World satsang Sri Sri Anukul Chandra

World satsang Sri Sri Anukul Chandra জয়গুরু

🌼 শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের আবির্ভাবের পূর্ণ কাহিনি 🌼(পৌরাণিক ও লোকজ সূত্রের সংমিশ্রণে)প্রাচীন কালে মালব দেশের অধিপতি ছিলেন ...
01/07/2025

🌼 শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের আবির্ভাবের পূর্ণ কাহিনি 🌼

(পৌরাণিক ও লোকজ সূত্রের সংমিশ্রণে)

প্রাচীন কালে মালব দেশের অধিপতি ছিলেন এক ধার্মিক রাজা—মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্ন। তিনি পরম বিষ্ণুভক্ত ছিলেন এবং চিরকাল চেয়েছিলেন, এমন এক ভগবানের মূর্তি স্থাপন করবেন, যার দর্শনলাভে আত্মার মুক্তি ঘটে।

🔹 স্বপ্নাদেশ ও সন্ধান

একদিন গভীর ধ্যানে বসে তিনি এক অলৌকিক স্বপ্ন দেখলেন। স্বপ্নে এক দেবদূত এসে বলল—

> “হে রাজন, পৃথিবীতে এক বিরল মূর্তি আছে, যাঁর নাম নীলমাধব। তিনি জঙ্গলে, এক শবরগৃহে পূজিত হন। তাঁকেই খুঁজে পাও, তাঁকেই প্রতিষ্ঠা করো।“

এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজা সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মন্ত্রী বিদ্যাপতি-কে পাঠালেন সেই মূর্তির সন্ধানে।

🔹 শবররাজা ও নীলমাধব

বিদ্যাপতি অনেক ঘুরে পৌঁছালেন এক গহীন জঙ্গলে, যেখানে থাকতেন এক শবরগোষ্ঠীর প্রধান—বিশ্বাসু শবর রাজা। শবররাজা নিজ গৃহে গোপনে নীলমাধবের পূজা করতেন। প্রথমে বিদ্যাপতিকে কিছুই দেখালেন না, কিন্তু পরে বিদ্যাপতি তাঁর কন্যা ললিতাকে বিবাহ করলে, ললিতা স্বামীকে গোপনে মন্দির দর্শন করাল।

বিদ্যাপতি অবাক হলেন—এই তো সেই অলৌকিক নীলমাধব! তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজাকে খবর পাঠাতে গেলেন, কিন্তু এর আগেই... মূর্তিটি হঠাৎ অন্তর্ধান করলেন।

🔹 দারুবিগ্রহের আবির্ভাব

রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নে ফের আদেশ পেলেন—

> “আমি আবার আসব, সিন্ধু নদীতে দারু (কাঠ) রূপে ভেসে উঠব। সেই কাঠ দিয়ে আমার রূপ তৈরি করো।”

একদিন পুরীর সমুদ্রতটে সত্যিই ভেসে এল এক বিরাট দারুবিগ্রহ—ঘন কাঠ, যেখানকার গন্ধে সুগন্ধ ছড়ায়, গায়ে ছিল চক্র ও শঙ্খের চিহ্ন।

রাজা সেই কাঠ মন্দিরে নিয়ে এলেন এবং একটি উপযুক্ত কারিগরের সন্ধানে পড়লেন। ঠিক তখন এক বৃদ্ধ কারিগর এসে উপস্থিত হলেন—তিনি নিজেকে “বিশ্বকর্মা” বললেন।

তিনি বললেন—

> “আমি দেবমূর্তি গড়ব, তবে শর্ত একটাই—দরজা খুলবে না, শব্দ করো না, আর ২১ দিন সময় দিও।”

রাজা সম্মত হলেন। কিন্তু কৌতূহলবশত ১৪ দিন পর রানী সেই দরজা খুলে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই বৃদ্ধ অন্তর্ধান করলেন।

🔹 অপূর্ণ মূর্তি, পূর্ণ ঈশ্বর

রাজা হতবাক হয়ে দেখলেন—মূর্তিরা অপূর্ণ, হাত নেই, পা নেই, রূপ অনন্য ও অদ্ভুত। দুঃখে ক্লিষ্ট হয়ে পড়লে, আবার স্বপ্নে আদেশ এল—

