07/09/2025
মালয়েশিয়ার ট্যুইন টাওয়ার, বা পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, শুধু একটি স্থাপত্যকীর্তিই নয়—এটি মালয়েশিয়ার আধুনিকতা, সমৃদ্ধি আর স্বপ্নের প্রতীক। এর গল্পটা সত্যিই অনন্য।
টুইন টাওয়ারের গল্প
১৯৯০-এর দশকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার জন্য এক বিশাল স্থাপত্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পেট্রোনাস এই প্রকল্পের প্রধান উদ্যোক্তা ছিল।
👉 নকশা ও স্থপতি:
টাওয়ার দুটির নকশা করেছিলেন আর্জেন্টাইন স্থপতি সিজার পেল্লি। তিনি ইসলামিক শিল্পকলা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পুরো নকশায় জ্যামিতিক নকশা ব্যবহার করেন। প্রতিটি টাওয়ারের ফ্লোর প্ল্যান আসলে দুটি বর্গক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে, যা ইসলামিক ঐতিহ্যের প্রতীকী উপাদান।
👉 নির্মাণকাল:
কাজ শুরু হয় ১৯৯৩ সালে, আর শেষ হয় ১৯৯৮ সালে। সে সময় এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন (৪৫২ মিটার, ৮৮ তলা) এবং ২০০৪ সাল পর্যন্ত সেই রেকর্ড ধরে রাখে।
👉 বিশ্বের দুই কোম্পানি:
মজার বিষয় হলো, একটি টাওয়ার নির্মাণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি স্যামসাং C&T, আরেকটি নির্মাণ করেছে জাপানের হাজামা কর্পোরেশন। এতে দুই দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতার মতো এক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল—কারা আগে শেষ করবে!
👉 স্কাইব্রিজ:
দুই টাওয়ারকে যুক্ত করেছে বিখ্যাত স্কাইব্রিজ (৪১ ও ৪২ তলা), যা পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ডাবল-ডেকার সেতু। এটি কেবল প্রতীকী নয়, বরং জরুরি পরিস্থিতিতে এক টাওয়ার থেকে অন্য টাওয়ারে যাওয়া যায় এই ব্রিজ দিয়ে।
👉 প্রতীকী গুরুত্ব:
টাওয়ার দুটি মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উত্থান, ঐতিহ্য আর আধুনিকতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। দিন কিংবা রাত—এটি দেখলে মনে হয় যেন কুয়ালালামপুর শহরের আকাশে জ্বলজ্বলে রূপকথার প্রাসাদ।
আজ টুইন টাওয়ার কেবল একটি ভবন নয়, বরং মালয়েশিয়ার জাতীয় গর্ব, আর বিশ্ব পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ।