Mahi's Vlog

Mahi's Vlog Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Mahi's Vlog, .

কলকাতার ব্যস্ত শহরের এক কোণে, পার্ক স্ট্রিটের একটি পুরনো বাড়িতে, বিখ্যাত শিল্পপতি অরুণাভ সেন হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান। ...
16/07/2025

কলকাতার ব্যস্ত শহরের এক কোণে, পার্ক স্ট্রিটের একটি পুরনো বাড়িতে, বিখ্যাত শিল্পপতি অরুণাভ সেন হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান। তার স্ত্রী, অনন্যা সেন, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন, কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট সূত্র না থাকায় তদন্তে অগ্রগতি হয় না।

এই সময়ে, প্রখ্যাত গোয়েন্দা অরিন্দম বসু ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তদন্ত শুরু করেন। তিনি প্রথমে অরুণাভের অফিস এবং বাড়ি পরিদর্শন করেন। অফিসে অরিন্দম লক্ষ্য করেন যে, অরুণাভের ডেস্কে একটি চিঠি রয়েছে, সেখানে লেখা: "সময় শেষ, প্রস্তুত হও।"

অরিন্দম এরপর অরুণাভের ব্যক্তিগত সহকারী, রোহিতের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিত জানান, অরুণাভ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অদ্ভুত আচরণ করছিলেন এবং প্রায়ই একা সময় কাটাতেন। তিনি আরও বলেন, অরুন নব লাগাতার কিছুদিন ধরে প্রায়শই একটি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন পেতেন এবং ফোনটি রিসিভ করার পর অরুণাভ খুব চিন্তিত হয়ে পড়তেন।

অরিন্দম সেই নাম্বারটির ট্রেস করে জানতে পারেন যে, এটি একটি বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার। তিনি সংস্থাটির অফিসে যান এবং জানতে পারেন যে, অরুণাভ তাদের মাধ্যমে তার স্ত্রী অনন্যার উপর নজরদারি করাচ্ছিলেন। এটি শুনে অরিন্দমের মনে সন্দেহ জাগে, অনন্যার সঙ্গে অরুণাভের সম্পর্ক হয়তো তেমন একটা মধুর ছিল না।

অরিন্দম এর পরে অনন্যার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। অনন্যা প্রথমে কিছু বলতে চান না, কিন্তু পরে স্বীকার করেন যে, তাদের মধ্যে কিছুদিন ধরে মতবিরোধ চলছিল। অনন্যা আরো বলেন যে, অরুণাভ একটি বড় ব্যবসায়িক চুক্তি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন।

অরিন্দম এরপর অরুণাভের ব্যবসায়িক অংশীদার,বিক্রম সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। বিক্রম জানান, তারা সম্প্রতি একটি বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু অরুণাভ হঠাৎ করে সেই প্রকল্প থেকে সরে আসতে চেয়েছিলেন। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়েছিল।

গোয়েন্দা অরিন্দম এখন বুঝতে পারেন যে,অরুণাভের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় কারণই থাকতে পারে। অরিন্দম সিদ্ধান্ত নেন যে, এই রহস্যের সমাধান করতে হলে তাকে আরো গভীরে অনুসন্ধান করতে হবে।

*******
কলকাতার আকাশটা আজ যেন আরো ধোয়াটে, যেন এই শহর নিজেই একটা রহস্যকে ঢেকে রাখছে। গোয়েন্দা অরিন্দম বসু ঠিক সেই ধোয়ার মাঝেই হাঁটছেন, একটা কঠিন ধাঁধার সন্ধানে।

নিখোঁজ শিল্পপতি অরুণাভ সেন, যার হঠাৎ অন্তর্ধান আজ গোটা শহরের মিডিয়ার হেডলাইন। কিন্তু এই কেসটা অরিন্দম এর কাছে কেবল নিখোঁজ ব্যাক্তির তদন্ত নয়-- এটা যেন অরিন্দম এর কাছে তার নিজের অতীতের অদৃশ্য কোনো ছায়াকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।

অরিন্দমের নিজের একটি ব্যক্তিগত নোটবুক আছে। রাতের ঘর নিঃশব্দ হলে অরিন্দম তার নোটবুক নিয়ে বসে। অরিন্দম তার পুরনো ডায়েরির পাতায় লিখছে--
"প্রতিটি কেস একটা গল্প বলে, কিন্তু এই কেসটা যেন নিজেকে লুকোতে চায়।
মিসেস অনন্যা কিছু লুকাচ্ছে, সে শুধু সত্যের অর্ধেক বলছে।
রোহিত ভয় পাচ্ছে-- কিন্তু ভয়টা কার জন্য?
বিক্রম... বিশ্বাসঘাতকতা লুকিয়ে আছে তার চোখের পেছনে।
কিন্তু সব থেকে অদ্ভুত সেই চিঠি:' সময় শেষ, প্রস্তুত হও।'
কে পাঠালো এবং কেন?"

******
সকাল ৩টা।
অরিন্দম ঘুমিয়ে পড়ার ঠিক আগেই ফোন বেজে ওঠে। অরিন্দম ফোনটা তোলে।
অরিন্দম- "হ্যালো।"

আগুন্তিক-" আপনার যদি সত্যিটা খুঁজতে ইচ্ছা হয়, তাহলে কালীঘাট শ্মশানে আসুন-- আজ রাত ৩:৪৫। একা।"

অরিন্দম- " কে আপনি?"

আগুন্তিক-" অরুণাভ সেন বেঁচে আছেন। কিন্তু আপনি যদি তাকে পেতে চান, তাহলে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন। ছায়ার পেছনে হাটতে হলে আলো নিভিয়ে চলতে হয়।"

কল কেটে যায়।

*****
৩:৪৫-এ অরিন্দম পৌঁছায় কালীঘাট শ্মশানে। চারপাশে নিস্তব্ধতা। অন্ধকার, একটা মৃদু চিতার আগুন জ্বলছে। আর সেই আগুনের কাছাকাছি হঠাৎ সাদা শাড়ি পড়া এক বৃদ্ধা-- মুখটা ঢাকা, চোখ দুটো নিষ্পলক।

"অরুণাভ কোথায়?" অরিন্দম প্রশ্ন করেন।

বৃদ্ধা নিচু গলায় বলেন--
" অরুণাভ নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে এমন জায়গায় যেখানে আলো নেই, শুধু ছায়া আর ছায়া। সে পালিয়ে যায়নি, তাকে পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। আর যে বাধ্য করেছে, সে আপনার খুব চেনা একজন।"

অরিন্দম বলেন-- "কে?"

