https://youtube.com/@Subhodip516

𝙎𝙐𝘽𝙃𝙊 𝙏𝘼𝙇𝙆𝙎, baruipur, KOLKATA (2025)

23/10/2025

ভাইফোঁটা ২০২৫!
দিদি :- Susmita Ghosh

08/10/2025

সন্দেহ একটা অদৃশ্য আগুন, যা নিঃশব্দে পুড়িয়ে দেয় ভালোবাসার অন্তর আত্মা। বিশ্বাস যেখানে আশ্রয় নেয়, সেখানেই সে গিয়ে তীব্র আঘাত করে! তারপর ফিসফিস করে বলে!
"সেকি সত্যিই আমায় বিশ্বাস করে.?"

একটু দেরিতে ফোন ধরলে, একটু কম কথা বললে, বা কেউ অজানা ব্যক্তির মেসেজ Pop-Up হলে! মন ভাবে— কিছু একটা বদলে গেছে, ও কিছুতো একটা লুকোচ্ছে.. তারপর শুরু হয় প্রশ্ন, অশ্রু আর সবশেষে দূরত্ব...

শেষে পরে থাকে শুধু নীরবতা। যে দু’জন একসাথে হাসত, খেলতো, খুনসুটি করতো! তারা এখন একপ্রকার বাধ্য হয়ে যায় একে অপরকে এড়িয়ে চলতে! তবে ভালোবাসা হারায় না একদিনে!

সন্দেহ তাকে প্রতিদিন একটু একটু করে মেরে ফেলে। সন্দেহ! দুটো সুন্দর জীবনকে শেষ করে ফেলে..

07/10/2025

পেতু!
লেখক :- শুভদীপ ঘোষ!

পথে চলতে চলতে হঠাৎ দিনুর সাথে দেখা! আজ বিকালটা ভারী সুন্দর চারিদিকে আবহাওয়ায় যেনো এক মাতাল করে তোলার মতো হাওয়া বইছে! এরম পরিবেশে বাড়ির চার দেয়ালের মাঝে বসে থাকতে মন চায়না। মনে মনে ভাবলাম দিনুর সাথে দেখা হয়ে বেশ ভালোই হলো.. আমার এতবড়ো লেখক জীবনে দিনুর মতো পাঠক আমি খুব কমই দেখেছি! আমার কাছে ও সবসময় নতুন গল্প সোনার আবদার করে! না আমার খারাপ লাগে এমনটা না। একজন লেখকের জীবনে ভালো কিছু পাঠক থাকলে তার লেখার ইচ্ছেটা আরো দ্বিগুন হয়ে ওঠে! তা পার্কের সরু রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দিনু কে বল্লাম!
শুভম :- চা খাবে?
দিনুর চোখজোড়া যেনো চকচকে হয়ে উঠলো তারপর সে আমায় বল্লো! দিনু :- নিশ্চই! এমন মনোরম পরিবেশে তোমার সাথে বসে দু কাপ চায়ের পেয়ালা সাথে তোমার একটা গল্প! আহা যেনো আবহাওয়া আরো মাতিয়ে তুলবে!
শুভম :- এখন আবার গল্প? আচ্ছা বেশ চল। বসে কথা বলবো..
তা পাশেই হরিদার চায়ের দোকানে তলব দিলাম.. এই বিকাল সময়টায় দোকানটায় বেশ ভিড় থাকে.. হরিদা কে দু কাপ চায়ের কথা বলে আমরা গিয়ে বসলাম পাশের বেঞ্চচিতে!
শুভম :- এই তুই একটা পেত্নীর গল্প লিখতে বলেছিলিস না আমায়? আগের বাড়ে। এমন সব অদ্ভুত অবদার করিস না.. উফফফ! যাই হোক.. তোর ভাগ্য ভালো তোকে যেটা এখন শোনাবো! এটা কোনো গল্প না বরং আসল এক ঘটনা বলবো শোন্! একবার এক জলজেন্ত পেত্নীর দর্শন হয়েছিল! আজকাল শহরের ঝলমলে আলোয় তো ভূত প্রেতরা উধাও হয়েছে। এমনকি লোডসেডিং য়ের অন্ধকারেও তাদের আর পাত্তা পাওয়া দুর্লভ! অন্তত আমি তো পাইনা.. যাই হোক। এই পেত্নীর দেখা পেয়েছিলাম একটা অজ-পারাগায়ে...

