PCA Diary

PCA Diary এই ডায়েরির খোলা পাতা, পথ চলতে ভালোবাসা মানুষজনের গল্প ধরে রাখে, যেখানে নটেগাছ কখনও মুড়োয় না।
ডায়েরি 👉 খেয়া ✒️, বিমল 📸 ও পথ চলতে ভালোবাসা সব্বার

বন্ধুত্ব। এমন একটা শব্দ যার আকর্ষণ অমোঘ। বড়োরা বলেন আজকালকার দিনে ভালো বন্ধু কেবল ভাগ্যবানেরই জোটে। সেদিক থেকে নিজেকে ভ...
04/10/2025

বন্ধুত্ব। এমন একটা শব্দ যার আকর্ষণ অমোঘ। বড়োরা বলেন আজকালকার দিনে ভালো বন্ধু কেবল ভাগ্যবানেরই জোটে। সেদিক থেকে নিজেকে ভাগ্যবানই বলব। জীবনে ভালো বন্ধু কিছু কম পাই নি। বরং মাঝে মাঝে মনে হয় এতো ভালো বন্ধু পাওয়ার যোগ্যতা আমার আছে কি?

আজ থেকে ষোল বছর আগের কথা। বিয়ের পর সেটা ছিল আমাদের দ্বিতীয় বেড়াতে যাওয়া। যাচ্ছিলাম বিশাখাপত্তনম থেকে জগদলপুর। সেই বিখ্যাত কিরন্ডুল প্যাসেঞ্জার ট্রেনে। অনেকগুলো টানেল পেরিয়ে আরাকু ভ্যালি ছুঁয়ে সে বিকেলে পৌঁছবে জগদলপুর। প্যাসেঞ্জার ট্রেন হওয়ায় ভীষণ ভীড়। আমরা গেছিলাম ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে। তারা স্টেশনে পৌঁছে জানিয়ে দিল সীট জোগাড় করতে হবে নিজের দায়িত্বে। ট্রেনে সাংঘাতিক ভীড়। এমনকি লাগেজ রাখার জায়গাতেও ঠেলাঠেলি করে বসে সবাই। যাই হোক কোনোমতে দুটো সীট পেলাম। ট্রেন যেন মুড়ির টিনের মতো। ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে কি করে যেন সব খাপে খাপে বসে গেলাম। তারপর দেখি, আমাদের মুখোমুখি বসে আছে আমাদেরই মতো এক নতুন দম্পতি। প্রথমে কিছুক্ষণ তাকানো, হাসি পেরিয়ে আলাপ হলো মনিকার সঙ্গে। হিন্দি আর ইংরেজি মিশিয়ে। সে যাচ্ছে তার বাপের বাড়ি। জগদলপুরে। শ্বশুরবাড়ি বিশাখাপত্তনম থেকে রেলপথে ঘন্টা দুয়েক দূরে বোব্বিলি। ওর বর অর্জুন। উনি তেলেগুতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। তবে তাতেও কিছু যায় আসে না। ওনার কিছু বলার থাকলে উনি বলছেন তেলেগুতে। আর মনিকা সেটা অনুবাদ করছে হিন্দি বা ইংরাজিতে। তারপর যেমন হয়। একসাথে গল্প করতে করতে কেটে গেল বারোটা ঘন্টা। অসংখ্য টানেল পেরিয়ে একটা রোমাঞ্চকর ট্রেন সফর শেষে আমরা পৌঁছে গেলাম জগদলপুর। সেদিন সন্ধ্যায় কোন সিডিউল ছিল না। মনিকা বাড়ির গাড়ি নিয়ে এলো। সারা সন্ধ্যে ওদের সাথে ঘুরলাম জগদলপুর শহর। পরদিন আমাদের প্যাকড প্রোগ্রাম। ফিরতে রাত হল। মনিকার সঙ্গে আর দেখা হলো না। আমরা পরদিন সকাল সকাল রওনা হলাম আরাকু ভ্যালির পথে। এবার গাড়ীতে।
আর দেখা হয় নি আমাদের। মাঝে পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো বছর। ওর ভাইয়ের বিয়েতে নেমন্তন্ন হয়েছে আমাদের। আমার মেয়ের অন্নপ্রাশনে ওদের। কিন্তু কোন না কোন কারণে আসা বা যাওয়া হয়ে ওঠে নি। ফোনও যে নিয়মিত হয় তা নয়। প্রথম প্রথম আমরা চিঠি লিখতাম। সেই সব লম্বা লম্বা চিঠি আমাদের এনে দেয় অনেক কাছাকাছি। তারপর পোস্ট অফিস বাদ সাধলো। আমাদের চিঠি আর পৌঁছয় না। কিন্তু ততোদিনে বন্ধুত্বের ভিতটা শক্ত হয়ে গেছে। মাঝের বছরগুলোতে আমাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মনিকা হারিয়েছে ওর মা বাবা এমনকি অনাগত সন্তানকেও। আমার মা ও ছেড়ে চলে গেছে আমাকে। সেই সব হাহাকারের মুহূর্তে আমরা পাশে থেকেছি দুজন দুজনের।
এবছর পঞ্চমীর দিন কোলকাতা এসে কয়েক ঘণ্টার জন্য আমার বাড়ি এসেছিল আমার বন্ধু। আর আজ আমি আবার একবার কিরন্ডলু প্যাসেঞ্জারে। ট্রেনটা অনেক বদলে গেছে। আগের সেই লড়াই করে সীট জোগাড় পেরিয়ে আমরা চেপে বসেছি ঝকঝকে ভিস্টাডোমে। সহযাত্রীরা নানান ভাষাভাষী। আগের বারের মতোই। তফাৎ একটাই। সবাই মোবাইলে ব্যস্ত। মুহুর্তকে মুঠো বন্দী করার নেশায়। বন্ধুত্বের সুযোগ এখন আর নেই।

