Pritisha

Pritisha My name is Eti. Follow me my page video creator��. wish me 3rd October.

ক্ষিতিমোহন সেনের কন্যা অমিতা, তখন গুরুপল্লীর বাসিন্দা তাঁর লেখায় আছে, ‘বাড়ির জানলা দিয়ে কতদিন দেখেছি মাঠের মধ্যে দিয়ে মো...
15/10/2025

ক্ষিতিমোহন সেনের কন্যা অমিতা, তখন গুরুপল্লীর বাসিন্দা তাঁর লেখায় আছে, ‘বাড়ির জানলা দিয়ে কতদিন দেখেছি মাঠের মধ্যে দিয়ে মোহর ছুটছে গুরুদেবের কাছে। রাস্তা দিয়ে যেত না, পাছে দেরি হয়ে যায়। মাঠের কাছে একটা বনপুলকের‌ গাছ ছিল। বসন্তে ফুল ফুটলে গন্ধে চারদিক ভরে উঠত। তার তলা দিয়ে মোহর দৌড়োচ্ছে, ....'

রবীন্দ্রনাথ সেদিন কাছে ডেকে পরম স্নেহে জিজ্ঞেস করেছিলেন গান জানিস? শান্তিনিকেতনের আকাশে ঘন কালো মেঘের বিকেলে এক পশলা বৃষ্টিতে দুই বান্ধবী ঠিক করেছে ঝড়ে আম কুড়োবে। বৃষ্টির বেগটা বেশ বেড়েছে, হয়ত একটু পরে থামবে,দুই বান্ধবী দৌড়ে গেল মাটির বাড়ি 'শ্যামলী'র দিকে। তখন নজরে পড়লেন তিনি। লিখতে লিখতে তার মধ্যে ডুবে আছেন। শুধু যেন ঝড় বৃষ্টির দিকে তাকিয়েছেন, কিন্তু কিছু দেখছেন না।

গান শুনতে চাইলেন 'শ্যামলী'তে লিখতে থাকা মানুষটা। খুশিতে ডগমগ কন্যাটি সাথে সাথে গান শুনিয়ে দিলেন। তাঁর কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গান শুনতে চেয়েছেন তাতেই ডগমগ ‌। গুরুদেব কে শুনিয়েছিলেন সদ্য শেখা একখানা গান। রবীন্দ্রনাথ খুশি হয়ে নাম জিজ্ঞেস করলেন,কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে কন্যাটি ভাল নাম বলতেন, বললেন তাঁর নাম অণিমা মুখোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বাবার নাম জেনে বললেন তুমি আমাদের সত্যচরণের মেয়ে।তাই মাঝে মাঝে গান শুনিয়ে যেয়ো আমাকে।

কালবৈশাখীর এক বিকেলের এক টুকরো ঘটনা অনেকটা পাল্টে দিল মেয়েটির জীবন।ছুটে চলে গেল গুরুপল্লীর দিকে, ততক্ষণে বৃষ্টি থেমেছে বন্ধুটি ডাকছে পেছন থেকে এই মোহর আম কুড়োবি না?
বন্ধুর ডাক শুনে কন্যাটি তখন ভাবছে কেন তাঁর ডাক নামটা রবীন্দ্রনাথ কে বললেন না।আবার ভাবতে লাগলেন ভাগ্যিস বলেন নি। 'অণিমা' বলেছেন বলেই উনি নাম পাল্টে 'কণিকা' করে দিয়েছিলেন। তাই রবীন্দ্রনাথের কথা কিংবা শুধু সুর নয় তাঁর দেওয়া নামটা বয়ে নিয়ে নিয়ে পথ চলেছেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর জীবন রবি -কণিকাতেই ভরে উঠেছিল,সেই ভরে ওঠার সূচনা যেন হয়েছিল সেই কালবৈশাখীর সন্ধ্যায়।

প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন " পঞ্চাশের দশকে রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমাদের মাতিয়ে রেখেছিলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র ও রাজেশ্বরী দত্ত। শুধু গুণ নয় রূপের জন্যও এই তিনজন কে বলা যায় থ্রি গ্ৰেসেস।" সুনীলের কথায় কণিকা রাজেশ্বরী থাকতেন অন্তরালে কিন্তু সুচিত্রা জনসভায়, মিছিলে অংশগ্ৰহন করে মাতিয়ে রাখতেন জনসাধারণ কে।

এইচ এম ভি'র উদ্যোগে ১৯৬২ সালে শিল্পীদের নিয়ে জনসাধারণের মনে উদ্দীপনা জাগাতে লরিতে বসে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে গান গাওয়া হয়। যথা সময়ে শিল্পীরা এসেছেন। সমস্যা দেখা দেয় কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিয়ে। তিনি কিভাবে লরিতে উঠবেন!কেউ পিছন থেকে ঠেলে,কেউ ওপর থেকে হাত ধরে টানে কিন্তু মোহর বন্দ্যোপাধ্যায় লরিতে আর উঠতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত কেউ একজন একটা টুল তার উপরে একটা মোড়া পেতে জোর করে ঠেলে তাঁকে লরির উপরে উঠিয়ে দিলেন। খুব হাসাহাসির ব্যাপার, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় লজ্জায় একশা। হঠাৎ অন্য লরির দিকে তাকিয়ে মোহর দেখলেন সুচিত্রা মিত্র এসে দাঁড়িয়েছেন। এবং চোখের পলকে কারও সাহায্য ছাড়াই লরিতে উঠে পড়লেন।
আজীবন যিনি মনে করেছেন, রবীন্দ্রনাথের গান তিনি গাইতেন না, নিবেদন করতেন। যেন রবীন্দ্রনাথই তাঁকে দিয়ে গানগুলি গাইয়ে নিচ্ছেন এমনই মনে হত তাঁর।শান্তিনিকেতনের ইতিহাসের যে পর্বে মোহরের জন্ম হয়েছিল, তা ছিল রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের শান্তিনিকেতন পর্ব। তখন তিনি তাকে ‘বিশ্বভারতী’তে বদলে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে শুরু করেছিলেন। আজ শান্তিনিকেতনে সবার প্রিয় 'মোহরদি' অর্থাৎ কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিবসে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।।
সংকলনে ✍🏻 অরুণাভ সেন।।

#সংগৃহীত

পুস্তক ঋণ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার, আনন্দধারা, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ধেক জীবন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,শান্তিনিকেতনের আকবরী মোহর, সুদেষ্ণা বসু, আনন্দবাজার কম

ছবি,পরিমল গোস্বামী, সৌজন্য আনন্দবাজার পত্রিকা

ক্যানসার কেড়ে নিল কর্ণকে! প্রয়াত অভিনেতা পঙ্কজ ধীর
15/10/2025

ক্যানসার কেড়ে নিল কর্ণকে! প্রয়াত অভিনেতা পঙ্কজ ধীর

সেদিন কলকাতায় প্রচণ্ড শীত কুঁকড়ে যাচ্ছে ঘুমন্ত লিফটম্যান  অলোক রাউতের শরীর। চোখে পড়ল রাজ্যপালের, তিনি নিঃশব্দে স্যুইটে...
15/10/2025

সেদিন কলকাতায় প্রচণ্ড শীত কুঁকড়ে যাচ্ছে ঘুমন্ত লিফটম্যান অলোক রাউতের শরীর। চোখে পড়ল রাজ্যপালের, তিনি নিঃশব্দে স্যুইটে গিয়ে নিজের গরম শাল ঘুমন্ত লিফটম্যানের গায়ে চাপিয়ে দিলেন৷ তিনি অন্য কেউ নন,একমাত্র বাঙালি যিনি আমাদের রাজ্যে পূর্ণ সময় রাজ্যপালের দায়িত্ব পালন করেছেন..