সে প্রায় গোটা দশ বছর আগের কথা। আমার চাকরি জীবনের শুরুর সময়কার ঘটনা! এম এ পাশ করে গোটা দুই স্কুলে পর পর লিভ ভেকেন্সিতে কাজ করতে করতে হটাৎ একটা permanent চাকরির সন্ধান মিললো! তবে জায়গাটা শহরতলি তে না। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল বল্লেই চলে.. জায়গাটার নামটা বেশ! ইয়ে.. হুম... হ্যাঁ কুসুমতুলি গ্রাম! কুসুমতুলি বিদ্যালয়ে চাকরিটা হয়েছিল আমার! বিদ্যুৎ তখনো পৌঁছোয়নি সেখানে! গ্রামে সন্ধের পর পুরো অন্ধকার হয়ে থাকতো, ঐ আসে পাশে কিছু মাটির বাড়িতে মিন মিনে আলো দেখা যেত! তা যাইহোক.. যেদিন যাই! গিয়ে দেখি একতলা নতুন স্কুল বাড়ি। শিক্ষিকারা বেশির ভাগই স্থানীয়। বাইরে থেকে গিয়েছি আমরা দুজন আমি এবং আমার স্ত্রী অর্চনা.. আমাদের থাকবার ব্যবস্থা খুব কাছে না হলেও আবার বেশি দূর ও বলা যায়না.. স্কুলবাড়ি থেকে মিনিট দশেকের হাঁটা পথ!
বাড়িটা বিশাল বড়! ২-৩ টে ঘর ছাড়া প্রায় পুরো বাড়িটা নিয়েই বাড়ির লোকজনেরা থাকে! সামনে ঢোকার পথে একটা মস্ত বড় কালো গেট। গেট টপকে ভেতরে ঢুকতেই আমাদের নজরে পড়লো বিশাল এক বাগান! তাতে নানান ধরণের ফুল আর ফল গাছ লাগানো আছে! তার সামনেই একটা কুঁয়ো! সেখানে অনেক মহিলা ভিড় করে জল নিচ্ছে। আমার বুঝদে বাকি রইলো না এই বাড়ির পালন কর্তা ভীষণ ভালো মানুষ নাহলে এরম ঘরের ভিতরের কুয়ো থেকে সবাইকে জল নিতে দেয়! হুমমম... যাকগে! তা বাড়ির সামনে যেতে আমাদের চোখে পড়লো বেশ গাটো সাটো চেহারার এক প্রউরো বৃদ্ধ ভদ্রলোকের ওপর!
মানুষটা আমাদের দেখে হাত জড়ো করে বল্লেন!
হারাধনবাবু :- নমস্কার আমি হারাধন রায় এই বাড়ির মালিক! আপনারা নিশ্চই শহর থেকে আশা নতুন শিক্ষক বুঝি?
কিছু সেকেন্ড লোকটার দিকে তাকানোর পর! জবাব দিলাম..
শুভম :- আজ্ঞে হ্যাঁ আমি শুভম ঘোষ আর ইনি আমার অর্ধাঙ্গিনী অর্চনা ঘোষ!
হারাধন :- বেশ! বেশ! আসুন চিঠি পাওয়ার পরেই আপনাদের জন্য ঘর পরিষ্কার করে রেখেছি! আসুন দেখে নিন..
তা বিনা কোনো জবাব, আলোচনা করে ওনার পিছনে চললাম আমরা উনি সামনে গিয়ে! বাড়ি লাগুয়া দুটো ঘর আর তারই সাথে বারান্দা টা দেখিয়ে দিলেন। ওনার মানসিকতার প্রমান তখন পেলাম যখন দেখলাম উনি ঠিক বারান্দার সাথে কাঠের বেরা দিয়ে আলাদা করে একটা স্নানঘর মতো করে দিয়েছেন! আমি সেটা দেখে ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম..
শুভম :- এবাবা! এতো কিছুর কি দরকার ছিল আমরা ঠিক মানিয়ে নিতাম!
হারাধন :- এবাবা! এটা বল্লে চলে নাকি আপনারা আমার ভাড়াটিয়ে নয়, আমার অতিথি আর অতিথিদের যত্ন না নিলে। অষ্টম ধারাবীদের নিয়ম অনুযায়ী গৃহ কর্তার পাপ হয়! আর তাছাড়া আপনারা শহুরে মানুষ এখানে ঐ কুঁয়োর সামনে দাঁড়িয়ে স্নান করতে পারবেন না.. তাই এটা বানিয়ে দিলুম..আর শোনো বাবা তোমাদের কাজের লোক ঠিক করে রেখেছি আমি! হ্যাঁ মাইনে টা একটু বেশি নেবে হয়তো ঐ 250 টাকার মতো! জলটা টেনে আনবে তো এতদূর.. সব কাজ করে দেবে! রান্নাও জানে..
তা হারাধন বাবু সব কিছু আমাদের দেখিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আজ্ঞা চাইলেন! যাওয়ার সময় আমার হাতে ঘরের চাবিটা ধরিয়ে দিয়ে গেলেন! উনি চলে যাওয়ার পর আমি ঘরের দরজা বন্ধ করে! সোজা তক্তাপোসে গিয়ে উঠলাম.. এতটা রাস্তা পারি দেওয়ার পর শরীরটা ভারী বেহাল হয়ে পড়েছিল! তা অর্চনা সাথে আনা কিছু খাবার আমায় দেওয়ার পর আমি শুয়ে পড়েছিলাম সেই রাতে! পরদিন কাকভোরে কর কর করে দরজায় করা নাড়ার শব্দে ঘুম ভাঙলো! দরজাটা খুলে তো আমি রীতিমতো অবাক! ভোরের আবছা আলো পিছনে রেখে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক খুঁদে বাচ্ছা মেয়ে.. মেয়েটাকে লক্ষ করে দেখলাম! মেয়েটার গায়ের রং সেমলা, মাথা ভরা রুক্ষ চুল, একটু উঁচু বড় বড় দাঁত আছে, সির্ণ চেহারা। মেয়েটা হঠাৎ করে আমায় বলে উঠলো..
মেয়ে :- আমি পেদনী গো!
শুভম :- কি? পেত্নী?