> “আমরা ত্রিদেব—আমি জগন্নাথ, আমার ভাই বলরাম, এবং বোন সুভদ্রা। এই অপূর্ণ মূর্তিই আমার সম্পূর্ণ রূপ। আমাকে এইভাবেই স্থাপন করো।”

রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন আনন্দে মূর্তিগুলিকে মহান ধুমধামে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করলেন।

---

🔸 মহা রথযাত্রা

এই জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার সম্মানে প্রতিবছর আষাঢ় মাসে আয়োজিত হয় রথযাত্রা। তিনটি বিশাল রথে করে তাঁরা যান গুণ্ডিচা মন্দিরে। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই রথ টানেন—বিশ্বাস করা হয়, নিজ হাতে রথ টানলে পুন্য ও মুক্তি লাভ হয়।

---

📜 এই কাহিনির তাৎপর্য

এই কাহিনি কেবল এক দেবতার আবির্ভাব নয়, বরং এটি ভক্তি, ধৈর্য, প্রত্যয় ও ঈশ্বরের অভাবিত রূপগ্রহণের স্বীকৃতি। শবর জাতির গৃহদেবতা, আর্য রাজা ও সর্বজনীন ঈশ্বর—তিনে মিলেই রূপ নেন "জগন্নাথ" নামে "জগতের নাথ"।

---

✨ শেষ বাণী:

> “যাঁর হাত নেই, তবু টানেন রথ
যাঁর চোখ নেই, তবু দেখেন সব পথ।
অপূর্ণ রূপে পূর্ণ যিনি—
তিনিই জগন্নাথ, ভক্তহৃদয় খনি।”

30/06/2025

🎵 জগন্নাথের আবির্ভাব 🎵

নীলাচলে সিন্ধু পারে, দোলায় দেবতা,
জগন্নাথ বলরাম, সুভদ্রা সাথতা।
ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা তখন, চিন্তা গভীর মনে,
স্বপ্নে পেল নির্দেশ এক, হরি তার প্রণে।

নীলমাধব পূজা পায়, শবর রাজা ঘরে,
তারে খুঁজে চলল রাজা, বনপাহাড় ভরে।
মূর্তি এল সমুদ্র হতে, দারুরূপে ধরা,
বিশ্বকর্মা কারিগরি, নিজেই নিল করা।

বলে গেল, "আমি গড়ি, বন্ধ করো দ্বার,
একুশ দিনে মূর্তি হবে, হইব ত্রিবর্গ।"
কৌতুহলে খুলে দিলে, অন্তর্ধান সাথ,
হাত পা হয়নি সম্পূর্ণ, রহিল রূপগাথ।

তবু রাজা পূজো দিল, হৃদয়ে আননন্দ,
সকল লোকে কহে আজি—“জগন্নাথানন্দ”।
সুভদ্রা ভাই বলরাম, মহারথে যায়,
রথযাত্রা তে মহোৎসবে, আনন্দ সাগর ছায়।

29/06/2025
29/06/2025

🌿 ছড়া-গান: “সত্যপথের সেবক হরিনাথ” 🌿

(শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দর্শনে অনুপ্রাণিত)

(১)
গাঁয়ের কুটিরে জন্ম লভিয়া,
হরিনাথ মন রাখে ধ্যান;
সত্যের আশায় হৃদয় জাগে,
চাহে সে গুরুবচন-জ্ঞান।

(২)
শুনে সে কাহিনী মহাগুরুর,
দেওঘরের আশ্রমে যাঁর স্থান;
চলে সে খালি পায়ে হেঁটে,
নয়নে ভক্তি, মুখে গান।

(৩)
ঠাকুর বলিলেন স্নেহসহকারে —
“চাস কি সৎপথে চলিতে হে ভাই?”
“কর্মে কর সেবা, প্রেমে থাক নিবিষ্ট,
সত্যরসে তব হৃদয় ছাই।”

(৪)
গোয়ালঘরেতে সেবা করিয়া,
গোবর ধুইল সে পরিতৃপ্ত মনে;
কোথাও না আছে লজ্জা-গ্লানি,
ঠাকুর-পথে সে সুখে রত দিনে।