24/09/2025

Riverside cafe, Charmana, Gaitanpur beside Damodar River







22/09/2025

বর্ধমানে দামোদর নদ ও কাশফুল

আজ ভীষণ মেঘ করুক। মন ভেজানো মেঘ। আমরা দুজন বেড়িয়ে পরি পাকদন্ডী পথে। না মেঘকে ভয় পাই না আমরা। মেঘ দেখলে এখন আর উদ্বিগ্...
15/09/2025

আজ ভীষণ মেঘ করুক। মন ভেজানো মেঘ। আমরা দুজন বেড়িয়ে পরি পাকদন্ডী পথে। না মেঘকে ভয় পাই না আমরা। মেঘ দেখলে এখন আর উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজ নিই না নীচে নামার সব রাস্তা ঠিক আছে কিনা। ধস নামেনি তো কোথাও! এতো দিনে জানা হয়ে গেছে আমাকে কাছে রাখতে তুমি কি কি করতে পারো! তাই মেঘ দেখলে আমি রামধনু রঙের ছাতাটা নিয়ে নেমে পরি পথে। তারপর তোমাকে খুঁজতে বেড়িয়ে পরি। পথ চলতে চলতে কোন এক বাঁকে গাছের ফাঁকে হারিয়ে যাওয়া সেই শ্যাওলা রঙা পথটা ঠিক খুঁজে নিই। যেখানে অপেক্ষায় আছো তুমি। তারপর পাইন বনে নেমে আসা মেঘেদের সঙ্গে হারিয়ে যাই।

কোথায় যেন পড়েছিলাম বিরহেই প্রেমের পরিণতি। আজ আর মনে নেই। জানি না আমরা যা-ই পড়ি, তা-ই সত্যি কিনা। তবে যখন বিরহের একপ্র...
14/09/2025

কোথায় যেন পড়েছিলাম বিরহেই প্রেমের পরিণতি। আজ আর মনে নেই। জানি না আমরা যা-ই পড়ি, তা-ই সত্যি কিনা। তবে যখন বিরহের একপ্রান্তে থাকে কুয়াশার চাদর ঘেরা পাহাড়, দু’হাত বাড়িয়ে যে অপেক্ষায় আছে শুধু তোমার জন্য আর অন্য প্রান্তে নিষ্ঠুর জীবনযুদ্ধ, তখন মনে হয় সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে পালিয়ে যাই তার কাছে। শুধু তার কাছে। তার জন্য নিজেকে সাজাই। তার মতো করে। যদি বলো,পাহাড়ে যারা থাকে তাদের কি জীবনযুদ্ধে লড়তে হয় না? আমি বলব এখানেই তফাৎ বৌ আর প্রেমিকার।

তারপর চলতে চলতে এক নদীর সঙ্গে দেখা। নদী তাকে জিজ্ঞেস করে না কিছু। সেও কোন প্রশ্ন করে না। শুধু নদীর জলে ভাসিয়ে দেয় তার ...
13/09/2025