অর্চনা :- এই এতো ভোর বেলায় কার সাথে কথা বলছো গো?

শুভম :- আরে! কি জানি.. একটা বাচ্ছা মেয়ে! নিজেকে পেত্নী বলছে..

অর্চনা :- কি বলছে? দাঁড়াও আমি আসছি..

অর্চনা এই বলেই ছুটে এলো দরজার সামনে আর এসে দেখলো একটা বাচ্ছা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে! অর্চনা একবার তার আপাদমস্তক ভালো করে দেখে নিয়ে.. কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো ঠিক তখনই সেই মেয়েটা একটু খিল খিল করে বলে ওঠে!
মেয়ে :- হিহিহিহি! আরে।। আমার এমন কেলেকিস্টে ভূতের মতো চেয়ারা তো, তাই গাঁয়ের সবাই পেদনি বলে ডাকে আমায়!
শুভম :- সে কি! কারুর গায়ের রং নিয়ে তার সম্মন্ধে এমন উক্তি করা.. খুবই খারাপ বিষয় ছি ছি!
মেয়ে :- থাক! দাইদা বাবু.. এখন দিন তো আমায় বালটি টা দিন! জলটা তুলে আনি..
শুভম :- জল? ওমা তুই তুলবি কেন?
মেয়ে :- বা রে! তোমাদের চান ঘরে জল তুলে আনতে হবেনি? এর পড়তো ঠাকমা রা নেবে! আর কুঁয়োতলা খালি পাবনী! একবারি নোক ওদের!
আমি মেয়েটিকে দেখে একটু আশঙ্কায় পড়েছিলাম জানিস তো! এইটুকু বাচ্ছা মেয়ে কতই বা বয়স হবে! উমম.. দস, বারো.. এই মেয়েটি এতো ভারী জল তুলতে পারবে?
মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম!
শুভম :- ঠিক আছে! তা দিচ্ছি.. কিন্তু.. হ্যাঁ রে! তুই পারবি তো?
মেয়ে :- ওমা! পারবনি কেন? এবার দাও তো দেখি..
শুভম :- আচ্ছা! তুই কি কাজ করবি আমাদের?
মেয়ে :- না না! সে মা আসবে পরে। আমায় মা বল্লে কি -- যা তো কুঁয়োতলা খালি থাকতে থাকতে আগে নতুনবাবুদের জলটা তুলে আয়! আন্নার জল, খাবার জল, সবই তো তুলতে হবে..
শুভম :- হুম! বুঝলাম.. আচ্ছা! নিয়ে যা..
সেই বলতেই বালটি নিয়ে কুঁয়োতলায় বেরিয়ে যায় মেয়েটি! তখনও গ্রাম অঞ্চলে হালকা অন্ধকার চারিদিকে আবার আছাড় খাবে নাতো! ঠিক তখনি আমার কানে কুঁয়োয় বলতি ফেলার এক ঝপাং শব্দ ভেসে আসে! তার সঙ্গে সঙ্গে কপিকলের কেচ কেচ শব্ধ!
একটু বেলায় এসে পড়লো কোনকলতা পেতনির মা! আমি ওনাকে ইঙ্গিত করে বলি!
শুভম :- মেয়ের নাম কি রেখেছো গো? কনক একটু অপ্রতিভ হয়ে বল্লো!
কনকলতা :- ঐ আর কি বাবু, যার যা মনেহয় তাই নামেই ডাকে ওকে! কেউ বলে পেতনী, কেউ বলে পেতু! আমিও তাই ডাকি..