(৫)
পরীক্ষা এল, অহংকারের ছায়া,
বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ করিল হিংসা;
তবু হরিনাথ নম্র বাক্যে,
ঠাকুর-আদেশে ছিল অচলা।

(৬)
ঠাকুর বলিলেন, “সত্যে দাঁড়াইলি,
মিথ্যা আসিলে সরে গেল ধূলি,
তোকে ধরিয়া গড়িব আমি,
সেবার বীজে ফুটিবে ফুলি।”

(৭)
সাধুর মতন সে করে যে সেবা,
নিশিদিন গায় সে ঠাকুরগান;
হরিনাথের হৃদয়েতে জাগে,
ভক্তি, করুণা, সত্য জ্ঞান।

(শেষ কড়া)
ওরে ভাইরে, শুনিস যদি তুই,
ঠাকুরের পথে ধর মন প্রাণ,
সত্যে স্থির, সেবায় ভাসিস,
এই তো হরিনাথের মহান দান।

গল্প: ‘একজন সত্যসন্ধ লোক’সময়কাল: ১৯৪০-এর দশক, দেওঘর আশ্রমপ্রধান চরিত্র: হরিনাথ – এক গরীব গ্রাম্য যুবকপরিপ্রেক্ষিত: শ্রী...
29/06/2025

গল্প: ‘একজন সত্যসন্ধ লোক’

সময়কাল: ১৯৪০-এর দশক, দেওঘর আশ্রম
প্রধান চরিত্র: হরিনাথ – এক গরীব গ্রাম্য যুবক
পরিপ্রেক্ষিত: শ্রীশ্রীঠাকুরের সান্নিধ্য ও আত্মোন্নতির পথ

---

অধ্যায় ১: সন্ধান

হরিনাথ, একজন দরিদ্র কৃষকের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তার মনে এক অদ্ভুত টান ছিল সত্য ও ধার্মিক জীবনের প্রতি। কিন্তু সংসারের কষ্ট, খাবার জোটানোই যেখানে প্রধান সমস্যা, সেখানে ঈশ্বর-সাধনার কথা যেন বিলাসিতা।

তবু সে মনে মনে প্রার্থনা করত—
“হে ঈশ্বর, যদি সত্যি কেউ থাকে এই জগতে, যাঁর মুখে সত্য ও হৃদয়ে করুণা—তাঁর কাছে আমায় পৌঁছে দিও।”

একদিন গ্রামের এক বৃদ্ধ বলল, “দেওঘরে এক ঠাকুর আছেন—অনুকূলচন্দ্র। মানুষ তাঁকে শুধু গুরু বলেন না, বাঁচার পথও পান।”

হরিনাথ মনস্থির করল। একটু ধান বিক্রি করে, কিছু ধার নিয়ে সে রওনা দিল দেওঘরের উদ্দেশ্যে।

---

অধ্যায় ২: সাক্ষাৎ

আশ্রমে পৌঁছে সে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকল ঠাকুর দর্শনের জন্য। চোখে জল, মনে ভয়—এই বুঝি ফিরিয়ে দেন!
কিন্তু যখন শ্রীশ্রীঠাকুর সামনে এলেন, তাঁর চোখ দুটি যেন হরিনাথের হৃদয় উল্টে পড়ে দেখলেন।

ঠাকুর বললেন,
“তুই এসেছিস, ভালো করেছিস। সত্য খুঁজিস, কিন্তু জানিস—সত্য শুধু শোনায় নয়, বাঁচায়। তুই কি সৎ হতে চাস?”

হরিনাথ মাথা নাড়ল।

ঠাকুর আবার বললেন,
“সৎ হতে চাইলে সেবা কর। কাজ কর। মন দিয়ে—দেহ দিয়ে। তখন তোর ভিতরেই ঈশ্বর দেখা দেবে।”

সেই থেকে হরিনাথ থেকে গেল আশ্রমে। কাজ পেল গোয়ালঘরে। গরুর গোবর পরিষ্কার, দুধ দোহা, খড় জোগাড়—সব কাজ হাসিমুখে করতে লাগল।