এই ভদ্রলোকের বিরুদ্ধে কিন্তু অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যপাল সরকারের অর্থ বাঁচিয়ে সাধাসিধে ভাবে চলেন,আর দিল্লি থেকে আগত অতিথিদের আরাম-আয়েশে বেশ বিঘ্ন ঘটে। অভিযোগ গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর কাছে,তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন হরেন্দ্রকুমারকে অন্য রাজ্যের রাজ্যপাল করে পাঠাবেন৷ একটুও না ঘাবড়ে গিয়ে হরেন্দ্রকুমার বলেছিলেন রাজ্যপাল হয়েও তাঁর নিজের যদি এই পরিবেশে থাকতে অসুবিধা না হয় তবে তাঁর অতিথিরা যত বড় মাপের ভি.আই.পি হোক তাদের এখানে থাকতে হবে, তিনি নিশ্চয়ই রাজভবনের ধুলো-মাটিতে থাকেন না,তবে রাজভবন ফাইভ স্টার হোটেল হবে না৷

রাজ্যপালের কড়া নির্দেশ ছিল গরিব দেশের টাকায় রাজভবনের দামী-দামী পর্দা,ফার্নিচার এসব দু'দিন অন্তর বাতিল করা চলবে না,তাতে কারও রাগ হলে দরকারে তিনি রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেবেন৷
পাঠক হয়ত শুনলে অবাক হবেন সরকারি অর্থের অপচয় বন্ধ করে তিনি সেইসময় রাজ্যপালের ফাণ্ডে আট লক্ষ টাকা জমিয়েছিলেন (১লা নভেম্বর ১৯৫১থেকে ৮আগস্ট ১৯৫৬ ) আজকের দিনে পাটিগণিতের হিসেবে ওই টাকার মূল্য খুব বোধহয় কম নয়! হয়ত তাঁর জন্য গর্বিত সেদিনের মানুষরা,যারা তাঁকে দেখেছেন,অথবা তাঁর গল্প শুনেছেন বাড়ির বড়দের কাছে৷ খুব সত্যি বলতে সাদাসিদে,অমায়িক মানুষ বললে একটু কম বলা হয় হরেন্দ্রকুমার সম্পর্কে৷

অলোক রাউত পড়েছেন বেশ বড় একটা বিপদে,তাঁর চিন্তা হাড়কাপানো শীতে তিনি কিভাবে সারারাত ডিউটি করবেন! সমস্যা হল রাজ্যপাল যে সকাল পাঁচটার সময় লাঠি হাতে এ-ডি-সি ছাড়া প্রাঃতভ্রমণে বের হবেন, অথচ অলোক রাউত কে যে সারারাত লিফটে ডিউটি করতে হবে৷লিফটম্যানের উর্দি পরে তিনতলায় রাজ্যপালের স্যুইটের সামনে ভোরের জন্য লিফট আটকে রেখে লিফটের পাশের শ্বেত পাথরের কনকনে ঠাণ্ডা বারান্দায় কখন তিনি কুঁকড়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন,মাঝে-মাঝে অবশ্য শীতের অস্বস্তিতে সমস্ত শরীরটা টানটান হয়ে যাচ্ছে,কুঁকড়ে যাচ্ছে৷

এই দৃশ্য চোখে পড়ল খোদ রাজ্যপালের,তিনি নিঃশব্দে নিজের স্যুইটে আস্তে-আস্তে চলে গেলেন,নিয়ে এলেন নিজের একটা গরম শাল,নিদ্রিত লিফটম্যানের গায়ের ওপর চাপিয়ে দিলেন৷ নিজে লিফটের সুইচ অন করে নীচে প্রাতঃভ্রমণে চলে গেলেন৷ রাজভবনের বারান্দায় রোদ্দুর এসেছে,ঘুম ভাঙল অলোক রাউতের,দেখে তাঁর গায়ে দামী শাল,অথচ সামনে লিফটের খাঁচা নেই৷ কিছুটা হতভম্ব ভদ্রলোক,এরপর আরও অবাক হওয়ার পালা দেখলেন রাজ্যপাল স্বয়ং নিজে লিফট চালিয়ে ওপরে উঠে গেলেন,সঙ্গে এ.ডি.সি বা অন্য কেউ নেই৷ নিজের ভুল বুঝতে পেরে লাট সাহেবের পা জড়িয়ে ধরতে সৌম্যমূর্তি হরেন্দ্রকুমার তার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলেছিলেন তুমি আমি একই ভাই ৷ মনে কর বড় ভাই ছোট ভাই কে এই শাল উপহার দিয়েছে,তুমি ওটা পরো,ওটা তোমাকে দিলাম৷

৮ নভেম্বর ১৯৫৩, ব্যারাকপুরের লাটবাগানে শীতের পরশ,আগের দিন লাটবাগানের ফ্লাগস্টাফ হাউসে উঠেছেন রাজ্যপাল, সঙ্গে এ.ডি.সি.ক্যাপ্টেন এস ব্যানার্জি ও সিকিউরিটি ইনসপেক্টর তিনকড়ি মুখার্জি৷ অতি প্রত্যূষে কাউকে না জানিয়ে গায়ে চাদর চাপিয়ে সঙ্গের লাঠি নিয়ে বাংলোর সংলগ্ন টি.বি.হাসপাতালে হরেন্দ্রকুমার হাজির৷ হাসপাতালে প্রায় কেউ তাকে চেনেন না,আর তাঁর সঙ্গেও কেউ নেই৷ সোজা ঢুকে গেলেন রোগীদের ঘরে,দেখেন জলের কুঁজো গড়াগড়ি খাচ্ছে মাটিতে,নার্স-ডাক্তার কেউ নেই৷ কয়েকজন রোগীর সাথে তিনি কথা বলে সোজা গেলেন স্টাফ নার্সের ঘরে,নিজের পরিচয় দিলেন৷ রাগে কাঁপছেন,পুলিশের আই.জি.তখন হরিসাধন ঘোষ চৌধুরী৷ হরেন্দ্রকুমার ফোনে তাঁকে ডেকে নিলেন ব্যারাকপুরে৷ রাগতভাবে বললেন আমি টিবি ফাণ্ডের জন্য ব্যবসায়ী সাহেব-সুবোর কাছে টাকা ভিক্ষে করে আনছি আর নবাব ডাক্তার,নার্সরা রোগীদের একটু খাবার জলের ব্যবস্থা করে না! এরা ভেবেছে কী!
বলা বাহুল্য টি.বি.তখন মারণ রোগ হিসেবে যতেষ্ট খ্যাত,এমন কি টি.বি. রোগীদের থেকে সাত হাত দূরে থাকা শ্রেয় মনে করতেন সাধারণ মানুষ৷

