
08/05/2025
**৩০০০ এরও কম খরচে পাহাড় ভ্রমণ**
একটা সময় ছিল যখন বেড়াতে যেতে ইচ্ছে হলে রাজা হুকুম দিতেন হাতির পিঠে হাওদা সাজানোর। গুপী বাঘা তো স্রেফ হাতে হাতে তালি দিয়েই চলে যেত যেখানে খুশি। এখন সময় অন্য। এখন বেড়াতে যাওয়ার আগে অনেক ভাবনা পেরোতে হয়। প্রথমেই আসে সময়। আজকের ব্যস্ত দিনে লম্বা ছুটি কই? সপ্তাহ শেষের ছোট্ট ছুটিই ভরসা। এতে পকেটের স্বাস্থ্যও ঠিক থাকে।
এ পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন, "এক রাতে কি পাহাড় ঘোরা হয়?” যদি বলি, হ্যাঁ হয়। নিশ্চয়ই হয়। একরাত দুদিনে খুব ভালো করে ঘুরে দেখা যায় লাভা- লোলেগাঁও - রিশপ। এমনকি কোলাখামের ছাঙ্গে জলপ্রপাতও দেখে নেওয়া যায়। তাও ছুটে ছুটে নয়, রিল্যাক্সে। কিভাবে!? বলছি।
চলুন, এই ট্যুরের জন্য আমরা বেছে নিই 13149
কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসকে। নামব নিউ মাল জংশন স্টেশনে। সকাল তখন নটা পনের। এই রুটে শেয়ার গাড়ি মিলবে না। তাই গাড়ি আগে থেকে বুক করে রাখি। এখানে দল যতো বড়ো হবে, সাশ্রয় ততো বেশি। তারপর নতুন তৈরি লুপ ব্রীজ, যেটা বাগরাকোট হয়ে গেছে সেই পথ ধরে ঘন্টা দেড়েকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাক লোলেগাঁও। লোলেগাঁও এর বিখ্যাত ক্যানোপি ব্রীজ এখন ভগ্নপ্রায়। রাস্তা থেকে মিনিট দশেক হেঁটে যাওয়া যায় সেখানে। তবে মন খারাপই হয়। লোলেগাঁও বাজারে আছে একটা সুন্দর পার্ক। পাশে মানানসই বুদ্ধমূর্তি। অনেকটা সময় কেটে যাবে এখানে। দুপুর হয়ে গেছে। এখানেই লাঞ্চ সারা যাক। ফাইভস্টার লাঞ্চ না কিন্তু, চলনসই। এবার এগোনো যাক লাভার দিকে। লাভায় আছে লাভা ভ্যিউপয়েন্ট। লাভা বাজারে ক্লক টাওয়ার। আর আছে একটা বড়ো মন্যাষ্ট্রি। সেখান থেকে চারপাশটা ভারি সুন্দর দেখতে লাগে। ভিতরের পরিবেশও মন শান্ত করে দেওয়ার মতো। কিছু স্যুভেনির নিতে হলে লাভা বাজারে সেরে নিন কেনাকাটা। এটাও তো বেড়ানোই অঙ্গ, তাই না? ছোট ট্যুর বলে বাদ দেওয়া যাবে না। এবার চলুন যাই রিশপে। লাভাতেও থাকার জন্য আছে বেশ কিছু হোটেল, রিসর্ট আর হোমস্টে। তবু রিশপের কথা কেন বলছি? কারণ রিশপের উচ্চতা। এখানে ঠাণ্ডা বেশি, আর নিরিবিলিও। লোয়ার রিশপে বেশ কয়েকটি থাকার জায়গা থাকলেও আমি বলব, আপার রিশপে যেতে। কারণ বুঝতে পারবেন পরদিন সকালে। যখন হরেক পাখির মিষ্টি গানে ঘুম ভাঙবে। আর বাইরে এসে দেখবেন তারা শুধু দুর্দান্ত গানই গায় না, দেখতেও অপরূপ। সাদা মেঘ পাতলা পর্দার মতো ভেসে যাচ্ছে। হোমস্টের পোষা লাল ঝুঁটি মোরগটা আ্যালার্ম ক্লকের মতো ঘন ঘন ডাকছে। কিন্তু আপনি সেই আ্যালার্ম শুনে প্রতিদিনের মতো বিরক্ত হচ্ছেন না। পাহাড় যে ততোক্ষণে সবটুকু বিরক্তি ব্লটিং পেপারে শুষে নিয়েছে। এরপর চলুন পায়ে পায়ে ঘুরে দেখি হোমস্টের বাগান, বা পায়ে চলা পথ ধরে চলে যাই টিফিনদারা। পরিষ্কার আবহাওয়ায় ওখান থেকে সুন্দর দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। ফিরে এসে, ফ্রেশ হয়ে সেরে নিই ব্রেকফাস্ট। তারপর চেক আউট করে বেরিয়ে পরি। আজ রিশপের ভ্যিউপয়েন্ট ঘুরে পাইন বনে খানিকটা সময় কাটিয়ে আমরা যাব কোলাখাম। সেখানে আছে একটা চমৎকার ঝর্ণা। ছাঙ্গে ফলস্। অনেক উপর থেকে জলধারা লাফিয়ে পড়ছে নিচে। তারপর একটা ছোট্ট ব্রীজের তলা দিয়ে একটু গিয়েই সে লুকিয়ে পরেছে একটা গুহার গভীরে। প্রকৃতির অপূর্ব খেয়ালে। তাকে দেখতে গেলে বেশ খানিকটা পথ নীচে নামতে হবে। সেই পথের কোথাও ঢালু পথ, কোথাও সিঁড়ি। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যথা হলে পথের পাশে আপনারই মতো কেউ রেখে গেছে লাঠি, তুলে নিন। এসব পাহাড়েই মেলে। ওঠার সময় চড়াইএ কাজে লাগবে।
এরপর চলুন ফিরে যাই নিউ ম্যাল জংশনে। বিকাল পাঁচটা তিরিশের ডাউন কাঞ্চনকন্যায় চেপে বাড়ি ফিরতে হবে তো!
যেতে যেতে খরচের ছোট্ট হিসেবটা একটু দেখে নিই। আটজনের গ্রুপ ধরে খরচের হিসেব:
Bolero Car ₹3500 × 2 = 7000
Lunch (Veg) ₹100 × 8 = ₹800
Stay (With Dinner and Breakfast): ₹1200 × 8 = ₹9600
Train Ticket (Sealdah - New Mal Jn): ₹360 × 8 × 2 times: ₹5760
Per head : ₹2895 + 70 Entry ticket
Video link: https://youtu.be/nuoCdJnGH-M
Sylvan Stay: 8145329903
আমরা যেখান থেকে গাড়ি ও Room বুক করেছিলাম: 9476375958