---

অধ্যায় ৩: পরীক্ষা

একদিন হঠাৎ এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ এসে আশ্রমে বললেন, “আমি ঠাকুরের দর্শন চাই। এক্ষুনি দরকার।”
হরিনাথ বলল, “এখন ঠাকুর বিশ্রামে আছেন, একটু অপেক্ষা করতে হবে।”
বৃদ্ধ রেগে চিৎকার করলেন, “তুই কে? আমি তোর চেয়ে অনেক বড়! ঠাকুর আমার পরিচিত।”

হরিনাথ নম্রভাবে বলল, “আপনি যাই হোন, ঠাকুরের আদেশ ছাড়া কাউকে এখন যেতে দেওয়া নিষেধ।”

এই দৃশ্য ঠাকুর জানলেন। তিনি পরে হরিনাথকে ডেকে বললেন,
“সত্যের পথে এভাবেই পরীক্ষা আসে, হে ভাই! তুই যদি অহং করে কথা বলতিস, বা ভুলমত নমনীয় হতিস—তাহলে মিশে যেতি মিথ্যার সাথে। কিন্তু তুই সত্যের প্রহরী হইয়াছিস।”

---

অধ্যায় ৪: উত্তরাধিকার

বছর ঘুরে গেল। হরিনাথ আশ্রমে একজন গুরুত্বপূর্ণ সেবক হয়ে উঠল। সে শুধু কাজই করত না, নতুনদেরও শেখাত ঠাকুরের বাণী।

একদিন ঠাকুর বললেন,
“হরিনাথ, তুই আজ সত্যের পথে একজোড়া পা ফেলেছিস। এখন সামনে শুধু চলা বাকি। তুই যদি এভাবে চলিস, তোকে দিয়ে বহু প্রাণ বাঁচবে।”

হরিনাথ কাঁদতে কাঁদতে প্রণাম করল। তার হৃদয় তখন আনন্দে, ভক্তিতে ভরে উঠেছিল।

---

শেষ কথা:

ঠাকুর বলতেন,
“সত্যভক্তিই মোক্ষ। যে নিজের ভেতর সত্যকে লালন করে, সে-ই ঈশ্বরকে ধারণ করে। গুরুই সেই জীবন্ত মাপকাঠি—যার দ্বারা সত্য ও মিথ্যা যাচাই হয়।”

হরিনাথের মত একজন সাধারণ মানুষও ঠাকুরের সাহচর্যে অসাধারণ হয়ে উঠেছিল, কারণ সে সত্যকে গ্রহণ করেছিল, অহঙ্কার করেনি, সেবাকে বরণ করেছিল।

28/06/2025

গান: "ঠাকুরের রথ টানে মন"

(১)
ঠাকুরের রথ টানে মন,
ভক্তি দিয়ে ভরে জীবন।
কাম-ক্রোধে আঁধার জ্বলে,
সৎসঙ্গে সব আলো মেলে।।

(২)
রথ নয় শুধু দড়ির টান,
রথ মানে অন্তরের গান।
ঠাকুর বলেন, নিজে বদলাও,
প্রেম-সেবা পথে চলাও।।

(৩)
একটি শিশু গাইছে গান,
"ভক্তির মাঝে ঠাকুর প্রমাণ!"
বৃদ্ধও টানে চোখে জল,
মন যে গলল ঠাকুর বলল।।

(৪)
রথে আছে চারটি বাণী,
সৎসঙ্গ আর সেবায় জ্ঞানি।
আদর্শে যে নিজে গড়ে,
রথের টানে মুক্তি পড়ে।।

(শেষ কড়া)
এসো সবাই রথে টানি,
ঠাকুর-পথে মিলুক জ্ঞানী।
ভক্তি-মুখে হৃদয় দাও,
রথযাত্রায় ঠাকুর চাও।।

গল্প: “রথের টানে রূপান্তর”সুরেন্দ্র, এক গর্বিত যুবক, শিক্ষিত কিন্তু অহঙ্কারে অন্ধ। রথযাত্রার দিন তার গ্রামে বিশাল শোভাযা...
28/06/2025

গল্প: “রথের টানে রূপান্তর”

সুরেন্দ্র, এক গর্বিত যুবক, শিক্ষিত কিন্তু অহঙ্কারে অন্ধ। রথযাত্রার দিন তার গ্রামে বিশাল শোভাযাত্রা বেরোয়। সবাই আনন্দে, সেবায়, ভক্তিতে উদ্বেল। সুরেন্দ্র এসব দেখে হেসে বলে —
“রথ টানলে কি হবে? মূর্তিকে টেনে নিয়ে যাওয়াই কি ঈশ্বরপ্রেম?”

