12/10/2025
📒 #বিজয়ার চিঠি
✍ #মৌসুমী দত্তরায়
প্রিয় বন্ধু,
প্রথমেই জানাই শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা, ভালোবাসা আর বড়োদের জন্য রইল প্রণাম। ভালো থেক, সুস্থ থেক।
অনেকদিন চিঠি লেখা হয়নি, অথচ চিঠির এক মায়া আছে। রোদ্দুরের চিঠি হাঁপাতে হাঁপাতে ঝড় জলে কাক ভিজে হয়ে পৌঁছায়। বিজয়ার চিঠি, লক্ষী পুজো পেরিয়ে, কালীপুজোর দোরগোড়ায়। তবুও সে চিঠিতে থাকে মায়াভরা ভালোবাসা।
আমার এই চিঠি, শুরু করেছি কদিন আগে, বিজয়ার আগেই, আর এখন সুবিধে মতন দিন বদল করে যাচ্ছি। আশা রাখি আজ ইতি টানতে পারবই।
এখন উৎসবের দিন। দুর্গা পুজো শেষের পর্ব পেরিয়ে আগামী কোজাগরি পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে আজকের পরেই। সকালে বিসর্জনের শাঁখ বেজেছে, দর্পণ বিসর্জন থেকে শুরু করে, বরণ, সিঁদুর খেলা শেষে, বৃষ্টি মাথায় করেও অনেক মণ্ডপ ও বাড়ির ঠাকুর বিসর্জন হয়ে গেছে। শুরু হয়েছে অপেক্ষার, আগামী বছরের জন্য। কলকাতা এখনো পুরো দমে মেতে আছে পাগল করা উৎসবে। দিন রাত একাকার, মানুষের ঢল রাজপথে, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। আলোতে আলোকময়, গানে বাজনায়, অনুষ্ঠানে মুখর। মানুষের সুখ, গরম দুধের মতন উথলে পড়ছে। কিন্তু আমি দূরে, অনেক দূরে। অন্য উৎসবে।
আমি এখন আরবানাতে। এই ইউনিভার্সিটি শহরটি আমেরিকার ইলিনয় রাজ্যে। সব থেকে বড়ো শহর শিকাগো থেকে গাড়িতে আড়াই ঘণ্টা দূরে। আমি এখন যে বাড়িতে আছি তার কথা অন্য একদিন বলব।
আজ ২ অক্টোবর, শরৎ বিষুব (Autumnal Equinox), পেরিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সূর্যের অবস্থান যেখানে, সেই অনুযায়ী এখন দিনের আয়ু কমতে শুরু করেছে, আর রাতের ভাগ বেড়েছে। আবার ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে দিন বাড়বে। আমার বাড়ির সামনের রাস্তাটি কোবেল স্টোনের (cobble stone) আর দুধারে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন গাছের সারি, সময়ের সঙ্গে ফিসফিস করে, শরৎ এসে পড়েছে একটি জীবন্ত পোস্টকার্ডের মতো। যেন কোনো পুরোনো বইয়ের পাতা বা ইম্প্রেশনিস্ট এর পেইন্টিং থেকে উঠে এসেছে। সবে রং ধরতে শুরু করেছে। আলতো রঙেরই ছোঁয়া এদিকে ওদিকে ছিটিয়ে। কদিন বাদেই লাল, হলুদ, কমলা, আর সোনালি পাতার মেলা, ওক, ম্যাপল, আর বার্চ গাছের শাখায় শাখায় নেচে উঠবে। এমিলি ডিকিনসনের কথায় কবিতায়,
“The morns are meeker than they were, / The nuts are getting brown; / The berry’s cheek is plumper, / The rose is out of town.”
গতকাল আমার ছোট্টো বন্ধু তাইতাইয়ের সঙ্গে ফোনে গল্প করছিলা। তখন সে বলল, "আমার তো স্কুল কাল ছুটি, কাল ইয়োম কিপুর, কাল সবাই ফরগিভনেস চাইবে!"
