Only Krishna vokti 1632

  • Home
  • Only Krishna vokti 1632

Only Krishna vokti 1632 Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Only Krishna vokti 1632, Digital creator, .

এটা কি ? এটার কাজ কি?হরে কৃষ্ণ। একে শঠারি বলা হয়!লক্ষ্য করলে দেখবেন এর উপরের অংশে ভগবানের চরণচিহ্ন বা পাদুকা বিদ্যমান থ...
25/01/2025

এটা কি ? এটার কাজ কি?
হরে কৃষ্ণ। একে শঠারি বলা হয়!
লক্ষ্য করলে দেখবেন এর উপরের অংশে ভগবানের চরণচিহ্ন বা পাদুকা বিদ্যমান থাকে। যেহেতু পূজারী ব্যতীত আর কেউ ভগবানের বিগ্রহকে স্পর্শ করতে পারে না, অথচ সকলেরই ভগবানের চরণে মস্তক স্পর্শ করা উচিত, তাই ভগবানের চরণচিহ্নযুক্ত শঠারি ভক্তদের মস্তকে স্পর্শ করা হয়। ভগবানের পাদুকার ন্যায় শঠারিরও নিত্য অর্চন করা হয়। ইস্‌কন মন্দিরসমূহে মূলত শ্রীনৃসিংহদেবের চরণচিহ্নসম্বলিত শঠারি প্রদর্শিত হয়।

উল্লেখ্য, শঠ মানে কপটতা, অরি মানে বিনাশকারী। মস্তকে [শঠ+অরি] শঠারি ধারণ করার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের কপট চিন্তা-চেতনা দূরীভূত হয়।

হরে কৃষ্ণ

ধারাবাহিক "আমার গৌরাঙ্গসুন্দর",পর্ব-১৫৩,প্রসঙ্গ-শুদ্ধ কৃষ্ণভক্তির লক্ষণ ।  *❀❈কখন "শুদ্ধ-কৃষ্ণপ্রেম" লাভ হয়?❈❀* *❀অন্য ...
24/01/2025

ধারাবাহিক "আমার গৌরাঙ্গসুন্দর",পর্ব-১৫৩,প্রসঙ্গ-শুদ্ধ কৃষ্ণভক্তির লক্ষণ ।
*❀❈কখন "শুদ্ধ-কৃষ্ণপ্রেম" লাভ হয়?❈❀*
*❀অন্য দেবদেবীর পূজা কৃষ্ণপ্রেমলাভের প্রতিবন্ধক কেনো ?
*❈❀━┉┈কলিযুগ পাবনাবতারী আমাদের গৌরাঙ্গসুন্দর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর প্রিয় পার্ষদ শ্রীরূপ গোস্বামীপাদকে "শুদ্ধ-কৃষ্ণপ্রেম" কিভাবে লাভ করা যায় সেই শিক্ষার মাধ্যমে এই জগতের জীবকে শিক্ষা দিয়ে আমাদের মতো অধম পতিত জীবদের অসীম করুণা বর্ষণ করলেন কিভাবে, তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা হৃদয়ঙ্গম করার প্রয়াস করলে আমরা সেইভাবে নিজেদের "শুদ্ধ-কৃষ্ণপ্রেম" লাভের জন্য তৈরী করতে পারব ও মহাপ্রভু অত্যন্ত প্রসন্ন হবেন।*

*❈❀━┉┈শ্রীরূপ গোস্বামীকে মহাপ্রভু প্রথমে বললেন, চুরাশি লক্ষ প্রকার জীবযোনির মধ্যে চার লক্ষ প্রকারের মনুষ্য আছে। সেই "মানুষের মধ্যে যারা বেদের অনুগামী, তাদেরই কেবল সভ্য মানুষ বলেই গণ্য করা হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধ সংখ্যক মানুষ মুখেই কেবল বেদ মানে তারা বেদে উল্লিখিত যা নিষিদ্ধ, সেই পাপ করে এবং ধর্ম আচরণ করে না।"*

*❈❀━┉┈"বৈদিক জ্ঞানের অনুগমন কারীদের মধ্যে অধিকাংশই সকাম কর্মী। এই প্রকার কোটি কোটি সকাম কর্মী থেকে একজন জ্ঞানী শ্রেষ্ঠ।"*

*"কোটিজ্ঞানীর-মধ্যে হয় একজন 'মুক্ত'।*
*কোটিমুক্ত-মধ্যে 'দুর্লভ' এক কৃষ্ণভক্ত॥*

*❈❀━┉┈এইরকম কোটি কোটি জ্ঞানীর মধ্যে কদাচিৎ একজন মুক্ত হতে পারেন, এবং এই রকম কোটি কোটি মুক্তদের মধ্যে একজন কৃষ্ণভক্ত পাওয়াও দুষ্কর।"*

*❈❀━┉┈কৃষ্ণভক্ত যেহেতু নিষ্কাম, তাই তিনি শান্ত। কিন্তু ভুক্তিকামী কর্মী, মুক্তিকামী জ্ঞানী এবং সিদ্ধিকামী যোগীরা জড় কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত হতে পারিনি বলে অশান্ত।*

*❈❀━┉┈শ্রীমদ্ভাগবতে(৬/১৪/৫) বলছে "হে মহর্ষি কোটি কোটি মুক্ত ও সিদ্ধদের মধ্যে নারায়ন পরায়ণ প্রশান্তাত্মা পুরুষ অত্যন্ত দুর্লভ।"*

*"ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে কোনও ভাগ্যবান্ জীব।*
*গুরু-কৃষ্ণ-প্রসাদে পায় ভক্তিলতা-বীজ॥*

*❈❀━┉┈"জীব তার কর্ম অনুসারে ব্রহ্মাণ্ডে ভ্রমণ করে। কখনো সে উচ্চতর লোকে উন্নীত হয় এবং কখনও নিম্নতর লোকে অধঃপতিত হয়। এইভাবে ভ্রমণরত অসংখ্য জীবের মধ্যে কদাচিৎ কোন একটি জীব তার অসীম সৌভাগ্যের ফলে, শ্রীকৃষ্ণের কৃপায়, সদ্গুরুর সান্নিধ্য লাভ করে। এইভাবে গুরু ও কৃষ্ণ উভয়ের কৃপা প্রভাবে জীব কৃষ্ণ-ভক্তিলতার বীজ প্রাপ্ত হয়।"*

*❈❀━┉┈"সেই বীজ লাভ করার পর, মালী হয়ে সেই বীজকে হৃদয়ে রোপন করতে হয় এবং শ্রবণ কীর্তন-রূপ জল তাতে সিঞ্চন করতে হয়।*

*"উপজিয়া বাড়ে লতা 'ব্রহ্মাণ্ড' ভেদি' যায়।*
*'বিরজা','ব্রহ্মলোক' ভেদি' 'পরব্যোম' পায়॥"*

*❈❀━┉┈"ভক্তিলতার বীজটিতে জল সেচন করার ফলে বীজটি অঙ্কুরিত হয় এবং ভক্তিলতা ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে ব্রহ্মাণ্ডের আবরণ ভেদ করে,জড়-জগৎ এবং চিৎ জগতের মধ্যবর্তী বিরজা নদী অতিক্রম করে, ব্রহ্মলোক বা ব্রহ্মজ্যোতি ভেদ করে পরব্যোম বা চিৎজগতে গিয়ে পৌঁছায়।"*

*❈❀━┉┈তারপর তা তারও উপরে গোলক বৃন্দাবনে গিয়ে পৌঁছায়, এবং সেখানে শ্রীকৃষ্ণের চরণ রূপ কল্পবৃক্ষে আরোহন করে।"*

*❈❀━┉┈গোলক বৃন্দাবনে সেই ভক্তিলতা বিস্তারিত হয়ে 'কৃষ্ণপ্রেম' রূপ ফল প্রদান করেন, আর এখানে, মালী সেই লতাটির গোড়ায় নিত্য শ্রবণ-কীর্তন আদি জল সিঞ্চন করেন।"*

*"যদি বৈষ্ণব-অপরাধ উঠে হাতী মাতা।*
*উপাড়ে বা ছিণ্ডে,তার শুখি' যায় পাতা॥"*

*❈❀━┉┈ভগবদ্ভক্ত যদি এই জড় জগতে ভক্তিলতার সেবা করার সময় কোনও বৈষ্ণবের চরণে অপরাধ করেন, তাহলে ভক্তিলতার পাতা শুকিয়ে যায়। এই প্রকার বৈষ্ণব অপরাধকে মত্ত হস্তীর আচরণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।"*

*❈❀━┉┈অপরাধ রূপ হস্তী যাতে প্রবেশ করতে না পারে, তাই মালি যত্ন করে ভক্তি লতার চারিদিকে বেড়া দিয়ে দেন।"*

*"কিন্তু যদি লতার অঙ্গে উঠে 'উপশাখা'।*
*ভুক্তি-মুক্তি-বাঞ্ছা, যত অসংখ্য তার লেখা॥*
*'নিষিদ্ধাচার','কুটিনাটী', 'জীবহিংসন'।*
*'লাভ', 'পূজা', 'প্রতিষ্ঠাদি' যত উপশাখাগণ॥"*

*❈❀━┉┈"ভুক্তি,(স্বর্গলাভের ভোগবাসনা) মুক্তি,(ব্রহ্মে লীন হওয়ার বাসনা) সিদ্ধি-বাসনা,(অনিমা, লঘিমা আদি আট প্রকার সিদ্ধিলাভের বাসনা) নিষিদ্ধাচার,(যা শাস্ত্রে নিষিদ্ধ সেই আচরণ করা),কুটিনাটি,(সবকিছুতেই দোষ দর্শন করার মানসিকতা) লাভ,(জাগতিক অনিত্য সম্পদ লাভের প্রয়াস) পূজা-প্রতিষ্ঠা(জড় জাগতিক সম্পদ ও সম্মান ও প্রতিষ্ঠালাভ ও সবার কাছে পূজ্য হওয়ার বাসনা) ইত্যাদি ভক্তিলতার অঙ্গে উপশাখার মতো।"(এই দোষগুলি থাকলে কখনোই শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম লাভ হয়না)*

*❈❀━┉┈"ঐসমস্ত বাসনারূপ জল পেয়ে উপশাখাগুলি বাড়তে থাকে এবং তার ফলে ভক্তি লতা বাড়তে পারে না।"*

*❈❀━┉┈বুদ্ধিমান ভক্ত প্রথমেই উপশাখা গুলির ছেদন করেন, তাহলে মূল শাখা বর্ধিত হয়ে বৃন্দাবনে কৃষ্ণরূপ কল্পবৃক্ষের আশ্রয় অবলম্বন করে।"*

*❈❀━┉┈প্রেম ফল পেকে যখন মাটিতে পড়ে, তখন মালী তা আস্বাদন করেন, এবং সেই ভক্তিলতাকে অবলম্বন করে মালী গোলক বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্ম রূপ কল্প বৃক্ষের আশ্রয় লাভ করেন।"*

*"তাহাঁ সেই কল্পবৃক্ষের করয়ে সেবন।*
*সুখে প্রেমফল-রস করে আস্বাদন॥"*

*❈❀━┉┈"সেখানে তিনি সেই কল্পবৃক্ষের সেবা করেন, এবং মহানন্দে সেই প্রেমফলের রস আস্বাদন করেন।"*

*❈❀━┉┈গোলক বৃন্দাবনে এই ভগবত-প্রেম লাভই পরম পুরুষার্থ; ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ-- এই চারটি পুরুষার্থ সেই প্রেমের কাছে তৃণ-তুল্য(তুচ্ছাতিতুচ্ছ)।"*
*•••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••*

*•••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••*
*"'শুদ্ধভক্তি' হৈতে হয় 'প্রেমা' উৎপন্ন।*
*অতএব শুদ্ধভক্তির কহিয়ে 'লক্ষণ'॥"*

*❈❀━┉┈"'শুদ্ধভক্তি' থেকে ভগবৎ-প্রেমের প্রকাশ হয়; তাই এখন আমি শুদ্ধ ভক্তি লক্ষণ বর্ণনা করব।"*

*"অন্যাভিলাষিতা-শূন্যং জ্ঞান-কর্মাদ্যনাবৃতম্।*
*আনুকূল্যেন কৃষ্ণানুশীলনং ভক্তিরুত্তমা॥"*