বৃদ্ধা কিছু বলে না। বৃদ্ধা শুধু একটা কাগজের টুকরো এগিয়ে দেয়--
কাগজে লেখা:

"স্বপ্ন যদি সত্য হয়, তবে বাস্তব হয়ত মিথ্যে। উত্তর খোঁজো সেই ছবির ফ্রেমে যা সব সময় দেয়ালে ছিল, কিন্তু কেউ দেখেনি।"

হঠাৎ একটা ঝড়ো বাতাসে মোমবাতি নিভে যায়। বৃদ্ধা নেই। এক মুহূর্তে অদৃশ্য।

********
অরিন্দম পরদিন সকালে আবার অরুণাভ সেন এর পার্ক স্ট্রিটের ফ্ল্যাটে ফিরে যান। সেখানে অনন্যা তখন চা খাচ্ছিলেন।

অরিন্দম--" আপনি কি মনে করতে পারেন, অরুণাভ কোনো পুরনো ছবি সম্পর্কে বিশেষ যত্ন নিতেন?"

অনন্যা-- "ছবি? হ্যাঁ একটা পুরনো সাদা কালো ছবি ছিল, অরুণাভের বাবার-- কিন্তু ওটা তো বহুদিন আগেই নামিয়ে ফেলা হয়েছিল।"

অরিন্দম--"ছবিটা কোথায়?"

অনন্যা বাধ্য হয়ে একটা পুরনো ট্রাঙ্ক থেকে ছবিটা বার করে দেয়।

অরিন্দম প্রেম খুলে দেখেন-- ভিতরের কাগজের পিছনে সেলোটেপ দিয়ে আটকে রাখা ছোট একটি পেনড্রাইভ।
এটা যেন ফ্রেমের ভিতরে লুকানো ছিল বহু বছর।

পেনড্রাইভ খুলে দেখা যায়--
একটি ভিডিও ফাইল।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে:

অরুণাভ একটি গোপন কনফারেন্স রুমে, মুখে আতঙ্ক, এবং তার বিপরীতে বসে আছে তিনজন পুরুষ-- তাদের মধ্যে একজন বিক্রম সিংহ।

অরুণাভ--- " আমি এটা করবো না বিক্রম। আমি এই বেআইনি অস্ত্র চুক্তির অংশ হবো না। যেটা হচ্ছে সেটা খুনের চক্রান্ত!"

বিক্রম---" তাহলে তুমি নিজেই নিরুদ্দেশ হবে, অরুণাভ। কারণ কেউ তোমার কথা বিশ্বাস করবে না। আমরা তো বন্ধু ছিলাম, এখন গল্পের শেষ পাতা আমরা লিখবো। তুমি যদি থাকতে চাও থাকতে পারো যদি না থাকো, আমরা যদি বিপদে পড়ি। তাহলে তুমি হারিয়ে যাবে..... আজ রাতেই।"

ভিডিও বন্ধ।

অরিন্দম চোখ বন্ধ করেন। এবার তিনি জানেন, কাকে খুঁজতে হবে।

**********
সন্ধ্যায় অরিন্দম নিজের গাড়িতে বসে বাড়ি ফিরছিলেন। গাড়ির রিয়ার ভিউ মিররে হঠাৎ তিনি দেখতে পান----
একটি ছায়া, এক জোড়া চোখ-- তাকে দেখছে।

রহস্য এখনই শেষ নয়।

#চলবে.......

#অন্তর্ধান_রহস্য
#মধুমিতা_অধিকারী
#পর্ব_১

[পরবর্তী পর্বে:
বিক্রম কি সত্যিই মূল অপরাধী? অরুণাভ কোথায় বন্দী?
অনন্যা কী নির্দোষ?
আপনাদের গল্পটা কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন-- দ্বিতীয় পর্ব আরো বড়, আরো রহস্য নিয়ে হাজির হব। এই গল্পটা আপনাকে ধীরে ধীরে এক জটিল কিন্তু ভয়াবহ সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করাবে। আপনাদের সবার প্রতিক্রিয়া পেলে পরের পর্ব শুরু করব। প্রথম পর্ব কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন আপনাদের সকলের প্রতিক্রিয়া আমাকে আরো অনুপ্রাণিত করে। ধন্যবাদ। ]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২৬ অন্তিম পর্ব #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 💌এক খোলা চিঠির ঘরতিন মাস পর। ছোট্ট একটা অনুষ্ঠান। ছা...
07/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২৬ অন্তিম পর্ব
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

💌এক খোলা চিঠির ঘর

তিন মাস পর।
ছোট্ট একটা অনুষ্ঠান।
ছাদে জ্বরও হয়েছে কিছু কাছের বন্ধু, পরিবার।নোরা ও লুইসের বিয়ে।
না,কোন বড় সাজসজ্জা নেই।
শুধু একটা পুরনো টেবিল-- তাতে এক বাক্স চিঠি। একটা পিয়ানো। আর তার সামনে দাঁড়িয়ে দাস্তান, সাদা শার্টে।

হানা পড়ে শোনাচ্ছে---

"নোরার প্রথম চিঠি যখন আমি পড়ি, আমি বুঝেছিলাম-- সে আর দশটা মেয়ের মত নয়। সে শব্দ দিয়ে জীবন গড়ে। আর আজ সে তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিঠি লিখছে--- লুইসের নাম দিয়ে। "

নোরা ও লুইস একে অপরের দিকে তাকায়।

লুইস বলে--

" আমি প্রতিদিন তোমার পাশে বসে নতুন বাক্য লিখতে চাই।
কিছুটা হাসিতে, কিছুটা নীরবতায়।
যদি কখনো হারিয়ে যাই, তুমি আমায় খুঁজবে পুরনো চিঠিতে....... আমি জানি-- তুমি তবু ফিরে পাবে। "