তারপর চলতে চলতে এক নদীর সঙ্গে দেখা। নদী তাকে জিজ্ঞেস করে না কিছু। সেও কোন প্রশ্ন করে না। শুধু নদীর জলে ভাসিয়ে দেয় তার পূরণ না হওয়া যতো স্বপ্ন। ছোটবেলায় যেমন ভাসাতো রঙিন কাগজের নৌকো। নদী তার স্বপ্নগুলোকে আগলে রাখে বুকের মধ্যে। তারপর এগিয়ে চলে। পথে যেতে যেতে যদি হঠাৎ দেখা পায় সেই কিশোরীর, যে তার পাশে এমনি এসে বসে; বড়ো বড়ো চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে। তার হাতে সাবধানে তুলে দিতে হবে না-পূরণ হওয়া স্বপ্নগুলো। এভাবেই বয়ে চলে জীবন।

সবুজ পাহাড় না। লাস্যময়ী সমুদ্র না। জঙ্গল অনেক হয়েছে।  চলো একবার যাই মরুভূমি। সে অন্তত কোন মিথ্যা স্বপ্ন দেখায় না। সে...
12/09/2025

সবুজ পাহাড় না। লাস্যময়ী সমুদ্র না। জঙ্গল অনেক হয়েছে। চলো একবার যাই মরুভূমি। সে অন্তত কোন মিথ্যা স্বপ্ন দেখায় না। সে আমাদের নিয়ে যায় বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে। যে মাটি নরম সবুজ গালিচায় মোড়া নয়, সেখানে পায়ের পাতা ছোঁয় উষ্ণ বালি। বালি আর বালিয়াড়ির এই প্রেম বাস্তবের ঘামে ভেজা। এখানে প্রতি পদক্ষেপে লড়াই। যা আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় লড়ে জিতে নিতে। সাফল্যের লাল বলটা জিততে গেলে কোন শর্টকাট নেই। আর তাই চলো একবার অন্তত যাই মরুভূমি। শিখে আসি লড়ে বাঁচার মন্ত্র। বেড়াতে গিয়ে হুডখোলা জীপে ভরপুর আনন্দ সফর শেষে ফিরতি পথে সূর্যাস্তের লাল রঙ যখন এক স্বর্গীয় আবীর ছড়িয়ে দেয়, তখন সারা দিন জ্বালানি কাঠকুটো কুড়িয়ে ফেরা মেয়ের দল গাড়ির পিছনে ছোটে এক বোতল জলের আশায়। তাদের কাছে সূর্যাস্ত মানে একটা লড়াইয়ের দিন শেষ ছাড়া আর কিছুই নয়।

আমি মানুষটা খুব একটা যে ঝগড়ুটে তা নয়। কিন্তু একজনের সঙ্গে আমার ভীষন রাগারাগি। এই জুলাই মাসের সঙ্গে। ভারী কিপ্টে সে। রব...
19/07/2025

আমি মানুষটা খুব একটা যে ঝগড়ুটে তা নয়। কিন্তু একজনের সঙ্গে আমার ভীষন রাগারাগি। এই জুলাই মাসের সঙ্গে। ভারী কিপ্টে সে। রবিবার ছাড়া ক্যালেন্ডারের পাতায় লাল রঙ দেবেই না। মাঝে মাঝে মনে হয় কিশোরকুমারকে দিয়ে সে-ই জোর করে গাইয়েছিল, ইয়ে লাল রঙ, কব মুঝে ছোড়ে গা…।
অথচ ভরপুর বর্ষা এসে গেছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা সুতোর মতো জলধারারাও এখন এক একজন পূর্ণ যুবতী ঝর্ণা। ওরা ডাক পাঠাচ্ছে আমাকে। ডাকছে পাহাড়ের গায়ে লেপ্টে থাকা মেঘের দল। ঝুমকো ফুল। বৃষ্টিধোয়া পাইনগাছের সারি। পাকদণ্ডী পথ। আর সেই পথে হাঁটার সময় সঙ্গী হওয়া পথ কুকুররা। অতিথিবৎসল আদুরে এই সব বন্ধুরা কোথা থেকে যে চলে আসে, যেন কতো কালের চেনা। তারপর বেঁধে ফেলে মায়ার বাঁধনে।

