28/07/2025
– ভগবানের লীলাময় শৈশব
মাথায় ময়ূরের পালক, মুখে মিষ্টি হাসি, হাতে মাখনের হাঁড়ি – তিনি ছোট্ট কৃষ্ণ। জন্মগ্রহণ করেন মথুরার কারাগারে, মা দেবকী ও পিতা বাসুদেবের কোল আলো করে। মথুরার নিষ্ঠুর রাজা কংস যখন শুনলেন, তাঁর মৃত্যুর কারণ হবে দেবকীর অষ্টম পুত্র, তখনই শুরু হয় অত্যাচারের যাত্রা। কিন্তু ভগবান তো নিজেই লীলা করেন, নিজেই তা পরিচালনা করেন। জন্মের পর অদ্ভুত এক বজ্রবিদ্যুৎপূর্ণ রাতে বাসুদেব তাঁকে গোপনে গোকুলে নিয়ে যান। নদী যমুনা পথ ছেড়ে দেয়, সাপ মাথার উপর ছাতা ধরে রাখে – এমনই ছিল সেই অলৌকিক রাত্রি।
গোকুলে মা যশোদা ও নন্দবাবার ঘরে কৃষ্ণ বড় হতে থাকেন। তাঁর শৈশব ছিল এক লীলার উৎসব। কখনও মাখনের হাঁড়ি চুরি করে বন্ধুদের সঙ্গে খেয়েছেন, কখনও গাছ বেয়ে উঠেছেন, আবার কখনও মা যশোদার কোলে শুয়ে নিষ্পাপ হাসি হেসেছেন। তাঁর এই মিষ্টি চেহারা আর দুষ্টুমিতে সবাই তাকে ভালোবাসতেন, তাই তিনি হয়ে ওঠেন সকলের “নন্দলাল”।
একদিকে তাঁর দুষ্টুমি, আরেকদিকে তাঁর অলৌকিক শক্তি। শিশু অবস্থাতেই তিনি পুতনা রাক্ষসীকে ধ্বংস করেন, যার স্তনে বিষ ছিল। তিনি শকটাসুর, ত্রিনাবর্ত, বকাসুর, অঘাসুর— একের পর এক দানবের বিনাশ করে গোকুলবাসীদের রক্ষা করেন। তাঁর হাতে ছিল স্নেহের মাখন আর শক্তির সুধর্শন।
সবচেয়ে চমৎকার ছিল তাঁর গোপীদের সঙ্গে লীলা। গোপীদের সঙ্গে মাখন চুরি, বাঁশি বাজানো, বনভোজন— সবই ছিল এক আধ্যাত্মিক আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। বিশেষ করে রাধার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চিরন্তন প্রেমের প্রতীক। শিশুকৃষ্ণের এই মায়াময় হাসি ও বাল্যলীলা আজও আমাদের হৃদয়ে আনন্দের সুর তোলে।
শ্রীকৃষ্ণের শৈশব কেবল একটি ধর্মীয় কাহিনী নয়, বরং তা শিশুদের মধ্যে নিষ্পাপতা, সাহস, ভালোবাসা ও ভক্তির প্রতীক। আজকের দিনে, যখন শিশুরা নানা দুঃসময়ের মুখোমুখি হয়, কৃষ্ণের জীবন আমাদের শেখায়— দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন যেন শৈশব থেকেই শুরু হতে পারে।
তাঁর এই লীলাভরা শৈশবকে স্মরণ করেই আমরা বলি, “নন্দ ঘরে আনন্দ भयो, জয় কনাইয়া লাল কি!”
🌸 #ভক্তি #গোপাল #নন্দলাল #রাধাকৃষ্ণ 🌸