নোরা তার হাত ধরে বলে--

"তুমি আজ আমার পেয়েও চিঠি শেষ লাইন হয়ে গেলে।
এখন থেকে, আমি আর কখনো কাউকে লিখবো না----
কারন আমি তো তোমাকেই লিখে গেছি, ছোটবেলা থেকেই। "

হানার চোখে জল।
দাস্তান পিানো সুরে বাজায় সেই পুরনো গান।

আর সবাই একসাথে চুপ করে থাকেথাকে........
কারণ তারা জানে, ভালোবাসা শুধু বলা নয়, ভালোবাসা লেখা যায়।

ভালোবাসা জিইয়ে রাখা যায়--- এক চিঠির দেশে।

_________________________

নোরা ও লুইস এখন প্যারিসের একটি ছোট্ট অ্যাপয়েন্টমেন্টে থাকে। লুইস আর্ট স্কুলের শিক্ষক, আর নোরা লিখে, ছোট গল্প, পত্রিকা, কবিতা....
তাদের ছোট্ট রান্নাঘরে প্রতিদিন ভোরে সুরেলা কফির গন্ধ আর অদ্ভুত শান্তি।

এক সকালে,

নোরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে। অদ্ভুত ক্লান্ত লাগছে। হালকা মাথা ঘোরা, নিঃশ্বাসে কেমন যেন একটা অস্থিরতা। লুইস তখন তার জন্য চা বানাচ্ছে।

নোরা ধীরে বলে--

" লুইস..... আমি ভাবছি আমরা এবারও একটি চিঠির ভিতরে আছি.....
কিন্তু এবার সেই চিঠির মধ্যে আমরা দু'জন নই, আরো একজন আসছে। "

লুইস স্তব্ধ।

সে ছুটে এসে নোরার গাল ছুঁয়ে ফিসফিস করে--

" তুমি নিশ্চিত? "

নোরা হেসে মাথা নাড়ে।

" ডাক্তার বলেছে ----তিন মাস....
আমাদের ঘরে এবার এক নতুন পাঠক আসছে.....
যে আমাদের লেখা, আঁকা, ভালোবাসা-- সবকিছুর মানে হয়ে উঠবে। "

___সমাপ্ত____

[ শেষে শুধু একটা অনুরোধ- এই শেষ পর্বে অন্তত একটা রিয়েক্ট দিন। আপনি যদি এতদিন চুপচাপ পড়েও থাকেন, তবুও আজকে শুধু জানান, আপনি ছিলেন আমার " #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা"- র সাথে। ভালোবাসা রইলো সবার জন্য, যারা শব্দে ভালোবাসা খোঁজেন.... আর যারা জানেন প্রেমের কোন ভাষা লাগে না, শুধু একটুখানি কল্পনা আর অনেকখানি মন লাগে। " আর হ্যাঁ গল্পটা সম্পূর্ণই কাল্পনিক। ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন ।সুস্থ থাকবেন সবাই। আবার নতুন কোন গল্প নিয়ে ফিরে আসবো। আবারো ধন্যবাদ। ]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২৫ #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼শব্দ দিয়ে গড়া সংসাররোমের সেই ছোট্ট বসন্ত বিকেল। নোরা ক্লাস শে...
07/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২৫
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼শব্দ দিয়ে গড়া সংসার

রোমের সেই ছোট্ট বসন্ত বিকেল। নোরা ক্লাস শেষে বইয়ের ব্যাগ হাতে ফিরছিল হোস্টেলের দিকে। মনে হচ্ছিল কিছু একটা অসম্পূর্ণ। যেন কোন শব্দ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক সেই মুহূর্তে, একটা পরিচিত সুর শুনে সে থেমে যায়। ফ্লোরেন্সের সেই পুরনো পিয়ানোর সুর।

একটা মোর ঘুরতেই সে দেখে---

লুইস দাঁড়িয়ে আছে। এক ফুলের দোকানের সামনে। হাতে স্কেচ বুক, আর বুকের কাছে জড়িয়ে রাখা একটা ছোট খাম।

নোরা অবাক,কিছু বলার আগেই লুইস ধীরে এগিয়ে আসে।

লুইস বলে--

" তোমার চিঠিগুলো আমাকে এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছে.....
কিন্তু এখন আমি চাই তোমার চোখেই পড়ি শেষ বাক্যটা। "

নোরা কিছু বলতে পারেনা। শুধু জিজ্ঞেস করে---

" তুমি হঠাৎ এলে কেন? "

লুইস হেসে বলে---

" তুমি এত চিঠি লিখলে, ভাবলাম একবার নিজের হাতে পড়ে যাই....
যদি হারিয়ে যাই, তাহলে অন্তত তোমার চোখে থাকি শেষবার। "

নোরা চোখে জল নিয়ে শুধু বলে---

" তুমি আসার আগেই আমি জানতাম..... তুমি আসবে।
কারণ কিছু ভালোবাসা চিঠিতে লেখা যায় না, শুধু হাঁটতে হাঁটতে এসে দাঁড়ায় কারো সামনে। "

********

সেদিন সন্ধ্যায় তারা হাঁটছিল রোমের পুরনো রাস্তা ধরে।

নোরা বলে---

" তুমি জানো লুইস, আমি কখনো চাইনি কেউ আমাকে পড়ে.....
আমি চেয়েছিলাম, কেউ আমার মত করে লিখুক। "

লুইস হেসে বলে---

" তুমি লেখা হয়ে গেছো, নোরা।
আমার প্রতিটি ছবির ছায়া তুমি।
আর আজ আমি চাই, তুমি আমার প্রথম গল্প হও। আমি যত ছবিতে রং দেব, প্রতিটা রেখায় থাকবে--- তোমার চিঠির ছাপ। "

নোরা থেমে দাঁড়ায়।
তার কাঁধে হালকা হওয়া লাগে, চোখের কোন ভিজে।

"তুমি কি আজ কিছু বলতে চাও? "

