Hemani Kisku

Hemani Kisku ☬ কালির আঁচড় কাটি অব্যক্ত জীবনের শেষ পাতায় ☬

12/09/2025

সদর হাসপাতালে সামনে ভিড় দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়ল আদি , সঙ্গে মাকে নিয়ে এসেছে সে । মাকে গাড়িতে রেখেই ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেল সে ।
গিয়ে দেখে এক মেয়ের পাগলামি , হ্যান্ডগান হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে সে । না না স্থির দাঁড়িয়ে নেই , ওর গান পয়েন্টে এখন সবাই । পুলিশ কর্মকর্তা থেকে হাসপাতালের নার্স , ডাক্তার সহ রোগী ও তার পরিবারর জন ও । চারপাশে মোবাইলে ক্যামেরা চলছে পুরোদমে ।
বাঁ হাতে বাঁধা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলে দিলো সে । ব্যান্ডেজ খোলার সঙ্গে সঙ্গেই হাত বেয়ে নেমে এলো রক্তের লুহ ধারা ।সম্ভবত হাতের শিরা কেটেছে সে ।
- কেউ এগোবে না , না হলে গুলি করে দেবো।

এক ভদ্রলোক ওকে থামানোর চেষ্টা করছেন , সঙ্গে রোগা পাতলা গড়নের এক ছেলে । সম্ভবত হয়তো তারা মেয়েটির বাবা , দাদা ।
পুলিশ থেকে ডাক্তার এমন সাধারণ মানুষ ও ওকে শান্তগলায় নরম সুরে হ্যান্ড গান ফেলে দিতে বলছে । কেউ কেউ না উপদেশ ব্যস্ত তো , কেউ কেউ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বর্তমান যুগের যুবসমাজকে গালি দিতে ব্যস্ত ।

এমন সময় হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন এক মহিলা ,
- এমন করিস না মা , আমি ভালোবাসি তো , তোর বাবা , দাদা , দিদুন সবাই , সবাই তো খুব ভালোবাসে ।
- আমার মেয়েকে বাঁচান , প্লিজ ।
হাতজোড় করে ভিক্ষে চাইছেন ওর মেয়েকে বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য ।
অনেকক্ষণ কেঁদেছেন হয়তো , কান্নার তোড়ে গলার স্বর বুজে এসেছে ওনার ।

পাশের জনের কাছে জানতে চাইলো আদি , শোনে যা বুঝল তার সারমর্ম হলো এই ,
" মেয়েটা ওর ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকের জন্য নিজের আত্মার আহুতি দিচ্ছে । "

মাথা বিগড়ে গেল তার সঙ্গে বুকের বাঁ পাশটাই চিনচিনে ব্যথা উঠলো , ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেল আদি ।
এখন মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে আদি ।

- এগোবে না , নাহলে গুলি করে দেবো ।

বুক পকেটে থেকে কিছু একটা বের করলো সে ।

- কি করছো তুমি ?
কেন বুঝতে পারছো না আমি মরে যেতে চাই ।

হাঁটু গেড়ে বসে হাত বাড়িয়ে রিং এগিয়ে দিলো সে ,
শান্ত স্বরে চোখ ভরা আশার অনুভূতি নিয়ে বলল ,
- আমাকে বিয়ে করবে ?

এক সেকেন্ডেই কেমন নিরবতা ছেয়ে গেল। সবার হতভম্ব দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু ওই ফর্মাল ড্রেস পরা লম্বা চওড়া শ্যামলা বর্ণের যুবক । যে সে এই মুহূর্তে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্যে পরিনত হয়েছে ।
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল হিয়া । ভালো করে লক্ষ্য করতেই চিনতে পেরেছে ওকে ,
- আরে এটা তো সেই লোকটা , সেই " অচেনা অতিথি " ।
সেই " অচেনা অতিথি " নামে চিঠি দেওয়া মানুষটা। যার প্রেমের প্রস্তাবকে বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে সে । " আদ্যি কালে বদ্যি বুড়া " বলত যাকে । আজ কয়েক বছর পর সেই লোকটা তার সামনে দাঁড়িয়ে ।
কেমন ঝাপসা হয়ে আসা দৃষ্টিতে পেল সেই লোকটার উদ্বিগ্ন চেহারা , দৌড়ে আসার শব্দ ।
ঢলে পড়ল সে , অনুভব করলো সে কেউ তাকে খুব যত্নে , ভালোবাসা মিশিয়ে আগলে নিলো তাকে ।