ঠিক তখনই তার পিসেমশাই, একান্ত ঠাকুর-ভক্ত, তাকে বলেন —
“চল তোকে আজ নিয়ে যাই এক অন্যরকম রথযাত্রায়।”

সুরেন্দ্র কৌতূহলে রাজি হয়। তারা পৌঁছায় শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আশ্রমে। সেখানে রথযাত্রার দিন সকলেই ঠাকুরের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রথ টানছে —
কিন্তু শুধু মূর্তি নয়, রথে প্রতীকীভাবে রাখা আছে “সৎসঙ্গ, সেবাভাব, শিক্ষা ও স্বচিন্তন” — ঠাকুরের মূল চারটি বাণী।

ঠাকুর বলতেন —

> “রথ টেনে নিয়ে চলো নিজের মনকে — কাম, ক্রোধ, অহঙ্কারকে! তাহলেই সত্যিকারের যাত্রা।”

সেই দিন সুরেন্দ্র দেখে এক বৃদ্ধ কাঁপা হাতে রথ টানছেন, পাশে এক শিশু গাইছে –
“ঠাকুরের রথে টানি আমি, বদলাই আমার মন,
রাগে নয়, ভক্তির টানে, পাই পরিত্রাণ।”

সেই মুহূর্তে সুরেন্দ্রের চোখে জল এসে যায়। সে ভাবে, “আমি তো এতকাল রথকে উপহাস করেছি, অথচ এই রথের মাঝেই তো মানুষ বদলাচ্ছে!”

দিনের শেষে, সে নিজেই হাতে দড়ি ধরে — ঠাকুরের রথে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি, নিজের হৃদয়কে টানতে থাকে অহংকারের আঁধার থেকে আলোয়।

---

শেষে ঠাকুরের বাণী:

> “রথ মানে শুধু টান নয় — আত্মাকে নিজ আদর্শের দিকে টেনে নেওয়া।”

এই গল্প আমাদের শেখায় — রথযাত্রা কেবল উৎসব নয়, এটি এক আত্মোন্নয়নের পদযাত্রা। ঠাকুরের আদর্শে রথ মানে নিজের মনকে ঈশ্বরের দিকে নিয়ে যাওয়া, সৎপথে টেনে আনা।

🌿 "বৃদ্ধ কৃষক ও ঠাকুরের করুণা" 🌿একবার এক বৃদ্ধ কৃষক শ্রীশ্রীঠাকুরের দর্শনে এসেছিলেন। মুখে গভীর ক্লান্তি, পরনের পোশাক সাদ...
27/06/2025

🌿 "বৃদ্ধ কৃষক ও ঠাকুরের করুণা" 🌿

একবার এক বৃদ্ধ কৃষক শ্রীশ্রীঠাকুরের দর্শনে এসেছিলেন। মুখে গভীর ক্লান্তি, পরনের পোশাক সাদা ধুতি কিন্তু মলিন। তিনি এসে ঠাকুরের পায়ে পড়ে কাঁদতে লাগলেন।

ঠাকুর সস্নেহে জিজ্ঞাসা করলেন,
"বাবা, এত কান্না কেন? কি হয়েছে তোমার?"

বৃদ্ধ কৃষক কাঁপা গলায় বললেন—
"ঠাকুর, আমি সারা জীবন কৃষিকাজ করেছি। মাটি চষেছি, ফসল ফলিয়েছি, কিন্তু আজ শরীর আর চলে না। ছেলে-মেয়েরা শহরে চলে গেছে। আমি একা হয়ে গেছি। সংসারও আর আগের মতো চালাতে পারছি না। মনে হয়, জীবনের কোনো মানে নেই..."