লুইস ধীরে তার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে---

" তোমার চিঠির পিছনে যে নাম ছিল-- আমি সেই নামটাকেই সারা জীবন ধরে বলতে চাই। আমি চাই, আমরা একসাথে শেষ অধ্যায়ের প্রথম বাক্য হই। "

নোরা কিছু বলে না ,শুধু তার হাত ধরে।

হাতে রাখা চিঠির খামটা খুলে দেয়---

" তুমি আমার বসন্ত শব্দের মানে হয়ে গেছো।
এবার আমি চাই, আমরা বাকিটুকু একসাথে লিখি....
কোন খামের ভেতরে নয়-- জীবনের প্রতিটা দিনে।"

এরপর....এক চুপচাপ চুমু।
যেটা কোন চিঠিতে লেখা যায় না।
কোন পিয়ানো সুরে বাঁধা যায় না।
শুধু হৃদয়ের গভীর প্রান্তে চিরকাল বেঁচে থাকে।

_________________________

ফ্লোরেন্সে আবার বসন্ত এসেছে।

নোরা রুম থেকে ফিরে এসেছে ছুটি কাটাতে। হানার চোখে জল-- মেয়ে যেন আরও পরিণত, আর ও শান্ত।

দাস্তান পিয়ানো বাজাতে বাজাতে একটানা তাকিয়ে আছে ষলুইস এর দিকে, যেন চোখ দিয়ে বুঝে নিতে চাইছে---" তুমি কি আমার মেয়ের জন্য সেই ঠিক মানুষ? "

রাতের খাবারের টেবিলে লুইস ধীরে উঠে দাঁড়ায়---

"মি: ও মিসেস আল-রহমান, আমি চিঠি লিখতে শিখেছি আপনাদের মেয়ের কাছ থেকে। আর এখন আমি চিরজীবনের জন্য একটা চিঠি লিখতে চাই, যার প্রথম বাক্য হবে---' আমি নোরাকে ভালোবাসি'।
আমি চাই, আমরা একটা ঘর বানাই--- যেটা হবে শব্দ দিয়ে সাজানো, ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ। "

হানা-দাস্তান দু'জনই কাঁদছিলেনকাঁদছিলেন, কিন্তু তা ছিল আনন্দের কান্না।

হানা এগিয়ে এসে লুইসকে জড়িয়ে ধরে।

" তুমি ওকে ভালো রেখো, চিঠির মতো ভাঁজ করে.... হারিয়ে যেতে দিও না, কারন সে এখন তোমার অক্ষর। "

চলবে........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

[ আচ্ছা আপনারা আমার গল্প পড়েন ঠিকই কিন্তু লাইক কমেন্ট করেন না কেন বলুন তো?]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২৪ #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 💌ভালোবাসা সংরক্ষণের চিঠিনোরা কলেজে ভর্তি হয়েছে। রোডের ছেড়ে তাক...
05/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২৪
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

💌ভালোবাসা সংরক্ষণের চিঠি

নোরা কলেজে ভর্তি হয়েছে। রোডের ছেড়ে তাকে যেতে হয়েছে- সাহিত্য নিয়ে পড়তে। লুইস এখনো ফ্লোরেন্সেই, আর্ট স্কুলে। দূরত্বটা প্রথমে শুধু কিলোমিটারে ছিল...... তারপর ধীরে ধীরে চুপচাপ হয়ে উঠতে থাকে কথা।

একদিন লুইস একটা চিঠি পাঠায়---
খামে শুধু লেখা---

" তুমি কি আজকাল কম লেখো, নাকি আমি কম পড়ি? "

নোরা চুপচাপ।
সে উত্তর দিতে পারে না প্রথমে।
কিন্তু সেই রাতে, বাবার পুরনো চিঠিগুলো বের করে পড়ে।

হানা একসময় নোরার পাশে এসে বসে।

" মন খারাপ? "

নোরা বলে---

হুম.....বুঝতে পারছি না, দূরত্ব ভালোবাসাকে বদলে দেয় নাকি ভালোবাসা আমাদের দূরে ঠেলে দেয়...... "

হানা হালকা হেসে বলে---

"তোমার বাবা যখন দূরে ছিল, আমি প্রতিদিন এক পাতার চিঠি লিখতাম--- তাকে না পাঠিয়ে।
একদিন সে এসে বলেছিল---
' তুমি যেদিন না লিখেছিলে, আমি বুঝেছিলাম.... তুমি আমায় খুব বেশি করে ভালোবাসো। '
সব সময় শব্দ দরকার পড়ে না, মা। চুপ করেও চিঠি লেখা যায়। "

***************

সেই রাতে নোরা একটা বিশেষ চিঠি লেখে।

" লুইস,
আমি চুপ হয়ে গেছি মানেই আমি দূরে সরে যায়নি। আমি আসলেই নতুন শহরের মাঝে খুঁজছি আমাদের পুরনো শব্দ। তুমি কি এখনো আঁকো? আমি লিখি-- তবে তোমার না থাকার শব্দ দিয়ে। জানো,চিঠি গুলো সব সময় পাঠাতে হয় না। কিছু চিঠি লেখা হয় শুধু সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
এই চিঠিটা তাই.......
যদি একদিন আমরা আর একে অপরকে লিখতেও না পারি, তবু যেন জানো--- তোমার নামে লিখে ছিল একটা মেয়ে।
যার ডায়েরী শেষ পাতায় আজও লেখা থাকে---'আমি তোমাকে পড়ে ফেলেছি'.... আর ভুলতে শিখিনি। "

চিঠি পাঠিয়ে দেয় সে।

দুইদিন পর লুইস এর উত্তর আসে----

"আমি এখনও আঁকি। তবে কাগজে নয়, কফির কাপের গায়ে তোমার মুখ আঁকছি। আমি প্রতিদিন সকালবেলা তোমার নামে চা বানাই--- ঠিক যেভাবে তোমার বাবা করতেন, তাই না? তুমি শুধু লেখ। আমি থাকি। কারণ, কিছু ভালোবাসা দূরত্বে ফিকে হয় না--- তারা চিঠির ভাঁজে আশ্রয় নেয়। "

চলবে.....

