
21/08/2024
নির্যাতিতা ডাক্তারের নাম, পরিচয় প্রকাশে আপত্তি কোথায়?
আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় গত ৯ আগস্ট রাতে এক মহিলা চিকিৎসকের ওপর নির্যাতন করে খুনের অভিযোগ এখনও তদন্তের অধীনে। এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার ১। এই নিয়ে ফুঁসছে জনমানস। অনেকে প্রতিবাদ করেছেন, পথে নেমেছেন। আমি নামতে পারিনি। কারণ, পেশাগত নৈতিকতা। রবি শাস্ত্রী খেলার ধারাবিবরণী শোনান। ভারত হারছে দেখলে, প্যাড পরে - ব্যাটহাতে মাঠে নেমে পড়েন না।
তবে কি আমি অপরাধের পক্ষে? মনে হয়, না। কারণ নিজের নাগরিক-কর্তব্য পালন করে চলাও সভ্যতার, সমাজবদ্ধতার পরিচয়, নিঃসন্দেহে।
সামাজিক মাধ্যম, ৫জি ইন্টারনেটের দৌলতে নির্যাতিতার নাম এখন প্রায় সবাই জানেন। মুখ নিশ্চয়ই দেখে ফেলেছেন। এমনকী বাড়ি কোথায়, পরিবারের সদস্যদের কী পেশা - তাও হয়তো জানা হয়ে গেছে। অনেকে প্রকাশ্যে এ সব নিয়ে আলোচনা করছেন। আষাঢ়ে গপ্প ছড়াচ্ছেন। ছবিতে মালা পরিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি নাম-পরিচয়-ছবি দিয়ে পোস্ট করছেন আমাদের সীমান্তপারের সমব্যথীরা। অনেকের প্রশ্ন, এতে আপত্তি কোথায়? আমরা কি হেতাল, আরুশি, অরুণাদের মতো আক্রান্তদের নাম নিইনি কখনও? এখন ঢং যত্ত সব। "অভয়া, নির্ভয়া, তিলোত্তমা".!
না, অকারণ নয়। এই গোপনীয়তা যেমন আইন মেনে, তেমনই নৈতিকতার স্বার্থেও।
১) দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যৌন নির্যাতনের শিকার বা নিপীড়িত কোনও অপ্রাপ্তবয়ষ্কের পরিচয় প্রকাশ করাও এক ধরনের অপরাধ। এটা কোনও ভাবে করা যায় না। এমনকী, পরিবারের সম্মতিক্রমেও না।
২) এই পোস্টের নিচে একটি পরিমার্জিত স্ক্রিনশট ছবি দেওয়া আছে। পরিমার্জিত, ইচ্ছে করেই। ছবিটিতে জনাকয়েক সমাজ-মাধ্যমবাসী অসামাজিক জীব, মৃতার সম্মান ছিঁড়ে খাচ্ছে। ঠিক যেমন শেয়াল-কুকুরের ফেলে যাওয়া লাশ, শকুনে ছিঁড়ে খায়....
হ্যাঁ, এরা আমাদের সমাজেই আছে। আমাদের সমাজ নিখুঁত, নিটোল নয়। মানতে হবে, শ্বাপদ-প্রবৃত্তির মাঝেই আমাদের বাস। ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে ওরা। আন্তর্জালের আনাচে কানাচে খুঁজছে সেই মুহূর্তের একঝলক ছবিতে নিজেদের ইন্দ্রিয়সুখ। এরাও সম্ভাব্য আততায়ী, অপরাধী। তাই আপনি যদি সচেতন হন, আপনাকে অনুরোধ করছি, শকুনদের লক্ষ্য করে মাংস ছুঁড়ে দেবেন না।
নির্যাতিতার নাম-ছবি ইত্যাদি শেয়ার করবেন না। 🙏