ঠাকুর ধৈর্য নিয়ে শুনলেন, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর পিঠে হাত রাখলেন। বললেন—

"বাবা, তুমি কি জানো, তুমি এখনো কত বড় কাজ করছো?
এই পৃথিবীর ভিত্তি যারা গড়ে, তারা কখনোই মূল্যহীন নয়।
তোমার হৃদয়, তোমার পরিশ্রম,
তোমার জীবনের প্রতিটি ঘাম ফোঁটা—
সেই তো সভ্যতার ভিত্তি।"

ঠাকুর আরও বললেন—

"অসহায় বোধ করো না। যতদিন তুমি আছো, ততদিন তুমি প্রয়োজনীয়।
নিজেকে ছোট মনে করো না।
আমি আছি—তুমি শুধু বিশ্বাস রেখো,
আর যে কাজ করতে পারো, মন দিয়ে করে যাও।
সেবাই তো জীবনের শ্রেষ্ঠ সাধনা।"

এই কথা শুনে বৃদ্ধ কৃষকের চোখে জল এলেও তাতে আর দুঃখ ছিল না, ছিল শান্তি ও আশ্রয়ের আনন্দ। সে বুঝতে পারল, সে এখনও প্রয়োজনীয়, সে এখনও ঠাকুরের সেবা করার যোগ্য।

---

🍃 গল্পের বার্তা:

শ্রীশ্রীঠাকুর সব সময় আমাদের আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলেন। বয়স হোক বা কষ্ট—তাঁর দৃষ্টিতে কেউই অপ্রয়োজনীয় নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই আছে এক বিশেষ উদ্দেশ্য, যা সেবার মাধ্যমে পূর্ণতা পায়।

26/06/2025

🎶 গান: “বড়মা মোর আশ্রয় বুকে, স্নেহে জাগে ঠাকুররূপে”

🎵

বড়মা মোর আশ্রয় বুকে,
স্নেহে জাগে ঠাকুররূপে,
নবীনেরে ডাকেন যবে—
ভয় গলে যায় শুভরূপে।
গরিবেরে রাখেন কাছে,
অন্তরে দেন ঠাকুরর ভাজে,
জানেন মা— হৃদয়েতে,
ভক্তি জাগে কর্মপথে।


অপমান নয়, আড়ম্বর নয়,
নয় আচার কেবল,
সত্যসেবায় ঠাকুর খেলে,
প্রেমে মেলে চরণ বল।
চোখে তাঁহার করুণ আলো,
ভক্তে দানেন ভক্তি ভালো,
বলে মা— “এসো সন্তানে,
এই আশ্রমে ঠাঁই আছে।”


মাটির কাঁখে বসে যদি,
ভোগে রাখো একটুখানি,
সেইটুকুতেই ঠাকুর হাসেন,
জাগে রূপে আত্মবাণী।
বড়মা বলেন—
“দিব্যরূপে সেবা করো,
ঠাকুর মেলে যাহা করো,
মন দিয়ে, প্রাণ দিয়ে—
তব হৃদয়েই মেলে দোহা।”

🌺 গল্প: “বড়মার স্পর্শ”(এক গরিব কিশোরীর জীবনে আশীর্বাদের প্রদীপ)সেবার এক আশ্রমে বৃহস্পতিবার পূজারত পরিবেশ। আশ্রমে উৎসবের...
26/06/2025

🌺 গল্প: “বড়মার স্পর্শ”

(এক গরিব কিশোরীর জীবনে আশীর্বাদের প্রদীপ)

সেবার এক আশ্রমে বৃহস্পতিবার পূজারত পরিবেশ। আশ্রমে উৎসবের প্রস্তুতি চলছে — ঠাকুরের সেবা, কীর্তন, নামসংকীর্তন সবই শুরু হয়েছে।

ঠিক তখন এক ছোট্ট, অল্পবয়সী কিশোরী, গরিব ঘরের মেয়ে, লাজুক মুখে এসে আশ্রমের পাশে দাঁড়াল। তার পরনে মলিন শাড়ি, চোখে কৌতূহল — ভেতরে প্রবেশ করার সাহস সে পায় না।

সে শুধু দূর থেকে বড়মাকে দেখে।
সাদা শাড়িতে, মায়াময় চোখে, আশীর্বাদের মতো মুখে বসে আছেন তিনি — সকলকে নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন সব কিছু সুন্দরভাবে হয়।

হঠাৎ বড়মার চোখ পড়ল ঐ কিশোরীর দিকে।
তিনি এক দিদিভাইকে বললেন—
“ঐ মেয়েটি কে? এত লাজুক, ভিতরে আসে না কেন?”

