30/11/2025
শিক্ষক নেই, ছাত্র নেই — খাঁ খাঁ করছে মালদার মোহনা কোলোনি স্কুল, দু’বছর ধরে তালা ঝুলছে গেটে
জুলফিকার আলি-স্কুল ভবন আছে, ক্লাসরুম আছে, বেঞ্চ-চেয়ার আছে, খেলার মাঠ আছে — নেই শুধু শিক্ষক আর ছাত্র-ছাত্রী। মালদার মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর অঞ্চলের মোহনা গ্রামের মোহনা কোলোনি এম এস কে স্কুল আজ সম্পূর্ণ জনশূন্য।
২০০৮ সালে গড়ে ওঠা এই স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতেন গ্রামের শতাধিক পড়ুয়া। কিন্তু ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক মোহম্মদ কাইসুলের মৃত্যুর পর থেকে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দু’বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন কোনো শিক্ষক নিয়োগ করেনি প্রশাসন। ফলে গ্রামের ছেলেমেয়েরা বাধ্য হয়ে দূরের স্কুলে যাতায়াত করছে।
মোহনা গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের বাস। এলাকায় একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হল মোহনা লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক স্তরের আর কোনো স্কুল নেই। মোহনা কোলোনি এম এস কে চালু থাকলে গ্রামের পড়ুয়াদের পড়াশোনার বড় সুবিধা হতো। এখন স্কুল বন্ধ হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর চাপ বেড়েছে, আবার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের কয়েক কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওহাব বলেন, “একজন শিক্ষক মারা যাওয়ার পর দু’বছরেও কোনো ব্যবস্থা হলো না। আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। প্রশাসনের কাছে আর্জি — যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষক নিয়োগ করা হোক, স্কুলটা আবার চালু হোক।”
গ্রামের আরেক বাসিন্দা রেহানা বিবি জানান, “মেয়েরা বিশেষ করে দূরে যেতে ভয় পায়। অনেকে পড়াই ছেড়ে দিছ। স্কুলটা চালু থাকলে এ সমস্যা হতো না।”
এ ব্যাপারে মানিকচক ব্লকের বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের একটাই দাবি — যেন দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ করে মোহনা কোলোনি এম এস কে স্কুলে আবার পড়ুয়াদের পায়ের শব্দ আর ক্লাসের হইচই ফিরিয়ে আনা হয়।