বেলকনিতে স্নান সেরে এসে খোলা চুলে দাঁড়িয়েছিল হিয়া ।
অতীতের কিছু বিষ মেশানো মধুর স্মৃতিতে ডুবে ছিল সে ।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে পাশ ফিরলো সে ।
তারপাশে এই মুহূর্তে চায়ের স্বাদ নিতে ব্যস্ত সেই লোকটা , হিয়াকে দেখে এক মিষ্টি হাসি উপহার দিলো সেই লোকটা । সেই লোকটা এখন তার স্বামী । প্রানের থেকেও অধিক প্রিয় ।

// সমাপ্ত //

( আমাদের আশেপাশে অনেক নানা মনের মানুষ চলাফেরা করছে , জীবনসঙ্গী হিসেবে একজন ভালোবাসার মানুষের সত্যিই খুব প্রয়োজন , যে তোমাকে আগলে রাখবে , খুব যত্নে )

26/06/2025

আপনি কি সান্তালি ভাষা জানেন

হ্যাঁ, আমি সান্তালি ভাষা (Santali language) সম্পর্কে কিছুটা জানি। এটি একটি অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা, যা প্রধানত ভারতের ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, আসাম এবং বাংলাদেশ ও নেপালের কিছু অংশে সাঁওতাল জনগোষ্ঠী ব্যবহার করে।

---

🗣️ সান্তালি ভাষা সম্পর্কে কিছু তথ্য:

বিষয় বিবরণ

ভাষা পরিবার অস্ট্রো-এশিয়াটিক (Munda শাখা)
লিপি অলচিকি (Ol Chiki), এছাড়াও নাগরী বা ল্যাটিন লিপিও ব্যবহার হয়
সরকারি স্বীকৃতি ভারতের সংবিধানের ৮ম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত (২০০৩ সাল থেকে)
প্রধান অঞ্চল ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, আসাম
ভাষাভাষীর সংখ্যা প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ (ভারত ও আশেপাশে)
লিপির উদ্ভাবক পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু (Ol Chiki লিপি, ১৯২৫)

---

🔤 Ol Chiki (ᱚᱞ ᱪᱤᱠᱤ) লিপির কিছু অক্ষর:

Ol Chiki উচ্চারণ বাংলা অনুবাদ

ᱚ ɔ ও/অ
ᱜ g গ
ᱟ a আ
ᱵ b ব
ᱫ d দ
ᱩ u উ

---

🧩 আপনি কী করতে চান?

সান্তালি ভাষায় কিছু লিখতে চান?

বাংলা থেকে সান্তালি অনুবাদ?

Ol Chiki লিপি শেখা?

সাঁওতাল সংস্কৃতি বা ইতিহাস জানতে?

আপনার উদ্দেশ্য বললে আমি আরও ভালোভাবে সাহায্য করতে পারব। 😊

09/03/2025

পথের ধারে বসে থাকা ভিখারিকে এক টাকার কয়েন ছুড়ে দিল শ্রীকান্ত । রাস্তার নেড়ি কুকুর সব , বড়লোক দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে মনে মনে শ্বকয়েক গালি দিলো ভিখারিকে । এদের কে পাত্তা ও দেয় না সে , নিহাতেই আজ গার্লফ্রেন্ড সঙ্গে আছে বলে নাহলে এখনি লাথি দিয়ে এই ফুটপাত থেকে ফেলে দিতো। তিতিরের দিকে তাকিয়ে মেকি হেসে বলল ,
- ওহ্ তিতির ,

রাগান্বিত চোখের তিতিরকে দেখে ভড়কে গেল শ্রীকান্ত । ও তো প্রায় ভূলেই বসে ছিল , তার গার্লফ্রেন্ড তো আবার দয়ার দেবী । মাঝে মাঝে তার মনে কি করে এই দেবীর প্রেমে পড়েছিল । কিছু মেশে না ওর সাথে , না স্ট্যাটাস আর না মনমানসিকতা । দুজনে দুই মেরুর বাসিন্দা । তবু শ্রীকান্ত কেমনে খুব সাধারণ সাদামাটা দয়ার দেবীর প্রেমে পড়েছিল তার ও অজানা । আমতা আমতা করে বলল ,
- সরি ,

তুমি তো জানো জান , আমার কাছে কেস থাকে না ।
- থাক , শ্রীকান্ত থামিয়ে তিতির বলল ,
তোমাকে এত উদার হতে হবে না ।
নিজের ছোট হ্যান্ড ব্যাগ থেকে কড়কড়ে একশো টাকার নোট ভিখারি দিয়ে বলল ,
- ক্ষমা করবেন ভাইয়া , ওর ওই রকম ব্যবহারে আমি ক্ষমা চাইছি ।

শ্রীকান্তের দিকে তাকিয়ে বলল , - ও ভিখারি নয় ।
আমার নোট দেওয়ার জন্য এতক্ষন দাঁড়িয়েছিল ।

