11/11/2024
গল্পের শিরোনাম: "শেষ চিঠি"
গল্পের মূল কাহিনী:
রাতের শেষ প্রহরে, অনিমেষ তার পুরনো ডায়েরি খুলে বসে। ডায়েরির পাতা উল্টাতে গিয়ে হঠাৎ তার হাত থেমে যায় একটি চিঠিতে। চিঠিটি লেখেছিল তার প্রথম ভালোবাসা, প্রিয়া, যে আজ থেকে দশ বছর আগে হঠাৎ করেই হারিয়ে যায় তার জীবন থেকে। প্রিয়া ছিল তার শৈশবের বন্ধু, তার প্রাণ। কিন্তু একদিন কোনো কারণ ছাড়াই প্রিয়া তার জীবন থেকে দূরে সরে যায়।
সেই চিঠিতে লেখা ছিল, “অনিমেষ, হয়তো তুমি কখনও জানতে পারবে না কেন আমি তোমার কাছ থেকে দূরে সরে গেলাম। হয়তো তুমি আমাকে ভুল বুঝেছ, কিন্তু জানো, আমি তোমাকে সবসময় ভালোবেসে যাব। তুমি আমার জীবনের এমন একজন, যাকে ছাড়া আমি হয়তো কখনও বাঁচতে পারতাম না। কিন্তু আমার চলে যাওয়াটা ছিল তোমার ভালো থাকার জন্য। এই চিঠিটি কখনও খুঁজে পাবে না, কারণ আমি চাই না তুমি জানো যে আমি কোথায় গেলাম।”
চিঠির প্রতিটি শব্দ যেন অনিমেষের হৃদয়ে নতুন করে রক্তক্ষরণ ঘটায়। এতদিন পরেও, সে বুঝতে পারে প্রিয়ার প্রতি তার ভালোবাসা একটুও কমেনি। সে কখনোই জানতে পারেনি কেন প্রিয়া চলে গিয়েছিল।
কিছুদিন পর, অনিমেষ খবর পায় যে প্রিয়া আবারও শহরে এসেছে। সে তার পুরনো স্মৃতির টান উপেক্ষা করতে না পেরে একদিন সাহস করে প্রিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যায়।
সেই দিনের সন্ধ্যায়, তারা দেখা করে পুরনো নদীর ধারে। প্রিয়ার চোখে জল, আর অনিমেষের চোখে প্রশ্ন।
“তুমি কেন চলে গিয়েছিলে?”—এই প্রশ্নই বারবার ভেসে ওঠে অনিমেষের মুখে। প্রিয়া ধীরে ধীরে সত্যি কথা বলে, “আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলাম, জানতাম হয়তো বাঁচব না। তোমাকে দূরে ঠেলে দিয়ে চেয়েছিলাম তুমি যেন কষ্ট না পাও। কিন্তু আজ তোমার চোখে কষ্ট দেখে বুঝতে পারছি, হয়তো ভুল করেছিলাম।“
প্রিয়ার হাত ধরে অনিমেষ বলে, “তুমি আমার জীবন থেকে কখনও দূরে ছিলে না। তুমি ছিলে আমার হৃদয়ের গভীরে।”
গল্পের শেষভাগে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ভালোবাসার একটি অমোঘ বন্ধন গড়ে উঠেছে, যা কোনো বাধা মানে না। তারা জানে যে একে অপরের জন্যই জন্মেছে এবং এ ভালোবাসা তাদের মনের গভীরে চিরকাল থাকবে।
মূল শিক্ষা:
এই গল্পটি আমাদের শেখায়, ভালোবাসার মানুষকে কখনও ভুলে যাওয়া যায় না। সত্যিকারের ভালোবাসা সব প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে, এমনকি সময়কেও হার মানায়।