*❈❀━┉┈"কৃষ্ণভক্তি ব্যতীত অন্য সমস্ত অভিলাষ শূন্য হয়ে, জ্ঞান-কর্ম-যোগ ইত্যাদির আবরণ থেকে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের প্রীতি সম্পাদনের জন্য যে প্রেমময়ী সেবা, অনুক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়, তারই নাম উত্তম ভক্তি।(ভক্তিরসামৃতসিন্ধু)*

*"অন্য-বাঞ্ছা,অন্য পূজা ছাড়ি' 'জ্ঞান','কর্ম'।*
*আনুকূল্যে সর্বেন্দ্রিয়ে কৃষ্ণানুশীলন॥"*

*❈❀━┉┈"অন্য সমস্ত বাসনা(কৃষ্ণেন্দ্রিয় তৃপ্তি ছাড়া,আত্মেন্দ্রিয় তৃপ্তিমুলক জড় কামনাবাসনা),অন্য সমস্ত পূজা(ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা ছাড়াও অন্য বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা), জ্ঞান(নির্বিশেষ ব্রহ্মজ্ঞান বা ব্রহ্মে লীন হওয়ার জ্ঞান), কর্ম(কৃষ্ণসেবা ব্যতীত আত্মেন্দ্রিয় প্রীতির কর্ম) ইত্যাদি অনুশীলন সর্বতোভাবে ত্যাগ করে কৃষ্ণভক্তির অনুকূল যা কেবলমাত্র তাই গ্রহণ করে সমস্ত ইন্দ্রিয় দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার নাম "শুদ্ধভক্তি"।"*

*"এই 'শুদ্ধভক্তি'--ইহা হৈতে 'প্রেমা' হয়।*
*পঞ্চরাত্রে ভাগবতে এই লক্ষণ কয়॥"*

*❈❀━┉┈"এইটিই শুদ্ধ ভক্তি। এই শুদ্ধভক্তি অনুশীলন করার ফলে ভগবত প্রেমের উদয় হয়। পঞ্চরাত্র, শ্রীমদ্ভাগবত ইত্যাদি বৈদিক শাস্ত্রে ভগবদ্ভক্তির এই লক্ষণ বর্ণিত হয়েছে।"*

*"সর্বোপাধিবিনির্মুক্তং তৎপরত্বেন নির্মলম্।*
*হৃষিকেণ হৃষিকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে॥"*

*❈❀━┉┈" সমস্ত ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর হৃষিকেশের সেবা করার নাম ভক্তি। এই সেবার দুটি 'তটস্থ' লক্ষণ-- যথা, এই শুদ্ধ ভক্তি সমস্ত উপাধি থেকে মুক্ত, এবং কেবল শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হওয়ার ফলে তা নির্মল।"*

*❈❀━┉┈সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে "পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি চিন্ময় প্রেমের লক্ষণ হচ্ছে যে,এই চিন্ময় প্রেম অহৈতুকি ও অপ্রতিহতা।" একেবারেই সমস্ত কলুষতা থেকে মুক্ত, নিখাদ না হলে সেই শুদ্ধ চিন্ময় কৃষ্ণপ্রেম হৃদয়ে প্রকাশ পাবে না! হ্যাঁ ঐ সমস্ত বাসনা নিয়েও কৃষ্ণপ্রেম প্রকাশ পাবে, কিন্তু তা ভেজাল, নিখাদ "শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম" কখনোই নয়! অনেকেই ভাবেন দেবদেবীগণ পূজা করে তাঁদের কাছে কৃষ্ণভক্তিলাভের বর চেয়ে নেব, কিন্তু এই পূজার বাসনাও শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেমে একটা খাদ! তাই অন্য বাসনার সঙ্গে অন্য দেবদেবীর পূজা করার ইচ্ছাও চিরতরে মন থেকে মুছে ফেলতে হবে, তবেই নিখাদ শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম লাভ করে, নিত্য নিকুঞ্জে যুগলসেবায় সেবাধিকার লাভ হবে।*
*•••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••*
*•••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••*

*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*
_*শুদ্ধ ভগবদ্ভক্তির পন্থা*_
_*জীবের মধ্যে কে সর্বশ্রেষ্ঠ?*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••* _*শ্রীমদ্ভাগবতঃ৩.২৯.২১-৩.২৯.৩৫*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*
_*অহং সর্বেষু ভূতেষু ভূতাত্মাবস্থিতঃ সদা।*_
_*তমবজ্ঞায় মাং মর্ত্যঃ কুরুতেঽর্চাবিড়ম্বনম্।।২১।।*_
------------------------------
_*🌼পরমাত্মা রূপে আমি প্রতিটি জীবে বিরাজমান।কেউ যদি সর্বত্র বিরাজমান সেই পরমাত্মাকে অবমাননা করে মন্দিরে শ্রীবিগ্রহ সেবায় যুক্ত হয়,তাহলে তা কেবল বিড়ম্বনা মাত্র।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*যো মাং সর্বেষু ভূতেষু সন্তমাত্মানমীশ্বরম্।*_
_*হিত্বার্চাং ভজতে মৌঢ্যাদ্ভস্মন্যেব জুহোতি সঃ।।২২।।*_
-------------------------------
_*🌼যে ব্যক্তি মন্দিরে ভগবানের বিগ্রহের পূজা করে,কিন্তু জানে না যে,পরমেশ্বর ভগবান পরমাত্মারূপে সমস্ত জীবের হৃদয়ে বিরাজমান,সে অবশ্যই অজ্ঞানাচ্ছন্ন,এবং তার সেই পূজা ভস্মে ঘি ঢালার মতোই অর্থহীন।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*দ্বিষতঃ পরকায়ে মাং মানিনো ভিন্নদর্শিনঃ।*_
_*ভূতেষু বদ্ধবৈরস্য ন মনঃ শান্তিমৃচ্ছতি।।২৩।।*_
-------------------------------
_*🌼যে ব্যক্তি আমাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কিন্তু অন্য জীবেদের প্রতি হিংসাপরায়ণ,সেই ভেদদর্শী ব্যক্তি অন্য জীবেদের প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ করার ফলে, কখনো মনে শান্তি লাভ করতে পারে না।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*অহমুচ্চাবচৈর্দ্রব্যৈঃ ক্রিয়য়োৎপন্নয়ানঘে।*_
_*নৈব তুষ্যেঽর্চায়াং ভূতগ্রামাবমানিনঃ।।২৪।।*_
-------------------------------
_*🌼হে মাতঃ।যারা সমস্ত জীবের অন্তরে আমার উপস্থিতি সম্বন্ধে অজ্ঞ,তারা যদি যথাযথ অনুষ্ঠানের দ্বারা মন্দিরে আমার বিগ্রহের পূজাও করে,সেই পূজায় আমি প্রসন্ন হই না।*_

_*অর্চাদাবর্চয়েত্তাবদীশ্বরম্ মাং স্বকর্মকৃৎ।*_
_*যাবন্ন বেদ স্বহৃদি সর্বভূতেষ্ববস্থিতম্।।২৫।।*_
-------------------------------
_*🌼যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজের হৃদয়ে বা অন্য সমস্ত জীবের হৃদয়ে আমার উপস্থিতি উপলব্ধ হয়,ততক্ষণ পর্যন্ত কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করে অর্চা-বিগ্রহের পূজা করে যাওয়া উচিত।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*আত্মনশ্চ পরস্যাপি যঃ করোত্যন্তরোদরম্।*_
_*তস্য ভিন্নদৃশো মৃত্যুর্বিদধে ভয়মুল্বণম্।।*_
------------------------------
_*🌼যে ব্যক্তি নিজের ও অন্যের মধ্যে অনুমাত্রও ভিন্ন দর্শন করে,মৃত্যুর প্রজ্বলিত অগ্নিরূপে আমি তার মহা ভয় উৎপন্ন করি।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*অথ মাং সর্বভূতেষু ভূতাত্মানং কৃতালয়ম্।*_
_*অর্হয়েদ্দানমানাভ্যাং মৈত্র্যাভিন্নেন চক্ষুষা।।২৭।।*_
-------------------------------
_*🌼অতএব দান,সম্মান এবং মৈত্রীপূর্ণ আচরণের দ্বারা সমস্ত জীবকে সমদৃষ্টিতে দর্শন করে,সমস্ত জীবের আত্মার স্বরূপে বিরাজমান আমার পূজা করা উচিত।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*জীবাঃ শ্রেষ্ঠা হ্যজীবানাং ততঃ প্রাণভৃত্যঃ শুভে।*_
_*ততঃ সচিত্তাঃ প্রবরাস্ততশ্চেন্দ্রিয়বৃত্তয়ঃ।।২৮।।*_
-------------------------------
_*🌼হে কল্যাণী মাতা।অচেতন পদার্থ থেকে জীব শ্রেষ্ঠ,এবং তাদের মধ্যে যারা জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করে তারা শ্রেষ্ঠ।তাদের থেকে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে যাদের চেতনা বিকশিত হয়েছে,এবং তাদের থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছে যাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতি বিকশিত হয়েছে ।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*তত্রাপি স্পর্শবেদিভ্যঃ প্রবরা রসবেদিনঃ।*_
_*তেভ্যো গন্ধবিদঃ শ্রেষ্ঠাস্ততঃ শব্দবিদো বরাঃ।।২৯।।*_
-------------------------------
_*🌼যে সমস্ত জীবের ইন্দ্রিয়ানুভূতি বিকশিত হয়েছে,তাদের মধ্যে যারা রস আস্বাদন করতে পারে,তারা স্পর্শানুভূতি বিকশিত হয়েছে যে সমস্ত জীব তাদের থেকে শ্রেষ্ঠ।রস আস্বাদন করতে পারে যে সমস্ত জীব,তাদের থেকে ঘ্রাণ গ্রহণ করতে পারে যে সমস্ত জীব তারা শ্রেষ্ঠ,এবং তাদের থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছে যাদের শ্রবণেন্দ্রিয় বিকশিত হয়েছে।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*রূপভেদবিদস্তত্র ততশ্চোভয়তোদতঃ।*_
_*তেষাং বহুপদাঃ শ্রেষ্ঠাশ্চতুষ্পাদস্ততো দ্বিপাৎ।।৩০।।*_
-------------------------------
_*🌼শ্রবণক্ষম প্রাণীদের থেকে রূপের পার্থক্য নিরূপণ করতে সক্ষম জীবেরা শ্রেষ্ঠ।তাদের থেকে দুই পঙ্ক্তি দন্ত-বিশিষ্ট প্রাণীরা শ্রেষ্ঠ,এবং তাদের থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছে বহুপদ-বিশিষ্ট প্রাণী।তাদের থেকে শ্রেষ্ঠ চতুষ্পদ এবং তাদের থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছে দ্বিপদ-বিশিষ্ট মানুষ।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*ততো বর্ণাশ্চ চত্বারস্তেষাং ব্রাহ্মণ উত্তমঃ।*_
_*ব্রাহ্মণেষ্বপি বেদজ্ঞো হ্যর্থজ্ঞোঽভ্যধিকস্ততঃ।।*_
-------------------------------
_*🌼মানুষদের মধ্যে যে-সমাজ গুন এবং কর্ম অনুসারে চতুর্বর্ণে বিভক্ত হয়েছে তা শ্রেষ্ঠ,চতুর্বর্ণের মধ্যে ব্রাহ্মণ নামক বুদ্ধিমান মানুষেরা সর্বোত্তম।ব্রাহ্মণদের মধ্যে যাঁরা বেদ অধ্যয়ন করেছেন তাঁরা শ্রেষ্ঠ,এবং বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণদের মধ্যে যাঁরা বেদের তাৎপর্য সম্পর্কে অবগত তাঁরা সর্বোত্তম।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*অর্থজ্ঞাৎসংশয়চ্ছেত্তা ততঃ শ্রেয়ান্ স্বকর্মকৃৎ।*_
_*মুক্তসঙ্গস্ততো ভূয়ানদোগ্ধা ধর্মমাত্মনঃ।।৩২।।*_
-------------------------------
_*🌼বেদ তাৎপর্যবিদ ব্রাহ্মণ থেকে মীমাংসক ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ,এবং তাঁর থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন স্বধর্মরত ব্রাহ্মণ।স্বধর্মরত ব্রাহ্মণ থেকে মুক্তসঙ্গ ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ,এবং তাঁর থেকেও শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন "শুদ্ধ ভক্ত",যিনি কোন ফলের আশা প্রত্যাশা না করে ভগবদ্ভক্তি সম্পাদন করেন।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*তস্মান্ময্যর্পিতাশেষক্রিয়ার্থাত্মা নিরন্তরঃ।*_
_*মর্যর্পিতাত্মনঃ পুংসো ময়ি সংন্যস্তকর্মণঃ।*_
_*ন পশ্যামি পরং ভূতমকর্তুঃ সমদর্শনাৎ।।৩৩।।*_
--------------------------------
_*🌼অতএব আমাকে ছাড়া অন্য আর কোন কিছুতে যে-ব্যক্তির আকর্ষণ নেই,এবং তাই যিনি তাঁর সমস্ত কর্ম,তাঁর জীবন--তাঁর সবকিছু--আমাকে নিবেদন করে,অব্যবহিতভাবে আমার শরণাগত হয়েছেন,সেই প্রকার কতৃত্বাভিমানশূণ্য,সমদর্শী পুরুষ থেকে কোন জীবকেই আমি শ্রেষ্ঠ দেখতে পাইনা(ভগবান কপিলদেব)।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