একবার হল কি স্বয়ং রাজ্যপাল রাজভবনের সব কর্মীকে ডাকলেন কার্ড দিয়ে চায়ের নিমন্ত্রন করলেন রাজভবনের ব্যানকোয়েট হলে৷ কর্মীরা জানে এই রাজ্যপাল ডেকে চা খাইয়ে টি.বি. ফাণ্ডের টাকা তোলেন,এবার কি তাদের পালা! চায়ের পর্ব শেষ হল,নিজের চেয়ার ছেড়ে প্রতি জনের কাছে অনুনয়ের সুরে বললেন আপনারা রাজভবনের কর্মচারী,আমি আপনাদের দরিদ্র রাজ্যপাল আপনারা যদি অফিসের ছুটির পরে টি.বি. ফাণ্ডের খাতা-পত্তরগুলি দেখে দেন তাহলে এগুলি মেনটেন করার জন্য তাঁর আলাদা লোক ও অর্থের দরকার হবে না,সেই টাকা দিয়ে রোগীদের কিছু ফল,ওষুধ কিনে দেওয়া যাবে৷সবার মাথা নীচু হল শ্রদ্ধায়,কারণ রাজ্যপাল হিসেবে তখন তিনি নিজে পাঁচ হাজার বেতন পেলেও নিতেন মাত্র পাঁচশো টাকা,বাকি টাকাটা দুঃস্থ বিধবাদের অথবা শিক্ষাখাতে কিংবা টি.বি ফাণ্ডে দিয়ে দিতেন৷কেবলমাত্র পূর্ণ সময়ের একমাত্র বাঙালি রাজ্যপাল হিসেবে নয়, মেধাবী বঙ্গসন্তান হরেন মুখার্জি ইংরেজিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ডক্টরেট,বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক পদে ছিলেন৷ দাদাঠাকুরের সাথে তাঁর সখ্য সর্বজনবিদিত৷

দয়ালু মানুষ হরেন মুখার্জি নিজের সব সঞ্চয় দান করে দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কে, বাঙালি যেন ভুলে না যায় পরম শ্রদ্ধেয় এই মানুষটিকে..

কলমে ✒️ অরুণাভ সেন

♦️তথ্যসূত্রঃ কলকাতা রাজভবনের অন্দরমহল (অমিয় রায়)
#সংগৃহীত

আর্থিক অসুবিধার কারণে সাময়িক সময়ের জন্য নিরামিষভোজীতে পরিণত হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ছাত্রাবস্থায়। বাবা আশা করতেন ছেলে ...
15/10/2025

আর্থিক অসুবিধার কারণে সাময়িক সময়ের জন্য নিরামিষভোজীতে পরিণত হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ছাত্রাবস্থায়। বাবা আশা করতেন ছেলে কালেক্টর হোক; কিন্তু ছেলের দুচোখের স্বপ্ন ভারতের আকাশে উড়ার। অনেকটা পথ অসম্ভব লড়াই করে শেষে পরীক্ষাও দিলেন .. ১৯৫৭ সাল, ফাইটার পাইলট হওয়ার পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশিত হ'ল। ফলাফল - নয়জন প্রতিযোগীর মধ্যে আটজন নির্বাচিত হ'ল, শুধুমাত্র তিনি, আবদুল কালাম বাদে। স্বপ্ন ছিল দেশের মিলিটারী বেইজের একজন ফাইটার পাইলট হওয়া .. পরীক্ষা, ইন্টারভিউ সবেতেই তিনি এগিয়ে ছিলেন, কিন্তু শুধুমাত্র শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় তিনি পিছিয়ে পড়েন।
চোখের সামনে নিজের স্বপ্ন'কে এভাবে ভেঙে যেতে দেখাটা সহজ নয়। এতদূর এসে তীরে তরী ডুবে যাওয়ার মতো কষ্টের। তিনি ভাঁঙা মন নিয়ে চলে যান হৃষীকেশ। সেখানে সাক্ষাৎ পান স্বামী শিবানন্দে'র। স্বামী শিবানন্দ তাঁকে উপদেশ ও পরামর্শ দেন, ভরসা না হারাতে, বলেন, “আজকের ব্যর্থতা ভুলে যাও, তার বদলে তোমার জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যের অনুসন্ধান করো। এয়ার ফোর্স পাইলট হওয়া তোমার নিয়তি নয়। নিজের সঙ্গে একাত্ম হও, আত্মসমর্পণ কর ঈশ্বরের ইচ্ছার কাছে।“ আবদুল কালাম ফিরে আসেন তাঁর নতুন কর্মজীবনে, প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী হিসাবে কাজে যোগ দেন। বাকিটা ইতিহাস .. প্রতিরক্ষায় ভারতবর্ষে তৈরি হলো এক নতুন স্বর্ণযুগের।
ভারত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় পায় আবদুল কালামের বিভিন্ন প্রোজেক্টের মাধ্যমে। প্রাথমিক ভয়-ব্যর্থতা পেরিয়ে তাঁর দেখানো পথে এখনও তৈরি হচ্ছে আমাদের মিসাইল-ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯৭৪, ১৮ মে, ভারত প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করে, যার বৃত্ত শেষ হয় ১৯৯৮ সালের ১১ মে ও ১৩ মে, সবটাই আবদুল কালামে'র পরিচালনায়।
২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এগারো-তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হোন ডঃ এ পি জে আবদুল কালাম। ভারতের রাষ্ট্রপতির ইতিহাসে প্রথম একজন চিরকুমার বিজ্ঞানী রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি অন্তর্ভূক্ত হন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, তেমন ২০ জন জঙ্গী আসামীর প্রাণভিক্ষার আবেদনে তিনি সাড়া দেননি। প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কঠোর দিক, কুড়িয়েছেন সমালোচনাও।
এ পি জে আবদুল কালাম জীবনে বহু বহু সম্মান লাভ করেছেন। অনন্য প্রাপ্ত স্বীকৃতি হলো প্রায় ৪০-টি বিশ্ববিদ্যালয় হতে 'ডক্টরেট' সম্মাননা লাভ। জাতিসংঘ তাঁকে দেয় আরেক অনন্য সম্মান, তাঁর ৭৯-তম জন্মদিনকে ‘বিশ্ব শিক্ষার্থী দিবস’ হিসেবে ঘোষিত করে।
অন্যান্য সম্মাননা:
১৯৮১ - পদ্মভূষণ
১৯৯০ - পদ্মবিভূষণ
১৯৯৭ - ভারতরত্ন
১৯৯৭ - 'ইন্দিরা গান্ধী' সম্মান
১৯৯৮ - 'বীর সভাকর' সম্মান
২০০০ - 'রামানুজন' সম্মান
২০০৭ - চার্লস-II মেডেল সম্মান (ইংল্যাণ্ড)
২০০৯ - হুভার মেডেল (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
২০০৯ - যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি তাঁকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভন কারম্যান উইংস’ নামের সম্মাননায় ভূষিত করে।
২০১৩ - এন এস এস ভন ব্যুর সম্মান (স্পেস)
'মিসাইল ম্যান' খ্যাত, স্বাধীনতার পরে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি ও ব্যক্তিত্ব ডঃ এ পি জে আবদুল কালাম পরমাণু বিজ্ঞানী অবস্থায় ১৮-ঘন্টা কাজ করতেন। অন্যদিকে তিনি অসাধারণ সুন্দর 'বীণা' বাজাতে পারতেন। ছোটবেলায় পিতাকে সাহায্য করতে মাত্র ৫ বছর বয়সে পড়াশোনার সাথে সাথে পত্রিকা বিক্রির কাজও করেছেন। তাঁর আত্মজীবনীর নাম- উইংস অব ফায়ার।
আজ তাঁর জন্মদিবসে আমাদের সশ্রদ্ধ শ্রদ্ধাঞ্জলি।
আবুল পাকির জয়নুলাবদিন আবদুল কালাম (১৫ অক্টোবর, ১৯৩১ - ২৭ জুলাই ২০১৫)
পিতা- জয়নুল আবেদিন
মাতা- আশিয়াম্মা
🇮🇳জয়হিন্দ্
-সোমনাথ@s.sinha
তথ্যসূত্র: উইংস অব ফায়ার।

