08/11/2025
তসলিমা নাসরিন একবার ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার মঈন আলীকে টুইটারে তার বেশভূষা নিয়ে আক্রমণ করেন এবং বরাবরের মতো নিজের নিম্ন মানসিকতার পরিচয় দেন।
মঈন লম্বা দাঁড়ি রাখেন, ইসলাম মানার চেষ্টা করেন। ইসলামকে হেয় করে স্বার্থ হাসিল করতে চায় এমন লোক তো দুনিয়াতে অভাব নাই। তো মঈনদের জন্য নির্বিঘ্নে দাঁড়ি রাখা, খেলাটা বেশ কঠিন। তার টিমমেটরা সেটা বুঝে এবং সব সময় মঈনের পথটা সহজ করার চেষ্টা করে।
তসলিমা যখন এই নোংরামিটা করল সাথে সাথে মঈনের টিমমেটরা তসলিমাকেকে ধুয়ে দিল। জোফরা আর্চার রিপ্লাই দিলেন, "আপনি কি সুস্থ? আমার মনে হয় না আপনি সুস্থ?"। বাকি ইংলিশ ক্রিকেটাররাও তাকে একহাত নিল।
তো মঈন-আদিল-সাকিব মাহমুদদের মুসলিম হওয়ার কারণে যে পরিমাণ বিপত্তি, বিদ্রুপ ফেইস করতে হয়- তার চেয়ে বেশি বাধা ফেইস করতে হয় উপমহাদেশের নারী ক্রিকেটারদের, নারী হওয়ার কারণে।
বাংলাদেশের নারী দলের সাবেক ক্যাপ্টেন জাহানারা এমন গুরুতর একটা অভিযোগ আনার পর তেমন কাউকে সোচ্চার হইতে দেখলাম না। মেইল ক্রিকেটার বাদ দেই, যারা উইমেন ক্রিকেটার তাদেরও তেমন উচ্চবাচ্য নাই।
অন্যতম সম্ভাব্য কারণ এই যে অভিযুক্ত লোকটা বিসিবির ভেতরে থেকে এসব করেছে এবং বিসিবির অনেকের নাম এখানে এসে যাবে। আপনার অভিযুক্তের বিপক্ষে স্টেটমেন্ট দেওয়ার দরকার নাই, অন্তত এই সেনসিটিভ ইস্যুটার প্রপার তদন্ত চেয়ে তো একটা পোস্ট করতে পারেন, আওয়াজ তুলতে পারেন।
আপনি বিসিবিকে ভয় পাচ্ছেন? এত ছোট আত্মা নিয়ে আর যাই হোক, স্পোর্টসপার্সন হওয়া যায় না।
আপনারা কি বুঝতেছেন যদি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত না হয়, তাহলে পটেনশিয়াল অফে-ন্ডাররা কত সাহসী হবে? আপনাদের জীবন যে সামনে হে-ল হয়ে যাবে- এই সিম্পল ব্যাপারটা টের পাচ্ছেন না?
আরো একটা কারণ হচ্ছে আপনি ঘটনাটা গায়েই মাখান নাই। কারণ ঘটনাটা আপনাদের টিমমেটের সাথে হয়েছে, আপনাদের সাথে না। আর এই কারণেই আপনারা আজীবন লোকাল মিডিয়ার "অভাবী ঘর থেকে উঠে আসা অমুক" হেডলাইনে আটকে থাকবেন, বিশ্ব মিডিয়াতে "বাংলাদেশের বিশ্বজয়" হেডলাইনটায় যেতে পারবেন না। টিম নিয়ে আপনার কোনো মাথাব্যথাই নাই, আপনার চিন্তা কয়টা টাকা-পয়সা গুছাইতে পারা নিয়ে।
আপনার ধারণা, নিজের চলা-ফেরার টাকা হয়ে গিয়েছে, স্বাবলম্বী হয়েছেন। বেতনও বাড়ছে। অযথা ঝামেলা না টেনে কয়েকটা বছর খেলে রিটায়ার করে ফেলাটাই নিরাপদ। এখন এসব নিয়ে আওয়াজ তুলে কারো চক্ষুশূল হওয়ার মানে নাই।
কিন্তু এরপরের ভিক্টিম যে আপনি না- তার গ্যারান্টি নাই।
একই ঘটনা জুলাইয়েও হয়েছিল। প্রতিদিন পাখির মতো মানুষ মেরে ফেলা হচ্ছে তা নিয়ে আপনাদের কারো বোল্ড অবস্থান ছিল না। যে তরুণরা আপনাদের নিয়ে এত মাতামাতি করে, তাদের জন্য আপনাদের একটু মায়া-দয়াও হয় নাই। "আপা টিকে গেলে ক্যারিয়ার শেষ"- এই ভয়ের কাছে হেরে গিয়েছিল আপনাদের বিবেক।
এত ছোট কলিজা নিয়ে আসলেই আপনাদের পক্ষে দুনিয়া জয় করা সম্ভব না, সরি।
-আজমল তানজীম