_*মনসৈতানি ভূতানি প্রণমেদ্বহু মানয়ন্।*_
_*ঈশ্বরো জীবকলয়া প্রবিষ্টো ভগবানিতি।।৩৪।।*_
-------------------------------
_*🌼এই প্রকার আদর্শ ভক্ত সমস্ত জীবেদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন,কারণ তিনি দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে জানেন যে,পরমেশ্বর ভগবান পরমাত্মা বা নিয়ন্তারূপে প্রতিটি জীবের শরীরে প্রবেশ করেছেন।*_
*•••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈•••••••••*

ভক্তিযোগশ্চ ময়া মানব্যুদীরিতঃ।
যয়োরেকতরেণৈব পুরুষঃ পুরুষং ব্রজেৎ।।৩৫।।*

🌼হে মাতঃ।হে মনুকন্যা।যে ভক্ত এইভাবে ভগবদ্ভক্তি ও অষ্টাঙ্গ যোগের সাধন করেন,তিনি কেবল ভক্তির দ্বারাই পরমেশ্বর ভগবানের পরম ধাম প্রাপ্ত হতে পারেন।

শ্রীশচীনন্দন গৌরাঙ্গসুন্দর ভগবান কি জয়!
হরে কৃষ্ণ 🙏
ক্রমশঃ....

👉দামোদর মাসে ব্রত পালনের বিধিসমূহ!কার্তিক মাসে ব্রত পালনের বর্জনীয় দ্রব্যসমূহ...!!!পদ্মপুরাণে ব্রহ্ম-নারদ সংবাদে বলা হচ্...
15/10/2024

👉দামোদর মাসে ব্রত পালনের বিধিসমূহ!

কার্তিক মাসে ব্রত পালনের বর্জনীয় দ্রব্যসমূহ...!!!

পদ্মপুরাণে ব্রহ্ম-নারদ সংবাদে বলা হচ্ছে-

১. কার্তিক মাসে রাজমাষ (বরবটি) ও শিমসমূহ ভক্ষণ করলে, হে মুনিবর কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকাবাসী হয়।

২. কার্তিক মাসে যে ব্যক্তি কলমী শাক, পটল, বেগুন, আচার (চাটনি) ত্যাগ না করে, তাকে কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকবাসী হতে হয়।

👉আর যারা ১মাস হবিষ্যান্ন করবেন তারা।
( শ্রীশ্রী হরিভক্তিবিলাসে ১৩ অধ্যায়ের ১০-১৩ নং শ্লোকে হবিষ্যান্নের উপাদান উল্লেখ্য করা হয়েছে যে?)
নিম্নোক্ত উপাদানগুলো হবিষ্যান্ন তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে ---আতপ চাল,ঘি,কাওন,শ্যামা চাল,সৈন্ধব লবণ,ননীপূর্ণ গোদুগ্ধ, পাকা কলা ,কাচা কলা, এসব আর কাচা পাকা পেপে, আলু,মরিচ এসব পেতে পারবেন, গম,ফল কিন্তু ফলটা (স্কন্ধপুরাণের নাগরখন্ডে অবশ্যই কম বীজ পূর্ণ ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে)
👉হবিষ্যান্ন বর্জনীয় যেসব দ্রবগুলো, মুসূর ডাল, তিল তেল,বেতো শাক,সাত্ত্বিক শাক মুলা,জিরা ও তেঁতুল।।
দিনে ২বার সূর্য উদয়ের আগে হবিষ্যান্ন গ্রহণ করতে হবে।
শরীরে তৈল সাবান কসমে্টিক ইত্যাদি ব্যবহার নিষেধ।
এসব ব্যবহার না করলে এই একমাস তাহলে অন্তিমে চিন্ময় দেহ প্রাপ্ত হবো।
রাতে ফল দুধ কলা কাচাবাদাম ভাজা,এসব পেতে পারবেন।।
প্রত্যকটা মাসের মধ্যে এই কার্তিক দামোদর মাসটা ভগবানের অতি প্রিয় মাস সব মাসে যা করেন সমস্যা নাই কিন্তুু এই মাসে এই ব্রত না পালন করে কেউ তাহলে তার মুক্তির অার কোন পথ নাই নরকযন্ত্রণা ভোগ করবে অনন্তকাল।

৩. ধর্মাত্মা ব্যক্তি কার্তিক মাসে মৎস্য ও মাংস ভক্ষণ করবেন না।

৪. পরান্ন, পরশয্যা, পরধন, পরস্ত্রী-কার্তিককে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি বিশেষভাবে বর্জন করবেন।

৫. কার্তিক মাসে তৈল মর্দন, শয্যা, পরান্ন ও কাসার পাত্রে ভোজন ত্যাগ করলে পরিপূর্ণ ব্রতী হওয়া যায়।

৬. কার্তিক মাস উপস্থিত হলে পরান্ন দর্শন করে যে মানব বর্জন করে, প্রতিদিন কৃচ্ছব্রতের ফল প্রাপ্ত হন।
পদ্মপুরাণে শ্রীরুক্মাঙ্গদ-মোহিনী-সংবাদে বলা হচ্ছে-

৭. কার্তিকে তৈল, মধু, কাসার পাত্র ও পঁচা বাসি অম্ল দ্রব্য, আচার ইত্যাদি বর্জন করবে।

৮. হে সুভ্রু! মৎস্য, কচ্ছপ মাংস ঔষধ হিসেবেও অন্য মাংস ভক্ষণ করবে না। কার্তিকে মাংস ভক্ষণে চণ্ডাল হয়।

দামোদর মাসের মাহাত্ম্য-

১. যে কোনও দেশে কার্তিকে স্নান ও দান বিশেষতঃ পূজাতে তা অগ্নিহোত্র সমফল।

২. কুরুক্ষেত্রে কোটিগুণ ফল, গঙ্গায়ও তৎসম ফল, তার থকে অধিক পুস্করে, হে ভার্গব! দ্বারকায়ও অধিক। কার্তিক মাসে স্নানও শ্রীভগবৎপূজন শ্রীকৃষ্ণসালোক্যপ্রদ।

৩. হে মুনিগণ! মথুরা ব্যতীত, অন্যপুরী সকল তার সমান, যেহেতু মথুরা-মণ্ডলেই শ্রীহরির দামোদর লীলা প্রকট হয়েছিল।

৪. অতএব কার্তিকে মথুরায় শ্রীগোবিন্দের প্রীতিবর্দ্ধন, কার্তিকে মথুরাতেই চরম ফল প্রাপ্তি হয়।

৫. যেমন মাঘে প্রয়াগতীর্থ, বৈশাখে জাহ্নবী, কার্তিকে মথুরা সেবা তা থেকে উৎকর্ষ আর নাই।

৬. কার্তিকে মথুরাতে মানবগণ স্নান করে দামোদরের পূজা করলে তারা কৃষ্ণসারূপ্য প্রাপ্ত জানবেন, এ বিষয়ে বিচার কর্তব্য নয়।

৭. হে বিপ্র! এই জগতে মানবগণের পক্ষে মথুরাতে কার্তিক মাস দুর্লভ। যেখানে পূজিত হয়ে দামোদর নিজরূপ ভক্তগণকে প্রদান করেন।

৮. শ্রীহরি অর্চিত হয়ে অন্যত্র সেবিত ভক্তগণকে ভুক্তি মুক্তি দান করেন, এই শ্রীহরি কিন্ত ভক্তি দান করেন না, যেহেতু শ্রীহরির বশ্যকারী।

৯. কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে একবারও শ্রীদামোদরের পূজা থেকে সেই ভক্তি কিন্তু অনায়াসে মানবগণ শ্রীহরি হতে লাভ করে।

১০. শ্রীদামোদরদেব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে মন্ত্র-দ্রব-বিহীন পূজাকেও স্বীকার করেন।

১১. যে পাপের মরণান্তেই বিনিষ্কৃতি হয় তার শুদ্ধির জন্য কার্তিক মাসে মথুরাপুরীতে হরিপূজাই সুনিশ্চয়, এই প্রায়শ্চিত্ত শাস্ত্রে উক্ত হয়েছেন।

১২. বালক ধ্রুব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীদামোদরের পূজা ও ধ্যান দ্বারা যোগিগণ দুর্লভ শ্রীভগবানকে শীঘ্র দর্শন প্রাপ্ত হয়েছিলেন। পৃথিবীতে মথুরা সুলভা, সেই রকম প্রতিবছর কার্তিক মাস সুলভ, তথাপি এই জগতে মূঢ় মানবগণ ভবসমুদ্রে জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে ভাসছে।

১৩. যজ্ঞসমূহের কি প্রয়োজন, তপস্যার কি প্রয়োজন, অন্য তীর্থসমূহের সেবাতে কি প্রয়োজন? যদি কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীরাধিকা প্রিয় শ্রীদামোদরের অর্চিত হন।

১৪. সকল পবিত্র তীর্থ, নদ-নদী, সরোবর কার্তিক মাসে এই মথুরা-মণ্ডলে সকলেই বাস করেন।

১৫. কার্তিকে কেশবদেবের জন্মস্থানে যে মানবগণ একবার প্রবিষ্ট হয়, তারা পরম অব্যয় শ্রীকৃষ্ণকে প্রাপ্ত হন।

১৬. কার্তিক মাসে মথুরাতে হরিপূজাকের উপহার উদ্দেশ্যে হরিপূজা দ্বারা দুর্লভ পদ প্রাপ্ত হওয়া যায়, তখন ভক্তিমান হয়ে পূজা করলে যে কি ফল, তার আর কি বলব।

কার্তিক-কৃত্য-বিধি-

১. আশ্বিন মাসের যে শুক্লা একাদশী হবে বা পূর্ণিমাতে, নিরলসভাবে কার্তিক মাসের ব্রতসমূহ ঐ দিন হতে আরম্ভ করবে।

২. নিত্য শ্রীভগবানকে জাগরণ করাবার জন্য রাত্রির শেষ প্রহরে উঠে শুচি হয়ে শ্রীভগবানকে জাগিয়ে অনন্তর স্তোত্র পাঠসহ প্রভুর আরতি করবে।

৩. বৈষ্ণববৃন্দসহ আনন্দে বৈষ্ণবধর্মসমূহ শ্রবণ করে গীতবাদ্যাদিসহ প্রাতঃকালে প্রভু দামোদরদেবকে আরতি করবে।

৪. নদী আদি জলাশয়ে গিয়ে আচমনপূর্বক সংকল্প করবে। প্রভুকে প্রার্থনা জানিয়ে পরে তাঁকে যথাবিধি অর্ঘ্যদান করবে।

৫. সংকল্পমন্ত্র- হে জনার্দন! হে দেবেশ! হে দামোদর! শ্রীরাধিকাসহ আপনার প্রীতির জন্য কার্তিকে আমি প্রাতঃস্নান করব।

৬. প্রার্থনা মন্ত্র- হে দেবেশ! তোমার ধ্যানসহ এই জলে আমি স্নান করতে উদ্যত, হে দামোদর! তোমার প্রসাদে আমার পাপ বিনাশ যাক।

৭. অর্ঘ্যমন্ত্র-আমি কার্তিক মাসে বিধিবৎ স্নানকারী, হে দামোদর! হে দনুজেন্দ্রনিসূদন আমার প্রদত্ত অর্ঘ্য গ্রহণ কর।

৮. নিজদেহকে তিলকদ্বারা লেপন করে শ্রীকৃষ্ণ নারায়াণাদি নাম উচ্চারণ পূর্বক স্নান করে নিজ বিধিমতে সন্ধ্যা উপাসনা করে গৃহে আগমন করবে।