*কাচ* _সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়_ছেলেবেলায় আমি তো একটু দুষ্টু ছিলুম। সবাই বলত, ভীষণ দুষ্টু। একদণ্ড স্থির হয়ে বসতে জানে না। আ...
15/10/2025

*কাচ* _সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়_
ছেলেবেলায় আমি তো একটু দুষ্টু ছিলুম। সবাই বলত, ভীষণ দুষ্টু। একদণ্ড স্থির হয়ে বসতে জানে না। আমার মা বলতেন, ‘ওইটাকে নিয়েই হয়েছে আমার ভীষণ জ্বালা। সারাদিন আমার এতটুকু শান্তি নেই।’
আমি লক্ষ্মী হওয়ার চেষ্টা যে করতুম না তা নয়। বইপত্র নিয়ে বসতুম। দু-এক পাতা হাতের লেখা করতে না করতেই মাথাটা কেমন হয়ে যেত। নীল আকাশে নিলুর ঘুড়ি লাট খাচ্ছে, পাশের মাঠে প্রতাপ আর গোপাল ডাংগুলি খেলছে। মাথার আর কী দোষ!
আমরা তখন খুব একটা পুরোনো বাড়িতে থাকতুম। বাড়িটার দুটো মহল ছিল বারমহল আর অন্দরমহল। অনেক ঘর। চওড়া, টানা-টানা বারান্দা। তিনতলার ছাতটা ছিল বিশাল বড়। ইচ্ছে করলে ফুটবল খেলা যেত। সেখানে পাশাপাশিদুটো ঘর ছিল। কেউ একটু নির্জনে থাকতে চাইলে থাকতে পারত। একটা ঘরে থাকত আমার দিদির যত খেলনা—বড় পুতুল, ছোট পুতুল। দিদির বন্ধুরা বিকেলে এসে খেলা করত। আমি মাঝে মাঝে এসে দুষ্টুমি করতুম। দিদি তখন তার বন্ধুদের বলত, ‘দ্যাখ, ভাই কী বানর ছেলে!’ দিদি আমাকে বানর বললে আমার খুব ভালো লাগত। আমি দুষ্টুমি করলে দিদিরও খুব ভালো লাগত মনে হয়। মাঝে মাঝে প্রবল লড়াই হত। তখন দিদি বলত, ‘দেখবি, যখন কোথাও চলে যাব তখন বুঝবি ঠেলা। কে তোকে গরমের ছুটিতে আচার তৈরি করে খাওয়ায় দেখব।’
রোজ রাত্তিরে বাড়িতে একটা কুরুক্ষেত্র কাণ্ড হবেই হবে। বাবা অফিস থেকে এসে আমাকে পড়াতে বসবেন। সারাদিনের লাফালাফিতে ঘুমে আমার চোখ দুলে আসবে। জানা জিনিসও ভুল করব। বাবা পরপর যোগ করতে দেবেন। একটাও ঠিক হবে না। ‘উইক’ বানানটা ভুল হবেই হবে। দুর্বলটা সপ্তাহ হবে, সপ্তাহটা দুর্বল। বাবা মাকে ডেকে বলবেন, ‘সারাটা দুপুর তুমি করো কী? ছেলেটাকে একটু দেখতে পারো না!’
মা তখন ফিরিস্তি দেবেন ছেলে এই করেছে, ওই করেছে। বাবা গম্ভীর মুখে উঠে গিয়ে লম্বা বারান্দায় পায়চারি করবেন আর আক্ষেপ করবেন, ‘নাঃ, হল না, কিছুই হল না। ফেলিওর, ফেলিওর।’ রাতে খেতে বসে বলবেন, ‘কালিয়া, পোলাও খেয়ে কী হবে, ছেলেটাই যার মানুষ হল না!’
এত কাণ্ডতেও আমার কিছু হবে না। ঘুমিয়ে পড়ব। একসময় দিদি এসে আস্তে আস্তে ডাকবে, ‘চল, খাবি চল। কাল থেকে একটু ভালো করে পড়বি। তোকে বকলে আমার খারাপ লাগে।’ কোনও-কোনওদিন দিদি আমাকে খাইয়ে দেয়।
এইভাবেই চলতে চলতে গরমের ছুটি পড়ে গেল। একদিন দুপুরবেলা সবাই ঘুমোচ্ছে। আমিও মায়ের পাশে শুয়েছিলুম। দিদি কয়েকদিনের জন্য মামার বাড়ি গেছে। শুয়ে থাকতে থাকতে উঠে পড়লুম। ঘুমিয়ে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। মা যে-ঘরে, তার পাশের ঘরে একটা টেনিস বল নিয়ে কেরামতি করছি। এখন থেকে প্র্যাকটিস না করলে, বড় হয়ে পেলের মতো খেলোয়াড় হব কী করে! বাবাই তো বলেছেন, ‘সাধনাতেই সিদ্ধি।’
প্রথমে সাবধানেই সবকিছু করছিলুম, হঠাৎ ভীষণ উত্তেজিত হয়ে মারলুম এক শট। বাবার বইয়ের আলমারির সব কাচ ভেঙে চুরমার! পাশের ঘর থেকে মা দৌড়ে এলেন। ধড়াধ্বাম। মারাটাই আমাকে উচিত ছিল; কিন্তু বাবা বলেছেন, ‘একদম গায়ে হাত তুলবে না। ভয় ভেঙে যাবে। অন্য শাস্তি দেবে।’
মা আমাকে টানতে টানতে ছাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে দিলেন, ‘থাকো এইখানে, বাবা এলে তোমার বিচার হবে। বড্ড বেড়েছ তুমি। নির্জলা উপবাস।’
চারপাশে খাঁ-খাঁ করছে রোদ। দুপুরের নীল আকাশে গোটাকতক চিল উড়ছে। জানলার ধারে বসে আছি মনখারাপ করে। বাবাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আলমারির সব কাচ চুর হয়ে গেল। খুব অন্যায় হল। কবে যে আমি মানুষ হব! এইসব ভাবছি। ভীষণ গরম। একটুও হাওয়া নেই। গাছের একটা পাতাও নড়ছে না। শেষকালে মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছিলুম। গায়ে কেউ হাত রাখল। ধড়মড় করে উঠে বসলুম। সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন বাবা। আকাশে তখনও শেষবেলার রোদ। ভয়ে কুঁকড়ে গেলুম। বাবার মুখের দিকে তাকালুম, হাসছেন। স্বপ্ন দেখছি না তো! দরজার দিকে তাকালুম। হাটখোলা। তখন আমি অবাক হয়ে জিগ্যেস করলুম, ‘বাবা! আজ আপনি এত তাড়াতাড়ি এলেন?’
কোনও উত্তর নেই। বাবা হাসছেন। কেবল হাসছেন।
আমি বললুম, ‘বাবা, আমি সব কাচ ভেঙে ফেলেছি। আমি খুব অন্যায় করেছি বাবা।’
বাবা তবু হাসছেন। মুখে এতটুকু রাগ নেই। আমি তখন প্রণাম করার জন্য বাবার পা স্পর্শ করতে গেলুম, দেখি কেউ কোথাও নেই। ঘর ফাঁকা। দরজাটা হাটখোলা। খুব জোর হাওয়া ছেড়েছে গ্রীষ্মের বিকেলের।
আমি ভয়ে কেমন যেন হয়ে গেলুম! স্বপ্ন দেখেছি। নিশ্চয় স্বপ্ন। সাহস একটু ফিরে পেতেই এক ছুটে নীচে। দেখি মা রান্নাঘরে ঘুগনি তৈরি করছেন। আমাকে দেখে অবাক, কী করে এলি, কে তোকে দরজা খুলে দিল?’
বাবা ঘুগনি খেতে ভালোবাসেন, মা সেই জন্যই করছেন। কাচ ভাঙা নিয়ে ভীষণ কাণ্ডটা হয়ে যাওয়ার পরেই ঘুগনি এসে অবস্থাটাকে সামাল দেবে।
মাকে আমি সব কথা বললুম।
‘তোর বাবা এসেছে? কোথায়?
‘দরজা তো বাবাই খুলে দিলেন।’
সদরের দরজা আমি খুলে না দিলে আসবে কী করে?
গোটা বাড়িটা সার্চ করা হল। বাবার পড়ার ঘর, শোওয়ার ঘর, ঠাকুরঘর, বাথরুম। আলনাটা দেখা হল। সেখানে বাবার অফিসের জামাকাপড় ছাড়া নেই। বাড়িতে ফিরে যা পরবেন, সেইগুলোই গুছোনো রয়েছে।
আমরা তখন পাশের বাড়িতে গিয়ে বাবার অফিসে ফোন করলুম। অফিসের বড়কর্তার সঙ্গে মা কথা বললেন। জানা গেল। বাবা অনেক আগেই সাইটে গেছেন। সাইট মানে উলুবেড়িয়ায়। সেখানে কোম্পানির নতুন ফ্যাকট্রি তৈরি হচ্ছে।
মা খুব অনুরোধ করলেন, ‘আপনি নিজে একটু খবর নিন। মনে হচ্ছে, একটা কিছু হয়েছে।’ ফোন নম্বরটা তাঁকে দেওয়া হল। টেলিফোনটাকে ঘিরে আমরা বসে আছি। বসেই আছি। ওদিকে মায়ের ঘুগনি পুড়ে ছাই। এক ঘণ্টা পরে ফোন বাজল।
কনস্ট্রাকশন সাইটে একটা লোহার বিম ক্রেন ছিঁড়ে বাবার মাথায় পড়ে গেছে। তখন বেলা ঠিক সাড়ে চারটে। আমি এমন বোকা ছিলুম, সেই খরবটা পেয়েই আমি নাকি মাকে বলেছিলুম, ‘জানো, আমি কাচ ভেঙেছি বলে বাবা একটুও রাগ করেননি। শুধু হাসছিলেন।’
তখন আমার বয়েস ছিল আট। আজ আশি। আমি আর কোনওদিন কিছু ভাঙিনি। না কাচ, না সম্পর্ক, না পরিবার, না জীবন। বাবার সেই হাসি-হাসি মুখের হাসি যাতে কখনও না মিলিয়ে যায়, সেই চেষ্টা আমি করেছি।
✍️শ্রদ্ধেয় সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