শুভম :- খুব অন্যায় করো! পেত্নী বলে সবাই ডাকে আর তুমি শোনো?
পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েটি শুনছিলো সে হঠাৎ বলে উঠলো!
মেয়ে :- নানা! বাবা আমায় ভূতি বলে ডাকে গো!
শুভম :- তাও সেটা ভালো! শোন। আমি তোকে এই বিশ্রী নাম ধরে ডাকতে পারবোনা! খুঁকি বলে ডাকবো.. কেমন?
মেয়ে :- এবাবা! খুঁকি তো আমার বুনের নাম দাইদা বাবু!
শুভম :- বেশ! তাহলে তোকে আমি... উমমম! হ্যাঁ! লক্ষী বলে ডাকবো ডাকবো কেমন?
পেতু একটু মুচকে হেসে সেখান থেকে চলে গেলো!
তারপর থেকে নিয়মিত আশা, যাওয়ায় মেয়েটির সাথে বেশ ভাব হয়ে গিয়েছিলো আমার! এখন শুধু লক্ষী বলে ডাকলে সে সারা দেয়না! উল্টে! উল্টে খিলখিল করে হেসেই অস্থির.. অগত্যা ওর মায়ের মতো আমরাও পেতু বলে ডাকতে শুরু করলাম ওকে!
একদিন স্কুক থেকে ফিরে বসে ছিলাম! তখন হঠাৎ পেতুর আগমন হতে তাকে জিজ্ঞেস করলাম!।
শুভম :- স্কুলে পড়বি?
মেয়ে :- ইস্কুলে? না বাপু। আমার বাবা ইস্কুলের মাইনেই দেবেনা..
শুভম :- তোর মাইনে লাগবে না! আমি কথা বলে নেবো বড়দির সাথে..
মেয়ে :- আর খাতা বই লাগবেনি বুঝি? সেসব কোথা পাবো?
এইটুকু বাচ্চামেয়ের দূর দৃষ্টি দেখে অবাক হয়েছিলাম প্রথমে! তারপর একটু মাথা চুলকে নিয়ে জবাব দিলাম..
শুভম :- ঠিক আছে! ওসব আমি কিনে দেবো তোকে।
পেতু তবুও ঘাড় বাকিয়ে একই উত্তর দিলো! না.. সে স্কুলে যাবে না.. সেই কথাটা শুনে একটু খারাপ লেগেছিলো বটে! তবে খানিকক্ষণ পেতু কে বল্লাম..
শুভম :- বেশ! স্কুলে নাহয় না গেলি.. আমাদের কাছে পর! সন্দেবেলায় চলে আসবি কেমন?
পেতু মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ মূলক সরে উত্তর দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো!
তারপর থেকে সন্ধ্যায় লণ্ঠণের আলোয় লেখাপড়া চললো! ছুটির দিন মাঝে মধ্যে সকালের চলে আসে ও এখন..
অ এ অজগর আসছে তেড়ে!
আ এ আমটি খাবো পেরে!
ইত্যাদি পরার ফাঁকে ফাঁকে হঠাৎ করেই পেতু বেরিয়ে গিয়ে উঠোনের পেয়ারা গাছটায় উঠে পরে! কত ডাকাডাকি, বকুনি দিয়ে নামানো হতো তাকে! আমার বৌ অর্চনা বার বার সেখানে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বলতো!