ম্যানহাটানে, আমি যে পাড়াতে থাকি লিংকন স্কোয়ার, সেখানে ইহুদিরা (Jews) সংখ্যা গরিষ্ঠই বলা যায়, তাই তাদের নানান অনুষ্ঠানের সাথে কিছুটা আলাপ পরিচয় আছে। আজ, ২ অক্টোবর ২০২৫, ইহুদি উৎসবের 'ডেজ অফ অ' (Days of Awe) এর সমাপ্তি ঘটছে ইয়োম কিপুরে (A Day of Atonement), যার শুরু হয়েছিল, রোশ হাশানাহ থেকে। রোশ হাশানাহ, ইহুদিদের নতুন বছরের উৎসব, ২০২৫ সালে ২২ সেপ্টেম্বর সূর্যাস্ত থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত্রি পর্যন্ত পালন করা হয়েছে। আমাদের নতুন বছরের উৎসবের মতন এদেরও একইরকম। পুরোনো বছরকে পিছু ফিরে দেখা আর নতুন বছরের জন্য প্রার্থনা, শুভ কামনা, নতুন আশা ভাবনা শুরু। নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে শোফার (Shofar horn) (রাম ছাগলের শিং দিয়ে বানানো শিঙা) বাজানো হয়। ঠিক যেন আমাদের শাঁখ বাজানোর মতন। ওরা আপেল-মধু খেয়ে এবং তাশলিখ (Tashlich) অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে। হিব্রু শব্দ "তাশলিখ' এর অর্থ 'নিক্ষেপ করা' বা 'ছুঁড়ে ফেলা', জীবনযাপনের যা কিছু অশুভ, খারাপ, পাপ বা অপরাধগুলিকে জীবন থেকে সরিয়ে ফেলার অঙ্গীকার। প্রতীক হিসেবে ছোটো ছোটো রুটির টুকরো, "মন্ত্র" উচ্চারণের সঙ্গে সমুদ্রে, নদীতে বা কোনো জলাশয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হয়। রুটির টুকরোগুলোই পাপ বা অশুভর প্রতীক। নিজের মনেই নিজের প্রতিফলনকে অনুভব করতে হয়। এই আচার নিয়ম রোশ হাশানাহর প্রথম দিনের দুপুরে পালন করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো তেশুবাহ (Teshubah) (প্রায়শ্চিত্ত) এবং নতুন বছরের জন্য আত্মশুদ্ধির প্রস্তুতি।
এখানে কোথাও যেন আমাদের মহালয়ার তর্পণের সঙ্গে এক সুরে মিলে যায় এই রোশ হাশানাহ, তাশলিখ আর তেশুবাহ। শাঁখের আওয়াজে শোফার এর সুর। আমাদের মহালয়া এবারে ছিল ২১ সেপ্টেম্বর, আর রোশ হাশানাহ ২২-২৪ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়েছে। তার সঙ্গে তাশলিখও সেই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, ইয়োম কিপুরের (২ অক্টোবর) আগের 'আশ্চর্যের দশ দিন', The Days of Awe। আর মহালয়া থেকে বিজয়া দশমী, আক্ষরিক অর্থেই আমাদের "The Days of Awe"। এসব ভাবতে ভাবতেই Whatsappএ ভেসে আসে অবাঙালি বন্ধুর দশেরার শুভ কামনা।
নভরাত্রির শেষে, দশ দিনের দিন দশেরা। দশেরায় রাবণের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর মধ্যে দিয়ে যে দশটি খারাপ গুণকে ধ্বংস করা হয়, তা হলো: কাম (Lust): কামনা বা অতিরিক্ত বাসনা। ক্রোধ (Anger): রাগ বা হিংসা। লোভ (Greed): কোনো কিছুর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত লোভ মোহ, (Delusion): মায়া বা বিভ্রম।মদ (Pride): অহংকার বা গর্ব। মাৎসর্য (Envy): ঈর্ষা বা পরশ্রীকাতরতা, মনস (Mind): মনের অস্থিরতা। বুদ্ধি (Intellect): জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তা খারাপ কাজে ব্যবহার করা, চিত্ত (Will): খারাপ ইচ্ছাশক্তি, আর অহংকার (Ego): আত্মগর্ব বা নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করা। এখানেও রাবণের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোটাও পুরোপুরি প্রতীকী। আমাদের যা কিছু খারাপ, তা পুড়ে ছাই হয়ে যাক আর সেই আগুনের মধ্যে দিয়েই যেন আমাদের আত্মশুদ্ধি হয়।