পঙ্কজ ধীর: কর্ণের মৃত্যুতে শেষ হলো এক মহাকাব্যিক অধ্যায়ভারতীয় টেলিভিশনের ইতিহাসে “মহাভারত”-এর কর্ণ চরিত্রটি আজও অমর। স...
15/10/2025

পঙ্কজ ধীর: কর্ণের মৃত্যুতে শেষ হলো এক মহাকাব্যিক অধ্যায়

ভারতীয় টেলিভিশনের ইতিহাসে “মহাভারত”-এর কর্ণ চরিত্রটি আজও অমর। সেই কর্ণ, অভিনেতা পঙ্কজ ধীর,আজ আর নেই। ৬৮ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তাঁর প্রয়াণে ভারতীয় বিনোদন জগৎ হারাল এক শক্তিশালী, মার্জিত এবং অনন্য অভিনেতাকে।

১৯৫৬ সালের ৯ নভেম্বর মুম্বইয়ে জন্মেছিলেন পঙ্কজ ধীর। তাঁর বাবা সি. এল. ধীর ছিলেন এক নামী চলচ্চিত্র পরিচালক। তাই ছোটবেলা থেকেই সিনেমার পরিবেশে বড় হওয়া পঙ্কজের স্বপ্ন ছিল একদিন নিজেও পরিচালনার জগতে প্রবেশ করবেন।

কিন্তু ভাগ্য তাঁকে টেনে নেয় অভিনয়ের জগতে, আর সেখানেই তিনি গড়ে তোলেন নিজের এক অমোঘ অবস্থান।
১৯৮০ সালে এম. এস. সত্যুর কন্নড় ছবি ‘বরা’ দিয়ে তাঁর চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা। পরে সেই ছবির হিন্দি সংস্করণ ‘সুখা’ (১৯৮৩)-তেও অভিনয় করেন তিনি। ধীরে ধীরে ‘বেখবর’ (১৯৮৩), ‘মেরা সুহাগ’ (১৯৮৭), ‘জীবন এক সংগ্রশ’ (১৯৯০)—এর মতো ছবিতে অভিনয় করলেও নায়ক হিসেবে তেমন সাফল্য পাননি। কিন্তু তাঁর প্রতিভা নজর এড়ায়নি।

তারপরই এলো ১৯৮৮ সাল,বি. আর. চোপড়ার মহাকাব্যিক ধারাবাহিক ‘মহাভারত’, যেখানে কর্ণের ভূমিকায় পঙ্কজ ধীর চিরস্মরণীয় হয়ে যান।

তাঁর সংযত সংলাপ, বেদনামিশ্রিত মুখাভিনয়, আর মর্মস্পর্শী আবেগ আজও দর্শকের মনে অমর। ‘মহাভারত’ ভারতজুড়ে এক সাংস্কৃতিক জোয়ার তুলেছিল, আর কর্ণের রূপে পঙ্কজ ধীর হয়ে উঠেছিলেন নায়কোচিত বেদনার প্রতীক।

পরবর্তীতে তিনি অভিনয় করেন জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কানুন’, ‘চন্দ্রকান্তা’ (রাজা শিবদত্ত), ‘দ্য গ্রেট মরাঠা’ (সদাশিবরাও ভাউ), ‘যুগ’ (আলি খান)-এ। তাঁর ‘চন্দ্রকান্তা’র রাজা শিবদত্ত চরিত্রটি নব্বই দশকের টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় খলনায়ক হিসেবে আজও স্মরণীয়।
চলচ্চিত্রে তিনি কাজ করেছেন ‘সদাক’ (১৯৯১), ‘সোলজার’ (১৯৯৮), ‘বাদশাহ’ (১৯৯৯), ‘তুমকো না ভুল পায়েঙ্গে’ (২০০২), ‘আন্দাজ’ (২০০২), ‘জমিন’ (২০০৩), ‘তারজান: দ্য ওয়ান্ডার কার’ (২০০৪), ‘গিপ্পি’ (২০১৩) সহ একাধিক ছবিতে।

টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি নিজেও পরিচালক হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করেন। ১৯৯৮ সালে পাঞ্জাবি ছবি ‘সাড্ডা মুকাদ্দর’ দিয়ে পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করেন। ২০১৪ সালে তাঁর হিন্দি ছবি ‘মাই ফাদার গডফাদার’ সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল।