অর্চনা :- ওরে ও হনুমান! পেত্নী নয়। তোর নাম রাখা উচিত ছিল হনুমান.. পরে গিয়ে হাত পা ভাঙলে ভালো হবে তো? নাম এক্ষুনি...

পেতু হেসে উঠে বলে!
মেয়ে :- আমটি আমি খাবো পেরে! দেখনা কত বড় বড় পেয়ারাগুলো! এখন না পারলে আর থাকবেনি গো! সব টিয়াপাখি আর বাদুড়ের দল খেয়ে যাবে..

অর্চনা :- আর ওপাশের ঠাকুমা বকবেন না তোকে বুঝি? সবতো পেয়ারা পেরে নিলি রে!

মেয়ে :- ওমা! বকবে কেন? ওদেরও দে আসবো নয়!
যাই হোক!
যেইদিন প্রথম পেতু সম্পূর্ণ নিজে থেকে পরতে শুরু করলো সেদিন বেশ ভালো লেগেছিলো!
মেয়ে :- আমি কেমন নাইতে পারি, মনি পারে না! টুনিও পারেনা..
সেদিন আমাদের বেশ আনন্দ হয়েছিল! তা এতো সবকিছুর মাঝে পুজোর ছুটি পড়লো! আমরা বাড়ি ফেরবার সময় পেতু কে বার বার বলেছিলাম!
শুভম :- এই একমাস শুধু খেলবি না! একটু পড়াশোনা করিস। নইলে কিন্তু যা শিখেছিস সব ভুলে যাবি..
বাড়ি ফেরার আসার সময় আমার মনটা ফিরতে চাইছিলো না.. কিন্তু ছুটিতে ওখানে থেকে কি করবো এই ভেবে ফিরেছিলাম.. তবে তখনো বুঝিনি দূরেসংবাদ আমার পিছু নিয়েছে..
পুজোর ছুটি শেষ হওয়ার পর যখন আমি আর অর্চনা বাড়ি ফিরলাম! তখন আমাদের ঘরে কাজ করতে আসে সরজু! একটু অবাক হয়েছিলাম.. মনে মনে ভেবেছিলাম.. পেতু কই গেলো?
তা সর্যুকে জিজ্ঞেস করলাম!
শুভম :- হ্যাঁ গো! পেতুকে দেখতে পেলাম না.. কই সে?
সরজু :- দেশে গেছে বাবু! এই সময় ওরা প্রত্যেক বছর যায়। ওদের গায়ে বড় করে মেলা হয়, আজ প্রায় ১৫ দিন হলো ওরা গেছে.. তবে বলে গেছিলো ৭দিন যাচ্ছে! কেন এলোনি কে জানে.. পেতুর মা আমায় বলে গেছিলো! যদি ওদের আসতে দেরি হয় তাহলে দাদাবাবুদের তুই একটু দেখে নিস্..
শুভম :- আচ্ছা! কাজ করো..
শুভম মনে মনে ভাবে!এদিকে হারাধন বাবুরাও নেই! শুনেছিলাম নাতনির অন্নপ্রাশন উপল্লখে দেশের বাড়ি গেছে!
তারপরের দুটো দিন একটু ভয় আর আতঙ্ক নিয়েই কাটলো আমাদের! এতো বড় বাড়িতে আমরা মাত্র দুজন.. তবে ভয়ের সারা ডেকে গেলো তৃতীয় দিনে! আমরা ঘরে শুয়ে ছিলাম মাঝ রাত তখন.. হঠাৎ আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো বাইরে থেকে একটা বচ্ছিরি শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম প্রথমে বুঝিনি