৯. দেবমন্দির অগ্রে মার্জনা করে স্বস্তিকমণ্ডল রচনা করে প্রভুকে তুলসী, মালতী, পদ্ম, অগস্ত (বক) পষ্পাদি দ্বারা অর্চনা করবে।

১০. নিত্য বৈষ্ণব সঙ্গে ভগবৎ কথা সেবন, অহোরাত্র ঘৃত, দীপ বা তিল দ্বারা অর্চন করবে।

১১. কার্তিক মাসে বিশেষ বিশেষ নৈবেদ্য অর্পন করবে, সেই রকম অষ্টোত্তর শত প্রণাম, যথাশক্তি একবার আহারাদি ব্রত আচরণ করবেন।
পদ্মপুরাণে কার্তিক প্রসঙ্গে

১২. প্রাতঃকালে উত্থান শৌচাদি করে পবিত্র জলাশয়ে গিয়ে বিধিবৎ স্নান, অতপর দামোদর অর্চন কর্তব্য।

১৩. কার্তিক ব্রতধারী মৌন অবলম্বনে ভোজন, ঘৃত দ্বারা বা তিল তৈল দ্বারা দীপাদান কর্তব্য।

১৪. বৈষ্ণববৃন্দসহ কৃষ্ণকথা আলাপ দ্বারা দিন যাপন, কার্তিক মাসে ব্রত সংকল্প পালন।

১৫. আশ্বিনে শুক্লপক্ষের হরিবাসরে আরম্ভ, অথবা পৌর্ণমাসি হতে অথবা তুলারাশি আগমে সংক্রান্তিতে আরম্ভ।

১৬. শ্রীবিষ্ণুর নিকট অখণ্ড দীপদান, দেবালয়ে, তুলসীতে, আকাশে উত্তম দীপ দান করবেন।

১৭. হে ভাবিনি! কার্তিকমাসে কার্তিকব্রত গৃহে করবে না, বিশেষতঃ তীর্থে কার্তিকব্রত সর্বপ্রযত্নে করবে।

শ্রীরাধাদামোদর-পূজাবিধি-

১. শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তমা, পোপিকাগণ মধ্যে শ্রেষ্ঠা, কার্তিকে শ্রীদামোদর নিকটে শ্রীরাধিকার পূজা করা উচিত।

২. ব্রজবাসী ব্রাহ্মণ এবং তৎপত্নীকে বস্ত্র, অলঙ্কার ও ভোজনাদি দান দ্বারা পূজা করা কর্তব্য।

৩. হে বিপ্রগণ! কার্তিকে শ্রীরাধিকার সন্তোষের জন্য যিনি শ্রীরাধিকা প্রতিমাকে পূজা করে তার প্রতি শ্রীমান্ দামোদর হরি তুষ্ট হন।

৪. কার্তিকে প্রতিদিন ‘দামোদরাষ্টকম্’ নামক স্তোত্র (সত্যব্রত মুনি কথিত) পাঠ করবে, তা দামোদরের অর্চন স্বরূপ ও শ্রীদামোদরের আকর্ষণকারী।

দীপদান’ এবং ‘আকাশ দীপ’ এর মহিমা!

স্কন্দপুরাণে পূর্বকালে দ্রাবিড়দেশে বুদ্ধ নামে এক ব্রাহ্মণ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ছিল খুবই দুষ্টা প্রকৃতির এবং দুরাচার সম্পন্না। ঐ স্ত্রীর সংসর্গে থাকার ফলে ব্রাহ্মণের আয়ু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হলেন। পতির মৃত্যুর পরেও ঐ স্ত্রীলোকটি আরও বিশেষভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত হলো।

এমনকি লোকনিন্দার ভয় না করে সে নির্লজ্জের মতো ব্যবহার করতে লাগল। তার কোনো পুত্র বা ভাই ছিল না। সে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই পরের বাড়ি থেকে ভিক্ষা করে বাসি অন্ন খেত এবং অনেক সময় অপরের বাড়িতে রান্না করতে যেত।

তীর্থযাত্রা আদি থেকে সর্বদাই দুরে থাকত। সে কখনও কোনো ভালো কথায় কর্ণপাত করত না।
একদিন এক বিদ্ধান তীর্থযাত্রী ব্রাহ্মণ তার গৃহে আগমন করল। যার নাম ছিল কুৎস। তাকে (ঐ স্ত্রীকে) ব্যভিচারে আসক্ত দেখে সেই ব্রহ্মর্ষি কুৎস বললেন-

ওরে মুর্খ নারী! মনোযোগে সহকারে আমার কথা শ্রবণ কর। পৃথ্বি আদি পঞ্চভূত দ্বারা তৈরী এই রক্তমাংসের শরীর, যা কেবল দুঃখেরই কারণ, তুই তাকে যত্ন করছিস? এই দেহ জলের বুদবুদের মতো, একদিন যা অবশ্যই বিনষ্ট হবে। এই অনিত্য শরীরকে যদি তুই নিজ বলে মানিস্ তাহলে নিজের বিচার পূর্বক এই মোহ পরিত্যাগ কর।

ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ কর এবং তাঁর লীলাকাহিনী শ্রবণ কর। এখন কার্তিক মাস আগত হবে, তখন ভগবান দামোদরের প্রীতি বিধানের জন্য, স্নান, দান আদি কর্ম করে গৃহে বা মন্দিরে বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে দীপ নিবেদন করে শ্রীবিষ্ণুকে পরিক্রমা করবে এবং তাঁকে প্রণাম করবে। এই ব্রত বিধবা এবং সৌভাগ্যবতী নারী উভয়েরই অবশ্য পালনীয়। যার ফলে সমস্ত প্রকারের পাপের শাস্তি তথা সকল উপদ্রব নষ্ট হয়।

কার্তিক মাসে দীপদান নিশ্চিতরূপে ভগবান বিষ্ণুর প্রীতি বর্ধন করে। এই কথা বলে ব্রাহ্মণ কুৎস অপর একটি গৃহে গমন করলেন। তখন ঐ ব্রাহ্মণী ব্রহ্মর্ষি কুৎসের এই রকম উপদেশ শ্রবণ করে নিজ কর্মের জন্য অনুতাপ করতে লাগল এবং সে স্থির করল যে সে অবশ্যই কার্তিক মাসে এই ব্রত পালন করবে।

তারপর যখন কার্তিক মাস আগত হলো তখন সে পুরো মাস সূর্যোদয়ের সময় প্রাতঃস্নান তথা বিষ্ণুকে দীপদান সহ নিষ্ঠা সহকারে এই ব্রত পালন করল। তারপর কিছুকাল বাদে আয়ু শেষ হলে তার মৃত্যু হলো। তখন সে স্বর্গলোকে গমন করল এবং পরে মুক্তি লাভ করল। সে সমস্ত মানুষ কার্তিক ব্রত পালন ও দীপদান আদি সম্পন্ন করে তারা যদি এই ইতিহাস শ্রবণ করে তাহলে তারাও মোক্ষ লাভ করে।

ব্রহ্মা এরপর বললেন- নারদ! এখন আকাশ দীপের মহিমা শ্রবণ কর। কার্তিক মাস আগত হলে যিনি নিয়মিত ব্রাহ্মমুহূর্তে স্নান করে আকাশদীপ দান করেন তিনি সমস্ত লোকের প্রভু এবং অন্তে মোক্ষ লাভ করেন। এই জন্য কার্তিক মাসে স্নান, দান আদি কর্ম করার সাথে সাথে ভগবান বিষ্ণুর মন্দিরে এই একমাস দীপদান করা অবশ্য কর্তব্য।

মহারাজ সুনন্দ চন্দ্রশর্মা নাম ব্রাহ্মণের পরামর্শ অনুসারে এই একমাস বিধিপূর্বক ব্রত অনুষ্ঠান করেছিলেন। কার্তিক মাসে প্রতিদিন প্রাতঃস্নান করে পবিত্র হয়ে কোমল তুলসীদল দ্বারা ভগবান বিষ্ণুর পূজা এবং রাত্রিতে আকাশ দীপ দিতেন। দীপ প্রদানের সময় তিনি এই মন্ত্র পাঠ করতেন-

দামোদরায় বিশ্বাস বিশ্বরূপধরায় চ।
নমস্কৃত্ আমি প্রদাস্যামি ব্যোমদীপং হরিপ্রিয়ম্॥

------------------------------------------------------------------------------
পোস্টটি ভাল লাগে অবশ্যই সকলকে শেয়ার করবেন।
প্রনিপাত

সদা সর্বদা শ্রী শ্রী রাধা ও কৃষ্ণের পাদপদ্মের কথা স্মরণ করুন, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা আপনার জন্য বরাদ্দকৃত কার্য সম্পাদন করতে কোনও অসুবিধা অনুভব করতে হবে না।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের কৃপার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রাখতে হবে।
শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র নামটিতে অসাধারণ আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে কারণ শ্রীকৃষ্ণের নাম স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের থেকে আলাদা নয় ....

ঐকান্তিক ভালবাসা এবং নিষ্ঠার সাথে এই নামগুলি জপ করুন তবেই আপনি চিণ্ময় আনন্দ অনুভব করবেন:

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ...(১০৮ বার)

হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন এবং সুখী হন ...

জয় শ্রীল প্রভুপাদ🙌🙌🙌
জয় শ্রীল গুরুদেব

দয়া করে পোস্টটির নিজস্ব মতামত জানান, এবং আপনার নিকটতম এবং প্রিয় ব্যক্তিদের সাথে লাইক ও শেয়ার করুন যাতে তারা ও কৃষ্ণভাবনাময় হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়... 🙏🙏🙏

🔵 একটি পোস্টে কার্তিক ব্রতের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর!তাই কৃপা করে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। হরিবোল দামোদর_ব্রত_কার্তিক_ব্রত_প...
15/10/2024

🔵 একটি পোস্টে কার্তিক ব্রতের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর!
তাই কৃপা করে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। হরিবোল

দামোদর_ব্রত_কার্তিক_ব্রত_পালনের_বিধি_ও_নিষেধ
লীলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মাতা যশোদার দামবন্ধন স্বীকার করে নিজে বিশুদ্ধ বাৎসল্যরস আস্বাদন করেছেন এবং নিজের অস্বাতন্ত্র্য তথা ভক্তাধীনতার পরমোৎকর্ষ প্রদর্শন করেছেন।
কার্তিক শুক্লা প্রতিপদেই তিনি সেই পরমোৎকৃষ্ট দামোদর লীলা প্রকটিত করেন। এজন্যই কার্তিক মাস ‘দামোদর মাস' নামে প্রসিদ্ধ।

👉 ৩১শে আশ্বিন ১৭ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার পূর্ণিমাঃ শ্রীদামোদরকে প্রদীপ দান আরম্ভ।
👉২৯শে কার্তিক ১৫ই নভেম্বর শুক্রবার পূর্ণিমাঃ শ্রীদামোদরকে প্রদীপ দান সমাপন।

বিভিন্ন পুরাণাদিতে কার্তিক তথা দামোদর মাসের মহিমা বিস্তৃত ভাবে বর্ণিত হয়েছে। বৈষ্ণবস্মৃতিশাস্ত্র শ্রী হরিভক্তিবিলাসের ষোড়শ অধ্যায়ে দামোদর ব্রত বা নিয়ম সেবার বিধি সংকলিত হয়েছে। বিধি ও রাগমার্গী উভয় সাধকের জন্যই দামোদর মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্রাদিতে এই মাসে প্রত্যহ শ্রীশ্রী রাধাদামোদর অর্চন ও সত্যব্রত মুনি কর্তৃক গ্রথিত ‘শ্রীদামোদরাষ্টক’ স্তোত্র পাঠের নির্দেশ দেওয়া আছে । এই স্তোত্র নিত্যসিদ্ধ এবং শ্রীদামোদর-কৃষ্ণকে আকর্ষণ করতে সমর্থ ।

এই মাসে ভগবান শ্রীদামোদরের সাথে শ্রীমতি রাধারাণীর আরাধনা করা উচিত । কেননা স্বীয় হ্লাদিনী শক্তি উর্দ্ধেশ্বরী শ্রীমতি রাধিকা ব্যতীত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কোনো সেবাই গ্রহণ করেন না। শ্রীদামোদরাষ্টকের শেষ শ্লোকেও তাই প্রতিপন্ন হয়েছে ।

দামোদর_ব্রত_সম্পর্কিত_শাস্ত্রীয়_নির্দেশাবলি–
(কার্তিক কৃত্যসমূহ)
▪️ কার্তিক মাসের অধিষ্ঠাতৃদেব শ্রীরাধিকার সাথে শ্রীদামোদরে আমি প্রপন্ন হই । যার প্রভাবে তাঁর প্রিয়তম কার্তিক মাস সেবিত হবেন ।