ব্যক্তিগত জীবনে পঙ্কজ ধীরের স্ত্রী অনীতা ধীর, আর তাঁদের পুত্র নিকিতিন ধীর বর্তমানে বলিউডে পরিচিত মুখ। নিকিতিনের স্ত্রী টেলিভিশন অভিনেত্রী কৃতিকা সেঙ্গার, তাঁদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

২০০৬ সালে ভাই সতলুজ ধীরকে সঙ্গে নিয়ে পঙ্কজ ধীর স্থাপন করেন ‘ভিসাজ স্টুডিওজ’, এবং ২০১০ সালে তিনি শুরু করেন ‘অভিনয় অ্যাক্টিং অ্যাকাডেমি’, যেখানে গুফিPaintal (শকুনি মামা) ছিলেন শিক্ষক মণ্ডলীর প্রধান।

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পঙ্কজ ধীর সক্রিয় ছিলেন অভিনয় জগতে—‘সসুরাল সিমর কা’, ‘দেবোঁ কে দেব মহাদেব’, ‘আজুনি’, এমনকি ওয়েব সিরিজ ‘পয়জন’ (২০১৯) পর্যন্ত।

আজ তাঁর প্রয়াণে শুধু এক অভিনেতা নয়, টেলিভিশন যুগের এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল। কর্ণের মুখে একদিন শোনা গিয়েছিল,

“দানই আমার ধর্ম, কিন্তু ভাগ্য আমার নয়।”
আজ মনে হয়, পঙ্কজ ধীর যেন নিজের জীবনেও সেই কর্ণেরই এক প্রতিরূপ,অদম্য, গৌরবময়, কিন্তু মিতভাষী।
তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।



#সংগৃহীত

শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের কিছু লেখা পড়ছি। কবিতা। এই কবিতাটা পড়ে থমকে গেলাম। সিপাহী বিদ্রোহের পর দিল্লী ...
15/10/2025

শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের কিছু লেখা পড়ছি। কবিতা। এই কবিতাটা পড়ে থমকে গেলাম। সিপাহী বিদ্রোহের পর দিল্লী থেকে বন্দি সম্রাটকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঠিক তার আগে শেষ মুঘল সম্রাট লেখেন এই কবিতা। সব হারানো দিল্লীকে নিয়ে। পড়ে বেশ খানিক থম মেরে বসে ছিলাম।

বিশ্বাস করুন অপটু হাতের এই অনুবাদ একেবারে যোগ্য হয়নি হয়তো। কিন্তু কেন জানি না বড্ড ইচ্ছে হল অনুবাদ করতে...

রেশমখানি অঙ্গে ধরে তব
ধাঁধিয়েছিলে আমার দুটি চোখ,
আধফোটা ফুল হৃদয়কমলতলে
এই ঋতুরাজ তোমার সঙ্গী হোক।

প্রাণের সাথে চলে প্রাণের খেলা
তেমনি ছিলে ঘ্রাণের মত মোর
সময় হলে সবার যেতে হয়-
তুমিও গেলে ভেঙে সুখের দোর।

অধর ছুঁয়ে অধর কথা বলে
হৃদয় জানে ব্যথার গোপন সুর
পাছে তোমার ভালবাসায় পড়ি
তোমায় ছেড়ে যাচ্ছি বহু দূর

আশার আলো নিভছে চিরতরে
মনকে আমি বোঝাই নাকো আর
ধুলোয় ছিলাম, ধুলোয় ফিরে যাব
আমায় আজ কারই বা দরকার?

দিল্লী তুমি আমার দেবপুরী
আদর যেন বইত হাওয়ার ভেলা
এখন তুমি জ্বলতে থাকা চিতা
জমতে থাকা কান্না, অবহেলা।

রাস্তা জুড়ে শবের স্তুপ জমে
চোখের জল শুকিয়ে গেছে যেন
মৃতেরা সব নেই তো কোনখানে
দিল্লী, তুমি এমন হলে কেন?

ছিন্ন হৃদয়, ছিন্ন মাংস-হাড়
মনন জ্বলে দীর্ঘ সব শ্বাসে
রক্তপুরী, সব হারাদের দেশ
আমার চোখ সজল হয়ে আসে।

চিরটাকাল সঙ্গে কে আর থাকে?
সবার ভাগ্যে সব ভাল কি সয়?
মনে ভাবি পরম নবীর বাণী
সকল কিছু ভালোর জন্য হয়।

#সংগৃহীত

বিশ্বের প্রথম ট্রেনের ইতিহাস শুরু হয় ১৯ শতকের গোড়ার দিকে, যা শিল্পবিপ্লবের এক নতুন যুগের সূচনা করে চলো বিস্তারিতভাবে দেখ...
14/10/2025

বিশ্বের প্রথম ট্রেনের ইতিহাস শুরু হয় ১৯ শতকের গোড়ার দিকে, যা শিল্পবিপ্লবের এক নতুন যুগের সূচনা করে

চলো বিস্তারিতভাবে দেখি —
---

🚆 বিশ্বের প্রথম ট্রেন: সূচনা

বিশ্বের প্রথম ট্রেন চালু হয় ১৮০৪ সালে, ইংল্যান্ডে।
এই ট্রেনটি নির্মাণ করেছিলেন রিচার্ড ট্রেভিথিক (Richard Trevithick) নামের এক ব্রিটিশ প্রকৌশলী।
এটি ছিল স্টিম ইঞ্জিনচালিত (steam-powered) ট্রেন — অর্থাৎ কয়লা জ্বালিয়ে বাষ্প তৈরি করে সেই শক্তিতে ট্রেন চলতো।
---

🛤️ প্রথম যাত্রা

📅 তারিখ: ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৮০৪

📍 স্থান: ওয়েলসের পেনাইডারেন (Penydarren), মেথির টিডফিল থেকে অ্যাবারসিনন (Abercynon) পর্যন্ত

🚉 দূরত্ব: প্রায় ১৫ কিলোমিটার (৯ মাইল)

🚗 গতি: প্রায় ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার

👥 যাত্রী ও পণ্য: এই ট্রেন মূলত কয়লা পরিবহনের জন্য তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এর সাথে কিছু যাত্রীও ছিল

---

🔧 ট্রেনের কাঠামো ও শক্তি

এটি ছিল লোহা তৈরি চাকা ও রেললাইনের ওপর চলা একটি বিশাল বাষ্পচালিত যন্ত্র।

ট্রেনটির নাম ছিল Penydarren Locomotive

ট্রেভিথিকের এই উদ্ভাবনই পরবর্তীতে রেলওয়ে বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করে।

---

🌍 পরবর্তী উন্নয়ন

রিচার্ড ট্রেভিথিকের এই ট্রেনই অনুপ্রেরণা দেয় পরবর্তীতে
জর্জ স্টিফেনসন (George Stephenson)-কে, যিনি ১৮২৫ সালে
বিশ্বের প্রথম যাত্রীবাহী রেললাইন “Stockton and Darlington Railway” চালু করেন।
এই লাইন দিয়েই আধুনিক রেলওয়ে যুগের সূচনা হয়।
এটি ছিলো বিশ্বের প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন ||

---

🏁

★প্রথম ট্রেন চালু ১৮০৪ সালে
উদ্ভাবক রিচার্ড ট্রেভিথিক
দেশ ইংল্যান্ড
শক্তির উৎস বাষ্প (Steam Engine)
প্রথম রুট Penydarren → Abercynon
উদ্দেশ্য কয়লা পরিবহন

★বিশ্বের প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন ১৮২৫ সাল
উদ্ভাবক - স্টিফেনসন

---

১৮০৪ সালে ট্রেন আবিষ্কার হয় কয়লা পরিবহনের জন্য
১৮২৫ সালের ট্রেন আবিষ্কার হয় যাত্রী পরিবহনের জন্য

💬 রোমাঞ্চকর তথ্য

প্রথম ট্রেনটি এত ভারী ছিল যে রেললাইন মাঝে মাঝে বাঁকিয়ে যেত!