কিসের শব্দ! তবে পরে বুঝলাম আমাদের ঘরে ডাকাত পড়েছে! আমি ধড়ফড় করে উঠে বসলাম বিছানায়! আর স্পষ্ট দেখতে পেলাম। দরজার দুটো পাল্লার মাঝখান থেকে একটা করাত জাতীয় কিছু একটা ঢুকিয়ে কে বা কারা তালা তা কাটছে খেস খেস শব্দ করে.. এবার সেই শব্দে অর্চনার ঘুম টাও ভেঙে গেলো। ও বিছানায় উঠে বসে আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে! আমি স্পষ্ট বুঝদে পারলেন বিশাল ভয় পেয়েছে ও! ভয়ে আমাদের দুজনের গলা পুরো শুকিয়ে গেছে.. হারাধন বাবুরাও বাড়ি নেই! আর পাশের বাড়ি গুলো সব দূরে দূরে। আমরা যদি ঘরের ভিতর থেকে সব চেঁচামেচি ও করু কেউ শুনতে পাবেনা.. তবুও শরীরের সব শক্তি একত্রিত করে চেঁচানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু জানিনা কেন গলা থেকে কোনো সর বেরোতে চাইলো না আমার! আমি যেনো বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছি।।
অর্চনা কাঁপতে কাঁপতে পাশের টেবিলে থাকা রুটি কাটা ছুরি টা হাতে তুলে নিলো, কিন্তু আমি কি নেবো? আমার আসে পাশে একমাত্র বারো ইঞ্চির একটা স্কেল ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়লো না!

ঠিক তখনি ঘরের বাইরে থেকে একটা বৃকট চিৎকারের শব্দ পেলাম। কতগুলো লোক সম্মিলিত সরে চেঁচাচ্ছে! ( ওরে বাবারে সাপ! সাপ! সাপ! সাপ! ) আর ঠিক তার পর একটা খিল খিলে হাসির শব্দ কানে ভেসে এলো! আর সাথে একটা ছড়া! অ - অজগর আসছে তেড়ে! ( ধকক )
আমরা দুজনেই ঘরের ভেতর থেকে বল্লাম! পেতু...
বাইরে তখনো সেই লোকগুলো ভয়ার্ত গলায় চেঁচিয়ে চলেছে! ( এই! এই কে তুই? কি কি কি কি চাই.. )
( একটা খিলে খিলে হাসির শব্দর পর ) আমি পেদনি গো! ( horror music ) ঠিক তার পরেই একটা ঝপাস করে আওয়াজ হলো! আমরা বুঝলাম না সেটা আসলে কিসের আওয়াজ। তবে সেই লোকগুলো বিশাল ভয়ে যেনো পালিয়ে যাচ্ছে! রাম - রাম বলতে বলতে..
( ওরে বাবারে রাম! রাম! রাম! রাম! সাথে একটা খিলখিলে হাসি )
ইঁদুরছানা ভয়ে মরে, ঈগলপাখি পাছে ধরে। আমরা শুনলাম ধুপ ধুপ করে পায়ের শব্দ করে সেই লোকগুলো যেনো দৌড়ে পালিয়ে গেলো। বাইরে শান্ত হয়ে যাওয়ার পর! আমরা দরজা খুলে বাইরে এলাম এসে পেতু কে কত করে খুঁজে বেড়ালাম! কত ডাকলাম!