🔴কার্তিকব্রতের নিত্যতা
স্কন্দপুরাণে ব্রহ্মা-নারদ সংবাদে–
▪️দুর্লভ মনুষ্যজন্ম লাভ করে যে মানব কার্তিক ব্রতে বর্ণিত ধর্ম আচরণ করে না, হে ধার্মিকবর তাকে মাতৃপিতৃ ঘাতক জানবে ।
▪️ দামোদর প্রিয় কার্তিকমাস যে মানব ব্রতহীনভাবে অতিবাহিত করে, সে মানব সর্বধর্ম বর্জিত হয়ে পশুপাখি জন্ম লাভ করে ।
▪️হে মুনিবর! যে মানব কার্তিক ব্রত করে না, সে ব্রহ্মঘাতী, গোঘাতী, স্বর্ণচোর ও সর্বদা মিথ্যাবাদী ।
▪️যে বিধবা নারী কার্তিক ব্রত করে না, হে মুনিশ্রেষ্ঠ! সে সত্যিই নরকে গমন করে ।
▪️কার্তিক মাসে যে গৃহী ব্রত না করে, তার যজ্ঞদানাদি বৃথা হয় এবং কল্পকাল নরকবাসী হয় ।
▪️কার্তিক মাস প্রাপ্ত হয়ে যে দ্বিজ ব্রত বিমুখ, দেবরাজসহ দেবগণ সকলে তার প্রতি বিমুখ।
▪️হে বিপেন্দ্র! বহু যজ্ঞ দ্বারা পূজা করে এবং শতবার শ্রাদ্ধ করেও এই কার্তিকে ব্রত না করার ফলে স্বর্গ প্রাপ্ত হয় না।
▪️কার্তিকে ব্রত না করলে যে উৎকৃষ্ট দান, সুমহান তপস্যা ও জপ সকলই বিফল হয় ।
▪️হে নারদ! কার্তিক মাসে উত্তম বৈষ্ণব ব্রত না করলে সপ্ত জন্মার্জিত পুণ্য বৃথা হয় ।
▪️হে মহামুনে! যারা কার্তিকে পবিত্র বৈষ্ণব্রত করে না ইহলোকে সেই মানবগণকে পাপমূর্তি বলে জানবেন ।
(পদ্মপুরাণে শ্রীনারদ-শৌনকাদি মুনিগণ-সংবাদে -)

🔴কার্তিকে বিশেষসানদানাদি সৎকর্মের নিত্যতা
স্কন্দপুরাণে কার্তিকব্রত মাহাত্ম্যে–
▪️হে পুত্র! যারা কার্তিকে দান, হোম, জপ, স্নান ও শ্রীহরিব্রত করে না, সেই দ্বিজগণ নরাধম ।
▪️যারা কার্তিকে ভক্তিভাবে কেশবদেবের অর্চনা না করল, তারা যমদূতগণ কর্তৃক বন্ধিত হয়ে নরকে গমন করবে ।
▪️সহস্র কোটি জন্মের সাধনের ফলে দুর্লভ মানবজন্ম প্রাপ্ত হয়ে যে কার্তিকে শ্রীবিষ্ণুর অর্চন করল না, তার জন্ম বিফলে গেল।
▪️যার কার্তিক মাসে বিষ্ণুপূজা, বিষ্ণুকথা, বৈষ্ণবগণের দর্শন না হয় তার দশবার্ষিক পুণ্য নষ্ট হয় ।

🔴কার্তিক মাহাত্ম্য
স্কন্দপুরাণে কার্তিক প্রসঙ্গে–
▪️সর্বর্তীর্থে যে স্নান, সর্বদানের যে ফল, অংশের একাংশেরও সমান হয় না । কার্তিক মাসের কোটি
অংশের একাংশেরও সমান হয় না ।
▪️একদিকে সর্বতীর্থ, দক্ষিণাসহ সর্বযজ্ঞ, পুস্করে বাস, কুরুক্ষেত্র ও হিমাচলে বাস, মেরুতুল্য সুবর্ণ দান। হে বৎস! অন্যদিকে সর্বদা কেশবপ্রিয় কার্তিক মাস ।
▪️কার্তিকে শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে যা কিছু পুণ্য করা হয়। হে নারদ! তোমার নিকট সত্য বলছি, তা সকল অক্ষয় হয়।
▪️হে নারদ! হে বিপ্রেন্দ্র! যেমন নদীসমূহের, পর্বতসমূহের, হে বিপ্রর্ষে! সমুদ্রসমূহের ক্ষয় জানা যায় না, সেই রকম হে ব্রহ্মণ্! হে মুনে! কার্তিক মাসে যে যৎকিঞ্চিৎ পুণ্য করা যায় তার ক্ষয় নাই, এই রকম পাপেরও ক্ষয় নাই ।
▪️কার্তিকের সমান মাস নাই, সত্যযুগের সমান যুগ নাই, বেদের সমান শাস্ত্র নাই । গঙ্গার সমান তীর্থ নাই ।

🔴পদ্মপুরাণে কার্তিক মাহাত্ম্যে
▪️দ্বাদশ মাস মধ্যে কার্তিক মাস শ্রীকৃষ্ণ প্রিয়। তাতে অল্প উপায়ন দ্বারা তিনি সম্যক্ পূজিত হয়ে বিষ্ণুলোক দান করেন, এই রকম আমি নিশ্চয় করেছি ।
▪️যেমন দামোদর ভক্তবৎসল সর্বজন বিদিত, তার এই দামোদর মাস সেইরূপ ভক্তবৎসল; স্বল্প সেবাকেও বহু করে নেন।
▪️দেহধারীগণের মধ্যে মানবদেহ দুর্লভ ও ক্ষণভঙ্গুর, তার মধ্যেও দুর্লভ কাল শ্রীহরিপ্রিয় কার্তিক মাস।
▪️কার্তিকে দ্বীপদান দ্বারা এই পরমেশ্বর শ্রীহরি প্রীত হন, পরদত্ত দীপ প্রবোধন ফলেও শ্রীহরি সুগতি দান করেন ।

🔴স্কন্দপুরাণে কার্তিক মাহাত্ম্যে -
▪️এই জগতে ব্রতসমূহের ফল মাত্র এক জন্ম অনুগমন করে কিন্তু নাম। কার্তিকে ব্রতের ফল তজন্ম অনুগমন করে।
▪️হে বিপ্ৰেদ্ৰ। কার্তিক ব্রতে মথুরায় অক্রুর তীর্থে সম্পূর্ণ উপবাস করে ও স্নান করে যে ফল প্রাপ্ত হয়, কার্তিকব্রতের নিয়ম শ্রবণ করেও সেই ফল প্রাপ্ত হয়।
▪️বারাণসীতে, কুরুক্ষেত্রে, নৈমিষারণ্যে, পুষ্করে ও অর্বুদতীর্থে গমন করে যে ফল লাভ হয়, কার্তিকে ব্রত করে সেই ফল লাভ হয়।
▪️সর্বদা যজ্ঞসমূহ দ্বারা যজন না করেও পিতৃগণের শ্রাদ্ধ না করেও কার্তিকমাসে ব্রতদ্বারা বিষ্ণুধামে গমন করে ।
▪️নিত্যভক্ষ্য দ্রব্যসমূহের মধ্যে কার্তিকে কিঞ্চিৎ নিয়ম সঙ্কোচ করেন করলে নিশ্চয়ই পবিত্র কৃষ্ণসারূপ্য প্রাপ্ত হয় ।
▪️হে মুনিশাৰ্দ্দুল! কার্তিকে নিজশক্তি অনুসারে বিষ্ণুব্রত শাস্ত্রবিধিমত যিনি করেন, সংসার-মুক্তি তাঁর হস্তগত ।

🔴 কার্তিকে কর্মবিশেষের মাহাত্ম্য
স্কন্দপুরাণে–
▪️ হে দ্বিজোত্তম! কার্তিকে অন্নাদি দান, হোম, তপস্যা, জপ যা কিছু করলে তা অক্ষয় ফলপ্রদ বলে কথিত ।
▪️মানবগণ কর্তৃক কার্তিকে বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে যা কিছু প্রদত্ত হয় তাই অক্ষয় ফল হয়, বিশেষতঃ অন্নন্দান ।
▪️যিনি এক সম্বৎসর পূর্ণ নিত্য হোম অনুষ্ঠান করেন, কার্তিকে যিনি স্বস্তিক রচনা করে থাকেন তিনিও তার সমান ফল পান, এতে সন্দেহ নাই ।
▪️যে মানবী কার্তিকে শ্রীভগবানের মন্দিরে মণ্ডল রচনা অর্থাৎ আল্পনা দেন, তিনি স্বর্গাস্থিতা হয়ে কপোতীর ন্যায় শোভিতা হন ।
▪️কার্তিকে তিলদান, নদীতে স্নান, সৎকথা শ্রবণ, সাধুসেবন পলাশ পত্রে ভোজন সংসার মুক্তিপ্রদ । ,
▪️কার্তিকমাসে অরুণোদয়ে যে মানব দামোদরের অগ্রে জাগরণ করে, হে বিপ্রেন্দ্র! তিনি সহস্র গাভীদানের ফল লাভ করেন ।
▪️হে মহামুনে! কার্তিকে রাত্রির শেষ প্রহরে শ্রীবিষ্ণুর নিকট যিনি জাগরণ করেন, ভগবদ্ধাম লাভ তার করতলগত ।
▪️হে মুনিশ্রেষ্ঠ! কৃষ্ণপ্রিয় কার্তিকমাসে পিতৃগণের উদ্দেশ্যে অন্নজল যাই দান করবে তাই অক্ষয় হয় ।

🔴কার্তিকে শাস্ত্রালোচনার মাহাত্ম্য
স্কন্দপুরাণে
▪️যে মানব কার্তিকমাস গীতা শাস্ত্রাভ্যাস দ্বারা যাপন করে, হে শ্রীনারদ! তার সংসারে পুনরাগমন দেখি না।
▪️যে মানব কার্তিকে শ্রীবিষ্ণু মন্দির প্রদক্ষিণ করে সে পদে পদে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফলভাগী হয়।
▪️যে মানব কার্তিকে শ্রীহরির সম্মুখে নৃত্য, গীত, বাদ্য ভক্তিসহ করে, সে অক্ষয়পদ বিষ্ণুধাম প্রাপ্ত হয়।
▪️কার্তিকে যে মানব শ্রীহরির সহস্রনাম স্তোত্র এবং গজেন্দ্রমোক্ষণ পাঠ করে তার সংসারে পুনর্জন্ম লাভ হয় না ।
▪️হে মহামুনে! কার্তিকে সর্বধর্ম পরিত্যাগ করে ভগবৎসম্মুখে পবিত্র শাস্ত্রব্যাখ্যা শ্রবণ কর্তব্য।
▪️হে মুনিশাৰ্দ্দুল! কার্তিকে মঙ্গলার্থ বা লোভ বুদ্ধিতে যিনি হরিকথা কীর্তন করেন, তিনি শতকুল উদ্ধার করেন ।
▪️কার্তিকে শ্রীমধুসূদন শাস্ত্রকথা আলাপ দ্বারা যেমন তুষ্ট হন, দানসমূহ, যজ্ঞসমূহ, গো-দান, হস্তিদানাাাদি দ্বারা সে রকম তুষ্ট হন না।
▪️হে মুনিশ্রেষ্ঠ! কার্তিকে যিনি হরিকথা শ্রবণ করেন, তিনি শতকোটি জন্মের আপদসমূহ থেকে নিস্তার পান ।
▪️হে মুনে! যিনি কার্তিকে যত্নসহ নিত্য শ্রীমদ্ভাগবতের একটি শ্লোকও পাঠ করেন, তিনি অষ্টাদশপুরাণ পাঠের ফল পান।
🔴 পদ্মপুরাণেও কার্তিকব্রত প্রসঙ্গে
▪️কার্তিকে যিনি ব্রহ্মচারী, ভূমিশায়ী, হবিষ্যভোজী, পলাশপত্রে ভোজনকারী, শ্রীদামোদরের অর্চন করেন, তিনি সর্বপাপ মুক্ত হয়ে শ্রীবৈকুণ্ঠধামে শ্রীহরির নিকট ভজনানন্দে পরিপূর্ণ বিষ্ণু সদৃশ আনন্দভোগ করেন।
▪️পরিপূর্ণ কার্তিক মাসে প্রাতঃস্নানকারী, জিতেন্দ্রিয়, জপকারী, হবিষ্যভোজী ও বহিরিন্দ্রিয় সংযমকারী সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয় ।
▪️কার্তিকে প্রভু শ্রীহরি পূজিত হয়ে পূজকের সহস্র অপরাধ ও মহামহাপাতকসমূহ ক্ষমা করেন ।