দিদিভাই বললেন—
“ও গরিব ঘরের মেয়ে মা, ও ভাবে এতো বড় অনুষ্ঠানে ওর কিছু করণীয় নেই। শুধু দেখে যায়।”

বড়মা ধীরে হাঁটলেন তার দিকে।
মেয়েটি ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলল।
বড়মা নিজ হাতে তার কাঁধে হাত রাখলেন, বললেন—

> “এই আশ্রম কেবল ধনী, গৃহী কিংবা পণ্ডিতদের জন্য নয় মা,
এটি ঠাকুরের আশ্রয় — আর ঠাকুর কাউকে ছোট বা দূরে রাখেন না।
তুমিও তাঁর মেয়ে, তুমিও এখানকার আপন।”

মেয়েটি চোখ মুছে ধীরে বলল—
“আমি কি সত্যি ভিতরে আসতে পারি, মা?”

বড়মা বললেন—

> “যেখানে হৃদয়ে ঠাকুরের নাম আছে, সেখানেই তোমার স্থান।
কর্মে যুক্ত হও মা, ঠাকুর কাজ ভালোবাসেন। গিয়ে ফুল সাজিয়ে দাও, ভোগ রেঁধে দাও, মাটির চৌকিতে বসে ভজন করো।
তুমি যত হৃদয় দেবে, তত ঠাকুর তৃপ্ত হবেন।”

মেয়েটি যেন নবজন্ম পেল সেই মুহূর্তে।
তার চোখে বড়মা ঠাকুরের করুণা-রূপে ফুটে উঠলেন।
সে সেবায় লাগল, গলায় নাম জপতে লাগল — তার মধ্যেই জেগে উঠল ঈশ্বরের ছোঁয়া।

---

🌼 গল্পের শিক্ষা:

বড়মা ছিলেন শুধু একজন “ঠাকুরের সহধর্মিণী” নন, সেবার, মাতৃত্বের, গ্রহণযোগ্যতার এক জীবন্ত প্রতিমা।

তিনি জানতেন — সত্যিকারের ভক্তি জন্মায় হৃদয়ে, সমাজের মানদণ্ডে নয়।

ঠাকুর যেমন বলতেন — “সেবােই উপাসনা”, বড়মা সেই বাণীকে জীবন দিয়ে প্রমাণ করতেন।

25/06/2025

🎶 গান: “বড় সে নয়, যাহা গর্বে বড় হয়”

🎵

যে বলে “আমি বড় ভাই”,
সে জানে না সত্য চরণ,
আত্মজ্ঞান হইতে যে জাগে—
তাহার চোখে নত নয় মন।
পাহাড় যবে দেখা যায়,
নিম্ন ভূমি হইতে স্পষ্ট,
নিজে ছোট জানিলে তবে,
প্রেম জাগে, অহম ম্লান হ'য় যথা।


শ্রদ্ধা কর হীনতমেরে,
ভক্তি দাও অপণ্ডিতে,
যে করে কর্ম সত্যনিষ্ঠায়—
ঈশ্বর বাস করে তাহার হৃদিতে।
যে নিজেকে জানে ক্ষুদ্র,
তাহার মাঝে দীপ্তি জাগে,
আলোর মাঝে থাকে নম্রতা,
গর্ব শুধু ছায়া লাগে।


ঠাকুর কহেন—
"অহংকারে ঢাকে জ্ঞান,
প্রেম তা করে উদ্ভাসন,
বড় সে নয় যাহা চেঁচায়—
বড় সে, যে নত নয় কভু আপন মন।
বড় হইতে চাইলে তুমি,
নতুন হও, আত্মবোধে—
অহং ফেলে প্রেমে ভাসো,
সত্যরথে চলো ক্রমে।"

Address

9no Railway Gate
Kolkata
700129

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when World satsang Sri Sri Anukul Chandra posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to World satsang Sri Sri Anukul Chandra:

Share