অর্চনা :- এই পেতু! পেতু.. কি রে কই তুই? কখন ফিরেছিস তোরা... কি রে কই তুই? নেমে আয়! নেমে আয় বলছি. এই রাত ভিড়েতে গাছে কি করছিস? আরে পরে গিয়ে হাত পা ভাঙবে তো.. কি দস্যি মেয়ে রে তুই!

তবে আমাদের বাক্যস্রোত হঠাৎ থেমে গেলো। কোথায় পেতু? এখানে তো কেউ নেই.. অর্চনা ছুটে গিয়ে ঘর থেকে টর্চ টা নিয়ে এলো। এসে বাগানের চারিদিকে দেখলো কিন্তু কাউকে আমরা দেখতে পেলাম না.. শুধু উঠোনে পরে আছে! কুঁয়োর বালতি বাঁধার দড়িটা.. আমি বুঝলাম হয়তো পেতু এটাই ছুঁড়েছিল আর এটাকেই লোকগুলো সাপ ভেবেছিলো। আর ঠিক তার পাশেই পাতাসমেত পেয়ারাগাছের একটা মোটা, সোটা ডাল পরে আছে উঠোনে.. আমার মনে সেটা দেখেই একটা প্রশ্ন জাগলো। এই এতো মোটা ডালটা পেতু ছুঁড়েছিল ডাকাতগুলোর ওপরে? আমরা দুজনেই আরো একবার ডাকলাম!
( অর্চনা আর শুভম একসাথে ডাকবে এটা )
পেতু! কোথায় তুই?
কিন্তু না! পেতু কোথাও নেই.. শুধু পাশে থাকা পেয়ারা গাছটা সামান্য নড়লো! সেইদিন বাকি রাতটুকু আমাদের ঘুম এলোনা। মনে অনেক প্রশ্ন নিয়ে বারান্দার এক কোনে বসে রইলাম!
পরের দিন সকাল বেলায়! কোনোকলতা এসে হাজির হলো। তার মুখ চোখ যেনো মিলিন হয়ে গেছে। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে কান্না ভরা কণ্ঠে বল্লেন!
কনকলতা :- দিদিমনি পেতু আর নেই গো দিদিমনি! আমাদের দেশের বাড়ি যাওয়ার পর। ওর খুব জর এসেছিলো কত কিছু করার চেষ্টা করলাম.. কিন্তু আমি পারলাম না দিদিমনি! তিনদিনের টানা জ্বরে চলে গেলো আমার অমন হাদিখুশি মেয়েটা। জ্বরের ঘরে কেবল তোমাদের শেখানো ছড়াগুলো বলতো গো দিদিমনি! ইঁদুর ছানা ভয়ে মরে! ঈগলপাখি...... ( একটু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নাটা কিন্তু Continue থাকবে )
কনকের গলাটা ধরে এলো! তবে কাল রাত থেকে আমার মনে চলা প্রশ্নের উত্তর আমি পেয়ে গেলাম! কাল রাতে আমাদের রক্ষা করতে পেতু নিজে এসেছিলো.. আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেলো সেটা ভেবে! আমার কানে তখনো যেনো স্পষ্ট বেজে চলেছে! আমি কেমন নাইতে পারি! মনি পারে না.. টুনিও পারে না..