🔴পদ্মপুরাণে শ্রীকৃষ্ণ সত্যা সংবাদে–
▪️কার্তিকে যে মানব স্নান নিশিজাগরণ, দীপদান, তুলসীবন পালন করেন, তারা শ্রীবিষ্ণুর সারূপ্য লাভ করেন ।
▪️এইভাবে কার্তিকে তিনদিনও যাঁরা সেবা করেন, তাঁরা দেবগণেরও বন্দনীয়, আর যাঁরা আজন্ম ঐ সেবা করেন, তাঁদের আর কি বলব ।

🔴কার্তিকব্রতের অঙ্গসমূহ
পদ্মপুরাণে–
▪️রাত্রিশেষে হরি জাগরণ, প্রাতঃস্নান, তুলসীবন সেবন, দীপদান, শেষে উৎসব উদযাপন- কার্তিকে এই সকল ব্রত ।
▪️সম্পূর্ণ কার্তিক মাসে ব্রতকারী পাঁচটি ব্রত অঙ্গ পালন দ্বারা ভুক্তি মুক্তি ফল প্রাপ্ত হন ।
▪️কার্তিকে হরি জাগরণ বিষ্ণুমন্দিরে, শিবালয়ে, অশ্বত্থমূলে বা তুলসীবনে করবে ।
▪️কার্তিক-ব্রতী বিপদাপন্ন হয়ে স্নানের জন্য যখন জল না পাবেন,অথবা ব্যাধিবশতঃ স্নানে অসমর্থ হলে শ্রীবিষ্ণুর নাম দ্বারা মন্ত্র স্নান করবেন।
▪️ব্রতকারী হয়ে যিনি উদযাপন বিধি করতে অসমর্থ, তিনি ব্রত সংপূর্তির জন্য যথাশক্তি ব্রাহ্মণগণকে ভক্তিপূর্বক ভোজন করাবেন ।
▪️কার্তিকে দীপদানে অসমর্থ হলে পরের প্রদত্ত দীপকে উদ্দীপিত করবে অথবা যত্নসহকারে বাতাসাদি হতে পর দীপকে রক্ষা করবে।
▪️তুলসী সেবার অভাবে বৈষ্ণব দ্বিজকে পূজা করবেন, ব্রতী এ সকলের অভাবে ব্রত সম্পূর্ণের জন্য ব্রাহ্মণগণের, গাভীগণের বা অশ্বত্থ ও বটবৃক্ষের সেবা করবে ।

🔴কার্তিকে_দীপদান_মাহাত্ম্য–
স্কন্দপুরাণে কার্তিক মাহাত্ম্যে–
কার্তিকে নিমেষাৰ্দ্ধকাল দীপদান ফলে সহস্রকোটিকল্প অর্জিত বহু পাপ বিলুপ্ত হয়।
হে বিপেন্দ্ৰ! কার্তিকে কেশবপ্রিয় দীপদানের মাহাত্ম্য শ্রবণ কর, ক দীপদান দ্বারা পৃথিবীতে আর পুনর্জন্ম হয় না।কুরুক্ষেত্রে সূর্যগ্রহণে, চন্দ্রগ্রহণে নর্মদাতে যে স্নানফল, কার্তিকে দীপদানে তার কোটিগুণ ফল হয় । ১০২। কার্তিকে যার দীপ, ঘৃত বা তিলতৈল দ্বারা প্রজ্জ্বলিত হয়। হে মুনিবর তার অশ্বমেধ যজ্ঞে কি ফল? ১০৩। কার্তিকে জনার্দনে দীপদান ফলে মন্ত্রহীন, ক্রিয়াহীন, শৌচহীন সকলই সম্পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় ।
কার্তিকে কেশবের অগ্রে যিনি দীপ দান করেন, তার সর্বযজ্ঞ দ্বারা যজন ও সর্বতীর্থে স্নান হয় ।
কার্তিকে কেশবের যে পর্যন্ত দীপজ্যোতি প্রজ্জ্বলিত না হয়, সে পর্যন্ত পুণ্যসমূহ স্বর্গে, মর্ত্যে ও রসাতলে গর্জন করে । হে দ্বিজ! পুরাকালীয় পিতৃগণ গাথা কীর্তিত হতে শোনা যায় আমাদের কুলে পৃথিবীতে পিতৃভক্ত পুত্র জন্মগ্রহণ করবে, যে পুত্র কার্তিকে কেশবকে দীপদান দ্বারা প্রসন্ন করবে এবং চক্রপাণির প্রসাদে আমরা নিশ্চয়ই মুক্তি পাব । মেরু ও মন্দর পর্বত সদৃশ অশেষ পাপসমূহ করলেও কার্তিকে দীপদান প্রভাবে সর্বপাপ দগ্ধ হয়- এতে সন্দেহ নাই । কার্তিকে বাসুদেবের সম্মুখে গৃহে বা আয়তনে দীপদানে মহাফল বৈকুণ্ঠলোক প্রাপ্ত হয় । যিনি কার্তিক মাসে মধূসুদনের অগ্রে দীপদান করেছেন, তিনিই মনুষ্যলোকে জন্ম সার্থক করেছেন। তিনি ধন্য, তিনি কীর্তিমান । কার্তিকে অতি অল্পকাল মাত্র দীপদানের যে তা দ্বারা বা তীর্থশত স্নান দ্বারা প্রাপ্য নয় ।য়পর যে ফল, তা যজ্ঞশত সর্বপ্রকার অনুষ্ঠানহীন, আর সর্বপাপরত হলেও কার্তিকে দীপদান প্রভাবে পবিত্র হয়, এতে সন্দেহ নেই । হে নারদ! ত্রিভুবনে এমন কোন পাপ নাই, যা কার্তিকে শ্রীকেশবের অগ্রে দীপদান দ্বারা শোধন করতে পারে না। কার্তিকে শ্রীবাসুদেবের অগ্রে দীপদান করে সকল বাধা মুক্ত হয়ে নিত্যধাম প্রাপ্ত হয়। যিনি কার্তিক মাসে কর্পূর দ্বারা দীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, বিশেষতঃ দ্বাদশীতে তার পুণ্য তোমাকে বলছি । হে নারদ! তার কুলে যারা জন্মেছে এবং যারা জন্মাবে, আর যারা বহু অতীতে যাদের সংখ্যা নাই। তারা চক্রপাণি শ্রীকৃষ্ণের প্রসাদে দেবলোকে ইচ্ছামতো সুদীর্ঘকাল ক্রীড়া করে সকলে মুক্তিলাভ করবে।
হে বিপ্ৰেদ্ৰ! দ্যূতক্রীড়া ছলে কার্তিকে শ্রীহরিমন্দির যে ব্যক্তি আলোকিত করে, হে মহাভাগ! সে তার সপ্তপুরুষ পবিত্র করে। পর্যন্ত কুলকে কার্তিকে বৈষ্ণবগৃহে যে মানব দীপদান করে, তারও সর্বদা ধন, পুত্র, যশ, কীর্তি হয় । যেমন মন্থন দ্বারা সর্বকোষ্ঠে অগ্নি দৃষ্ট হন, সেইরূপ দীপদান প্রভাবে ধর্ম সর্বত্র দৃশ্য হন- এতে সংশয় নাই ।হে বিপ্ৰেদ্ৰ! নির্ধন ব্যক্তিরও আত্মবিক্রয় করে কার্তিকে পূর্ণিমা যাবৎ দীপদান কর্তব্য । হে মুনে! কার্তিকে বিষ্ণুমন্দিরে যে মূঢ়ব্যক্তি দীপদান না করে সে বৈষ্ণব মধ্যে স্বীকৃত নয় ।

🔴পদ্মপুরাণে- কার্তিকে শ্রীহরিমন্দিরে যিনি অখণ্ড দীপ দান করেন, তিনি শ্রীহরিধামে দিব্যজ্যোতিঃ শ্রেষ্ঠ বিমানে ক্রীড়া করেন ।

🔴শিখর দীপ মাহাত্ম্য–
স্কন্দপুরাণে–
শ্রীমন্দিরে কলসের উপরে যখন দীপ উজ্জ্বল হয়, হে মুনিশ্রেষ্ঠ! তখন পাপরাশি দ্রবীভূত হয়
যে মানবগণ ব্রাহ্মণগণকে সমুদ্রবেষ্টিত পৃথিবী দান করে, তার ফল শ্রীহরি মন্দিরের চূড়ায় প্রদত্ত দীপ দানের এক কলার সমানও নয়। যে ব্যক্তি সবৎসা দুগ্ধবতী কোটি ধেনু দান করে, তার ফল
শ্রীহরিমন্দিরের চূড়ায় প্রদত্ত দীপের ফলের এক কলার সমান নয়। হে মহামুনে! বৈষ্ণবগণের উদ্দেশ্যে সর্বস্ব দান করে যে ফল, শ্রীহরিমন্দিরের উপরে প্রদত্ত দীপদানের এক কলার সমান নয়। হে মহামুনে! শ্রীহরিমন্দিরের শিখরের উপরে ও মধ্যে প্রদত্ত প্রদীপ যিনি মূল্য দ্বারা ক্রয় করেছেন, তিনি নিজ শতকুল করেন। উদ্ধার কার্তিকে শ্রীকেশবদেবের আলোকদীপ্ত উচ্চতর প্রাসাদ মহাভক্তিসহ যারা দর্শন করেন, তাদের কুলে কেউ নরকবাসী হয় না। বিষ্ণুদীপ প্রদানকারীকে স্বর্গে দেবগণ নিরীক্ষণ করতে থাকেন যে, কখন এই দীপদানকারী ভক্তসহ আমাদের মিলন হবে।হে মুনিশ্রেষ্ঠ! কার্তিকে পূর্ণিমা পর্যন্ত শ্রীহরিমন্দিরের উপরে যিনি দীপদান করেন, তার পক্ষে ইন্দ্রপদ দুর্লভ নয়।

🔴মন্দিরোপরি দীপমালা মাহাত্ম্যে–
স্কন্দপুরাণে কার্তিক-মাহাত্ম্য প্রসঙ্গে–
শ্রীহরিমন্দিরের বাহিরে ও অভ্যন্তরে দীপমালা যিনি রচনা করেন, তিনি শ্রীবিষ্ণুর পার্ষদ । যিনি শ্রীহরিমন্দিরে দীপমালা রচনা করেন, তার বংশে উদ্ভুত লক্ষপুরুষের নরক গমন হয় না ।
হে মুনে! শ্রীবিষ্ণুমন্দিরের বাহির-ভেতর যিনি দীপযুক্ত করেন, তাঁর পরমধাম গমনকালে পথে দেবগণ দীপ হাতে অপেক্ষা করতে থাকে ।

🔴ভবিষ্যপুরাণেও
যিনি কার্তিকমাসে বিশেষত উত্থান একাদশী ও দ্বাদশীতে অতি সুন্দর দীপমালিকা রচনা করেন, তিনি দশ সহস্র সূর্যতেজ সদৃশ জ্যোতিদ্বারা দশদিক্ আলোকিত করে জ্যোতির্ময় বিমানে জগৎ আলোকিত করে বিষ্ণুলোকে গমন করেন এবং যত সংখ্যা প্রদীপ ঘৃতপূর্ণ করে শ্রীভগবার্নের জাগরণ করেন, তত সহস্রবর্ষ শ্রীবিষ্ণুলোকে বিরাজ করেন ।

🔴আকাশদীপ মাহাত্ম্য–
যে মানব কার্তিকে উচ্চ আকাশে
দীপ দান করেন, তিনি সর্বকুল উদ্ধার করে বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হন ।
যে মানব কার্তিকে শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে আকাশে ও জলে দীপ দান করেন, তার যে ফল তা শ্রবণ করুন । হে বিপ্রগণ- এইরূপভাবে যিনি দীপদান করেন, তিনি ধনধান্য, সমৃদ্ধিশালী, পুত্রবান্ ও ঐশ্বর্যশালী হন, তাঁর নয়নযুগল সুশোভন হয় এবং তিনি বিদ্বান হয়ে জন্মগ্রহণ করেন । কার্তিকমাসে বিপ্রগৃহে যিনি দীপদান করেন, মনীষিগণ বলেন তাঁর অগ্নিষ্টোম যজ্ঞের ফল হয়। চৌরাস্তায়, রাজপথে, ব্রাহ্মণ গৃহে, বৃক্ষমূলে, গোষ্ঠে, মাঠে, অরণ্যেও দীপদানে সর্বত্র মহাফল প্রাপ্ত হবে।