পাহাড়ের উপরে একটা ছোট্ট ঘর। ঘরের সামনে ছোট্ট একফালি বারান্দা। সেখানে বেতের চেয়ার। একটা কাচের টেবিল। বারান্দার রেলিং বে...
17/07/2025

পাহাড়ের উপরে একটা ছোট্ট ঘর। ঘরের সামনে ছোট্ট একফালি বারান্দা। সেখানে বেতের চেয়ার। একটা কাচের টেবিল। বারান্দার রেলিং বেয়ে উঠে এসেছে বাহারি লতা। তাকে একদিন লাগানো হয়েছিল বারান্দাকে সাজানোর জন্য। আজ সে নিজেই বারান্দার মালিক। পাখিরা নাম ধরে ডাকে। ঘুম ভাঙে ভালোলাগায়। জানলার বাইরে চোখ রাখি। কাল সারারাত বৃষ্টির পরে একটা ঝকঝকে দিন এসেছে। ঘরে কফি বানানোর সরঞ্জাম রয়েছে। এককাপ কালো কফি নিয়ে বারান্দায় আসি। তারপর বারান্দার কাঠের আগল ঠেলে সামনের ছোট্ট উঠোনে। দুপাশে হরেক গাছ ভীড় করে আসে। সামনে আরেকটা পাহাড়। আর তার মাথার উপর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ যেন একটা সব-পেয়েছি- জীবন।

আমার বড়ো হওয়ার একটা বড়ো অধ্যায় জুড়ে আছে মা এর বইয়ের আলমারি। তার আকর্ষণ এমনি যে ন’বছর বয়স থেকে একলা শোওয়া, বইয়ের...
10/07/2025

আমার বড়ো হওয়ার একটা বড়ো অধ্যায় জুড়ে আছে মা এর বইয়ের আলমারি। তার আকর্ষণ এমনি যে ন’বছর বয়স থেকে একলা শোওয়া, বইয়ের ঘরে। কাঠের সেই আলমারি যেন হীরের খনি। আলমারির নীচের দুটো তাকে থাকত পুরনো দেশ পত্রিকারা। ওপরের তাকের ভাণ্ডার শেষ করে যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন ক্লাস নাইন। বহু পুরনো একটা সংখ্যা দিয়ে দেশ সফর শুরু। সেখানে রয়েছে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত গর্ভধারিনী উপন্যাস। পরপর যে পেলাম তা নয়, তবে একদল যুবক যুবতী সঙ্গে পরিচয় হল, তাদের আদর্শ খুব সামান্য বুঝলেও তাদের অভিযানের সঙ্গী হলাম। তাদের সঙ্গে পালিয়ে গেলাম পাহাড়ে। তাদের সঙ্গে সেইসব অনুন্নত পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষজনকে জরুরি ওষুধপত্র দিতে দিতে স্কুলপড়ুয়া মেয়েটির মনে কখন যে এই সব জায়গার নাম স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়, সে জানতেও পারে না; ঘুম, সুখিয়াপোখরি, মানেভঞ্জন। তারপর বড়ো হয়ে বেশ কয়েকবারই ছুঁয়ে আসা হয়েছে শৈশবের সেই সব জায়গা। ততো দিনে এই সব জায়গাও আর আগের মতো দুর্গম নেই। চুঁইয়ে পরা উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে সেখানকার মানুষজনও। তবু এই সব জায়গা মেয়েটার কাছে স্পেশাল। তাই, একদিনের জন্য ছুঁয়ে এলাম সমরেশ মজুমদারের ঘুমকে। যাকে রূপকথা বানিয়েছে তার ছোট্ট স্টেশন আর কুঝিকঝিক খেলনা ট্রেন।
Date of click: 23/5/25