আমরা রাজনীতির বেড়া তৈরি করে মানুষে মানুষে যতই বৈরিতা তৈরি করি না কেন, আসলে দুর্গা পুজো আর নবরাত্রি একই গল্প বলে, যা কিছু অশুভ, যা কিছু পাপ, যা কিছু ক্ষতিকর, মাতৃশক্তির দ্বারা বিনাশ করা। এই উৎসব বিজয় উৎসব, আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে জীবনকে সুন্দর করে তোলার আয়োজন।
দশেরার মহত্ত্ব কী? শেখায়, জীবনে যদি কোনো রাবণ-মহিষাসুর আসে, যেমন অহংকার, ভয় বা অন্যায় – তাহলে ধৈর্য, সত্য আর শক্তি দিয়ে তাকে জয় করো। বাংলায় দুর্গাপূজা, গুজরাতে বা উত্তর ভারতে নবরাত্রি থেকে দশেরা, দক্ষিণে গোলু বা কোলু, দশেরা, আয়ুধা (আমাদের বাঙালির বিশ্বকর্মা পুজো), উত্তরপূর্বে বিহু, সব জায়গায় এই নানান উৎসব আলো ছড়ায়। নতুন ফসলও ঘরে ওঠার সময়, তাই চাই নতুন জামা, নানারকমের খাবার, নতুন সাজে ঘরদোর সাজিয়ে তোলা, আর আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে কিছু সুন্দর সময় কাটানো।
আর আমার কাছে এখানের শরৎ কাল একটি কবিতার পোস্টকার্ড। প্রকৃতি আর মানুষের জীবনে রং মাখানো নরম রোদের পশম।
প্রিয় লেখক Ray Bradbury র Farewell Summer এ সেই সন্ধিক্ষণের কথা বলেছেন, "Learning to let go should be learned before learning to get. Life should be touched, not strangled."
শরতের দিন আর রাতের মাঝে এক অন্য উৎসব। সূর্যের আলো আর পৃথিবীর অক্ষ দূরে দূরে সরে যায়, এ জীবনে সবকিছুই এই পরিবর্তনের পথে, তবু এই মুহূর্তটুকুই ধরে রাখার প্রয়াস। পাথরের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে শুকনো পাতার মচমচে শব্দ কানে আসছে। বাতাসে ভেসে আসে চড়ুই, রবিন, আর কার্ডিনালের কিচিরমিচির।
এই শহরে, ইউনিভার্সিটির পুরোনো ইটের বাড়িগুলোর মাঝে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের স্বপ্ন নিয়ে ব্যস্ত। মাটিতে ছোটো ছোটো মাশরুম মাথা তুলছে, যেন রাতের নীরবতায় তারা গোপনে জেগে উঠেছে। পিঁপড়ের সারি, তাদের ছোট্ট ছোট্ট পায়ে পায়ে অদম্য শৃঙ্খলতা বজায় রেখে শুকনো পাতা আর ঝরে পড়া ফুলের পাপড়ির মাঝে খাবারের সন্ধানে চলেছে। মৌমাছি আর প্রজাপতির দল, তাদের গুঞ্জনে শরতের শেষ ফুলগুলোর মধু সংগ্রহ করে নিচ্ছে ভায়োলেট কোনফ্লাওয়ার আর ব্ল্যাক-আইড সুসানের মাঝে ঘুরে ঘুরে। ড্যান্ডেলিয়নের হলুদ ফুল, যেগুলো কিছুদিন আগে সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করছিল, এখন স্নোফ্লেকের মতো সাদা হয়ে বাতাসে ভেসে যাচ্ছে। একটি মোনার্ক প্রজাপতি, তার কমলা-কালো ডানায় শরতের রোদের ছোঁয়া নিয়ে, ফুলের উপর নাচছে। গোলাপের পাপড়ি মাটিতে ঝরে পড়েছে, একটি বিষণ্ণ সুন্দর মৌনমুখরতা।
নদীর ধারে রিভার ওটস-এর {River Oats) সারির পাশে, ঝোপের আড়ালে তিনখানা হরিণ লুকোচুরি খেলছে।
অল্প কিছু দূরে, গাছের ফাঁক দিয়ে যেখানে রোদ্দুর চিকিমিকি, কাঠবিড়ালিরা, তাদের লেজ নাচিয়ে, অ্যাকর্ন আর শুকনো ফল দুহাতে ধরে লেজ তুলে কুড়মড় করে খেয়ে চলেছে।