🔴কার্তিক_কৃত্য_বিধি
আরম্ভ কাল নির্ণয়–
শ্রীকৃষ্ণ সত্যভামা সংবাদে, কার্তিকে মাহাত্ম্যে–
আশ্বিনমাসের যে শুক্লা একাদশী হবে বা পূর্ণিমাতে, নিরলসভাবে কার্তিক মাসের ব্রতসমূহ ঐ দিন হতে আরম্ভ করবে। নিত্য শ্রীভগবানকে জাগরণ করাবার জন্য রাত্রির শেষ প্রহরে উঠে শুচি হয়ে শ্রীভগবানকে জাগিয়ে অনন্তর স্তোত্রপাঠ সহ প্রভুর আরতি করবে ।
বৈষ্ণববৃন্দ সহ আনন্দে বৈষ্ণবধর্মসমূহ শ্রবণ করে
গীতবাদ্যাদিসহ প্রাতঃকালে প্রভু দামোদরদেবকে আরতি করবে। নদী আদি জলাশয়ে গিয়ে আচমনপূর্বক সংকল্প করবে। প্রভুকে প্রার্থনা জানিয়ে পরে তাঁকে যথাবিধি অর্ঘ্যদান করবে।

▪️সংকল্পমন্ত্র- হে জনার্দন! হে দেবেশ! হে দামোদর! শ্রীরাধিকাসহ আপনার প্রীতির জন্য কার্তিকে আমি প্রাতঃস্নান করব।

▪️প্রার্থনা মন্ত্র- হে দেবেশ! তোমার ধ্যানসহ এই জলে আমি স্নান করতে উদ্যত, হে দামোদর! তোমার প্রসাদে আমার পাপ বিনাশ যাক।

▪️ অর্ঘ্যমন্ত্র- আমি কার্তিক মাসে বিধিবৎ স্নানকারী, হে দামোদর! হে দনুজেন্দ্ৰনিসূদন আমার প্রদত্ত অর্ঘ্য গ্রহণ কর । হে হরে। নিত্যনৈমিত্তিক সমস্ত পাপশোষণ করে কার্তিক মাসে আমার প্রদত্ত অর্ঘ্য রাধিকাসহ গ্রহণ কর।

নিজদেহকে তিলকদ্বারা লেপন করে শ্রীকৃষ্ণ নারায়াণাদি নাম উচ্চারণ পূর্বক স্নান করে নিজ বিধিমতে সন্ধ্যা উপাসনা করে গৃহে আগমন করবে।
দেবমন্দির অগ্রে মার্জনা করে স্বস্তিকমণ্ডল রচনা করে প্রভুকে তুলসী, মালতী, পদ্ম, অগস্ত (বক) পুষ্পাদি দ্বারা অর্চন করবে। নিত্য বৈষ্ণব সঙ্গে ভগবৎ কথা সেবন, অহোরাত্র ঘৃত, দীপ বা তিল দ্বারা অর্চন করবে।
কার্তিক মাসে বিশেষ বিশেষ নৈবেদ্য অর্পন করবে, সেই রকম অষ্টোত্তর শত প্রণাম, যথাশক্তি একবার আহারাদি ব্রত আচরণ করবেন।

🔴পদ্মপুরাণে কার্তিক প্রসঙ্গে
প্রাতঃকালে উত্থান শৌচাদি করে পবিত্র জলাশয়ে গিয়ে বিধিব স্নান, অতপর দামোদর অর্চন কর্তব্য।

বৈষ্ণববৃন্দসহ কৃষ্ণকথা আলাপ দ্বারা দিন যাপন, কার্তিক মাসে ব্রত সংকল্প পালন ।
আশ্বিনে শুক্লপক্ষের হরিবাসরে আরম্ভ, অথবা পৌর্ণমাসি হতে অথবা তুলারাশি আগমে সংক্রান্তিতে আরম্ভ । শ্রীবিষ্ণুর নিকট অখণ্ড দীপদান, দেবালয়ে, তুলসীতে, আকাশে উত্তম দীপ দান করবেন। কার্তিকব্রতে মানব শ্রীদামোদরের প্রীতির জন্য রৌপ্য, দীপ, স্বর্ণদীপ, মুক্তাফলাদি দান করবেন।

🔴কার্তিকব্রতে বর্জনীয় দ্রব্যসকল–
পদ্মপুরাণে ব্রহ্ম-নারদ সংবাদে–
কার্তিক মাসে রাজমাষ (বরবটি) ও শিমসমূহ ভক্ষণ করলে ,হে মুনিবর কল্পকাল নরকবাসী হয়।
কার্তিক মাসে যে ব্যক্তি কলমী শাক, পটল, বেগুন, আচার (চাটনি) ত্যাগ না করে, তাকে কল্পকাল নরকবাসী হতে হয় । ধর্মাত্মা ব্যক্তি কার্তিক মাসে
ভক্ষণ করবেন না । পরান্ন, পরশয্যা, পরধন, পরস্ত্রী-কার্তিকে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি বিশেষভাবে বর্জন করবেন। মৎস্য ও মাংস কার্তিক মাসে তৈল মর্দন, শয্যা, পরান্ন ও কাসার পাত্রে ভোজন ত্যাগ করলে পরিপূর্ণ ব্রতী হওয়া যায় । কার্তিক মাস উপস্থিত হলে পরান্ন দর্শন করে যে মানব বর্জন করে, প্রতিদিন কৃচ্ছব্রতের ফল প্রাপ্ত হন । কার্তিকে তৈল, মধু, কাসার পাত্র ও পঁচা বাসি অম্ল দ্রব্য, আচার ইত্যাদি বর্জন করবে।
হে সুভ্রু। মৎস্য, কচ্ছপ মাংস ঔষধ হিসেবেও অন্য মাংস ভক্ষণ করবে না। কার্তিকে মাংস ভক্ষণে চণ্ডাল হয়।

🍁কার্তিক মাসে কি কি খেতে নেই এবং কেন❓
পদ্মপুরাণের স্বর্গখন্ডের ৪৭ নং অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-

১) কার্তিক মাসে মাংসভোজনে চিররোগী ও বহুপাপের ভাগী হতে হয়।
২) মিষ্টিকুমড়া ভক্ষণে ধনহানী হয়
৩) পটোল ভক্ষণে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
৪) নিম ভক্ষণে তীর্যক যোনী (পশুযোনী) প্রাপ্ত হয়
৫) তাল ভক্ষণে শরীর নাশ হয়।
৬) নারিকেল ভক্ষণে মূর্খতা বৃদ্ধি পায়
৭) বর্তুলাকার লাউ ভক্ষণ গোমাংসতুল্য
৮) কলিন্দ গোবধ তুল্য
৯) শিম ভক্ষণে পাপ হয়
১০) পূতিকা ব্রহ্মঘাতিকা
১১) শ্বেত বেগুণ ভক্ষণে পুত্রনাশ

এছাড়াও কার্তিক মাস ব্রতীগণ মাষ, মধু, রাজমাস, জাম্বুরা, মসূর, পান্তা অন্ন, মাছ-মাংস-ডিম, মাশরুম(ছত্রাক), ঈস্ট, সজিনা, কাংসপাত্রে ভোজন ত্যাগ করবেন।

🔴শ্রীরাধাদামোদর পূজাবিধি–
পদ্মপুরাণে কার্তিকব্রতে–
শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তমা, গোপিকাগণ মধ্যে শ্রেষ্ঠা, কার্তিকে শ্রীদামোদর নিকটে শ্রীরাধিকার পূজা করা উচিত ব্রজবাসী ব্রাহ্মণ এবং তৎপত্নীকে বস্তু, অলঙ্কার ও ভোজনাদ দান দ্বারা পূজা করা কর্তব্য। হে বিপ্লগণ। কার্তিকে শ্রীরাধিকার সন্তোষের জন্য যিনি শ্রীরাধিকা প্রতিমাকে পূজা করে তার প্রতি শ্রীমান্ দামোদর হরি তুষ্ট হন। কার্তিকে প্রতিদিন ‘দামোদরাষ্টকম্' নামক স্তোত্র (সত্যব্রত মুনি কথিত) পাঠ করবে, তা দামোদরের অর্চন স্বরূপ ও শ্রীদামোদরের আকর্ষণকারী ।

🔴দামোদর ব্রতের (নিয়ম সেবা) সংকল্প:
‘হৃষীকেনং হৃষীকেশ সেবনং ভক্তিরুচ্যতে' সর্বান্তকরণে ইন্দ্রিয়সমূহ দ্বারা ইন্দ্ৰিয়াধিপতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের তথা সেবাই ভক্তি। কিভাবে সময়ের সর্বোচ্চ উপযোগ করে ভগবানের সেবা করা যায় সেটাই দামোদর ব্রতের সংকল্প হওয়া উচিত। তবে সর্বাগ্রে এটা খেয়াল রাখা উচিত যে, নিয়মগুলো (সংকল্প) যেন লোকদেখানো বা শুধুই নিয়মমাত্র থেকে না যায়। ব্রতের সময়সীমা পর্যন্ত যেন সেগুলো পালনযোগ্য হয় সেটাও বিবেচনা করতে হবে। ইষ্টদেবের প্রীতিবিধানার্থ নানাবিধ ব্রতনিয়ম বা সংকল্প করা যেতে পারে। যেমন–
১ । নিত্য মঙ্গলারতি দর্শন ও গুরুপূজায় অংশগ্রহণ । ২। নিত্য ভাগবত ক্লাসে যোগদান ।
৩। হবিষ্যান্ন গ্রহণ ।
৪। সন্ধ্যায় আরতিতে অংশগ্রহণ ও দামোদরের জন্য
দীপদান ।
৫। বেশি সংখ্যক হরিনাম জপ
৬ । সকাল-সন্ধ্যা প্রতিদিন তুলসী পূজা ও পরিক্রমা ।
৭। মন্দির পরিক্রমা।
৮। বেশি সংখ্যক গ্রন্থ প্রচার ।
৯ । প্রতিদিন 'দামোদরাষ্টকং' পাঠ ।
১০ । ‘লীলাপুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ’, ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা যথাযথ’, ‘শ্রীমদভাগবত' প্রভৃতি গ্রন্থাদি পাঠ।

🔵দামোদর মাসে ব্রত পালনের বিধিসমূহ‼️

📖 দামোদর মাসের মাহাত্ম্য-

১. যে কোনও দেশে কার্তিকে স্নান ও দান বিশেষতঃ পূজাতে তা অগ্নিহোত্র সমফল।

২. কুরুক্ষেত্রে কোটিগুণ ফল, গঙ্গায়ও তৎসম ফল, তার থকে অধিক পুস্করে, হে ভার্গব! দ্বারকায়ও অধিক। কার্তিক মাসে স্নানও শ্রীভগবৎপূজন শ্রীকৃষ্ণসালোক্যপ্রদ।

৩. হে মুনিগণ! মথুরা ব্যতীত, অন্যপুরী সকল তার সমান, যেহেতু মথুরা-মণ্ডলেই শ্রীহরির দামোদর লীলা প্রকট হয়েছিল।

৪. অতএব কার্তিকে মথুরায় শ্রীগোবিন্দের প্রীতিবর্দ্ধন, কার্তিকে মথুরাতেই চরম ফল প্রাপ্তি হয়।

৫. যেমন মাঘে প্রয়াগতীর্থ, বৈশাখে জাহ্নবী, কার্তিকে মথুরা সেবা তা থেকে উৎকর্ষ আর নাই।

৬. কার্তিকে মথুরাতে মানবগণ স্নান করে দামোদরের পূজা করলে তারা কৃষ্ণসারূপ্য প্রাপ্ত জানবেন, এ বিষয়ে বিচার কর্তব্য নয়।

৭. হে বিপ্র! এই জগতে মানবগণের পক্ষে মথুরাতে কার্তিক মাস দুর্লভ। যেখানে পূজিত হয়ে দামোদর নিজরূপ ভক্তগণকে প্রদান করেন।

৮. শ্রীহরি অর্চিত হয়ে অন্যত্র সেবিত ভক্তগণকে ভুক্তি মুক্তি দান করেন, এই শ্রীহরি কিন্ত ভক্তি দান করেন না, যেহেতু শ্রীহরির বশ্যকারী।