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

[ আপনারা দয়া করে লাইক কমেন্ট করে যাবেন আর আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২৩ #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼আমার নিজের গল্পনোরা এখন প্রায় প্রতিদিনই লিখছে । সে তার ঘরের জা...
04/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২৩
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼আমার নিজের গল্প

নোরা এখন প্রায় প্রতিদিনই লিখছে । সে তার ঘরের জানালায় বসে চিঠি লেখে--- লুইস-এর নামে।

" তোমার চোখে আমি গল্প দেখি লুইস।
এমন গল্প যেটা শুরু হয়েছিল আমার বাবা-মায়ের চিঠিতে, আর এখন যেন নতুন করে লিখতে চাই আমি-- তোমার নাম দিয়ে। "

একদিন সন্ধ্যায়, তারা একসাথে স্কুলের পিছনের গাছ তলায় বসে।

লুইস বলে---

" তোমার কথাগুলো যেন কাগজে লেখা হলেও, আমার হৃদয়ে ছাপ পড়ে। আমি কখনো ভাবিনি, আমি ভালোবাসা অনুভব করতে পারব-- কিন্তু তোমাকে দেখার পর, আমি বোঝার চেষ্টা করি..... তুমি কেমন করে এমন করে ভালোবাসো? "

নোরা ধীরে হেসে বলল---

" কারণ আমি ভালোবাসার গল্পে জন্মেছি, লুইস। আমার বাবা একজন শব্দ ছিল, আর মা ছিলেন তার শেষ বাক্য। আমি চিঠির মতো বেড়ে উঠেছ।"

লুইসের চোখে জল। সে হাতে ধরে নোরা ডায়েরি।

" আমার আঁকা ছবিগুলোর পাশে এবার তোমার লেখা চাই। চলো, আমরা একটা বই লিখি--- চিঠি আর আঁকায় ভরা। "

_________________________

নোরা ও লুইস প্রতিদিন একটা নতুন চিঠি লিখে একে অপরকে। তারা এখন তাদের মনের ভেতরের ভয়, আনন্দ, কল্পনা-- সবকিছুই শব্দে ও রঙে প্রকাশ করছে।

এক সন্ধ্যায় হানা দাস্তানের পুরনো সেই পিয়ানো ঘরে নোরাকে দেখে।নোরা বসে একটা চিঠি পড়ছে।

হানা জিজ্ঞেস করল---

" এই চিঠিটা কার?যেটা তুমি পড়ছো!"

নোরা একটু হাসলো ----

"এই চিঠি আসলে আমারই লেখা.... কিন্তু উত্তরটুকু লুইস দিয়েছে। জানো মা, এখন আমি বুঝি, কেন তুমি কখনো বাবাকে ছেড়ে যাওনি। কারণ ভালোবাসা মুখে বলার মতো না..... এটা জানতে ইচ্ছা করে, প্রতিদিন--- তুমি থাকো তো? "

হানা, চোখে জল নিয়ে কেবল বলল----

" তুমি এখন নিজের গল্প লিখছো, মা।
আমরা ছিলাম ভূমিকা।
কিন্তু এই গল্পটা.... এবার তোমার, তোমাদের দুজনের। "

নুরা রাতে তার নিজের চিঠির বাক্সে প্রথমবার রাখে একটা খাম।
তাতে লেখা---

" আমার প্রথম প্রেমের জন্য, যাকে পড়ে ফেলেছি...... কিন্তু শেষ পৃষ্ঠা এখনো বাকি। "

চলবে........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

[ আপনারা সবাই গঠনমূলক কমেন্ট করুন। আপনাদের একটা কমেন্ট আমাকে, পরবর্তী পর্ব লিখতে উৎসাহ জোগায়। ]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২২  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 💌প্রথম চিঠির প্রথম বাক্যনোরা এখন ষোলোতে পা দিয়েছে। সে তার স্কু...
03/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২২
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

💌প্রথম চিঠির প্রথম বাক্য

নোরা এখন ষোলোতে পা দিয়েছে। সে তার স্কুলের সবচেয়ে নীরব মেয়ে। মুখে কম কথা, চোখে গভীর কিছু খোঁজ।

তার বন্ধুদের মধ্যে একজন----লুইস। চুপচাপ ছবি আঁকে, ক্লাসে সব সময় শেষ বেঞ্চে বসে। নোরা সাথে তার কথাবার্তা খুব কম হয়, কিন্তু প্রতিদিনের লুইস নোরার দিকে তাকিয়ে হাসে।

একদিন স্কুল লাইব্রেরীতে নোরা একটি বইয়ের ভাজে খুঁজে পায় ছোট্ট একটা কাগজ।

কাগজে লেখা------

" তুমি হয়তো জানো না, কিন্তু তোমার নীরবতা আমার জন্য সবচেয়ে জোরালো শব্দ। আমি প্রতিদিন তাকিয়ে থাকি-- যেন কোন এক অজানা ভাষার শব্দ তুমি।

___ একজন"

নোরা হতবাক।
সে এই লেখার মধ্যে বাবার কন্ঠ খুঁজে পায়। সে সেই রাতে বাবার পুরনো চিঠি গুলো পড়ে।

এবং নিজের ছোট্ট নোটবুকে লিখে ফেলে প্রথম চিঠির প্রথম বাক্য----

" তুমি কে, আমি জানি না...... কিন্তু আমি চেয়েছি, তুমি আমায় এমন ভাবে দেখো--- যেমন বাবা-মাকে দেখেছিল। "

_________________________

পরের দিন, নোরা লাইব্রেরীতে আবার যায়। সেই বইয়ের মাঝে সে রেখে আসে একটা খাম।

ভেতরে লেখা-----

" তুমি যেই হও না কেন, আমি জানি তুমি আমার কিছু অনুভব করেছো। আমি চাইনা তুমি মুখে বলো। আমি চাই তুমি লিখো। চিঠি দিয়ে বলো--- কারন আমার জীবনের সবকিছু শুরু হয়েছিল এক চিঠি থেকে। "

