19/05/2025
গতকাল প্রায় দেড় বছর পরে আবারও মঞ্চের আলোকবৃত্তে ফিরে এলাম। একজন নৃত্যশিল্পীর এতটা সময় মঞ্চ থেকে সরে থাকা অবশ্যই কঠিন কাজ , কিন্তু এমন কিছু অভিজ্ঞতা জীবনে রবাহুত হয়ে আসে যার অভিঘাত আত্মস্থ করতে নিজেকে কিছুটা সময় দিতে হয় ... আমি সেই সময়টুকুই নিয়েছি মাত্র । প্রতিনিয়ত জীবনের পাঠশালায় যে শিখে চলা , প্রত্যাশিত , অপ্রত্যাশিত এই শিক্ষা , ভিন্ন ভিন্ন জগৎকে চিনতে শেখা , মানুষ ... নানান প্রকারের মানুষকে জানতে শেখা , মুখ আর মুখোশের আনাচ কানাচ বুঝতে শেখা , আঘাত অপবাদ সইতে শেখা , তাকে গ্রহন করে তারমধ্যে থেকে আলোটুকু আলগা হাতে তুলে নিতে শেখা... হ্যাঁ , এও এক অপূর্ব শেখা বৈ কি ! ঘৃণার ভার বইবো এতো সময় কই আর প্রয়োজনই বা কি ! তাকে অক্লেশে সরিয়ে রেখে পথের বাঁশি বাজিয়ে , খেলার হাসি ছড়িয়ে , রঙিন বসন উড়িয়ে চলবো মহাকালের ছন্দে। জীবন বড়ো ক্ষণিকের , এ সত্য ভুলি কি করে !
আসলে জমাট বাঁধা অন্ধকারের ওপারেই কূলহারা আলোর স্রোত বয়ে চলেছে অপার আনন্দে । তাকে শুধু শান্ত মনে চিনে নেওয়ার অপেক্ষা ,সে জগৎ যতোই তার ওঠাপড়ার ফাঁদ পেতে দিকভ্রষ্ট করুক না কেন !
সবটুকু জীবনই চিনিয়ে দেয় ...সেই ই তো বুঝিয়ে বলে যে কালোয় আলোয় বিরাট সন্ধি ! একে অপরের দোসর তারা , একে অন্যের পরিপূরক। বিভেদ শুধু আমরা সৃষ্টি করে মরি...। এই বিশ্বাসে অবিচল থেকে মঞ্চের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছিলাম। আসলে এই সন্ধিটুকু শিখে নিচ্ছিলাম একমনে। কাল অনেকদিন পরে মঞ্চের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে বুঝলাম অনেক কিছু জুড়ে গেছে এই হৃদয়ে। একে আর নতুন করে ভাঙা যাবে না! যিনি আমায় বহু যত্নে জুড়ে নিলেন তাঁর গভীর প্রেমে , কাল সেই অরূপের উদ্দ্যেশে নিবেদন করেছি
"আমি রূপে তোমায় ভোলাবো না , ভালোবাসায় ভোলাবো ..." সোমালী দি'র কণ্ঠ নিঃসৃত সুললিত এই গান খানি আমার হৃদয়ের অর্ঘ্য হয়ে ঝরে পড়লো তাঁর পায়ে।
"জানবে না কেউ কোন তুফানে ,
তরঙ্গদল নাচবে প্রাণে ..."
জীবনের চরম সত্যের এই স্বর্গীয় মালাখানি নিপুণ শব্দে গেঁথেছেন প্রাণের কবি। সেই দিয়েই আমার নিভৃত পূজা সারা হলো পুণ্যমঞ্চে।
মধুবনী 🌼