25/09/2025
ভারতের স্বাধীন তেল আমদানি নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সুর নরম: ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান।
#হিলিনিউজবাংলা
বিশ্ব রাজনীতিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নীতির প্রেক্ষিতে তেল আমদানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ভারত, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ হিসেবে, বিভিন্ন উৎস থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানে একটি নমনীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি স্বীকার করেন যে “ভারত যেকোনো দেশ থেকেই তেল কিনতে পারে”।
২০১৮-১৯ সাল নাগাদ ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র মিত্র দেশগুলোকে ইরান থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করে। ভারতও তার প্রভাব থেকে বাদ যায়নি। তবে সময়ের পরিক্রমায়, কৌশলগত সম্পর্কের গুরুত্ব এবং বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারের পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে মার্কিন অবস্থানে নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে (যেটি হয়ত পূর্ববর্তী কোনো সাক্ষাৎকার বা মন্তব্যের সূত্র ধরে এসেছে), ট্রাম্প বলেন:
> "ভারতের নিজের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তারা যেকোনো দেশ থেকে তেল কিনতে পারে, যদি তা তাদের অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করে।"
এই মন্তব্যে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আগের মতো কঠোর নয় তেল আমদানির উৎস নিয়ে, বিশেষ করে ভারতকে কেন্দ্র করে।
ভারত তার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরেই বহুমুখী উৎস থেকে তেল আমদানি করে আসছে। রাশিয়া, ইরান, সৌদি আরব, ইরাক, আমেরিকা – সব দেশ থেকেই ভারত সময়োপযোগী দরদামে তেল কিনে থাকে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, ভারত রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে অপরিশোধিত তেল কিনে বিশ্ববাজারে আলোচনায় আসে। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও, ভারত তার “ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট”-এর প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থানে ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সম্পর্ক বিগত এক দশকে ঘনিষ্ঠ হয়েছে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে। ফলে, কূটনৈতিক নমনীয়তা এখন উভয়পক্ষের জন্যই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে ভারতকে “স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার” হিসেবেই দেখতে চায়, এবং শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে আগ্রহী। এই সুর নরম হওয়া ভারতের পক্ষে ইতিবাচক, কারণ এটি তাদের জ্বালানি নিরাপত্তা রক্ষায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।
বিশ্ব রাজনীতির পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে, শক্তিশালী দেশগুলোকেও এখন কৌশলগত নমনীয়তা অবলম্বন করতে হচ্ছে। ভারতের মতো উদীয়মান শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের এই বক্তব্য ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হতে পারে, যেখানে কৌশলগত স্বার্থ এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
ভারত যেকোনো দেশ থেকে তেল কিনতে পারে – ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে নমনীয়তা।
ভারত বহুমুখী তেল উৎসে অটল।
কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার সম্ভাবনা।