05/11/2025
গভীর রাতে, যখন চারদিক নিস্তব্ধ, গ্রামের মেঠো পথ ধরে হেঁটে চলেছিল রহমান। তার হাতে একটা লণ্ঠন, টিমটিম করে আলো দিচ্ছে। ভাদ্র মাসের শেষ, আকাশে মেঘের ঘনঘটা। যেকোনো মুহূর্তে ঝেঁপে বৃষ্টি নামতে পারে। রহমান তার মামার বাড়ি থেকে ফিরছিল, অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হবে।
গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা পুরোনো পুকুর আছে, লোকে বলে 'সাপের পুকুর'। অনেক বছর আগে নাকি সেই পুকুরে এক বিশাল সাপ থাকত, যার মাথায় মণি ছিল। একদিন এক লোভী মানুষ সেই সাপকে মেরে মণি চুরি করে। তারপর থেকেই নাকি পুকুর পাড়ের ওই বিশাল বটগাছটায় সেই সাপের আত্মা ঘুরে বেড়ায়। কেউ একা ওদিক দিয়ে গেলে নাকি অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটে।
রহমান এসব গল্প শুনেছে, কিন্তু কখনো বিশ্বাস করেনি। আজ তার পথ ওই পুকুর পাড় দিয়েই। যখন সে বটগাছের কাছাকাছি এলো, হঠাৎ লণ্ঠনের আলো নিভে গেল। রহমান থমকে দাঁড়াল। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এমন সময় তার কানে এলো ফোঁস ফোঁস শব্দ। প্রথমে সে ভাবল বাতাসের শব্দ, কিন্তু শব্দটা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন তার পাশেই কিছু একটা নড়ছে।
রহমানের গা ছমছম করে উঠল। সে দ্রুত পা চালাতে শুরু করল। কিন্তু যত দ্রুত সে হাঁটছে, ফোঁস ফোঁস শব্দটা যেন ততই তার পিছু নিচ্ছে। হঠাৎ তার মনে হলো, তার পায়ের কাছে কিছু একটা পেঁচিয়ে উঠছে। ভয়ে সে চিৎকার করে উঠল, কিন্তু তার গলা থেকে কোনো শব্দ বের হলো না। সে অনুভব করল, ঠান্ডা, আঁশটে কিছু একটা তার পা বেয়ে উপরে উঠছে।
সে লণ্ঠনটা ফেলে দিয়ে প্রাণপণে দৌড়াতে শুরু করল। পেছনে ফিরে তাকাতে সাহস হলো না। একসময় সে নিজের বাড়ির সামনে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে জ্ঞান হারাল।
সর্প-আত্মা