18/06/2025

একটা ছোট নদী। পাহাড়ের বুক থেকে আলতো পায়ে নেমে আসে। তারপর উচ্ছল পায়ে পাথরের উপর দিয়ে কিছু দূর গিয়েই মিশে যায় তারই মতো আরেকটা নদীর সঙ্গে। একাই পথ চলে সে। আত্মীয় বলতে কেউ নেই। গাছেরা ভালোবাসে তাকে খুব। সব সময় ঘিরে রাখে ঘন সবুজ দিয়ে। কাছেই গ্রাম একটা আছে। কিন্তু সে ঐ পাহাড়ের উপরে। গরমের সময় মাঝে মাঝে দস্যি ছেলেরা আসে দাপাদাপি করতে। আর আসে পাহাড় দেখতে আসা ভ্রমণার্থীরা। মাঝে মাঝে। গ্রামের কোন বাড়িতে অতিথি হয়ে গ্রাম জীবনের স্বাদ নিতে এসে তারা ঘুরতে আসে এখানে। তবে খুব কমজনই আসে এই গ্রামে। ভ্রমণ মানচিত্রে এখনও তেমন পরিচিত নয় এই গ্রাম। আর তাই এখানে এখনও বেঁচে আছে আন্তরিকতা। এখানে এলে মনে হয় সত্যি কোনো আত্মীয়ের বাড়ি এসেছি যেন। আর তারপর কেউ আলসেমিতে গা এলায়, তো কেউ হারিয়ে যাওয়া গ্রামের খোঁজে, সেই যে পাথরে মেলে রকসল্ট, সেখানে যেমন যায়, তেমনি যায় নদী দেখতে। সিঁড়ি গুনে নামার সময় নাম না জানা ফুল আর রংবেরঙের প্রজাপতি দেখতে দেখতে কখন যে ভুল হয়ে যায় সিঁড়ির হিসেব! জঙ্গলের গন্ধে এক অদ্ভুত মাদকতা। চলতে চলতে পথ বেঁধে দেয় বন্ধনহীন গ্রন্থি। একসময় অনুভব হয় হারিয়ে ফেলা শিকড়ের। আর ঠিক তখনই দেখা হয়ে যায় সেই নদীর সঙ্গে।

**৩০০০ এরও কম খরচে পাহাড় ভ্রমণ** একটা সময় ছিল যখন বেড়াতে যেতে ইচ্ছে হলে রাজা হুকুম দিতেন হাতির পিঠে হাওদা সাজানোর। গু...
08/05/2025

**৩০০০ এরও কম খরচে পাহাড় ভ্রমণ**
একটা সময় ছিল যখন বেড়াতে যেতে ইচ্ছে হলে রাজা হুকুম দিতেন হাতির পিঠে হাওদা সাজানোর। গুপী বাঘা তো স্রেফ হাতে হাতে তালি দিয়েই চলে যেত যেখানে খুশি। এখন সময় অন্য। এখন বেড়াতে যাওয়ার আগে অনেক ভাবনা পেরোতে হয়। প্রথমেই আসে সময়। আজকের ব্যস্ত দিনে লম্বা ছুটি কই? সপ্তাহ শেষের ছোট্ট ছুটিই ভরসা। এতে পকেটের স্বাস্থ্যও ঠিক থাকে।

এ পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন, "এক রাতে কি পাহাড় ঘোরা হয়?” যদি বলি, হ্যাঁ হয়। নিশ্চয়ই হয়। একরাত দুদিনে খুব ভালো করে ঘুরে দেখা যায় লাভা- লোলেগাঁও - রিশপ। এমনকি কোলাখামের ছাঙ্গে জলপ্রপাতও দেখে নেওয়া যায়। তাও ছুটে ছুটে নয়, রিল্যাক্সে। কিভাবে!? বলছি।

