20/06/2025
বর্তমান যুদ্ধ কি বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে – একজন কমিউনিস্ট কূটনীতিবিদের চোখের দিকে
মূল্যবান হিসেবে পরিচিত পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার অত্যন্ত সংকটের সময়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উত্তেজনা, চীন-তাইওয়ান বিবাদ, উত্তর কোরিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া উত্তেজনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ — এই সমস্ত মিলিয়ে এক আন্তর্জাতিক অস্থিরতার পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিটি নিছক কাকতালীয় নয়। এটি বৈশ্বিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার গভীর সংকটের বহিঃপ্রকাশ।
পুঁজিবাদ যখন উৎপাদনের ক্ষমতা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তখন যুদ্ধ হয় একমাত্র পথ যা তার সংকট সাময়িকভাবে নিরসনে সাহায্য করে। ইতিহাস তার সাক্ষী, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ – উভয়ই ছিল পুঁজিবাদী প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত রূপ। আজও পরিস্থিতি আলাদা নয়।
আমেরিকা ও এর সাম্রাজ্যবাদী সহযোগীরা এখন একাধিক ফ্রন্টে অগ্নিসংযোগ শুরু করছে, অস্ত্র বিক্রি করছে, এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের উপর রাজনৈতিক প্রভাব প্রসার করতে আগ্রহী হচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়া, চীন এবং অন্যান্য শক্তিগুলোও নিজেদের স্বার্থ রক্ষণে আগ্রহী। এই দ্বন্দ্ব আসলে দুটি শিবিরের দ্বন্দ্ব নয়, বরং পুঁজিবাদী আধিপত্য কায়েমের প্রতিযোগিতা।
এই প্রেক্ষাপটে যদি একটি প্রশ্ন করা হয়, আজকের যুদ্ধ বিশ্বযুদ্ধের রূপ কেমন হবে? উত্তর হতে পার
তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক মনে রাখতে হবে – বিশ্ব আজ আর ১৯১৪ বা ১৯৩৯ সালের মতো নয়। এখন বহু দেশে গণআন্দোলন, শ্রমিক সংঘ, বামপন্থী শক্তি সক্রিয় রয়েছে। লাতিন আমেরিকা থেকে ইউরোপ, এশিয়া থেকে আফ্রিকা – সর্বত্র সাধারণ মানুষ যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নিচ্ছে।
এই অবস্থায় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য নয়, তবে সম্ভাবনা প্রবল। যদি জনতার আন্দোলন, আন্তর্জাতিক সংহতি, এবং সমাজতান্ত্রিক বিকল্প শক্তিশালী না হয়, তাহলে বিশ্ব এক নতুন ধ্বংসযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাবে।
এই কারণে, সমাধান যুদ্ধ নয় – সমাধান হলো পুঁজিবাদী শোষণ ও সাম্রাজ্যবাদের অবসান। শুধুমাত্র শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে, সমাজতান্ত্রিক চেতনার উত্থানেই ভবিষ্যতের শান্তি ও স্থিতিশীলতা সম্ভব।