সেই সময় মানুষ ভয় পেত যে এত গতিতে (৮ কিমি/ঘণ্টা!) চললে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে

#সংগৃহীত

রনবীর কাপুরের পরিবার বলিউডের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও প্রভাবশালী পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম — “কাপুর পরিবার”। এই পরিবার বহু প্র...
14/10/2025

রনবীর কাপুরের পরিবার বলিউডের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও প্রভাবশালী পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম — “কাপুর পরিবার”। এই পরিবার বহু প্রজন্ম ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে রাজত্ব করছে। 👇
---
🕴️ ১. পৃথ্বীরাজ কাপুর (Prithviraj Kapoor)

কাপুর পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ভারতের প্রথমদিকের চলচ্চিত্র অভিনেতা ও থিয়েটার শিল্পী ছিলেন।
জন্ম: ১৯০৬
বিখ্যাত চলচ্চিত্র: আওয়ারা, মুঘল-এ-আজম
---
👑 ২. রাজ কাপুর (Raj Kapoor)

পৃথ্বীরাজ কাপুরের বড় ছেলে এবং বলিউডের “শো-ম্যান” নামে পরিচিত।
জন্ম: ১৯২৪
বিখ্যাত ছবি: আওয়ারা, শ্রী ৪২০, ববি, মেরা নাম জোকার
স্ত্রী: কৃষ্ণা মালহোত্রা কাপুর
সন্তান: রন্ধির কাপুর, ঋষি কাপুর, রাজীব কাপুর
---
🎬 ৩. রন্ধির কাপুর (Randhir Kapoor)

রাজ কাপুরের বড় ছেলে। তিনি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক।
স্ত্রী: বাবিতা কাপুর (সাবেক অভিনেত্রী)
কন্যা: করিশ্মা কাপুর ও করিনা কাপুর খান
---
🎭 ৪. ঋষি কাপুর (Rishi Kapoor)
রাজ কাপুরের দ্বিতীয় ছেলে এবং রনবীর কাপুরের বাবা।
জন্ম: ১৯৫২
মৃত্যু: ২০২০
বিখ্যাত ছবি: ববি, অমর আকবর অ্যান্টনি, চাঁদনি, কর্জ
স্ত্রী: নিতু কাপুর (নিতু সিং) – তিনিও একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন।
সন্তান: রনবীর কাপুর (অভিনেতা) এবং রিদ্ধিমা কাপুর সাহনি (ফ্যাশন ডিজাইনার)
---
🌟 ৫. রনবীর কাপুর (Ranbir Kapoor)

ঋষি ও নিতু কাপুরের ছেলে, বর্তমানে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা।
জন্ম: ১৯৮২
বিখ্যাত ছবি: বছনা এ হাসিনো, রকস্টার, ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি, সঞ্জু, তু ঝুটি মেই মক্কার
স্ত্রী: আলিয়া ভাট, তিনিও বলিউডের অন্যতম শীর্ষ অভিনেত্রী।
কন্যা: রাহা কাপুর (২০২২ সালে জন্ম)
---
👪
কাপুর পরিবার এক শতাব্দী ধরে ভারতীয় সিনেমায় রাজত্ব করছে। পৃথ্বীরাজ কাপুর থেকে শুরু করে আজকের রনবীর কাপুর ও আলিয়া ভাট পর্যন্ত, এই পরিবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

গদাধর বাবু দীর্ঘদিন স্কুলে শিক্ষকতা করে অবসর নিয়েছেন । পেনশন পান। ওতে স্বামী স্ত্রীর ভালো ভাবেই চলে যায়। উনি কলকাতায় ...
14/10/2025

গদাধর বাবু দীর্ঘদিন স্কুলে শিক্ষকতা করে অবসর নিয়েছেন । পেনশন পান। ওতে স্বামী স্ত্রীর ভালো ভাবেই চলে যায়। উনি কলকাতায় একটি সুন্দর ফ্ল্যাট কিনেছেন,,এখন ওখানেই থাকেন। ছেলে মেয়েরা বাইরে থাকে। সুপ্রতিষ্ঠিত।
গদাধর বাবুর গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার খুব ইচ্ছে হল,,,সেইমত গোছগাছ করে ফেললেন,, কিন্তু,ওনার চিন্তা হল,, এতদিন ফ্ল্যাটটা ফাঁকা পড়ে থাকবে,,,যদি চোর ঢোকে,,টাকাপয়সা,সোনার গহনা তো কিছু পাবে না,তখন যদি জিনিষপত্র তছনছ করে দেয়, নষ্ট করে দেয়,, তাতে ও তো অনেক ক্ষতি! অনেক ভেবে উনি একটি উপায় বের করলেন।
সেন্টার টেবিলের উপর দুটি ৫০০ টাকার নোট পেপার ওয়েট চাপা দিয়ে রেখে দিলেন,, সঙ্গে একখান চিঠি,,,
" সম্মানীয়,চোর সাহেব,,
আমি কিছু দিনের জন্য আমার গ্রামের বাড়িতে যাইতেছি। ইত্যবসরে, আপনি যদি দয়া করিয়া আমার ফ্ল্যাটে পদার্পন করেন,,তো আপনার দুঃখ হইতে পারে,,কারন, টাকা কড়ি,সোনাদানা কিছুই পাইবেন না,,,কারন,আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, সামান্য কিছু পেনশন পাই,তাহাতেই সংসার চালাই,,, আপনার কঠোর পরিশ্রম ফলপ্রসূ না হওয়ায় দুঃখ হইবে,সেটা প্রচন্ড রাগ,রোষে পরিণত হইতে পারে,আর রাগের মাথায় আমার কষ্টার্জিত জিনিষপত্র ভাঙচুর করিয়া ফেলা খুবই স্বাভাবিক। তাই, সামান্য উপহার হিসেবে ১০০০ টাকা রাখিয়া গেলাম, আর ফ্রিজে একটি ব্রিটানিয়া কেক এবং একটি বিয়ারের বোতল রাখিয়া গেলাম,, আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফলে ক্ষুধা লাগিলে খাইয়া লইবেন।
তবে, আমি আপনাকে কিছু টিপস্ দিতেছি,,,স্কুলে অসংখ্য ছাত্র দের অদ্যাবধি অনেক টিপস্ দিয়াছি,,তারা এখন সব বিশাল ব্যক্তি হইয়া গিয়াছে, আপনার ও আশা করি কাজে লাগিবে,,,
১নং , আমার ফ্ল্যাটের মুখোমুখি সি ব্লকের ৬ তলায় রমেশ বাবু থাকেন,ওনার একটি ছোট দোকোন ছিল,,এখন
উনি মিনিষ্টার,,,প্রচুর টাকার মালিক।
২নং,,,উহার ৫ তলায় সুরেশ বাবুর
হাওলার ব্যবসা,,লাখ লাখ টাকার
কারবার।
৩নং,,, ওহার পাশে সি ব্লকের ৪ তলায় হেলারাম
বাবু কারখানার মালিক,
৪নং,,,,,উহার নীচে পাচুবাবুর তেজারতির ব্যবসা
টাকার কমি নাই।
এইসব বাড়ি গুলি আপনি পরিদর্শন করিতে পারেন,,,,আপনার পরিশ্রম বিফল হইবে না,, তাছাড়া ওনারা কেউই ইডি, সিবিআই এর ভয়ে পুলিশে খবর দিবেন না,,,সে বিষয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন।"
ব্যস,চিঠি লেখা শেষ, চিঠিটি টাকার সঙ্গে পেপার ওয়েট দিয়ে চাপা দিয়ে রাখলেন এবং খুশী মনে গদাধর বাবু সস্ত্রীক গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। সেখানে ছোটবেলার বন্ধু দের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা মারলেন,, গ্রামের টাটকা শাকসবজি, পুকুরের টাটকা পোনা মাছ, সকালে খেজুর রস, খেজুর গুড়,পাটালি খেয়ে মাস দুই পর কলকাতায় ফিরে এলেন।
ফ্ল্যাটে ঢুকেই অবাক,,, কিছুই হয় নি,,সব ঠিকঠাক আছে। হঠাৎ,ডাইনিং টেবিলের দিকে তাকাতেই নজর পড়ল,,, টেবিলের উপর দুটো ৫০০ টাকার বান্ডিল রয়েছে,তার নীচে একখান চিরকুট,,
" সম্মানীয় মাষ্টার মশাই,
প্রণাম। আপনার টিপস্ দারুন কাজে লেগেছে,,,ঐ ফ্লাটগুলি পরিদর্শন করে প্রচুর টাকা ও সোনাদানা সংগ্রহ করতে পেরেছি,,এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয় নি। তাই,উপঢৌকন হিসেবে এক লাখ টাকা রেখে গেলাম। আর,ফ্রিজে দুটো ব্লাক লেবেল whiskey র বোতল এবং দুকেজি
Dry fruit এর প্যাকেট রেখে গেলাম। মাঝে মাঝে এমনি টিপস্ দিলে খুবই বাধিত হব। আমাদের মত গরীব, পিছিয়ে পড়া,খেটে খাওয়া মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আপনি নিশ্চয়ই সচেষ্ট থাকবেন।"
আপনার কথামত" চোর সাহেব"
🙏 নমস্কার নেবেন

#সংগৃহীত

আজ থেকে ষাট সত্তর বছর আগে কোন অভিজাত বনেদি বাড়িতে কাজের লোক সকালবেলা বাসন মাজতে গিয়ে অসাবধানতাবশত একটি কাপ ভেঙে ফেলার পর...
14/10/2025

আজ থেকে ষাট সত্তর বছর আগে কোন অভিজাত বনেদি বাড়িতে কাজের লোক সকালবেলা বাসন মাজতে গিয়ে অসাবধানতাবশত একটি কাপ ভেঙে ফেলার পর...

বাড়ির গিন্নি ঠুক করে একটা শব্দ পেতেই দেখে, মহা অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে ভজার মা। বিস্ফারিত চোখে মাথা দুলিয়ে বিলাপ আর তিরস্কার শুরু করেন তিনি।

"ওমা গো কী সব্বনাশ হল আমার! রাজস্থান থেকে আনা চিনামাটির অমন সুন্দর কাপখান ভেঙে দিলে গো।
বলি চোখের মাথা খেয়েছিস? হতভাগী তোকে কাজে রাখাই আমার ভুল হয়েছে।"

ভজার মা কাঁপা কাঁপা হাতদুটো জোড়া করে করুণ সুরে বলে, মা ঠাকরুন খ্যামা দ্যান। আর কক্ষনো এই ভুল করব না।

---তুই বিদায় হ আমার বাড়ি থেকে।

---অমনটি করবেন না গিন্নিমা। আমার বেতন থেকে না হয় কাপের দামটা কেটে নেবেন পরের মাসে।

---টাকার গরম দেখাচ্ছিস আমাকে? ওরকম একটা কাপ এনে দিতে পারবি? বাপের জন্মে দেখেছিস এমন বাহারি কাপ? চোখের সামনে থেকে এক্ষুনি দূর হ লক্ষীছাড়ি।

শতছিন্ন কাপড়ের খুঁটে চোখের জল মুছতে মুছতে গৃহস্থ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ভজার মা।

*
ওই একই ঘটনা যখন বর্তমান সময়ে ঝিঙ্কুর মা ঘটিয়ে ফেলে....

ফাটা কাঁসির মত গলা তুলে ঝিঙ্কুর মা ডাকে, ও বৌদি, বৌদি এদিকে আসেন একবার।

বৌদি মানে বাড়ির মালকিন ঘুম ঘুম চোখে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে সামনে এসে বলে, কী হল ডাকছিস কেন?

আপনাকে বলেছিলাম এইসব কাপ-প্লেট আমাকে দিয়ে মাজাবেন না।

কেন কী হয়েছে?

আরেকটু হলে কাপ মাজতে গিয়ে আমার আঙ্গুল কেটে যাচ্ছিল।

সে কী রে! কীকরে?

একেবারে পাতলা কাপ। মাজতে গিয়ে ফটাস।

আচ্ছা এবার থেকে তোকে দিয়ে আর কাপ মাজাবো না।

আপনি বলেন, কিন্তু কথা রাখেন না। সেবারও একখান প্লেট ভেঙে আমার পায়ে আরেকটু হলেই ফুটে যেত। তারপরও আমাকে দিয়ে কাপ মাজাচ্ছেন। এবার থেকে হয় পেতলের কাপে চা খাবেন নাহলে অন্য লোক দেখে নেবেন। এরকম হলে আমি আর কাজে আসতে পারব না।

এরকম বলিস না। তুই কাজে না এলে আবার কোথায় লোক পাব বল। বললাম তো, আর তোকে দিয়ে কাপ-প্লেট মাজাবো না।

আর হ্যাঁ, টেটভ্যাক ইংজ্যাশিন নিবো। পঞ্চাশ টাকা দিবেন।

তোর তো আঙ্গুল কাটেই নি। ইঞ্জেকশন কেন নিবি? রক্ত বেরোলে তবেই নিতে হয়।

আঙ্গুল চিড়ে গেছে। ঘর মোছামুছি করতে গিয়ে চাপ পড়লেই ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়বে।

ঠিক আছে কাজ শেষ হলে নিয়ে নিস।

আরেকটা কথা। ইংজ্যাশিনে খুব ব্যথা হয়। তিনদিন কাজে আসতে পারব না।

এটা শোনার পর গৃহকর্ত্রী মাথা ঘুরে মেঝতে লুটিয়ে পড়ার উপক্রম হলে সঠিক সময়ে গৃহকর্তা ঘর থেকে ছুটে এসে পিলারের মতো সামনে দাঁড়িয়ে বুক পেতে দেয়।
এরপর স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, ডার্লিং এত টেনশন নিচ্ছ কেন? আমি তো আছি। ঠিক ম্যানেজ করে নেব।

©Santu Saha

#সংগৃহীত

মহানায়কের সাথে সুমিত্রা দেবী।❤️❤️
14/10/2025

মহানায়কের সাথে সুমিত্রা দেবী।

❤️❤️

Address

Baranagar

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Pritisha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Pritisha:

Share

Category