
12/08/2025
শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের টেলিফোন কথোপকথন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন। সেখানে আন্দোলনকারীদের ফাঁসি দেওয়ার কথাসহ নানা তথ্য উঠে আসে।
২০২৪ সালের ১৪ জুলাই বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। ‘রাজাকার’ স্লোগানে কেঁপে ওঠে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। দ্রুত সেই ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
আন্দোলনের উত্তাল সেই রাতে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাবির তৎকালীন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের মধ্যে হয় এক টেলিফোন আলাপ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চানখারপুল গণহত্যা মামলার সূচনা বক্তব্যে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই ফোনালাপের লিখিত রূপ উপস্থাপন করেন। তার দাবি, আলাপের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ফাঁসি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শেখ হাসিনা।
তাজুল ইসলাম বলেন, সেদিন মাকসুদ কামাল শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক হল থেকে তো ছেলেমেয়েরা তালা ভেঙে বের হয়ে গেছে। এখন তারা রাজু ভাস্কর্যে, চার–পাঁচ হাজার ছেলেমেয়ে জমা হইছে। মল চত্বরে জমা হয়েছে এবং যেকোনো মুহূর্তে আমার বাসাও অ্যাটাক (আক্রমণ) করতে পারে।’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমার বাসা প্রটেকশনের (সুরক্ষার) কথা বলে দিছি।’ তখন মাকসুদ কামাল ‘জি জি’ বলে সাড়া দেন। শেখ হাসিনা তখন বলেন, ‘আগে একবার করছে...।’
এরপর মাকসুদ কামাল জানান, ‘ওই রকম একটা প্রস্তুতি...লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হইছে।’ সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হলে হবে না, আমি পুলিশ এবং বিডিআর হয়ে বিজিবি আর...বলছি খুব অ্যালার্ট (সতর্ক) থাকতে এবং তারা রাজাকার হইতে চাইছে তো, তাদের সবাই রাজাকার। কী আশ্চর্য কোন দেশে বসবাস করি।’
এ পর্যায়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন দেশে বাস করি আমরা। এদেরকে বাড়তে বাড়তে তো...রাজাকারদের কী অবস্থা হয়েছে দেখিস নাই, সবগুলাকে ফাঁসি দিছি, এবার তোদেরও ছাড়ব না।’