৯. কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে একবারও শ্রীদামোদরের পূজা থেকে সেই ভক্তি কিন্তু অনায়াসে মানবগণ শ্রীহরি হতে লাভ করে।

১০. শ্রীদামোদরদেব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে মন্ত্র-দ্রব-বিহীন পূজাকেও স্বীকার করেন।

১১. যে পাপের মরণান্তেই বিনিষ্কৃতি হয় তার শুদ্ধির জন্য কার্তিক মাসে মথুরাপুরীতে হরিপূজাই সুনিশ্চয়, এই প্রায়শ্চিত্ত শাস্ত্রে উক্ত হয়েছেন।

১২. বালক ধ্রুব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীদামোদরের পূজা ও ধ্যান দ্বারা যোগিগণ দুর্লভ শ্রীভগবানকে শীঘ্র দর্শন প্রাপ্ত হয়েছিলেন। পৃথিবীতে মথুরা সুলভা, সেই রকম প্রতিবছর কার্তিক মাস সুলভ, তথাপি এই জগতে মূঢ় মানবগণ ভবসমুদ্রে জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে ভাসছে।

১৩. যজ্ঞসমূহের কি প্রয়োজন, তপস্যার কি প্রয়োজন, অন্য তীর্থসমূহের সেবাতে কি প্রয়োজন? যদি কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীরাধিকা প্রিয় শ্রীদামোদরের অর্চিত হন।

১৪. সকল পবিত্র তীর্থ, নদ-নদী, সরোবর কার্তিক মাসে এই মথুরা-মণ্ডলে সকলেই বাস করেন।

১৫. কার্তিকে কেশবদেবের জন্মস্থানে যে মানবগণ একবার প্রবিষ্ট হয়, তারা পরম অব্যয় শ্রীকৃষ্ণকে প্রাপ্ত হন।

১৬. কার্তিক মাসে মথুরাতে হরিপূজাকের উপহার উদ্দেশ্যে হরিপূজা দ্বারা দুর্লভ পদ প্রাপ্ত হওয়া যায়, তখন ভক্তিমান হয়ে পূজা করলে যে কি ফল, তার আর কি বলব।

🚫 কার্তিক মাসে ব্রত পালনের বর্জনীয় দ্রব্যসমূহ…‼️
পদ্মপুরাণে ব্রহ্ম-নারদ সংবাদে বলা হচ্ছে-

১. কার্তিক মাসে রাজমাষ (বরবটি) ও শিমসমূহ ভক্ষণ করলে, হে মুনিবর কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকাবাসী হয়।

২. কার্তিক মাসে যে ব্যক্তি কলমী শাক, পটল, বেগুন, আচার (চাটনি) ত্যাগ না করে, তাকে কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকবাসী হতে হয়।

৩. ধর্মাত্মা ব্যক্তি কার্তিক মাসে মৎস্য ও মাংস ভক্ষণ করবেন না।

৪. পরান্ন, পরশয্যা, পরধন, পরস্ত্রী-কার্তিককে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি বিশেষভাবে বর্জন করবেন।

৫. কার্তিক মাসে তৈল মর্দন, শয্যা, পরান্ন ও কাসার পাত্রে ভোজন ত্যাগ করলে পরিপূর্ণ ব্রতী হওয়া যায়।

৬. কার্তিক মাস উপস্থিত হলে পরান্ন দর্শন করে যে মানব বর্জন করে, প্রতিদিন কৃচ্ছব্রতের ফল প্রাপ্ত হন।
পদ্মপুরাণে শ্রীরুক্মাঙ্গদ-মোহিনী-সংবাদে বলা হচ্ছে-

৭. কার্তিকে তৈল, মধু, কাসার পাত্র ও পঁচা বাসি অম্ল দ্রব্য, আচার ইত্যাদি বর্জন করবে।

৮. হে সুভ্রু! মৎস্য, কচ্ছপ মাংস ঔষধ হিসেবেও অন্য মাংস ভক্ষণ করবে না। কার্তিকে মাংস ভক্ষণে চণ্ডাল হয়।

✅ কার্তিক-কৃত্য-বিধি-

১. আশ্বিন মাসের যে শুক্লা একাদশী হবে বা পূর্ণিমাতে, নিরলসভাবে কার্তিক মাসের ব্রতসমূহ ঐ দিন হতে আরম্ভ করবে।

২. নিত্য শ্রীভগবানকে জাগরণ করাবার জন্য রাত্রির শেষ প্রহরে উঠে শুচি হয়ে শ্রীভগবানকে জাগিয়ে অনন্তর স্তোত্র পাঠসহ প্রভুর আরতি করবে।

৩. বৈষ্ণববৃন্দসহ আনন্দে বৈষ্ণবধর্মসমূহ শ্রবণ করে গীতবাদ্যাদিসহ প্রাতঃকালে প্রভু দামোদরদেবকে আরতি করবে।

৪. নদী আদি জলাশয়ে গিয়ে আচমনপূর্বক সংকল্প করবে। প্রভুকে প্রার্থনা জানিয়ে পরে তাঁকে যথাবিধি অর্ঘ্যদান করবে।

৫. সংকল্পমন্ত্র- হে জনার্দন! হে দেবেশ! হে দামোদর! শ্রীরাধিকাসহ আপনার প্রীতির জন্য কার্তিকে আমি প্রাতঃস্নান করব।

৬. প্রার্থনা মন্ত্র- হে দেবেশ! তোমার ধ্যানসহ এই জলে আমি স্নান করতে উদ্যত, হে দামোদর! তোমার প্রসাদে আমার পাপ বিনাশ যাক।

৭. অর্ঘ্যমন্ত্র-আমি কার্তিক মাসে বিধিবৎ স্নানকারী, হে দামোদর! হে দনুজেন্দ্রনিসূদন আমার প্রদত্ত অর্ঘ্য গ্রহণ কর।

৮. নিজদেহকে তিলকদ্বারা লেপন করে শ্রীকৃষ্ণ নারায়াণাদি নাম উচ্চারণ পূর্বক স্নান করে নিজ বিধিমতে সন্ধ্যা উপাসনা করে গৃহে আগমন করবে।

৯. দেবমন্দির অগ্রে মার্জনা করে স্বস্তিকমণ্ডল রচনা করে প্রভুকে তুলসী, মালতী, পদ্ম, অগস্ত (বক) পষ্পাদি দ্বারা অর্চনা করবে।

১০. নিত্য বৈষ্ণব সঙ্গে ভগবৎ কথা সেবন, অহোরাত্র ঘৃত, দীপ বা তিল দ্বারা অর্চন করবে।

১১. কার্তিক মাসে বিশেষ বিশেষ নৈবেদ্য অর্পন করবে, সেই রকম অষ্টোত্তর শত প্রণাম, যথাশক্তি একবার আহারাদি ব্রত আচরণ করবেন।

📖 পদ্মপুরাণে কার্তিক মাস প্রসঙ্গে-

১২. প্রাতঃকালে উত্থান শৌচাদি করে পবিত্র জলাশয়ে গিয়ে বিধিবৎ স্নান, অতপর দামোদর অর্চন কর্তব্য।

১৩. কার্তিক ব্রতধারী মৌন অবলম্বনে ভোজন, ঘৃত দ্বারা বা তিল তৈল দ্বারা দীপাদান কর্তব্য।

১৪. বৈষ্ণববৃন্দসহ কৃষ্ণকথা আলাপ দ্বারা দিন যাপন, কার্তিক মাসে ব্রত সংকল্প পালন।

১৫. আশ্বিনে শুক্লপক্ষের হরিবাসরে আরম্ভ, অথবা পৌর্ণমাসি হতে অথবা তুলারাশি আগমে সংক্রান্তিতে আরম্ভ।

১৬. শ্রীবিষ্ণুর নিকট অখণ্ড দীপদান, দেবালয়ে, তুলসীতে, আকাশে উত্তম দীপ দান করবেন।

১৭. হে ভাবিনি! কার্তিকমাসে কার্তিকব্রত গৃহে করবে না, বিশেষতঃ তীর্থে কার্তিকব্রত সর্বপ্রযত্নে করবে।

🕉️ শ্রীরাধাদামোদর-পূজাবিধি-

১. শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তমা, পোপিকাগণ মধ্যে শ্রেষ্ঠা, কার্তিকে শ্রীদামোদর নিকটে শ্রীরাধিকার পূজা করা উচিত।

২. ব্রজবাসী ব্রাহ্মণ এবং তৎপত্নীকে বস্ত্র, অলঙ্কার ও ভোজনাদি দান দ্বারা পূজা করা কর্তব্য।

৩. হে বিপ্রগণ! কার্তিকে শ্রীরাধিকার সন্তোষের জন্য যিনি শ্রীরাধিকা প্রতিমাকে পূজা করে তার প্রতি শ্রীমান্ দামোদর হরি তুষ্ট হন।

৪. কার্তিকে প্রতিদিন ‘দামোদরাষ্টকম্’ নামক স্তোত্র (সত্যব্রত মুনি কথিত) পাঠ করবে, তা দামোদরের অর্চন স্বরূপ ও শ্রীদামোদরের আকর্ষণকারী।

🪔 দীপদান’ এবং ‘আকাশ দীপ’ এর মহিমা‼️

স্কন্দপুরাণে পূর্বকালে দ্রাবিড়দেশে বুদ্ধ নামে এক ব্রাহ্মণ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ছিল খুবই দুষ্টা প্রকৃতির এবং দুরাচার সম্পন্না। ঐ স্ত্রীর সংসর্গে থাকার ফলে ব্রাহ্মণের আয়ু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হলেন। পতির মৃত্যুর পরেও ঐ স্ত্রীলোকটি আরও বিশেষভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত হলো।

এমনকি লোকনিন্দার ভয় না করে সে নির্লজ্জের মতো ব্যবহার করতে লাগল। তার কোনো পুত্র বা ভাই ছিল না। সে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই পরের বাড়ি থেকে ভিক্ষা করে বাসি অন্ন খেত এবং অনেক সময় অপরের বাড়িতে রান্না করতে যেত।

তীর্থযাত্রা আদি থেকে সর্বদাই দুরে থাকত। সে কখনও কোনো ভালো কথায় কর্ণপাত করত না।
একদিন এক বিদ্ধান তীর্থযাত্রী ব্রাহ্মণ তার গৃহে আগমন করল। যার নাম ছিল কুৎস। তাকে (ঐ স্ত্রীকে) ব্যভিচারে আসক্ত দেখে সেই ব্রহ্মর্ষি কুৎস বললেন-

ওরে মুর্খ নারী! মনোযোগে সহকারে আমার কথা শ্রবণ কর। পৃথ্বি আদি পঞ্চভূত দ্বারা তৈরী এই রক্তমাংসের শরীর, যা কেবল দুঃখেরই কারণ, তুই তাকে যত্ন করছিস? এই দেহ জলের বুদবুদের মতো, একদিন যা অবশ্যই বিনষ্ট হবে। এই অনিত্য শরীরকে যদি তুই নিজ বলে মানিস্ তাহলে নিজের বিচার পূর্বক এই মোহ পরিত্যাগ কর।

ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ কর এবং তাঁর লীলাকাহিনী শ্রবণ কর। এখন কার্তিক মাস আগত হবে, তখন ভগবান দামোদরের প্রীতি বিধানের জন্য, স্নান, দান আদি কর্ম করে গৃহে বা মন্দিরে বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে দীপ নিবেদন করে শ্রীবিষ্ণুকে পরিক্রমা করবে এবং তাঁকে প্রণাম করবে। এই ব্রত বিধবা এবং সৌভাগ্যবতী নারী উভয়েরই অবশ্য পালনীয়। যার ফলে সমস্ত প্রকারের পাপের শাস্তি তথা সকল উপদ্রব নষ্ট হয়।

কার্তিক মাসে দীপদান নিশ্চিতরূপে ভগবান বিষ্ণুর প্রীতি বর্ধন করে। এই কথা বলে ব্রাহ্মণ কুৎস অপর একটি গৃহে গমন করলেন। তখন ঐ ব্রাহ্মণী ব্রহ্মর্ষি কুৎসের এই রকম উপদেশ শ্রবণ করে নিজ কর্মের জন্য অনুতাপ করতে লাগল এবং সে স্থির করল যে সে অবশ্যই কার্তিক মাসে এই ব্রত পালন করবে।

তারপর যখন কার্তিক মাস আগত হলো তখন সে পুরো মাস সূর্যোদয়ের স

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Only Krishna vokti 1632 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share