22/09/2024
কাঞ্চনজঙ্গা ট্রেনে করিমগঞ্জ থেকে গুয়াহাটি ফিরছিলাম। লামডিং স্টেশন পাওয়ার মোটামুটি ১০ কিলোমিটার আগে এসি ইউনিটে আগুন লেগে পুরো A1 আর A2 বগিতে ধুয়ো ছড়িয়ে পড়ে। আমরা সবাই ঘুমে। অকস্মাৎ চেচামেচি শুনে উঠে দেখি যাত্রীরা সামানপত্র নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে যাচ্ছে, বাইরে অন্ধকার জঙ্গল। কী করি ভাবতে পারছিলাম না। সঙ্গে সহধর্মিনী আর ছোটো ছেলে। একটি ট্রলি আর একটি ব্যাকপ্যাক। কোনমতেই ভিড় ঠেলে নামা যাবেনা। নামলে পদপিষ্ট হওয়ার পুরো চান্স। মাথা কাজ করছিলনা। যারা ভিড় ঠেলে যেতে পারছেননা তাঁরা যার যার ভগবানের নাম নিয়ে কাদছেন। আমার মনে হলো মৃত্যু সম্ভবতঃ খুব কাছে। এমনিতেও যা ট্রেন দুর্ঘটনা হচ্ছে! আমি নিশ্চিত ধুয়ো পুরো ভর্তি হয়ে যাওয়ার পর আমরা আর অক্সিজেন পাবো না। এদিকে পাশের কোচ নাকি পুরো আগুনের কব্জায়। স্ত্রী আর ছেলের দিকে চেয়ে মুহূর্তে সংসারের মায়া দুর্বল করে ফেললো। ইতিমধ্যে এসি বন্ধ হয়ে গেছে দরজা দিয়ে ধুয়া ঢুকছে। আমার কাশি পাচ্ছিল। ছেলে আর স্ত্রীর হাত ধরে বললাম ধৈর্য ধরো। প্রায় অর্ধেক লোক নেমে যাওয়ার পর কোচের অ্যাটেনডেন্ট দৌড়ে এসে বললো শর্ট সার্কিট হয়ে ওয়্যারিং বেল্টে আগুন লেগে গেছে। ওরা দশ মিনিটের মধ্যে ফিউস ঠিক করে দিলো, এসি ও চালু হলো। উফফফ....! ঘটনাস্থলে গিয়ে নিশ্চিত হলাম যে সব ঠিকঠাক করে ফেলেছে ট্রেনের দামাল স্টাফগুলো। গাড়ি খুব ধীরে ধীরে লামডিঙ্গে নিয়ে আসা হলো। স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন আরেকবার ভালো করে চেক করার পর ছাড়ার অনুমতি দেয়া হলো।
ঘরে পৌঁছে ঘুম আসছেনা। মৃত্যু কতো দ্রুত আসতে পারে আমরা কি কেউ জানি?