দুদিন পর, উত্তর আসে।
এবার পুরো নাম সহ।

" আমার নাম লুইস।
আমি কখনো কাউকে কিছু বলিনি।
কিন্তু তোমার চোখে আমি সেই নীরবতা দেখি,যা আমি এঁকেছি বছরের পর বছর। আমি তোমার গল্প শুনতে চাই। তুমি আমাকে তোমার লেখা চিঠিগুলো পড়াবে? "

নোরা কেঁপে ওঠে। যেমনটা তার বাবা বলেছিল।
সে জানে, এই মুহূর্ত থেকে সে তার নিজের" চিঠির দেশ" বানাতে শুরু করেছে।

সেদিন রাতে নোরা হানার কোলে মাথা রেখে বলে----

" মা, তুমি কি জানো--- ভালোবাসা আসলে উত্তর নয়.....
ওটা একটা প্রশ্ন, যেটা আমরা আবারো জানতে চাই-- তুমি থাকবে তো? "

হানা হাসে।
সে তার মেয়েকে চুমু খেয়ে বলে---

" তুমি সেই প্রশ্নটাই পাবে, যার উত্তর তোমার মধ্যেই ছিল। এবার চিঠিগুলো তুমি লেখো, নোরা। এই গল্প এবার তোমার....."

চলবে......

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

[ লাইক কমেন্টস করুন দয়া করে চুপি চুপি পড়ে চলে যাবেন না। ]

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২১  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 💌চিঠির বাক্সসময় দেখতে দেখতে চলে যায়। কেটে গেছে ছটা বছর। নোরা ...
03/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২১
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

💌চিঠির বাক্স

সময় দেখতে দেখতে চলে যায়। কেটে গেছে ছটা বছর। নোরা এখন ৬ বছর বয়সী। কেশগুচ্ছ ছোট্ট, গারো নীল চোখ, ঠিক যেন হানার মত, কোমলতা। বাবার প্রতিচ্ছবি। নোরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাবার পাশে বসে, বাবার পড়া চিঠির বাক্স গুলো শুনে।

দাস্তান একদিন পিয়ানো বাজাতে বাজাতে বলে-----

" তোমার মা একদিন বলেছিল, আমি যেন প্রতিদিন একটা বাক্য লিখি।
জানো নোরা, আমি আজও লিখি। কারণ ভালোবাসা শেষ হয় না, সে শুধু রূপ বদলায়।"

ছোট্ট নোরা তখন বলে---

"বাবা, আমি একদিন সব চিঠি পড়তে চাই। তুমি আমায় পড়তে দেবে? "

দাস্তান নোরার মাথায় হাত রেখে বলে---

" তুমি যখন দশ বছর বয়সে পা দেবে, তখন আমি তোমায় একটা বাক্স দেব।
তাতে থাকবে চিঠি, গল্প স্মৃতি.... আর আমাদের প্রথম তোমাকে নিয়ে লেখা বাক্য। তুমি তখন বুঝবে, তুমি কেবল জন্মাওনি--- তুমি লিখে এসেছ। "

ছোট নোরা মুগ্ধ হয়ে চুপ করে থাকে।

সেই রাতে সে নিজের ছোট ডায়েরিতে প্রথম একটা বাক্য লিখে---

"আজ আমি বাবার ভালোবাসার শব্দ হয়ে উঠতে চাইলাম। "

_________________________

নোরার দশম জন্মদিন।

ফ্লোরেন্সের সেই বারান্দা, সূর্য রক্তিম, হানা কেকটাই মোমবাতি লাগাচ্ছে।

দাস্তান হাতে করে এনে দেয় একটা ছোট্ট কাঠের বাক্স--- বাক্সটির উপরে লেখা "For Nora, our best letter. "

নোরা ধীরে ধীরে খুলে দেখে---

বাক্সটির ভেতরে শত শত কাগজ....... ছোট্ট ছোট্ট চিঠি, আঁকা ছবি, পিয়ানোর সুরের স্কোর, হানার হাতের লেখায় একটা চিঠি:

" আমার মেয়ে,
তুমি যখন প্রথম আমার পেটের মধ্যে নড়ে ছিলে, আমি অনুভব করেছিলাম তোমাকে। আমি চাই তুমি ভালোবাসোভালোবাসো--- তোমার মত করে। তোমার বাবার মত সাহসী হও, আর আমার মত নরম থেকো। আর কখনো যদি মনে হয় তুমি একা--- তাহলে এই বাক্স খুলে পড়ো। তুমি এখানে আছো,শব্দ হয়ে, স্পর্শ হয়ে, ভালোবাসা হয়ে। "

নোরা কাঁদে না।
সে কেবল চুপচাপ আবার গলা জড়িয়ে ধরে।

"বাবা.....এবার আমি তোমার মত চিঠি লিখতে চাই। কাকে লিখব? "

দাস্তান হেসে বলে----

"তুমি যদি কাউকে ভালোবাসো, যদি কখনো কারো জন্য তোমার হৃদয় কাঁপে.... তাহলে তাকে লিখো। কারণ ভালোবাসা যতটা না মুখে, তার চেয়েও বেশি থাকে চিঠির ভাঁজে। "

সেদিন রাতেই ,নোরা তার নিজের ডাইরিতে লিখে----

"প্রিয় ভবিষ্যতের কেউ,
আমি তোমাকে এখনো চিনি না। কিন্তু আমি জানি, আমি তোমার জন্য চিঠি হয়ে উঠতে চাই। যেমন আমার বাবা আমার মায়ের জন্য হয়েছিলেন......
আর আমার মা, আমার জন্মের আগেই যাকে ভালবেসে ছিলেন। "

চলবে.......

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_২০  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼 তোমার অপেক্ষায় পৃথিবীফ্লোরেন্স এক হিমেল ভোর। হানা হঠাৎ ব্যথা...
03/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_২০
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼 তোমার অপেক্ষায় পৃথিবী

ফ্লোরেন্স এক হিমেল ভোর। হানা হঠাৎ ব্যথা অনুভব করে। দাস্তান তখন ঘুমিয়ে ছিল। হানা তাকে ডাকে, হানার ডাক শুনে মুহূর্তের উঠে পড়ে।

" হাসপাতালে? "
"হ্যাঁ......বোধহয় আজই......"

