15/09/2025
জাতীয় খতীবের সমালোচনা করলে জাতির অপমান হয় কিন্তু নবী করীম (সা.) এর মীলাদকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ বললে কি নবীর অবমাননা হয় না? সতর্ক হোন নতুবা যিল্লতি অপেক্ষা করছে।
মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন নিয়ে উলামায়ে কিরামের মধ্যে ইখতেলাফ আছে। পক্ষ-বিপক্ষ উভয়দিকে উলামায়ে কিরাম রয়েছেন। বড় বড় হাফিযে হাদীস উলামা-মুহাদ্দিসীন মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করেছেন। হাদীস থেকে মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের দলীলও খুঁজে পেয়েছেন। হাফিয ইবন হাজার আসকালানী, সাখাভী, জালালুদ্দীন সুয়ূতী প্রমুখ হাফিযে হাদীসগণ মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনকে জায়িয বলেছেন। তাই মীলাদুন্নবী (সা.) কে বিদআত ফতওয়া দিতে একটু সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনি মীলাদুন্নবী উদযাপন না করেন তাতে আপত্তি নেই কিন্তু মীলাদুন্নবীর বিরোধিতা করতে গিয়ে এমন কথা বলবেন না, যা শানে রিসালতের বিরোধী হয়ে যায়। এরূপ হয়ে গেলে কিন্তু এটি ইহ-পরকালীন ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে।
দলীল গ্রহণে উলামায়ে কিরামের নীতি-পদ্ধতির বিভিন্নতার কারণে চার মাযহাবে বিভিন্ন বিষয়ে ইখতেলাফ হয়েছে। এতদসত্ত্বেও এক মাযহাব অপর মাযহাবকে বাতিল বলেন না। বিদআতের সংজ্ঞা ও পরিচিতি নিয়েও উলামায়ে কিরামের মধ্যে ইখতেলাফ আছে। তাই কারো মতে একটি বিষয় বিদআত হলেও আরো দশজনের মতে এটি বিদআত নাও হতে পারে। মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের বিষয়টিও এমন। তাই মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করা বা না করা নিয়ে আমরা যেন কেউ কাউকে বাতিল না বলি। মীলাদুন্নবী সংশ্লিষ্ট কোনো আয়োজনকে প্রতিহত করার ডাকও যেন কেউ না দেই। বিশেষত এটি কোনো আলিমের শান হতে পারে না। হ্যাঁ, যদি কারো আয়োজনে শরীআতবিরোধী কোনো কাজ থেকে থাকে তবে দরদের সাথে সেটি বাদ দেওয়ার আহবান জানান। এতে সত্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পারষ্পরিক শ্রদ্ধা-ভালোবাসাও অটুট থাকবে।
মীলাদুন্নবীর সাথে ঈদ শব্দ প্রয়োগ নিয়েও কারো কারো মনে খটকা বা আপত্তি আছে। এ আপত্তিকে কেন্দ্র করেই মূলত এবার বহু সমালোচনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। দলীলবিহীন এমন বক্তব্য আসলে কাম্য ছিল না। যদি কেউ ইনসাফের সাথে উলামায়ে কিরামের দলীল গ্রহণের পদ্ধতি অবলম্বন করেন তিনি যে ঘরানারই হোন না কেন, মীলাদুন্নবীর সাথে ঈদ শব্দ প্রয়োগে আপত্তি করার কথা না। আমাদের দেশে এ ধরনের আপত্তিগুলো মূলত আসাবিয়্যাত তথা দলান্ধতা বা মসলকপ্রীতি থেকে আসে। আসলে আমাদের আলিম সামজের আরো উদার ও সহনশীল হওয়া প্রয়োজন।
আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের ফুলতলী মাসলাকের মধ্যে মীলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে কোনো বাড়াবাড়ি নেই। আমাদের আয়োজনে শরীআতবিরোধী কোনো কাজ কেউ খুঁজে পাবেন না, ইন শা আল্লাহ। আমরা ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.)-কে স্বতন্ত্র কোনো ইবাদত মনে করি না বরং একে উপলক্ষ্য করে প্রিয়নবী (সা.)-কে আমাদের মধ্যে প্রেরণের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের উপর যে ইহসান করেছেন তার শুকরিয়া আদায়ের নিমিত্ত বিভিন্ন নেক আমল করে থাকি। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিষয়ে জমহুর আহলুস সুন্নাহ’র যে আকীদা আমাদের আকীদাও তাই। এক্ষেত্রে প্রচলিত হাজির-নাজির আকীদা আমাদের আকীদা নয়। অনেকে না জেনে ফুলতলী মাসলাক সম্পর্কে ভুল বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমাদের আহবান, আসুন, ফুলতলী মাসলাককে জানুন, দেখবেন, এখানকার সবকিছুই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসরণে আবর্তিত।
আল্লাহ আমাদেরকে সর্বদা সত্যের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত রাখুন। আমীন।
Mohammad Najmul Huda Khan