
29/07/2025
যেভাবে বিয়ে ভাঙছে তাতে আগে কী করে সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখবেন সেটা ভাবতেই হয়। আমরা অনেকেই এমন কিছু ভুল করে ফেলি যাতে শেষমেশ সম্পর্ক আর টিকিয়ে রাখতে পারি না। কিন্তু কিছু সহজ কথা মাথায় রাখলেই হয়তো সম্পর্কটা বেঁচে যেতে পারে।
১) সবার প্রথমে মনে রাখতে হবে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি সম্পর্কে ঢুকতে দেবেন না। প্রেমটা দুজনে করেছেন, একে অপরের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিজেরা না নিলে বিয়েটা হতই না। সেক্ষেত্রে নিজেদের ঝামেলা নিজেরা মেটান। কোনও তৃতীয় কেউ যেন আপনাদের মধ্যে ঢুকে না পড়ে।
২) দ্বিতীয়ত সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝুন। বিয়েটা করেছেন সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকবেন বলে। তাই একে অপরকে গুরুত্ব দিতেই হবে। আজ একে অপরকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে যাদের গায়ে লাগছে একসময় কেউ কিন্তু থাকবে না। এমনকী বাবা মাও না। পাশে থাকবে শুধু যাকে বিয়ে করেছেন সে।
৩) নিজেদের জীবনে বাউন্ডারি ক্রিয়েট করুন। আমরা যখন ছোট ছিলাম নিশ্চই বাবা মায়েরা সব কথা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিত না। আমাদেরকে নিশ্চয়ই নিজেদের অত্যন্ত ব্যক্তিগত কথায় পাশে রাখত না। ঠিক সেই রকমই এখন এটা আপনাদের সময়। নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে কারও অনুপ্রবেশ হতে দেবেন না।
৪) বিয়ে ভাঙা অত্যন্ত সোজা। কিন্তু একবার ভেবে দেখতে হবে বিয়েটা কি একান্ত আপনাদের জন্যেই ভাঙছে? যদি অন্যের জন্য ভেঙে থাকে তাহলে আদৌ কি লসটা তার হল? না আপনার জীবনে একটা ক্ষত তৈরি হল অন্যের জন্য।
৫) নিজেরা সংসার করুন। সংসার থেকে পালিয়ে বেড়িয়ে সব বাবা-মায়ের ঘাড়ে ফেলে দেবেন না। বিয়ে যখন করেছেন সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিতেই হবে। কারণ একটা সময় ওরা কেউ থাকবে না, সংসারটা আপনাদেরই করতে হবে।
৬) নিজেদের কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করুন। এতদিন তো অনেক সময় দিলেন সবাইকে। এবার কিছুটা সময় নিজের সঙ্গীকে দিন। বিশ্বাস করুন এই সময়গুলো আর ফেরত আসবে না। বাবা, মা, বন্ধু বান্ধব ছোট থেকে আপনাকে পেয়েছে কিন্তু এই বয়সটা যেটা একমাত্র সঙ্গীর সঙ্গে কাটানো যায় সেটা একবার চলে গেলে আর ফিরবে না।
৭) নিজেদের জীবনের খুঁটিনাটির ব্যপারে অন্যের মতামত নেওয়া ছাড়ুন। যথেষ্ট প্রাপ্ত বয়স্ক তাই বিয়ে করেছেন। নিশ্চই ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেননি। তাই নিজেদের ভালমন্দ নিজেরা বোঝার চেষ্টা করুন।
৮) সব থেকে বড় কথা বিয়েটা দুটো প্রাইমারি স্কুলে পড়া বাচ্চাদের মধ্যে হয় না। দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে হয়। এবং এই নিয়ে সরকার বয়স বেঁধে দিয়েছে। ভোটাধিকার না থাকলে বিয়ে হয় না। ভোট দিয়ে কাকে শাসনের ভার দেবেন সেই বুদ্ধি যখন হয়েছে সাংসারিক বুদ্ধিও নিশ্চই তৈরি হয়েছে। তাই অকারণ নিজের সংসারের ব্যাপারে লোকের জ্ঞান নেবেন না।
৯) একে অপরের বাবা মাকে শ্রদ্ধা করুন। নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন। কিন্তু কেউই কারও বাবা মাকে অন্যজনকে শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়ার অধিকার দেবেন না। আমরা বিয়েটা করি সারাজীবন পাশে থাকব বলে। আনন্দ করব বলে। শেখা পড়ার জন্য স্কুল বা পাঠশালা আছে। এটা বোর্ডিং নয় যে কেউ কাউকে ২৪ ঘণ্টা শাসন করবে আর সেটা মেনে নিতে হবে।
১০) যুগের সঙ্গে সঙ্গে সবই বদলেছে। তাই হয়তো আপনার পরিবারের লোকের থেকে যে ছেলেটি বা মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন সে অনেক আধুনিক হতেই পারে। এবার তাঁর আধুনিকতা যদি আপনার বাড়ির লোক মেনে নিতে পারে সেটা তাদের সমস্যা। যুগ বদলালে নিজেকে বদলাতেই হবে শালীনতার বজায় রেখে যদি সেই আধুনিকতাকে কেউ ভালবাসে তাকে সাপোর্ট করুন। কারণ পুরনো আমলে পড়ে থাকা কোনও কৃতিত্ব নয় বরং বোকামি। এখানে পুরনো আমল বলতে ঐতিহ্য বা সংস্কৃতিকে বলা হয়নি।
সব কিছু বাদ দিয়ে বিয়েটা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। কারণ যাদের জন্য বিয়েটা ভাঙছে তাদের কিচ্ছু যাবে আসবে না বিশ্বাস করুন। ক্ষতিটা একমাত্র আপনাদেরই হবে।
©️ অনুলেখা