রাস্তায় গাড়ি ছুটে চলছে। দাস্তান এক হাতে স্টিয়ারিং ধরেছে, অন্য হাতে হানার হাত। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, সময় যেন থেমে যায়। ১২ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। হানা ঘামে ভিজে গেছে, ক্লান্ত । তার হাত শক্ত করে ধরে আছে দাস্তান ।

ডাক্তার চিৎকার করে বলছে----

"One more push ! You're doing amazing, Hana! "

হানা চোখ বন্ধ করে ফিসফিস করে-----

" দাস্তান.....আমি পারব তো? "

দাস্তান বলে----

" তুমি আমার সবচেয়ে সাহসী মানুষ। আমি আছি তোমার পাশে, হানা।"

শেষ একটি চাপ, শেষ একটি কান্না----

আর পৃথিবীতে আসে একটি ছোট্ট প্রাণ।

ডাক্তার বলে----

"It's a girl! "

হানা কাঁদছে। দাস্তান স্তব্ধ। তার চোখে অশ্রু।

এই ছোট্ট প্রাণকে যখন প্রথম বার হানার বুকে রাখা হয়, হানা বলে---

" আমার চিঠি আজ নিজে মুখ খুলে বলছে.... বাবা,মা.... "

________

তিনদিন পরে, হাসপাতাল থেকে তারা ফিরে আসে। নতুন অতিথিকে দেখে সেলিম কাঁদেন।

তিনি বলেন-----

"আমি ভাবতাম আমার জীবনের চিঠিগুলো শেষ। কিন্তু এই ছোট্ট হাতটা আবার আমাকে নতুন করে লিখতে শিখিয়েছে। "

হানার মা এমিও চুপচাপ মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলেন----

"আজ তোমার বাবার আঁকা ছবিগুলো যেন জীবন্ত হয়ে উঠল এই মুখে। "

সেই রাতে দাস্তান আর হানা বসে মেয়ের নাম ঠিক করে।

দাস্তান বলে---

"তুমি বলো নামটা। কারণ সে তোমার ভেতর থেকেই এসেছে। "

হানা চোখে জল নিয়ে বলে---

"আমি চাই তার নাম হোক--- নোরা।
যার মানে--- আলো। কারন সে এসেই আমাদের জীবন আলোকিত করে দিয়েছে।"

দাস্তান মাথা নেড়ে বলে---

" নোরা আল-রেহমান। আমার চিঠি সবচেয়ে সুন্দর বাক্য। "

তারা দু'জনে মিলে ছোট্ট নোরার জন্য নতুন চিঠি লেখে---

" তুমি যখন বড় হবে, আমরা তোমার প্রতিটি দিন এক একটা চিঠিতে লিখে রাখবো। কারন তোমাকে পেয়ে আমরা আর কিছু চাইনা। শুধু চাই, তুমি জানো--- তুমি ভালোবাসা থেকে জন্মেছ। "

নূর আর ছোট্ট ঘুমন্ত মুখের পাশে রাখা থাকে সেই চিঠি। চাঁদ, আলো ছড়ায় বারান্দায়।

হানা আর দাস্তান জানে---তাদের চিঠি শেষ হয়নি, বরং.......

এখন থেকে শুরু হলো তাদের তৃতীয় মানুষের নাম লিখে লেখা এক অনন্ত চিঠি।

চলবে.........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_১৯  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼ঘরের ভেতর পৃথিবীর সব গল্পসময় কেটে যায়। হানার পেটে আস্তে আস্ত...
03/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_১৯
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼ঘরের ভেতর পৃথিবীর সব গল্প

সময় কেটে যায়।

হানার পেটে আস্তে আস্তে উঁচু হয়ে ওঠে নতুন জীবন। দুজন মিলে ছোট্ট একটা রুম সাজায়-- নরম রং ,ছোট বালিশ, আর এক দেয়ালে বড় করে লেখা---

"For the child who was born out of two people's unfinished letters. "

এক বিকেলে হানা পিয়ানোর সামনে বসে। হাত রাখে কী-বোর্ডে, কিন্তু বাজায় না।
দাস্তান এসে পাশে বসে।

"তুমি কি কিছু ভাবছো?"

" আমি ভাবছি..... এই ছোট্ট মানুষটা যখন বড় হবে, আমরা কিভাবে বলবো-- সে আসার আগেই আমরা তাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম? "

দাস্তান হেসে বলে---

" আমরা তাকে প্রতিদিন একটা চিঠি লিখব। তার জন্মদিনে তাকে দেব একটা বাক্স--- ভরা থাকবে কেবল চিঠিতে, ভালোবাসায়, আর আমাদের সবটুকু স্পর্শে। "

হানা ফিসফিস করে---

তবে তুমি আজ থেকেই লেখা শুরু কর..... "

সেই রাতে, দাস্তান প্রথম চিঠিটা লেখে তার সন্তানকে:

" আমার ছোট্ট মানুষ, তুমি যখন এই পৃথিবীতে আসবে, আমি তোমার মা'র চোখে তোমার ছায়া দেখতে চাই। তুমি যদি কাঁদো, আমি কাঁদবো। তুমি যদি হাসো, আমি হারিয়ে যাব তোমার মুখে। আর যদি কখনো নিজেকে একা মনে করো--- জেনে রেখো, এই পৃথিবীতে একজোড়া চোখ আছে, যারা চিরকাল তোমার অপেক্ষায় থাকবে। "

চিঠির নিচে সাইন-----

বাবা।

চলবে.........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_১৮  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼হৃদয়ের ভিতর নতুন  হৃদস্পন্দনফ্লোরেন্সে বসন্ত আসছে। দাস্তান আর...
02/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_১৮
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼হৃদয়ের ভিতর নতুন হৃদস্পন্দন

ফ্লোরেন্সে বসন্ত আসছে। দাস্তান আর হানার সংসারও দিব্যি ভালোই চলছে। দুজনে খুনসুটিতে মেতে থাকে সারাক্ষণ। কিন্তু দুজনের মধ্যে ভালোবাসা ভরপুর, তাদের ভালোবাসা যেমন কোমল ,তেমনি গাঢ়। হা না সকালবেলায় বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল। সে হঠাৎ এক অদ্ভুত অনুভব টের পায়। বুকের মাঝে যেন শ্বাস থমকে যায়। বমি বমি ভাব, শরীরে ক্লান্তি--- কিছুই যেন তা ঠিকঠাক লাগছে না। দাস্তান তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ডাক্তারের মুখে এক নরম হাসি---