হাসলেন ভিখারি , ওদের জন্য সহানুভূতি খুব কম মানুষরই হয় , যেখানে এই মেয়েটা একজন ।
পাশের ছেড়া চটের ব্যাগ থেকে একটা নোট বুক বের করে তিতিরের দিকে বাড়িয়ে দিলেন ।
মুচকি হাসলো তিতির ও , হাত বাড়িয়ে খাতাটা নিয়ে সাইড ব্যাগে ভরে রাখলো ।

- রিজু ঘুমিয়ে পড়েছে বোধহয় ?
বলেই , হাত ঘড়ি দেখলো তিতির ।
জীব কাটলো সে , দশটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট।
আজ পাক্কা , বাড়ির মালকিন তাকে বের করে দেবে।
ঠোঁট টেনে হেসে বলল ,
- আজ একটু দেরি হয়ে গেছে , আজ আসছি ভাইয়া ।

ফিরে তাকাতেই দেখতে পেল বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে থাকা শ্রীকান্তকে ।
- আমাকে এই ভাবে চোখ দিয়ে না গিলে পা চালাও বদলোক ।
এতক্ষণে গেট বন্ধ করে দিয়েছে ওই বজ্জাত মহিলা নিশ্চিত। বিড়বিড়িয়ে ওঠে যথাসম্ভব জোরে পা চালালো তিতির ।
পেছনে ছুটলো শ্রীকান্ত ও ।
মুখে চোখে ঝরে পড়ছে বিরক্তি ।
-তোমাকে কত বার বলেছি আমাকে বদলোক বলবে না । আমার মতো করে এত সুন্দর করে ডাকতে পারো না ,
জান , বেবি , সুইটহার্ট , মাই লাভ ...
- চুপ করো তো তুমি ।

রেস্টুরেন্ট মালিকের ছেলে রেহানের খারাপ নজর খুব পড়েছে , প্রতিদিন এড়িয়ে চললেও আজ সবার সামনে অপদস্থ করলো তাকে । তাতে মেজাজ বিগড়ে আছে তার ,এরপর এতো দেরি বজ্জাত মহিলা আজ নিশ্চিত তাকে মাথায় তুলে নাচাবে । তার উপর এর জ্বালাতন ।
- খুবই বিরক্তিকর তুমি , জানো ।

- না বেইবি , আমি বিরক্তিকর নয় । তুমি বিশ্বাস করবে না কত মেয়ে আমাকে পাওয়ার জন্য সুইসাইড এটেন্ড করে । একটা রাত কাটানোর জন্য হত্বে ...
আচমকা তিতিরকে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে অবাক হয়ে তাকালো। তিতিরের তাকাতেই দেখতে পেল তিতিরের বিনাশিনী রুপ । অগ্নিদগ্ধ চোখ , মুষ্টিবদ্ধ শক্ত হাত দেখে অজান্তেই ঢোক গিললো শ্রীকান্ত ।

- আমি পৌঁছে গেছি , এবার তুমি যাও ।
এখনি ওই দজ্জাল মহিলা শ্রীমতী রিম্পা বাগচী দেখলে , আমাকে মাথায় নিয়ে নাচবে।
নতুন গলির বাসাটা পেয়ে গেলে ওই রিম্পা বাগচীকে ষষ্টাঙ্গে প্রনাম করে বিদেয় হব।
পিছন ফিরল তিতির । শ্রীকান্তকে ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে , হাঁসফাস করে উঠলো সে তাড়া দিয়ে বলল ,
- যাও ।

শ্রীকান্তকে বিদেয় করে নীড়কুঞ্জের গেট খুলে ভেতরে গেল । ওই বকবকম মহিলা এতক্ষন তার এই অপেক্ষায় করছিল বোধহয় । নীচতলার বারান্দা থেকে কেমন বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে রুমে ঢুকে দড়াম করে দরজা দিয়ে দিলো সে ।
তার প্রতি এই রকম ব্যবহারের কোন কারণ খুঁজে পাই না তিতির ।

রুমের তালা খুলে ভিতরে গিয়ে দরজা দিয়ে তার একছত্র বেডে ব্যাগ ছুড়ে মেরে , রুম সঙ্গে এটাচ্ বাথরুমে ঢুকে পড়ল সে । ঠান্ডা জলে ধুয়ে মুছে বের হলো তিতির । বিছানা ঝেড়ে শরীর এলিয়ে দিলো । পুরো দিনের ক্লান্তি নিমিষেই ভিড় করলো দুই চোখে ।

চলবে....

#মনবাড়িয়েছুঁই

Address

Jhilimili

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Hemani Kisku posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share