ্টি এবং মানবজাতির সূচনা ইনশা-আল্লাহ...

Address

London

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Complete Code of Life posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share