ঘরের কোণে একটা পুরোনো কাঠের টেবিলে রাখা আছে আপেল, নাশপাতি, আর কয়েকটা কুড়িয়ে আনা অ্যাকর্ন, ঠিক যেন কোনো পুরোনো ইম্প্রেশনিস্ট এর মডেল। কিছুক্ষণ পরে এসে তুলিতে রঙ নিয়ে শুরু করবে তাঁর আঁকার কাজ। টেবিলের পাশে জানালা দিয়ে কিচেন থেকে ভেসে আসছে ওভেনে বেক হওয়া আপেল পাইয়ের মিষ্টি গন্ধ। শরতের নরম ঠাণ্ডা হাওয়া আর শুকনো পাতার গন্ধ সঙ্গে মিশে এই অযত্নময় জীবনেও একটি নিখুঁত ছবি তৈরি করছে।
জন কিটস থাকলে বলে উঠতেন, “Season of mists and mellow fruitfulness, / Close bosom-friend of the maturing sun,”
শরতের এই সময় ঠিক একখানা বিজয়ার চিঠি, যেখানে সবাই নিজেদের একটা করে গল্প বুনে চলেছে। ছোটো, বড়ো, মাঝারি। আসলে তো, সবই আপেক্ষিক।
শরৎকাল, প্রকৃতির এক অপূর্ব রূপান্তরের সময়। শরৎ হয়ে ওঠে বিশ্বের সকল সংস্কৃতির উৎসবের ঋতু। যে ফসল ফলিয়েছে কৃষক, সেই শ্রমের পুরস্কার পাওয়ার সময় এই শরৎকাল। সেই কবেকার প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ফসল কাটার পর ধন্যবাদ জানিয়েছে দেবতা বা প্রকৃতিকে। আমাদের দুর্গা পূজাও এই উৎসবগুলোতে খাবার, নাচ-গান, আলোকসজ্জা এবং পরিবারের সবার সাথে এক সাথে আনন্দ ভাগ করে নেবার মতো সময়।
অথচ এই নিস্তব্ধ নিসর্গ সৌন্দর্যের পেছনে, দূরে, একটি অস্থির পৃথিবী জেগে আছে। যুদ্ধের আগুন চারদিকে জ্বলছে, খেতে না পেয়ে শিশুরা মারা যাচ্ছে, সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। চারপাশে চলেছে আনন্দ, দান, ত্যাগের উৎসব কিন্তু সেই উৎসবের যা মোক্ষ তা হারিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে গেছে। আলোর পেছনের অন্ধকার, হাহাকার কষ্ট, দুঃখ, খিদে, অসুখ বেড়েই চলে।
আলোর সামনের উন্মাদনায় তাদের চোখে পড়ে না স্বাস্থ্যসেবার ব্যর্থতা, রুগ্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, আর দু'বেলা খাবার জোগাড়ের লড়াই। — এই সবই যেন এই পোস্টকার্ডের পিছনের অদেখা দিক।
তবু, এই শরতের গড়ানো দিনে, পাথরের রাস্তার পাশে বেঞ্চে বসে একজন ছাত্র বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছে। তার পাশে একটি প্রাচীন ম্যাপল গাছ, যার পাতাগুলো ধীরে ধীরে মাটিতে ঝরে পড়ছে। দূরে, ক্যাম্পাসের ঘণ্টা বেজে উঠল। সকালের কুয়াশা গাছের ডালে এখন অলস ভাবে ঝুলে আছে। আর আশা আর ভরসা হাত ধরে এখানে মনে কিছুটা আরাম আনে।
এই শহরে, যেখানে প্রকৃতি আর মানুষের জীবন পাশাপাশি মিলে আছে সেখানে টুপ করে, শরৎ এসেছে, বিজয়ার দিনে মন কেমন, অদ্ভুত স্মৃতি মেদুরতা।
উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের কবিতায়, “To me the meanest flower that blows can give / Thoughts that do often lie too deep for tears.”
সুন্দরের মাঝে, উৎসবের দিনে হাজারো লুকিয়ে চোখের জল, অসহায়তা — যারা এই শরতের নীরবতায়, জীবনের লড়াইয়ে, তবু বেঁচে থাকার গান গায়।
সবাই ভালো থেকো। আনন্দে থেকো। পাশের মানুষটির খোঁজ রেখো।
ভালোবাসা আর ভালো আশা সব সময়।
ইতি
শুভেচ্ছান্তে মৌসুমী
______________________________________
*মৌসুমী দত্তরায় গত তিন দশক ধরে নিউ ইয়র্কবাসী। ভালোবাসেন বই পড়তে, ছবি আঁকতে, রান্না করতে, আড্ডা দিতে আর ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতে। তবে সবচেয়ে ভালোবাসেন সক্কলকে নিয়ে জমিয়ে বাঁচতে!
**পেজটি #ফলো এবং #লাইক করার জন্য পাঠকবন্ধুদের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।