শেষ!

02/10/2025

শুভ বিজয়া দশমী!

দশমীর সকাল মানেই মন ভিজে ওঠা বিষাদের সুর! নিজের মানুষদের সাথে রাত জাগার ফের একটা বছরের অপেক্ষা.
সদ্য কদিন আগেও যে মণ্ডপে ঢাকের বাজনা, কাঁসরের ধ্বনি, ধূপধুনোর গন্ধে ভরে উঠেছিল চারদিক, আজ সেইখানেই বিদায়ের হাহাকার।

মা এসেছিলেন আনন্দের সাগরে ডুবিয়ে দিতে, এসেছিলেন অশুভের বিরুদ্ধে শুভের জয়ধ্বনি শোনাতে। সেই সাজপোশাক, আলোকসজ্জা, ধূপকাঠির ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে আমদের কিছু দিনের জন্য স্বর্গের ছোঁয়া পাইয়ে দিতে। অথচ, দশমীর দিনে সেই আনন্দই চোখের জলে ভিজে যায়।

সিঁদুর খেলা শেষে যখন মায়ের মুখে সিঁদুরের টান লেগে থাকে, তখনই মনে হয়— এই তো আমাদের মায়ের রূপ, একদিকে শক্তি, অন্যদিকে অশেষ স্নেহ। ঢাকের তালে তালে বেজে ওঠে "বিজয়া…বিজয়া…" বিদায়ের ডাক।

নদীর জলে ভেসে যায় প্রতিমা, কিন্তু ভেসে যায় না আমাদের বিশ্বাস। কারণ আমরা জানি—
“আসছে বছর আবার হবে।”

ততদিন মায়ের আশীর্বাদ যেন আমাদের ঘরে ঘরে থাকে, শক্তি আর সাহস দিয়ে ভরিয়ে রাখুক প্রতিটি মন। ✨

ইতি :- তোমাদের

#দশমী #দুর্গাপূজা #মায়েরবিদায় #দুর্গাপূজা২০২৫ #শক্তিরউৎসব #মায়েরআশীর্বাদ #বিদায়েরবেদনা #বাংলারপুজো

01/10/2025

ভিড়! Or what.!!??

28/09/2025

যারা! যারা! এখনো #সন্তোষমিত্রস্কোয়ার পুজো দেখো নি.. কাজের চাপে, অফিসের চাপে, বা দৈনন্দিন কোনো অসুবিধার জন্য.. তাদের বলছি! আর বাকি যাই Miss করো না কেন! এই Pandel Miss করো না..

Jay Hind! 🚩
Jay Bharat! 🇮🇳

24/09/2025

গরম আর ভিড়!
#মহালয়া

23/09/2025

সাবধানে থাকুন। পারলে work from home নিয়ে manage করার চেষ্টা করুন। জমা জলে‌ ইলেকট্রিক তার ইত্যাদি পড়ে থাকতে পারে। খুব খুব সাবধান, বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে। যারা নিজেরা গাড়ি চালান, আজ একটু extra careful থাকুন please. কলকাতার অবস্থা শোচনীয়! আর পারলে অবশ্যই যদি কোনো রাস্তার কুকুর বা বেড়াল আপনাদের বাড়ীর দোরগোড়ায় আস্তানা নেয়! Please তাদের তাড়াবেন না.. 🙏

02/09/2025

Robibar × ঘুরু ঘুরু! 🤷‍♂️

21/08/2025

Memories! 💐

𝙎𝙐𝘽𝙃𝙊 𝙏𝘼𝙇𝙆𝙎

23/10/2025

08/10/2025

07/10/2025

02/10/2025

01/10/2025

28/09/2025

24/09/2025

23/09/2025

02/09/2025

21/08/2025

Address

Telephone

Website

Alerts

Contact The Business

Shortcuts

Share

Category