চলুন, এই ট্যুরের জন্য আমরা বেছে নিই 13149
কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসকে। নামব নিউ মাল জংশন স্টেশনে। সকাল তখন নটা পনের। এই রুটে শেয়ার গাড়ি মিলবে না। তাই গাড়ি আগে থেকে বুক করে রাখি। এখানে দল যতো বড়ো হবে, সাশ্রয় ততো বেশি। তারপর নতুন তৈরি লুপ ব্রীজ, যেটা বাগরাকোট হয়ে গেছে সেই পথ ধরে ঘন্টা দেড়েকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাক লোলেগাঁও। লোলেগাঁও এর বিখ্যাত ক্যানোপি ব্রীজ এখন ভগ্নপ্রায়। রাস্তা থেকে মিনিট দশেক হেঁটে যাওয়া যায় সেখানে। তবে মন খারাপই হয়। লোলেগাঁও বাজারে আছে একটা সুন্দর পার্ক। পাশে মানানসই বুদ্ধমূর্তি। অনেকটা সময় কেটে যাবে এখানে। দুপুর হয়ে গেছে। এখানেই লাঞ্চ সারা যাক। ফাইভস্টার লাঞ্চ না কিন্তু, চলনসই। এবার এগোনো যাক লাভার দিকে। লাভায় আছে লাভা ভ্যিউপয়েন্ট। লাভা বাজারে ক্লক টাওয়ার। আর আছে একটা বড়ো মন্যাষ্ট্রি। সেখান থেকে চারপাশটা ভারি সুন্দর দেখতে লাগে। ভিতরের পরিবেশও মন শান্ত করে দেওয়ার মতো। কিছু স্যুভেনির নিতে হলে লাভা বাজারে সেরে নিন কেনাকাটা। এটাও তো বেড়ানোই অঙ্গ, তাই না? ছোট ট্যুর বলে বাদ দেওয়া যাবে না। এবার চলুন যাই রিশপে। লাভাতেও থাকার জন্য আছে বেশ কিছু হোটেল, রিসর্ট আর হোমস্টে। তবু রিশপের কথা কেন বলছি? কারণ রিশপের উচ্চতা। এখানে ঠাণ্ডা বেশি, আর নিরিবিলিও। লোয়ার রিশপে বেশ কয়েকটি থাকার জায়গা থাকলেও আমি বলব, আপার রিশপে যেতে। কারণ বুঝতে পারবেন পরদিন সকালে। যখন হরেক পাখির মিষ্টি গানে ঘুম ভাঙবে। আর বাইরে এসে দেখবেন তারা শুধু দুর্দান্ত গানই গায় না, দেখতেও অপরূপ। সাদা মেঘ পাতলা পর্দার মতো ভেসে যাচ্ছে। হোমস্টের পোষা লাল ঝুঁটি মোরগটা আ্যালার্ম ক্লকের মতো ঘন ঘন ডাকছে। কিন্তু আপনি সেই আ্যালার্ম শুনে প্রতিদিনের মতো বিরক্ত হচ্ছেন না। পাহাড় যে ততোক্ষণে সবটুকু বিরক্তি ব্লটিং পেপারে শুষে নিয়েছে। এরপর চলুন পায়ে পায়ে ঘুরে দেখি হোমস্টের বাগান, বা পায়ে চলা পথ ধরে চলে যাই টিফিনদারা। পরিষ্কার আবহাওয়ায় ওখান থেকে সুন্দর দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। ফিরে এসে, ফ্রেশ হয়ে সেরে নিই ব্রেকফাস্ট। তারপর চেক আউট করে বেরিয়ে পরি। আজ রিশপের ভ্যিউপয়েন্ট ঘুরে পাইন বনে খানিকটা সময় কাটিয়ে আমরা যাব কোলাখাম। সেখানে আছে একটা চমৎকার ঝর্ণা। ছাঙ্গে ফলস্। অনেক উপর থেকে জলধারা লাফিয়ে পড়ছে নিচে। তারপর একটা ছোট্ট ব্রীজের তলা দিয়ে একটু গিয়েই সে লুকিয়ে পরেছে একটা গুহার গভীরে। প্রকৃতির অপূর্ব খেয়ালে। তাকে দেখতে গেলে বেশ খানিকটা পথ নীচে নামতে হবে। সেই পথের কোথাও ঢালু পথ, কোথাও সিঁড়ি। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যথা হলে পথের পাশে আপনারই মতো কেউ রেখে গেছে লাঠি, তুলে নিন। এসব পাহাড়েই মেলে। ওঠার সময় চড়াইএ কাজে লাগবে।
এরপর চলুন ফিরে যাই নিউ ম্যাল জংশনে। বিকাল পাঁচটা তিরিশের ডাউন কাঞ্চনকন্যায় চেপে বাড়ি ফিরতে হবে তো!
যেতে যেতে খরচের ছোট্ট হিসেবটা একটু দেখে নিই। আটজনের গ্রুপ ধরে খরচের হিসেব:
Bolero Car ₹3500 × 2 = 7000
Lunch (Veg) ₹100 × 8 = ₹800
Stay (With Dinner and Breakfast): ₹1200 × 8 = ₹9600
Train Ticket (Sealdah - New Mal Jn): ₹360 × 8 × 2 times: ₹5760

Per head : ₹2895 + 70 Entry ticket

Video link: https://youtu.be/nuoCdJnGH-M
Sylvan Stay: 8145329903
আমরা যেখান থেকে গাড়ি ও Room বুক করেছিলাম: 9476375958

Address

Bardhaman
Burdwan
713101

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when PCA Diary posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to PCA Diary:

Share