23/02/2025
নোটিশ দিয়ে তমলুকের খালপাড়ের বিল্ডিং দ্রুত ভেঙে ফেলার নির্দেশ জেলা শাসকের। প্রশ্ন উঠছে, তমলুকে এই কাজ করা গেলে ভগবানপুরে কেন নয় ?
মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে। খাল পাড়ে অবৈধ নির্মাণ প্রসঙ্গে তমলুকে বললেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি। তিনি আরও বলেন, শুধু নিজেরটা নয়, সবার কথা ভাবতে হবে। খাল সংস্কারের কাজ তদারকি করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তমলুকে কথাগুলো বলেছেন জেলাশাসক।
উল্লেখ্য, বর্ষাকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রতিবছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত বছর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন খাল সংস্কারের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লক, তমলুক ব্লক, কোলাঘাট ব্লক, এবং পাঁশকুড়া ব্লকের মোট ১৩ টি খাল সংস্কারের। গত নভেম্বর মাসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি খাল কাটার নির্দেশ দেন অভিনব টেন্ডার এর মাধ্যমে। টেন্ডারে জেলা প্রশাসনের তরফে সাফ জানানো হয় কোনও টাকা দেওয়া হবে না। উল্টে খাল সংস্কারের পর যে মাটি উঠবে তা নিয়ে যেতে পারবে টেন্ডারপ্রাপ্তরা। তবে কিছুটা মাটি দিতে হবে জেলা প্রশাসনকেও। সেই মতো টেন্ডার পাওয়ার পরে শুরু হয়, খাল কাটার কাজ। তারপরেও বেশ কিছু জায়গায় বাধা পাওয়ায় খাল কাটার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জেলাশাসক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, খাল কাটার কাজে যারা বাধা দান করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তারপর থেকেই ফের শুরু হয় খাল কাটার কাজ।
শুক্রবার শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মিলন নগর এলাকায় গঙ্গাখালি খাল সংস্কারের কাজ পরিদর্শন করেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। খাল সংস্কারের কাজ চললেও দেখা যায় খালের একদম পাশেই নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। তাতেই ক্ষুব্ধ হন জেলাশাসক। তিনি আধিকারিকদের কড়া ভাষায় নির্দেশ দেন দ্রুত নোটিশ জারি করে এই বিল্ডিং ভেঙে ফেলার।
এদিকে ২০২১ সালে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে ভগবানপুর এক, ভগবানপুর দুই ব্লক, পটাশপুর এক ব্লকের কিছুটা অংশ এবং চন্ডীপুর ব্লকের বেশ কিছুটা অংশ প্লাবিত হয়। মহকুমার হিসেবে এগরা, কাঁথি ও তমলুকের লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘদিন জলবন্দি ছিলেন সে সময়। কেলেঘাই নদী তীরের লক্ষাধিক মানুষ চাইছেন উদ্যোগ নিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ খালগুলি সংস্কারে কাজে হাত দিক জেলাশাসক । আগামী দুই তিন মাস কাজ করলে বর্ষার আগে অনেকটা কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। ভগবানপুরবাসীর প্রশ্ন, খাল সংস্কার ও খালের উপর অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ তমলুকে করা গেলে ভগবানপুরে কেন নয় ?