"Congratulations , you're going to be parents. "

দাস্তা স্তব্ধ। দাস্তান তার হাত ধরে আছে শক্ত করে।হানার চোখে জল। কিন্তু সেটা কান্না না--- ভালোবাসা, বিস্ময়, আবেগ, নতুন কিছু আসার প্রতীক্ষা।

রাতে দাস্তান একটা চিঠি লিখে হানার পাশে রেখে যায়।
চিঠিতে লেখা------

" তুমি আমায় ভালোবাসা শিখিয়েছো। এখন তুমি আমাকে বাবা শব্দটি শোনাবে। এই সন্তানের প্রতিটি হাসিতে আমি তোমার মুখ খুঁজবো। আর প্রতিটি কান্নায় তোমার কন্ঠ। আমি কথা দিচ্ছি, আমি তোমাদের দুজনের জন্য চিরকাল লিখে যাব--- প্রতিদিন. "

হানা চিঠিটা পড়ে জড়িয়ে ধরে। সেই রাতটা আর কোন শব্দে না কাটে। শুধু নিঃশ্বাসের শব্দ, হৃদয়ের ভাষা আর ভালোবাসা নীরবতা।

চলবে........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_১৭  #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼ঘরের ভেতর চিঠির মতো জীবনএক মাস কেটে গেছে। দাস্তান আর হানার ছোট...
02/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼ঘরের ভেতর চিঠির মতো জীবন

এক মাস কেটে গেছে। দাস্তান আর হানার ছোট এপার্টমেন্ট এখন ফ্লোরেন্স শহরের এক ছোট রাস্তায়। বারান্দায় ছোট্ট ফুলের টব, ডাইনিং টেবিলে দুজনের প্রিয় চা, আর বইয়ের তাকে হানার চিঠির বাক্স। দুপুরে তারা একসাথে রান্না করে, সন্ধ্যায় ছাদে বসে চিঠি পড়ে।

একদিন হানা বলে----

" তুমি জানো, আমি এখন আর চিঠি লিখি না। "

দাস্তান অবাক হয়ে তাকায়।

হানা বলে---

"কারণ এখন প্রতিটা দিনেই তুমি আছো। এখন আমার ভালবাসা কাগজে নয়, তোমার প্রতিটি স্পর্শে লেখা। আর এখন আমি চাই--- তুমি লিখ। প্রতিদিন। একটা করে বাক্য। আমাকে। "

দাস্তান হেসে বলে--

"তবে শুরু করি আজ থেকেই। "
সে ছোট্ট কাগজে লিখে---

"তোমার ঘুমন্ত মুখটা হল আমার জীবনের সবচেয়ে শান্ত সকাল। "

হানা কাগজটা বুকের কাছে রাখে।

"তুমি আর চিঠি না লিখো, দাস্তান.....
তুমি চিঠি হয়ে যাও---- আমার প্রতিটি ভোরে, প্রতিটি রাতে। "

আকাশে তারা নামে। চুপচাপ ঘরের আলোয় বসে থাকে দুই প্রাণ। তারা চিঠি আর চিঠির ভেতরের গল্প হয়ে গেছে।

চলবে........

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

 #চিঠির_দেশে_ভালোবাসা  #পর্ব_১৬ #লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী 🌼এক বৃষ্টির দুপুরে বিয়েফ্লোরেন্সের আকাশে হালকা বৃষ্টি। রাস্তার ...
02/07/2025

#চিঠির_দেশে_ভালোবাসা
#পর্ব_১৬
#লেখিকা_মধুমিতা_অধিকারী

🌼এক বৃষ্টির দুপুরে বিয়ে

ফ্লোরেন্সের আকাশে হালকা বৃষ্টি। রাস্তার দাঁড়িয়ে আছে শহরের এক পুরনো চ্যাপেল এর বাইরে। তার পরনে অফ হোয়াইট স্যুট, চোখে শান্তি ছায়া।

তার পাশে সেলিম--- এক সময় কঠোর, এখন নরম চোখে পুত্রকে দেখে।

অন্যদিকে, হানা গির্জার ভেতরের ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।

মা এমি তার ঘোমটা ঠিক করে দিচ্ছেন। গোলাপি সিল্কের শাড়ির নিচে হানা যেন জ্বলন্ত সূর্য রশ্মীর মত নরম , কোমল এক আলো।

হানা ধীরে ফিসফিসকরে----

" মা আমি ভয় পাচ্ছি। "
"ভয় পাবার দরকার নেই,"এমি হাসেন,
"তুমি চিঠির পাতায় জীবন খুঁজছো। এবার তোমার গল্পটা সত্যি হবে। "

বিয়ের ঘন্টা বাজে।
দাস্তান তাকিয়ে থাকে চ্যাপেলের দরজার দিকে।

আর ঠিক তখন......
দরজার ফাঁক দিয়ে হানা প্রবেশ করে।
তারা দুজন একে অপরকে দেখে....... আর কিছু বলে না।চোখে চোখ রাখে, যেখানে আছে হাজার চিঠির অক্ষর, যেসব শব্দ মুখে বলা হয়নি।

পাদরির মুখে সেই চেনা কন্ঠ----

"Do you , Dastan al-Rehman,take Hana Takeshi as your life's forever story ? "

"I do . Every dayday, in every word. "

"And you, Hana, do you take him as your unwritten future? "

"I do . I always have. "

তারা পরস্পরের আঙ্গুলে আংটি পড়ায় ।

পিয়ানোর মতো হৃদয়ের তারে বাজে একটি অক্ষর বিহীন চিঠি----

যার ভাষা শুধুই ভালোবাসা।

চলবে.......

⚠️⚠️⚠️অনুমতি ছাড়া কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ⚠️⚠️⚠️

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mahi's Vlog posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share